বেগম রোকেয়ার তত্ত্ব এনজিও প্রজেক্টে রূপ নিয়েছে -একক বক্তৃতায় অধ্যাপক মালেকা বেগম
সেন্ট্রাল
উইমেন্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মালেকা বেগম বলেছেন, রোকেয়া সাখাওয়াত
হোসেনের নারীবাদী তত্ত্ব আজ দাতাদের সাহায্যে পরিচালিত এনজিও প্রজেক্ট,
গবেষণামূলক কাজ এবং জেন্ডার তত্ত্বে রূপান্তরিত হয়েছে। এটি অর্থের
বিনিময়ে পেশাদারি রূপ পেলেও তৃণমূল পর্যায়ে আশানুরূপ পরিবর্তন হয়নি।
দারিদ্র্য দূর হয়নি। ক্ষমতায়ন হয়নি। সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর অবস্থান
পাল্টায়নি।
আজ মঙ্গলবার রোকেয়া দিবস উপলক্ষে একক বক্তৃতায় মালেকা বেগম এসব কথা বলেন। দিবসটি উপলক্ষে বাংলা একাডেমি এই বক্তৃতার আয়োজন করে।
‘রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ও নারী আন্দোলন’ শীর্ষক বক্তৃতায় মালেকা বেগম বলেন, ‘এখনো রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের যুগের পারিবারিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মধ্যেই আমরা ঘুরপাক খাচ্ছি। উত্তরণ এবং গুণগত পরিবর্তনের শুভ সূচনা করতে হবে।’
তবে বাংলাদেশের নারী আন্দোলন, সরকারের নারী উন্নয়ন নীতি রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের নারী আন্দোলনের নারীবাদী তত্ত্বের রূপায়ণ ঘটাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন মালেকা বেগম।
বক্তৃতায় নারী নেত্রী ও গবেষক মালেকা বেগম বলেন, রোকেয়া ১৮৮০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মারা যান ১৯৩২ সালে। সেই যুগের অবরোধের ঘেরাটোপে বন্দী রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামের শত শত নারীর মতো রোকেয়া স্রোতে ভেসে যাননি। যে সময় ও পরিবেশে শুধু মুসলিম নয়, হিন্দু সমাজেও পর্দা-অবরোধের চাপ এবং শিক্ষা-নিষেধাজ্ঞায় মেয়েদের জীবন পরমুখাপেক্ষী, পরনির্ভর, নির্যাতিত, বঞ্চিত, বৈষম্যপীড়িত ছিল; সে সময় আলোকবর্তিকা হিসেবে উঠে এসেছিলেন রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। তিনি মানুষ হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন।
বক্তৃতায় মালেকা বেগম রোকেয়ার জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। বিভিন্ন বই, কবিতা এবং চিঠিপত্রে রোকেয়া মানবমুক্তি, নারীমুক্তিসহ যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছেন, তা উল্লেখ করেন। এ ছাড়া রোকেয়ার পরে যাঁরা নারী আন্দোলনকে একটি পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন, সেই নারীদের কথাও উল্লেখ করেন।
মালেকা বেগম বলেন, শত বছর পরও অবিসংবাদী নেত্রী হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের শ্রদ্ধাভাজন হয়ে আছেন রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। কাজেই ফ্রয়েডীয় এবং নারীর স্বাতন্ত্র্যবোধ ব্যাখ্যার নামে অবান্তর গবেষণা গ্রহণযোগ্য নয়। রোকেয়া বিশ্বের নারী আন্দোলনের অগ্রদূতদের অন্যতম এবং বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের অগ্রদূত।
মালেকা বেগম বলেন, রোকেয়ার নারীশিক্ষা, পেশা, মুসলিম পারিবারিক আইন, বিবাহ, বহুবিবাহ, পর্দা, অবরোধ ইত্যাদি বিষয়ে নারীবাদী তত্ত্ব মূলত মানবাধিকারের ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তি থেকে উৎসারিত। তিনি যা ভেবেছেন, তা বলেছেন। যুক্তি-বিশ্লেষণ-সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি যা বলেছেন, তা বলেছেন সামাজিক বিকাশের জন্য, যার সঙ্গে নারী পুরুষ উভয়েই সম্পৃক্ত।
মুসলিম নারীকে জাগানো ও উদ্বুদ্ধ করার জন্য রোকেয়া কোনো পূর্বসূরি পাননি। বাঙালি মুসলিম নারীর অগ্রদূত হিসেবে রোকেয়া নিজেকে যে কতভাবে তৈরি করেছেন, সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ গবেষণা এখনো হয়নি বলে উল্লেখ করেন মালেকা বেগম।
বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব রণজিৎ কুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, শুধু নারীর জন্য নয়, পুরো সমাজের কল্যাণের জন্যই রোকেয়া প্রাসঙ্গিক থাকবেন।
রণজিৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, যে দেশের বেশির ভাগ নারী রাঁধার পরে খাওয়া আর খাওয়ার পরে রাঁধার চক্করে বাঁধা, সে দেশে রোকেয়াকে আলোচনা করতেই হবে। নারীরা পুরুষের সমতুল্য, এ বিষয়টি যতদিন স্পষ্ট না হবে, ততদিন নারীকে নারী হিসেবেই দেখা হবে। নারীকে কেউ আর মানুষ ভাবতে পারবে না।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক আলতাফ হোসেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, সাংসদ কবি কাজী রোজী, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পারভীন হাসান, লেখক-গবেষক নিলুফার বেগম প্রমুখ।
আজ মঙ্গলবার রোকেয়া দিবস উপলক্ষে একক বক্তৃতায় মালেকা বেগম এসব কথা বলেন। দিবসটি উপলক্ষে বাংলা একাডেমি এই বক্তৃতার আয়োজন করে।
‘রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ও নারী আন্দোলন’ শীর্ষক বক্তৃতায় মালেকা বেগম বলেন, ‘এখনো রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের যুগের পারিবারিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মধ্যেই আমরা ঘুরপাক খাচ্ছি। উত্তরণ এবং গুণগত পরিবর্তনের শুভ সূচনা করতে হবে।’
তবে বাংলাদেশের নারী আন্দোলন, সরকারের নারী উন্নয়ন নীতি রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের নারী আন্দোলনের নারীবাদী তত্ত্বের রূপায়ণ ঘটাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন মালেকা বেগম।
বক্তৃতায় নারী নেত্রী ও গবেষক মালেকা বেগম বলেন, রোকেয়া ১৮৮০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মারা যান ১৯৩২ সালে। সেই যুগের অবরোধের ঘেরাটোপে বন্দী রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামের শত শত নারীর মতো রোকেয়া স্রোতে ভেসে যাননি। যে সময় ও পরিবেশে শুধু মুসলিম নয়, হিন্দু সমাজেও পর্দা-অবরোধের চাপ এবং শিক্ষা-নিষেধাজ্ঞায় মেয়েদের জীবন পরমুখাপেক্ষী, পরনির্ভর, নির্যাতিত, বঞ্চিত, বৈষম্যপীড়িত ছিল; সে সময় আলোকবর্তিকা হিসেবে উঠে এসেছিলেন রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। তিনি মানুষ হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন।
বক্তৃতায় মালেকা বেগম রোকেয়ার জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। বিভিন্ন বই, কবিতা এবং চিঠিপত্রে রোকেয়া মানবমুক্তি, নারীমুক্তিসহ যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছেন, তা উল্লেখ করেন। এ ছাড়া রোকেয়ার পরে যাঁরা নারী আন্দোলনকে একটি পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন, সেই নারীদের কথাও উল্লেখ করেন।
মালেকা বেগম বলেন, শত বছর পরও অবিসংবাদী নেত্রী হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের শ্রদ্ধাভাজন হয়ে আছেন রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। কাজেই ফ্রয়েডীয় এবং নারীর স্বাতন্ত্র্যবোধ ব্যাখ্যার নামে অবান্তর গবেষণা গ্রহণযোগ্য নয়। রোকেয়া বিশ্বের নারী আন্দোলনের অগ্রদূতদের অন্যতম এবং বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের অগ্রদূত।
মালেকা বেগম বলেন, রোকেয়ার নারীশিক্ষা, পেশা, মুসলিম পারিবারিক আইন, বিবাহ, বহুবিবাহ, পর্দা, অবরোধ ইত্যাদি বিষয়ে নারীবাদী তত্ত্ব মূলত মানবাধিকারের ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তি থেকে উৎসারিত। তিনি যা ভেবেছেন, তা বলেছেন। যুক্তি-বিশ্লেষণ-সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি যা বলেছেন, তা বলেছেন সামাজিক বিকাশের জন্য, যার সঙ্গে নারী পুরুষ উভয়েই সম্পৃক্ত।
মুসলিম নারীকে জাগানো ও উদ্বুদ্ধ করার জন্য রোকেয়া কোনো পূর্বসূরি পাননি। বাঙালি মুসলিম নারীর অগ্রদূত হিসেবে রোকেয়া নিজেকে যে কতভাবে তৈরি করেছেন, সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ গবেষণা এখনো হয়নি বলে উল্লেখ করেন মালেকা বেগম।
বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব রণজিৎ কুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, শুধু নারীর জন্য নয়, পুরো সমাজের কল্যাণের জন্যই রোকেয়া প্রাসঙ্গিক থাকবেন।
রণজিৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, যে দেশের বেশির ভাগ নারী রাঁধার পরে খাওয়া আর খাওয়ার পরে রাঁধার চক্করে বাঁধা, সে দেশে রোকেয়াকে আলোচনা করতেই হবে। নারীরা পুরুষের সমতুল্য, এ বিষয়টি যতদিন স্পষ্ট না হবে, ততদিন নারীকে নারী হিসেবেই দেখা হবে। নারীকে কেউ আর মানুষ ভাবতে পারবে না।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক আলতাফ হোসেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, সাংসদ কবি কাজী রোজী, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পারভীন হাসান, লেখক-গবেষক নিলুফার বেগম প্রমুখ।
No comments