আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস- পরিস্থিতি উদ্বেগজনক
(শাহবাগে আন্দোলনরত এক ছাত্রীকে পেছন থেকে লাথি মারছেন পুলিশ কর্মকর্তা (পরিদর্শক তদন্ত) হাবিল হোসেন ছবি: সংগৃহীত) উদ্বেগজনক
অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি। এখনও হরহামেশা
দিন-দুপুরে গুম-খুনের শিকার হচ্ছেন মানুষ। বছরের পর বছর ধরে যারা গুম হয়ে
আছেন তাদের উদ্ধারে কোন তৎপরতা নেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। অভিযোগ
রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার
পর আর তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কোন কোন ক্ষেত্রে মাস খানেক নিখোঁজ
থাকার পর মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে হাজির করা হচ্ছে। ক্রসফায়ারও চলছে
সমানতালে। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে থাকার পরও কথিত ক্রসফায়ারে
মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় আসামির ওপর নির্যাতন
হচ্ছে। নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের হামলা ও শক্তিপ্রয়োগের
ঘটনা ঘটছে অহরহ। ধরে নিয়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলির ঘটনাও ঘটছে প্রায়ই। নিরপরাধ
মানুষকে বানানো হচ্ছে সন্ত্রাসী। সীমান্তেও চলছে সমানতালে খুন-অপহরণ। নারীর
প্রতি সহিংসতার বিকৃত বীভৎস ঘটনা ঘটছে একের পর এক। থানা পুলিশের কাছে
সুবিচার চাইতে গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। মানবাধিকার
কর্মী ও বিশিষ্টজনেরা বলছেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বর্তমানে
উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে। যদিও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড.
মিজানুর রহমান দাবি করেছেন, কমিশনের ভূমিকার কারণে গুমের ঘটনা কমেছে।
কমিশনের সব কাজ দৃশ্যমান নয়। অন্তরালে থেকেও কাজ করে যাচ্ছেন তারা। তিনি
বলেন, মানবধিকার পরিস্থিতি ওঠানামা করে। কখনও গুমের ঘটনা বেড়ে যায় আবার
কখনও বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-ের ঘটনা বেড়ে যায়। তবে পরিস্থিতি আগের চেয়ে
পরিবর্তন হচ্ছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক এডভোকেট সুলতানা
কামাল গত রাতে বলেন, সরকার কর্তৃক কিছু কিছু মানবধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে
প্রশ্রয় দিচ্ছে, যা কাম্য নয়। অবস্থা এমন হয়েছে যে, মানুষের মনে শঙ্কা
জেগেছে তারা যদি কারও দ্বারা লাঞ্ছিত হয় তাহলে বিচার পাবে না। রাষ্ট্রকে
মানবাধিকার বিষয়ে আরও বেশি সচেতন ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। এদিকে
মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্যমতে, চলতি বছরের শুরুতে
৫ই জানুয়ারি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে যে হারে গুম-খুনের ঘটনা
ঘটেছে তা বর্তমানে একটু কমে এসেছে ঠিকই, তবে মানবাধিকার পরিস্থিতি এখনও
উদ্বেগজনক অবস্থায় রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে জবাবদিহি নেই।
তারা অনেকটা খেয়াল-খুশিমতো কাজ করছে। একমাত্র নারায়ণগঞ্জের সাতজনকে গুম ও
খুনের ঘটনা ছাড়া অন্যকোন গুম-খুনের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের
বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়নি। দেশের বিভিন্ন এলাকাতেই ধরে নিয়ে পায়ে
গুলির ঘটনা ঘটছে। রাজধানীর শেরেবাংলানগরে এক পুলিশ কর্মকর্তা পরকীয়ার জের
ধরে এক যুবককে পায়ে গুলি করে সন্ত্রাসী বানানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু
বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে আলোচিত হলে ওই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সম্প্রতি ঢাকা ও বরিশালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের আচরণ নিয়েও প্রশ্ন
উঠেছে। পুরুষ পুলিশ সদস্যরা নারী শিক্ষার্থীদের লাথি মারার দৃশ্য দেখা
গেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়ার কোন
তথ্য পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুম-খুনের ঘটনাগুলো চরম মানবধিকার লঙ্ঘন বলে ধরা হয়। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গুম ও খুনের এসব ঘটনার বেশির ভাগেরই কোন তদন্ত করা হচ্ছে না। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে গুম-অপহণের ঘটনায় থানা পুলিশ মামলা বা জিডি নিতে চায় না। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সবসময় নিখোঁজ হিসেবে থানায় জিডি করতে পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে কোন তদন্ত করা হয় না বললেই চলে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিবর্তনমূলক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬ (সংশোধিত ২০০৯ ও ২০১৩) এর মাধ্যমে সরকার মানবাধিকার রক্ষাকর্মী, সাংবাদিক ও স্বাধীনচেতা মানুষের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সম্প্রতি দেশের কয়েকটি জেলায় ভিন্ন মতাবলম্বীদের গ্রেপ্তারের পর কারাদ- দেয়া হয়েছে। এছাড়া গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সংবাদ ও অনুষ্ঠান সম্প্রচারে বিভিন্ন ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ করে সরকার জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
মানবধিকার সংগঠন অধিকারের তথ্য মতে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মাসে সারা দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যকান্ডের শিকার হয়েছেন ১৬২ জন। এর মধ্যে কথিত ক্রসফায়ারে মারা গেছেন ১১০ জন, নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের, গুলিতে নিহত হয়েছেন ৩৮ জন, পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে ৪ জনকে। গত ১১ মাসে ৩৭ ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন। যার মধ্যে গত এপ্রিল মাসেই গুম হয়েছেন ১৮ জন। চলতি বছরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর হাতে ৩৩ জন নিহত ও ৬১ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া ৯৮ জন অপহরণের শিকার হয়েছেন। জেল হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে ৫২ জনের। রাজনৈতিক সহিংসতায় ১৮১ জন নিহত ও ৮ হাজার ৭৫২ জন আহত হয়েছেন। যৌতুক সহিংসতার শিকার হয়েছেন ২৩৭ জন নারী, ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৬১০ জন, যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ২৬০ জন, এসিড সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৬৪ জন। গত এগার মাসে সারা দেশে গণপিটুনির শিকার হয়ে মারা গেছেন ১১০ জন ব্যক্তি।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব অনুযায়ী গত জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১৩৬ জন বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে গ্রেপ্তার ছাড়া ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন ৭০ জন আর গ্রেপ্তারের পর ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন ৪৮ জন। সারা দেশে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় ১৩৭ জন নিহত ও অন্তত ৭২০৪ জন আহত হয়েছেন। আসকের তথ্য অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ৮২ জন গুমের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ২৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ধরে নিয়ে যাওয়ার পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে ১০ জনকে। অপহরণের পর সাত জনকে র্যাব গ্রেপ্তার দেখিয়েছে, এক জনকে থানায় ও দু’জনকে কারাগারে পাওয়া গেছে। এই সময়ে সারা দেশে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন ৯৫ জন। জেল হেফাজতে মারা গেছেন ৪৪ জন। জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বিএসএফের হাতে নিহত হয়েছেন ২৭ জন, আহত হয়েছেন ৫৪ জন, অপহরণের শিকার হয়েছেন ৯১ জন ও অপহরণের পর ফিরে এসেছেন ৪৮ জন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নূর খান বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ক্রমাবনিত হচ্ছে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে আরও বেশি যুক্ত হয়ে পড়ছে। ফলে সাধারণ মানুষকে ভয়ের সংস্কৃতির মধ্যে দিন অতিবাহিত করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বিরোধী মতপোষণকারীদের সমালোচনা সরকার স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে পারছে না। ফলস্বরূপ নানা ধরনের আইন-কানুন তৈরি করে বিভীষিকাময় একটি পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে। নূর খান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে জবাবদিহি নেই। ফলে তাদের হাতে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষকে জীবন দিতে হচ্ছে। বিরোধীদের যৌক্তিক কোন মতামতকেও গ্রহণ করা হচ্ছে না। এটি গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার তাদের এক বিবৃতিতে বলেছে, জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া বিতর্কিত এই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা ক্ষমতাসীনদের হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি অনেক বেড়েছে। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। এছাড়া সংখ্যালঘু নাগরিকদের ওপর হামলা ও নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনাও অব্যাহত আছে। সরকার সমর্থিত ছাত্র ও যুব সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও যুবলীগ রাজনীতিতে সহিংসতা ও দুর্বৃত্তায়নের মূল কেন্দ্রে অবস্থান করছে। মত প্রকাশ ও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, সভা-সমাবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে এবং নিবর্তনমূলক ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করে ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করে ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সংসদ সদস্যদের হাতে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। অধিকার মনে করে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং সব ধরনের অন্যায়-অবিচারের অবসান ঘটাতে বাংলাদেশের জনগণকে সংগঠিত হওয়া এবং সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ছাড়া কোন বিকল্প নেই। তাই মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিটি মানবাধিকার কর্মীসহ জনগণকে সোচ্চার হতে হবে এবং ভিকটিম পরিবারগুলোসহ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে অধিকার।
খুঁড়িয়ে চলছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
জনবল ও অর্থাভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে মানবাধিকার রক্ষার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে ২৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন। এর মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে নিয়োজিত রয়েছেন মাত্র ৮ জন। নিজস্ব ভবন না থাকায় গতি আসছে না কমিশনের কাজে। নিজস্ব কোন তহবিল না থাকায় কমিশনের সেবা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে পারছে না। ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাদ দিয়ে বেসরকারি সাহায্য সংস্থার শরণাপন্ন হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ। চেয়ারম্যানের বক্তৃতা ও বিবৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে কমিশনের কার্যক্রম। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৯ সালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়। ২০১০ সালের ২২শে জুন একজন চেয়ারম্যান, একজন সার্বক্ষণিক সদস্য ও পাঁচজন অবৈতনিক সদস্য নিয়ে কাজ শুরু করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। বতর্মানে এর মোট কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ২৮। প্রাথমিক কাঠামোতে ৯৩ জন লোক নিয়োগের উল্লেখ ছিল। যেখানে বাংলাদেশের তুলনায় ছোট ও কম জনবহুল দেশ নেপালে এ সংখ্যা ৪০০ এবং আফগানিস্তানে ৩৮০ জন। বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে নিয়োজিত আছেন মোট ৮ জন। তাদের মধ্যে সারা দেশ থেকে আসা অভিযোগ গ্রহণ তার ব্যবস্থা গ্রহণের কাজে নিয়োজিত আছেন মাত্র ৩ জন। ২০১৪ সালে মোট ৫৪৭টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে কমিশনে। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ২৯৮টি। এছাড়া ২০১৩ সালে ৪৩৩টি অভিযোগ কমিশনে জমা হয়। নিষ্পত্তি হয়েছে ৩২৫টি। লোকবলের অভাবে তাৎক্ষণিকভাবে অনেক জায়গায় সরজমিনে পরিদর্শন ও তদন্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। নিজস্ব কোন ভবন না থাকায় কমিশনের কার্যক্রমকে সম্প্রসারণ করা যাচ্ছে না। বর্তমানে মগবাজারের শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়কে একটি ভবনের ১২তলায় ছোট্ট পরিসরে কর্মকর্তারা অফিস করছেন। গতকাল সরজমিনে কমিশনের অফিস ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ চেয়ারে লোক নেই। নেই অভিযোগকারীদের ভিড়। কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, দৈনিক সর্বোচ্চ ৬-৭টি অভিযোগ আসে। এর মধ্যে বেশ কিছু অনলাইনে। কমিশনের অবৈতনিক সদস্যরা অফিসে আসেন কদাচিৎ। চেয়ারম্যান ব্যস্ত থাকেন সভা-সেমিনার ও টিভি টক-শো নিয়ে।
এদিকে অর্থাভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়নে হোঁচট খাচ্ছে। কমিশনের আর্থিক স্বাধীনতা থাকলে এখন পর্যন্ত নিজস্ব কোন তহবিল গঠন না হওয়ায় অর্থের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের মুখাপেক্ষী থাকতে হচ্ছে। কোন সভা-সেমিনার আয়োজন করতে অগ্রিম যে অর্থের প্রয়োজন হয় তার সংস্থান নেই কমিশনের। কর্মসূচি বাস্তবায়নের পর ভাউচার দিয়ে পরবর্তীকালে অর্থ সংগ্রহ করতে হয়। রয়েছে যানবাহন সঙ্কট। পর্যাপ্ত গাড়ির অভাবে একই সময়ে ঢাকার বাইরে দুটি কর্মসূচি থাকলে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। সরজমিন তদন্ত করার সুযোগ না থাকায় তথ্য সংগ্রহে গণমাধ্যমের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ঢাকার বাইরে কৌশলে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে কমিশন। জেলা পর্যায়ে লোকবল না থাকায় জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। অর্থের অভাবে আইনজীবী প্যানেল গঠন করতে পারেনি কমিশন। ফলে ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না সংস্থাটি। আইনি সহায়তা পেতে বেসরকারি সাহায্য সংস্থাগুলোর দিকে ঝুঁকছে সাধারণ মানুষ। প্রচার কার্যক্রমে বরাদ্দ না থাকায় তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে কমিশন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, কমিশন তার সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যে কারণে সবার সঙ্গে কাজ করার সক্ষমতা তৈরি হয়নি। এর পরেও আমরা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুম-খুনের ঘটনাগুলো চরম মানবধিকার লঙ্ঘন বলে ধরা হয়। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গুম ও খুনের এসব ঘটনার বেশির ভাগেরই কোন তদন্ত করা হচ্ছে না। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে গুম-অপহণের ঘটনায় থানা পুলিশ মামলা বা জিডি নিতে চায় না। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সবসময় নিখোঁজ হিসেবে থানায় জিডি করতে পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে কোন তদন্ত করা হয় না বললেই চলে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিবর্তনমূলক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬ (সংশোধিত ২০০৯ ও ২০১৩) এর মাধ্যমে সরকার মানবাধিকার রক্ষাকর্মী, সাংবাদিক ও স্বাধীনচেতা মানুষের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সম্প্রতি দেশের কয়েকটি জেলায় ভিন্ন মতাবলম্বীদের গ্রেপ্তারের পর কারাদ- দেয়া হয়েছে। এছাড়া গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সংবাদ ও অনুষ্ঠান সম্প্রচারে বিভিন্ন ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ করে সরকার জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
মানবধিকার সংগঠন অধিকারের তথ্য মতে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মাসে সারা দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যকান্ডের শিকার হয়েছেন ১৬২ জন। এর মধ্যে কথিত ক্রসফায়ারে মারা গেছেন ১১০ জন, নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের, গুলিতে নিহত হয়েছেন ৩৮ জন, পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে ৪ জনকে। গত ১১ মাসে ৩৭ ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন। যার মধ্যে গত এপ্রিল মাসেই গুম হয়েছেন ১৮ জন। চলতি বছরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর হাতে ৩৩ জন নিহত ও ৬১ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া ৯৮ জন অপহরণের শিকার হয়েছেন। জেল হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে ৫২ জনের। রাজনৈতিক সহিংসতায় ১৮১ জন নিহত ও ৮ হাজার ৭৫২ জন আহত হয়েছেন। যৌতুক সহিংসতার শিকার হয়েছেন ২৩৭ জন নারী, ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৬১০ জন, যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ২৬০ জন, এসিড সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৬৪ জন। গত এগার মাসে সারা দেশে গণপিটুনির শিকার হয়ে মারা গেছেন ১১০ জন ব্যক্তি।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব অনুযায়ী গত জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১৩৬ জন বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে গ্রেপ্তার ছাড়া ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন ৭০ জন আর গ্রেপ্তারের পর ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন ৪৮ জন। সারা দেশে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় ১৩৭ জন নিহত ও অন্তত ৭২০৪ জন আহত হয়েছেন। আসকের তথ্য অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ৮২ জন গুমের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ২৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ধরে নিয়ে যাওয়ার পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে ১০ জনকে। অপহরণের পর সাত জনকে র্যাব গ্রেপ্তার দেখিয়েছে, এক জনকে থানায় ও দু’জনকে কারাগারে পাওয়া গেছে। এই সময়ে সারা দেশে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন ৯৫ জন। জেল হেফাজতে মারা গেছেন ৪৪ জন। জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বিএসএফের হাতে নিহত হয়েছেন ২৭ জন, আহত হয়েছেন ৫৪ জন, অপহরণের শিকার হয়েছেন ৯১ জন ও অপহরণের পর ফিরে এসেছেন ৪৮ জন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নূর খান বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ক্রমাবনিত হচ্ছে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে আরও বেশি যুক্ত হয়ে পড়ছে। ফলে সাধারণ মানুষকে ভয়ের সংস্কৃতির মধ্যে দিন অতিবাহিত করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বিরোধী মতপোষণকারীদের সমালোচনা সরকার স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে পারছে না। ফলস্বরূপ নানা ধরনের আইন-কানুন তৈরি করে বিভীষিকাময় একটি পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে। নূর খান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে জবাবদিহি নেই। ফলে তাদের হাতে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষকে জীবন দিতে হচ্ছে। বিরোধীদের যৌক্তিক কোন মতামতকেও গ্রহণ করা হচ্ছে না। এটি গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার তাদের এক বিবৃতিতে বলেছে, জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া বিতর্কিত এই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা ক্ষমতাসীনদের হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি অনেক বেড়েছে। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। এছাড়া সংখ্যালঘু নাগরিকদের ওপর হামলা ও নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনাও অব্যাহত আছে। সরকার সমর্থিত ছাত্র ও যুব সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও যুবলীগ রাজনীতিতে সহিংসতা ও দুর্বৃত্তায়নের মূল কেন্দ্রে অবস্থান করছে। মত প্রকাশ ও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, সভা-সমাবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে এবং নিবর্তনমূলক ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করে ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করে ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সংসদ সদস্যদের হাতে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। অধিকার মনে করে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং সব ধরনের অন্যায়-অবিচারের অবসান ঘটাতে বাংলাদেশের জনগণকে সংগঠিত হওয়া এবং সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ছাড়া কোন বিকল্প নেই। তাই মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিটি মানবাধিকার কর্মীসহ জনগণকে সোচ্চার হতে হবে এবং ভিকটিম পরিবারগুলোসহ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে অধিকার।
খুঁড়িয়ে চলছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
জনবল ও অর্থাভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে মানবাধিকার রক্ষার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে ২৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন। এর মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে নিয়োজিত রয়েছেন মাত্র ৮ জন। নিজস্ব ভবন না থাকায় গতি আসছে না কমিশনের কাজে। নিজস্ব কোন তহবিল না থাকায় কমিশনের সেবা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে পারছে না। ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাদ দিয়ে বেসরকারি সাহায্য সংস্থার শরণাপন্ন হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ। চেয়ারম্যানের বক্তৃতা ও বিবৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে কমিশনের কার্যক্রম। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৯ সালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়। ২০১০ সালের ২২শে জুন একজন চেয়ারম্যান, একজন সার্বক্ষণিক সদস্য ও পাঁচজন অবৈতনিক সদস্য নিয়ে কাজ শুরু করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। বতর্মানে এর মোট কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ২৮। প্রাথমিক কাঠামোতে ৯৩ জন লোক নিয়োগের উল্লেখ ছিল। যেখানে বাংলাদেশের তুলনায় ছোট ও কম জনবহুল দেশ নেপালে এ সংখ্যা ৪০০ এবং আফগানিস্তানে ৩৮০ জন। বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে নিয়োজিত আছেন মোট ৮ জন। তাদের মধ্যে সারা দেশ থেকে আসা অভিযোগ গ্রহণ তার ব্যবস্থা গ্রহণের কাজে নিয়োজিত আছেন মাত্র ৩ জন। ২০১৪ সালে মোট ৫৪৭টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে কমিশনে। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ২৯৮টি। এছাড়া ২০১৩ সালে ৪৩৩টি অভিযোগ কমিশনে জমা হয়। নিষ্পত্তি হয়েছে ৩২৫টি। লোকবলের অভাবে তাৎক্ষণিকভাবে অনেক জায়গায় সরজমিনে পরিদর্শন ও তদন্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। নিজস্ব কোন ভবন না থাকায় কমিশনের কার্যক্রমকে সম্প্রসারণ করা যাচ্ছে না। বর্তমানে মগবাজারের শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়কে একটি ভবনের ১২তলায় ছোট্ট পরিসরে কর্মকর্তারা অফিস করছেন। গতকাল সরজমিনে কমিশনের অফিস ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ চেয়ারে লোক নেই। নেই অভিযোগকারীদের ভিড়। কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, দৈনিক সর্বোচ্চ ৬-৭টি অভিযোগ আসে। এর মধ্যে বেশ কিছু অনলাইনে। কমিশনের অবৈতনিক সদস্যরা অফিসে আসেন কদাচিৎ। চেয়ারম্যান ব্যস্ত থাকেন সভা-সেমিনার ও টিভি টক-শো নিয়ে।
এদিকে অর্থাভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়নে হোঁচট খাচ্ছে। কমিশনের আর্থিক স্বাধীনতা থাকলে এখন পর্যন্ত নিজস্ব কোন তহবিল গঠন না হওয়ায় অর্থের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের মুখাপেক্ষী থাকতে হচ্ছে। কোন সভা-সেমিনার আয়োজন করতে অগ্রিম যে অর্থের প্রয়োজন হয় তার সংস্থান নেই কমিশনের। কর্মসূচি বাস্তবায়নের পর ভাউচার দিয়ে পরবর্তীকালে অর্থ সংগ্রহ করতে হয়। রয়েছে যানবাহন সঙ্কট। পর্যাপ্ত গাড়ির অভাবে একই সময়ে ঢাকার বাইরে দুটি কর্মসূচি থাকলে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। সরজমিন তদন্ত করার সুযোগ না থাকায় তথ্য সংগ্রহে গণমাধ্যমের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ঢাকার বাইরে কৌশলে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে কমিশন। জেলা পর্যায়ে লোকবল না থাকায় জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। অর্থের অভাবে আইনজীবী প্যানেল গঠন করতে পারেনি কমিশন। ফলে ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না সংস্থাটি। আইনি সহায়তা পেতে বেসরকারি সাহায্য সংস্থাগুলোর দিকে ঝুঁকছে সাধারণ মানুষ। প্রচার কার্যক্রমে বরাদ্দ না থাকায় তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে কমিশন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, কমিশন তার সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যে কারণে সবার সঙ্গে কাজ করার সক্ষমতা তৈরি হয়নি। এর পরেও আমরা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করি।
No comments