হাগুপিটে ২১ জনের মৃত্যু, ত্রাণ তৎপরতা শুরু
ফিলিপাইনের পূর্বাঞ্চলে গত শনিবার রাতে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় হাগুপিটে ২১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। গতকাল সোমবার ফিলিপাইন রেডক্রস এ তথ্য জানায়। খবর রয়টার্স ও বিবিসির। এদিকে ঘূর্ণিঝড় হাগুপিট দুর্বল হয়ে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর মধ্যেই অনেক আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পাশাপাশি সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে। ফিলিপাইন রেডক্রসের মহাসচিব গেনডোলিন প্যাং জানান, তাঁরা ২১ জনের প্রাণহানির খবর পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ইস্টার্ন সামার প্রদেশে ২১ জনের প্রাণহানির বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছি আমরা। এর মধ্যে প্রাদেশিক রাজধানী বোরোনগানেই ১৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন।’ ফিলিপাইনের কৃষিমন্ত্রী প্রসেসো অ্যালকালা জানান, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী দুই কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের শস্য ও কৃষি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ধানের আবাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকার প্রাথমিকভাবে ছয় লাখ টন চাল আমদানি করার কথা বিবেচনা করছে। ঘূর্ণিঝড়ের পর উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে সরকার। ঝড়ের প্রভাবে সড়কের ওপর ভেঙে পড়া গাছপালা সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। বিপর্যস্ত বিদ্যুৎব্যবস্থা স্বাভাবিক করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত প্রায় সব এলাকায় গতকালও বিদ্যুৎহীন ছিল।
জিপাপাট শহরের মেয়র ডেলিয়া মনলিয়ন বলেন, ঝড়ের পর পানি পুরোপুরি নেমে না যাওয়ায় অনেকেই বাড়ি ফিরতে পারছেন না। এ মূহূর্তে খাবারসংকট এবং বিদ্যুৎ-বিপর্যয়ই সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক আঞ্চলিক মুখপাত্র অরলা ফাগান জানান, অনেক আশ্রয়কেন্দ্র থেকে লোকজন নিজ নিজ বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। সোমবার সকালের পরিস্থিতি আগের কয়েক দিনের তুলনায় অনেক ভালো ছিল। ফিলিপাইনের সশস্ত্রবাহিনীর প্রধান জেনারেল গ্রেগরিও ক্যাটাপাং গতকাল সংবাদ সম্মেলনে জানান, খাবার প্যাকেট ও পানিসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী দুটি বিমানে করে রোরোনগানে পাঠানো হয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকলাবোন শহর ও তিনটি বিমানবন্দর থেকে ঝড়ের ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ফেলেছেন। হাগুপিটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সামার ও মাসবাতে দ্বীপ। যদিও আশঙ্কার তুলনায় ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। গত বছর দেশটিতে সুপার টাইফুন হাইয়ানে সাত হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। ফস্থানীয় আবহাওয়া সংস্থা জানায়, ঘূর্ণিঝড় হাগুপিটের উৎপত্তি প্রশান্ত মহাসাগরে। ফিলিপাইনে আঘাত হানার সময় এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার।
No comments