চলে গেলেন জোহরা তাজউদ্দীন
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সহধর্মিণী সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন (৮১) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। জোহরা তাজউদ্দীনের মেয়ে মাহজাবীন আহম্মেদ প্রথম আলো ডটকমকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আজ বাদ আসর গুলশানের আজাদ মসজিদে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তাঁর মরদেহ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিকেল ৫টা ১২ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেষ শ্রদ্ধা জানান। এরপর দলীয় সভানেত্রী হিসেবে তিনি জোহরা তাজউদ্দীনের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমুসহ দলের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বাদ মাগরিব সেখানে জোহরা তাজউদ্দীনের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোহরা তাজউদ্দীনের মরদেহ দেখতে ইউনাইটেড হাসপাতালে যান। আরও যান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ এবং দলের কেন্দ্রীয় ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
কোমরের হাড় ভেঙে যাওয়ায় গত ২২ নভেম্বর সকালে জোহরা তাজউদ্দীনকে চিকিত্সার জন্য দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে তাঁকে ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। এরপর তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাঁর অবস্থার আবার অবনতি হতে থাকে।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম প্রথম আলো ডটকমকে জানান, বিকেল পাঁচটায় জোহরা তাজউদ্দীনের দ্বিতীয় জানাজা বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর লাশ ইউনাইটেড হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে। রোববার বনানী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।
১৯৩২ সালের ২৪ ডিসেম্বর সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনের জন্ম। উদার সংস্কৃতিমনা পরিবারে বেড়ে ওঠেন তিনি। অধ্যাপক বাবার সান্নিধ্যে কিশোর বয়স থেকেই সমাজকর্মের প্রতি মনোনিবেশ ছিল তাঁর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞানে পড়াশোনা।
মহিলা পরিষদের সহসভানেত্রী জোহরা নারী মুক্তি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ষাটের দশকের আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন তিনি। ১৯৬৮ সালের গঠিত রাজবন্দী সাহায্য কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন জোহরা। এই কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন আতাউর রহমান খান। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নির্বাচিত হন।
দীর্ঘ দিন আফ্রো-এশীয় গণসংহতি পরিষদের সহসভানেত্রী ছিলেন জোহরা। তিনি এই পরিষদের বিভিন্ন সভা ও সেমিনারে অংশ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যান।
No comments