অবকাঠামো উন্নয়নের তাগিদ



দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের নেতারা শিল্পায়নের স্বার্থে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহসহ অবকাঠামোর উন্নয়নে জোর দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁরা পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন, পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের সমস্যা সমাধান, দেশের উত্তরাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ, দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির জন্য পর্যাপ্ত কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র প্রতিষ্ঠান স্থাপনের তাগিদ দিয়েছেন।
ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) নেতারা এসব দাবি জানান।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি এ কে আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সংগঠনের প্রথম সহসভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালকেরা এবং এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় এ কে আজাদ বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা থেকে উত্তরণ, বিশ্বব্যাপী পরিবেশ বিপর্যয় থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার লক্ষ্যে মেক্সিকোর কানকুনে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের পরিবেশ সম্মেলন, উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ ইত্যাদি কারণে ২০১০ সাল ছিল বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর।
এ কে আজাদ বলেন, ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপী যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছিল, চলতি বছরে বিশ্ব অর্থনীতি তা থেকে কিছুটা পরিত্রাণ পেতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিও এর ব্যতিক্রম নয়। ২০১০-১১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৭ দশমিক ৮০ শতাংশ।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আরও বলেন, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ব্যবসায়ীরা ৬২ হাজার কোটি টাকা সরকারি তহবিলে রাজস্ব দিয়েছেন। ২০১০-১১ অর্থবছরে এই লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৭২ হাজার কোটি টাকা। এতে রাজস্ব প্রদান ২৭ শতাংশ বাড়বে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে দেশে মোট দুই হাজার ৪০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের মধ্যে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ প্রায় এক হাজার ৯৪৯ কোটি ডলার।
এ কে আজাদ বলেন, ২০০৯-১০ অর্থবছরে মোট আমদানি ছিল দুই হাজার ৩৭৪ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি।
এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ সভায় বার্ষিক প্রতিবেদন এবং ২০০৯-১০ অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদন সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়।
বার্ষিক সাধারণ সভার দ্বিতীয় পর্যায়ে বিবিধ আলোচনায় এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ পরিষদের সদস্য বাদল রহমান, খোকা শিকদার, আবু নাসের, আমিনুল ইসলাম, মো. মহিউদ্দিন শেখ, ফজলুর রহমান, ওয়ালিউল বারী চৌধুরী, শাহ আলম সরকার, আবু বক্কর সিদ্দিকী, লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, নাজমুল হক, ওহায়েদ সরকার, আলহাজ আবদুস সালাম, এ কে এম মফিজুর রহমান, শাহাজাদা আনোয়ারুল কাদের, আবদুল হাই, এস এম তোহুয়ার হোসেন, রুহুল আমিন, হারুনুর রশিদ, এস এ কাদের কিরণ, জাহাঙ্গীর আলম, এস এম হারুন-অর রশীদ প্রমুখ অংশ নেন।
সভায় সারা দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যাঁরা দেশের মুক্তিযোদ্ধা আছেন, তাঁদের তালিকা তৈরি এবং প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তালিকা তৈরির জন্য এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আকরাম হোসেনকে আহ্বায়ক এবং সাবেক প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী ও আবুল কাশেম আহমেদকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে একটি কমিটি করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.