মুক্তিযুদ্ধ- বিজয় দিবসঃ অর্জন ও সম্ভাবনা by রেজা নূর
বিজয় দিবস নিয়ে বিগত চলিস্নশ বছরে লেখালেখি বিস্তর হয়েছে। দেশের বিদগ্ধজন অন্তর উজাড় করে হূদয়ের রক্ত নিঙড়ে লিখেছেন আমাদের শ্রেষ্ঠ অর্জন- বিজয় সম্পর্কে। এই লেখাটির অন্দরে যাবার আগে ছোট একটা গল্প বলে নিতে চাই। সত্যি এবং প্রাসঙ্গিক। প্রতি বছর বিশেষ এই দিনে স্কুলে দিনের বেলা খেলাধুলার প্রতিযোগিতা আর রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো।
এখনও হয়। সারাদিনের আনন্দ উলস্নাস শেষে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছি। এসে দেখি বারান্দায় আমার প্রিয় টিয়া পাখির খাঁচাটা রাখা। আমাকে দেখে টিয়াটা ঝটপট করে উঠলো। তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষণ। একটু পর ধীরে ধীরে নিথর হয়ে আসলো পাখিটার শরীর। আমি কিছু বঝে ওঠার আগেই পাশ থেকে কে যেন বললো, পাট কাঠিতে আগুন ধরিয়ে খাঁচায় ঢুকিয়ে পাখনা পুড়িয়ে দিয়েছে কেউ। ছটফট করছিলো খুব। তোর আসা পর্যন্ত মনে হয় অপেক্ষা করছিল। তোকে না দেখে মরতে মন চায়নি ওর। বালক বয়সের সেই বেদনা এখনও বয়ে বেড়াই আমি। খাঁচার ভেতরেও নিরাপদ ছিলো না পাখিটা। উড়বার স্বাধীনতা তো কবেই শেষ হয়েছিলো। দানাপানি দিতে কমতি করিনি কখনও। তারপরও নির্মম মৃতু্যর মুখোমুখি হতে হলো তাকে।
এখনও হয়। সারাদিনের আনন্দ উলস্নাস শেষে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছি। এসে দেখি বারান্দায় আমার প্রিয় টিয়া পাখির খাঁচাটা রাখা। আমাকে দেখে টিয়াটা ঝটপট করে উঠলো। তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষণ। একটু পর ধীরে ধীরে নিথর হয়ে আসলো পাখিটার শরীর। আমি কিছু বঝে ওঠার আগেই পাশ থেকে কে যেন বললো, পাট কাঠিতে আগুন ধরিয়ে খাঁচায় ঢুকিয়ে পাখনা পুড়িয়ে দিয়েছে কেউ। ছটফট করছিলো খুব। তোর আসা পর্যন্ত মনে হয় অপেক্ষা করছিল। তোকে না দেখে মরতে মন চায়নি ওর। বালক বয়সের সেই বেদনা এখনও বয়ে বেড়াই আমি। খাঁচার ভেতরেও নিরাপদ ছিলো না পাখিটা। উড়বার স্বাধীনতা তো কবেই শেষ হয়েছিলো। দানাপানি দিতে কমতি করিনি কখনও। তারপরও নির্মম মৃতু্যর মুখোমুখি হতে হলো তাকে।
আমাদের উপ-মহাদেশের বিশাল ভূ-ভাগে দুশ বছর খাঁচাবন্দী ছিলাম আমরা। গর্জে উঠলেই মৃতু্য নিশ্চিত। তারপরও হাজী শরীয়ত উলস্নাহ, বেরেলভী, তীতুমীর, ক্ষুদিরামরা নীরব থাকেননি। পরাধীনতার একশ' বছর পরও বিপস্নবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাহাদুর শাহ। তার নামের পার্কের বৃক্ষলতায় এখনও গান করে পাখিরা। ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জ্বলজ্বলে হয়ে আছে প্রতিবাদের সাক্ষর। এক রোদে তাতানো দিনে একাকী বসেছিলাম ঐ পার্কে। চারদিক থেকে রিকশা, বাস, নানা যানবাহন আর টমটমের শব্দ ঘোরের মতো লাগতে লাগলো। মনে হলো, এই যে আমি মুক্ত ভূমির ছায়াঘেরা শান্ত জায়গাটিতে বসে থাকতে পারছি এর পেছনে আমার দেশের কত বীর নর-নারীর ত্যাগ রয়েছে তা-কি আমি জানি? আমরা জানি না, না-কি জানতে চাই না, নয় মাস কী নিদারুণ সময় কেটেছে আমাদের। মনে হয়, বাংলার সত্যিকার সন্তান এমন কেউ ছিলো না যে, প্রতিটি মুহূর্তে বদ্ধ খাঁচার হাওয়ার বদলে মুক্তির দীর্ঘ প্রশ্বাস প্রাণ ভরে নিতে চায়নি। সবার সম্মিলিত প্রয়াসে মুক্তি হয়েছিলো ১৬, ডিসেম্বর- বিজয় দিবসে।
উৎসর্গ কাকে বলে, জীবন দান কীরকম আমরা সত্যিই জানি না। কী সুন্দর বুক ফুলিয়ে হেঁটে বেড়াই। যা খুশি তা করি। আইরিশ নাট্যকার ও দার্শনিক বার্নার্ড শ' কারও ব্যক্তি স্বাধীনতা অন্যের নাকের ডগা পর্যন্ত বলেছিলেন। আজ আমাদের দেশে নাক তো দূর, জীবন পদ-দলিত, পিঁপড়ের সারির মতো। অতিথি পরায়ণ হিসাবে আমাদের সুনাম বিশ্বময়-অযথা দলিত করার প্রতিদান কেমন হয় তাও দেখিয়ে দিয়েছি আমরা যুগে যুগে।
দেশে, দিক-নির্দেশনা দেবার মতো জ্ঞানী আর অভিজ্ঞজনের অভাব বলে মনে করি না। যে বাংলার মাটিতে জন্মেছিলেন অতীশ দীপঙ্কর, আলাওল, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধূসুদন দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলামের মতো সূর্য সেই বাংলা আজও অন্ধকারে কেন? মুক্তিযুদ্ধ আপামর সবার অর্জন। সারাটা দেশ এক দেহে পরিণত হয়ে এনেছিলো নিজস্বতা। আজ নিজেদের মধ্যেই কেন থাকবে হানাহানি? বঙ্গবন্ধুর উদাত্ত আহবান 'বাংলার মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো, ইনশালস্নাহ'-এ-কি শুধুই কথার কথা ছিলো? আমাদেরকে কি মুক্ত করে ছেড়েই দেয়া হয়েছে? নাকি মুক্তির সাথে পথ, পথ- নির্দেশনা ও নির্দেশকও আছে? যত দিন না আমরা ব্যক্তিস্বার্থ ত্যাগ বা দল-মগ্নতা মুক্ত হতে পারছি, ততদিন সব পথ, সব নির্দেশ ও নির্দেশক কুয়াশাময় হয়েই থাকবে।
=========================
একটি ট্রেন জার্নির ছবি ও মাইকেলের জীবন দর্শন ডক্টর ইউনূসকে নিয়ে বিতর্ক উচ্চশিক্ষায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাবনা বাংলাদেশ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ক্ষুদ্রঋণ ও বাংলাদেশের দারিদ্র্য শেয়ারবাজারে লঙ্কাকাণ্ড মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার শক্ত ভিত ছাড়া উঁচু ভবন হয় না ট্রেন টু বেনাপোল বনের নাম দুধপুকুরিয়া নথি প্রকাশ অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার অ্যাসাঞ্জের ছিটমহলবাসীর নাগরিক অধিকার শিক্ষা আসলে কোনটা জীবন ব্যাকরণঃ হিরালি ন্যাটো ও রাশিয়ার সমঝোতা ইরানের ওপর কি প্রভাব ফেলবে জার্নি বাই ট্রেন পারিষদদলে বলেঃ চরাঞ্চলের ভূমি ব্যবস্থাপনা সচেতন হলে শিশু প্রতিবন্ধী হয় না স্মৃতির জানালায় বিজয়ের মাস বিচারপতিদের সামনে যখন ‘ঘুষ’ কয়লানীতিঃ প্রথম থেকে দশম খসড়ার পূর্বাপর শ্বাপদসংকুল পথ মুক্তিযুদ্ধে গ্রাম ১২ বছর আগে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে চট্টগ্রাম ইপিজেডে সংঘর্ষে নিহত ৪ ড. ইউনূস : প্রতিটি বাংলাদেশির গৌরব জলাভূমিবাসীদের দুনিয়ায় আবার.. আসুন, আমরা গর্বিত নাগরিক হই স্মৃতির শহীদ মির্জা লেন ইয়াংওয়ান গ্রুপের পোশাক কারখানা বন্ধ ট্রানজিটে ১১ খাতের লাভ-ক্ষতির হিসাব শুরু চট্টগ্রামের বনাঞ্চল ছাড়ছে হাতি ট্রেন স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধের বিচার মানবাধিকার লঙ্ঘন দেশে দেশে ক্ষমতা যেভাবে মানবাধিকার আর ন্যায়বিচারের পথ রুদ্ধ করে চাক্কু মারা 'মশা' কাহিনী উল্কির ভেলকি এইচআইভি/এইডস্
দৈনিক ইত্তেফাক এর সৌজন্যে
লেখকঃ রেজা নূর
কলেজ শিক্ষক
এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
একটি ট্রেন জার্নির ছবি ও মাইকেলের জীবন দর্শন ডক্টর ইউনূসকে নিয়ে বিতর্ক উচ্চশিক্ষায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাবনা বাংলাদেশ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ক্ষুদ্রঋণ ও বাংলাদেশের দারিদ্র্য শেয়ারবাজারে লঙ্কাকাণ্ড মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার শক্ত ভিত ছাড়া উঁচু ভবন হয় না ট্রেন টু বেনাপোল বনের নাম দুধপুকুরিয়া নথি প্রকাশ অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার অ্যাসাঞ্জের ছিটমহলবাসীর নাগরিক অধিকার শিক্ষা আসলে কোনটা জীবন ব্যাকরণঃ হিরালি ন্যাটো ও রাশিয়ার সমঝোতা ইরানের ওপর কি প্রভাব ফেলবে জার্নি বাই ট্রেন পারিষদদলে বলেঃ চরাঞ্চলের ভূমি ব্যবস্থাপনা সচেতন হলে শিশু প্রতিবন্ধী হয় না স্মৃতির জানালায় বিজয়ের মাস বিচারপতিদের সামনে যখন ‘ঘুষ’ কয়লানীতিঃ প্রথম থেকে দশম খসড়ার পূর্বাপর শ্বাপদসংকুল পথ মুক্তিযুদ্ধে গ্রাম ১২ বছর আগে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে চট্টগ্রাম ইপিজেডে সংঘর্ষে নিহত ৪ ড. ইউনূস : প্রতিটি বাংলাদেশির গৌরব জলাভূমিবাসীদের দুনিয়ায় আবার.. আসুন, আমরা গর্বিত নাগরিক হই স্মৃতির শহীদ মির্জা লেন ইয়াংওয়ান গ্রুপের পোশাক কারখানা বন্ধ ট্রানজিটে ১১ খাতের লাভ-ক্ষতির হিসাব শুরু চট্টগ্রামের বনাঞ্চল ছাড়ছে হাতি ট্রেন স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধের বিচার মানবাধিকার লঙ্ঘন দেশে দেশে ক্ষমতা যেভাবে মানবাধিকার আর ন্যায়বিচারের পথ রুদ্ধ করে চাক্কু মারা 'মশা' কাহিনী উল্কির ভেলকি এইচআইভি/এইডস্
দৈনিক ইত্তেফাক এর সৌজন্যে
লেখকঃ রেজা নূর
কলেজ শিক্ষক
এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
No comments