১০০ কোটি ডলার ঋণ দেবে আইএমএফ
বাংলাদেশের লেনদেনের ভারসাম্যের ওপর বড় ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে। এই চাপ মোকাবিলায় সহায়তা হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ডলার ঋণ-সুবিধা দেবে।
বাংলাদেশ সফররত আইএমএফের একটি মিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের এ কথা জানান। আইএমএফ মিশনপ্রধান ডেভিড কোয়েন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
গতকাল সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এলেইন গোল্ডস্টেইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আইএমএফ বিকেলে আরেক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, বাংলাদেশকে যে ১০০ কোটি ডলার দেওয়া হবে, তা যথেষ্ট সহজ শর্তে দেওয়া হবে। তবে এই ঋণসুবিধা পাওয়ার জন্য কতগুলো বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুসরণ করতে হবে।
এই সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফ পুঁজিবাজারে দেশের ব্যাংক খাতের ঝুঁকিপূর্ণ সংশ্লিষ্টতার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
অর্থমন্ত্রী: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, সম্প্রসারিত ঋণসুবিধার (ইসিএফ) আওতায় আগামী তিন বছরের জন্য এ ঋণ দেবে আইএমএফ। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় আইএমএফের পরিচালনা পর্ষদ সভায় বিষয়টি অনুমোদন পাবে বলে তিনি আশাবাদী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, গত তিন বছর বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনের ভারসাম্য ইতিবাচক থাকলেও চলতি অর্থবছরে তা কিছুটা অবনতির দিকে।
তিন কারণে লেনদেনের ভারসাম্যের এই নেতিবাচক পরিস্থিতি বলে অর্থমন্ত্রী মনে করেন। এগুলো হচ্ছে, রপ্তানি-আয়ের তুলনায় আমদানি-ব্যয় বেড়ে যাওয়া, প্রবাসী-আয় (রেমিট্যান্স) কমে যাওয়া এবং বিদেশে বাংলাদেশি বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়া।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সাধারণত যেসব দেশে লেনদেনের ভারসাম্যে ঘাটতি রয়েছে, আইএমএফ সেসব দেশকে ঋণ দিয়ে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশে লেনদেনের ভারসাম্যে ঘাটতি রয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি ২০১০-১১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে লেনদেনের সার্বিক ভারসাম্যে ৪২ কোটি ৬০ লাখ ডলারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে সার্বিক ভারসাম্যে ১৩৩ কোটি ৪০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত দেখা দেয়।
আবুল মাল আবদুল মুহিত আরও বলেন, ‘১০০ কোটি ডলারের কর্মসূচিটি আমরাই ঠিক করেছি। এতে কোনো শর্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়নি।’
অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আইএমএফের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে তারা অপ্রয়োজনীয় হয়ে উঠছে কি না। যেমন—গত অর্থবছরে লেনদেনের ভারসাম্য যখন ভালো ছিল, আইএমএফের কর্মসূচি থেকে তখন বাংলাদেশও বেরিয়ে এসেছিল।
যদি গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়, তাহলে আগামী বছরের শুরুতে সিএনজির দাম বাড়তে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে ফার্নেস তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সিএনজির দামও আন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গে সমন্বয় করা উচিত।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ভর্তুকি দিয়ে আর কুলোতে পারছি না।’ তবে যা কিছু হবে পরিকল্পনামাফিকই হবে বলে জানান তিনি।
মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আইন সংশোধন আয়করের ওপর নতুন আইন হওয়ার কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী জানান, মূসক আইনের সংশোধনের বিষয়টি চূড়ান্ত। আর নতুন আয়কর আইন হবে ২০১১ সালের মধ্যে।
আইএমএফের ব্রিফিং: বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফের পক্ষ থেকে তাদের মিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে বক্তব্য তুলে ধরা হয়। এতে বাংলাদেশ সফররত আইএমএফ মিশনপ্রধান ডেভিড কোয়েন মূল বক্তব্য দেন।
এ সময় ব্যাংক খাতকে পুঁজিবাজারে অস্থিরতার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে এই আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) সঙ্গে মিলে পদক্ষেপ নেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়।
ডেভিড কোয়েন বলেন, আইএমএফ বাংলাদেশের আর্থিক খাতের আরও সংস্কার দেখতে চায়। আর এই সংস্কারের ক্ষেত্রে আর্থিক খাতের কর্মকাণ্ডে নজরদারি ও তদারকি বাড়ানো খুব জরুরি। বিশেষত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন নতুনভাবে নির্ধারিত পর্যাপ্ত মূলধন অনুপাত রক্ষা করে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
সম্প্রতি পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্টতা বেড়ে যাওয়ায় তা এই খাতের জন্য ঝুঁকি বাড়িয়ে উদ্বেগের কারণ হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
ডেভিড কোয়েন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে এই ঝুঁকি কমাতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে, যা ব্যাংকগুলোকে যথাযথভাবে পরিপালন করতে হবে। ঝুঁকির মাত্রা কমাতে প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শেয়ারবাজারে অতিরিক্ত সংশ্লিষ্টতার কারণে ঝুঁকি বেড়ে গিয়ে দেশে কোনো ব্যাংকে লালবাতি জ্বলতে পারে কি না জানতে চাইলে ডেভিড কোয়েন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
আইএমএফ মিশনপ্রধান আর্থিক খাত সংস্কারের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি তিনি রাজস্ব খাতে অধিকতর সংস্কার ও আরও বাণিজ্য উদারীকরণের তাগিদ দেন।
সম্প্রসারিত ঋণ-সুবিধার (ইসিএফ) আওতায় ডেভিড আরও জানান, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে আইএমএফের কাছে চিঠি লিখতে হবে, যা কিনা ইচ্ছাপত্র (লেটার অব ইনটেন্ট) হিসেবে পরিচিত। এর সঙ্গে তিন বছরের করণীয় সম্পর্কে মেমোরেন্ডাম দিতে হবে, যেখানে সরকার যেসব সংস্কারমূলক কর্মসূচি নেবে, তার উল্লেখ থাকবে।
মূল্যস্ফীতির চাপ প্রশমনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। এ প্রসঙ্গে ডেভিড কোয়েন বলেন, ‘মুদ্রানীতিকে যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণমূলক করতে হবে।’
তাহলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আইএমএফ সুদের হার বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছে কি না—জানতে চাইলে ডেভিড কোয়েন বলেন, ‘আইএমএফ সব সময়ই সুদের হার নির্ধারণে নমনীয়তার পক্ষে। বিশ্ব আর্থিক সংকট কেটে যাওয়ার পর থেকেই আমরা ঋণের সুদের হারের সর্বোচ্চ সীমা তুলে নেওয়ার কথা বলছি।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইএমএফ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর বিশেষত জ্বালানি খাতের সংস্থাগুলোর লোকসান কমানোর জন্য তাগিদ দিয়েছে। এ জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যয় কমিয়ে আনতে হবে। আর তা করতে গেলে জ্বালানির মূল্য সমন্বয় করা প্রয়োজন। তবে যারা নাজুক জনগোষ্ঠী, জ্বালানির দাম সমন্বয় হলে তাদের জন্য সুরক্ষার ব্যবস্থা যেন থাকে, সেদিকে সরকারকে নজর দিতে হবে।
বাংলাদেশ সফররত আইএমএফের একটি মিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের এ কথা জানান। আইএমএফ মিশনপ্রধান ডেভিড কোয়েন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
গতকাল সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এলেইন গোল্ডস্টেইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আইএমএফ বিকেলে আরেক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, বাংলাদেশকে যে ১০০ কোটি ডলার দেওয়া হবে, তা যথেষ্ট সহজ শর্তে দেওয়া হবে। তবে এই ঋণসুবিধা পাওয়ার জন্য কতগুলো বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুসরণ করতে হবে।
এই সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফ পুঁজিবাজারে দেশের ব্যাংক খাতের ঝুঁকিপূর্ণ সংশ্লিষ্টতার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
অর্থমন্ত্রী: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, সম্প্রসারিত ঋণসুবিধার (ইসিএফ) আওতায় আগামী তিন বছরের জন্য এ ঋণ দেবে আইএমএফ। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় আইএমএফের পরিচালনা পর্ষদ সভায় বিষয়টি অনুমোদন পাবে বলে তিনি আশাবাদী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, গত তিন বছর বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনের ভারসাম্য ইতিবাচক থাকলেও চলতি অর্থবছরে তা কিছুটা অবনতির দিকে।
তিন কারণে লেনদেনের ভারসাম্যের এই নেতিবাচক পরিস্থিতি বলে অর্থমন্ত্রী মনে করেন। এগুলো হচ্ছে, রপ্তানি-আয়ের তুলনায় আমদানি-ব্যয় বেড়ে যাওয়া, প্রবাসী-আয় (রেমিট্যান্স) কমে যাওয়া এবং বিদেশে বাংলাদেশি বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়া।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সাধারণত যেসব দেশে লেনদেনের ভারসাম্যে ঘাটতি রয়েছে, আইএমএফ সেসব দেশকে ঋণ দিয়ে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশে লেনদেনের ভারসাম্যে ঘাটতি রয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি ২০১০-১১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে লেনদেনের সার্বিক ভারসাম্যে ৪২ কোটি ৬০ লাখ ডলারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে সার্বিক ভারসাম্যে ১৩৩ কোটি ৪০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত দেখা দেয়।
আবুল মাল আবদুল মুহিত আরও বলেন, ‘১০০ কোটি ডলারের কর্মসূচিটি আমরাই ঠিক করেছি। এতে কোনো শর্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়নি।’
অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আইএমএফের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে তারা অপ্রয়োজনীয় হয়ে উঠছে কি না। যেমন—গত অর্থবছরে লেনদেনের ভারসাম্য যখন ভালো ছিল, আইএমএফের কর্মসূচি থেকে তখন বাংলাদেশও বেরিয়ে এসেছিল।
যদি গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়, তাহলে আগামী বছরের শুরুতে সিএনজির দাম বাড়তে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে ফার্নেস তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সিএনজির দামও আন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গে সমন্বয় করা উচিত।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ভর্তুকি দিয়ে আর কুলোতে পারছি না।’ তবে যা কিছু হবে পরিকল্পনামাফিকই হবে বলে জানান তিনি।
মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আইন সংশোধন আয়করের ওপর নতুন আইন হওয়ার কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী জানান, মূসক আইনের সংশোধনের বিষয়টি চূড়ান্ত। আর নতুন আয়কর আইন হবে ২০১১ সালের মধ্যে।
আইএমএফের ব্রিফিং: বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফের পক্ষ থেকে তাদের মিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে বক্তব্য তুলে ধরা হয়। এতে বাংলাদেশ সফররত আইএমএফ মিশনপ্রধান ডেভিড কোয়েন মূল বক্তব্য দেন।
এ সময় ব্যাংক খাতকে পুঁজিবাজারে অস্থিরতার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে এই আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) সঙ্গে মিলে পদক্ষেপ নেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়।
ডেভিড কোয়েন বলেন, আইএমএফ বাংলাদেশের আর্থিক খাতের আরও সংস্কার দেখতে চায়। আর এই সংস্কারের ক্ষেত্রে আর্থিক খাতের কর্মকাণ্ডে নজরদারি ও তদারকি বাড়ানো খুব জরুরি। বিশেষত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন নতুনভাবে নির্ধারিত পর্যাপ্ত মূলধন অনুপাত রক্ষা করে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
সম্প্রতি পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্টতা বেড়ে যাওয়ায় তা এই খাতের জন্য ঝুঁকি বাড়িয়ে উদ্বেগের কারণ হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
ডেভিড কোয়েন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে এই ঝুঁকি কমাতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে, যা ব্যাংকগুলোকে যথাযথভাবে পরিপালন করতে হবে। ঝুঁকির মাত্রা কমাতে প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শেয়ারবাজারে অতিরিক্ত সংশ্লিষ্টতার কারণে ঝুঁকি বেড়ে গিয়ে দেশে কোনো ব্যাংকে লালবাতি জ্বলতে পারে কি না জানতে চাইলে ডেভিড কোয়েন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
আইএমএফ মিশনপ্রধান আর্থিক খাত সংস্কারের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি তিনি রাজস্ব খাতে অধিকতর সংস্কার ও আরও বাণিজ্য উদারীকরণের তাগিদ দেন।
সম্প্রসারিত ঋণ-সুবিধার (ইসিএফ) আওতায় ডেভিড আরও জানান, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে আইএমএফের কাছে চিঠি লিখতে হবে, যা কিনা ইচ্ছাপত্র (লেটার অব ইনটেন্ট) হিসেবে পরিচিত। এর সঙ্গে তিন বছরের করণীয় সম্পর্কে মেমোরেন্ডাম দিতে হবে, যেখানে সরকার যেসব সংস্কারমূলক কর্মসূচি নেবে, তার উল্লেখ থাকবে।
মূল্যস্ফীতির চাপ প্রশমনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। এ প্রসঙ্গে ডেভিড কোয়েন বলেন, ‘মুদ্রানীতিকে যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণমূলক করতে হবে।’
তাহলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আইএমএফ সুদের হার বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছে কি না—জানতে চাইলে ডেভিড কোয়েন বলেন, ‘আইএমএফ সব সময়ই সুদের হার নির্ধারণে নমনীয়তার পক্ষে। বিশ্ব আর্থিক সংকট কেটে যাওয়ার পর থেকেই আমরা ঋণের সুদের হারের সর্বোচ্চ সীমা তুলে নেওয়ার কথা বলছি।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইএমএফ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর বিশেষত জ্বালানি খাতের সংস্থাগুলোর লোকসান কমানোর জন্য তাগিদ দিয়েছে। এ জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যয় কমিয়ে আনতে হবে। আর তা করতে গেলে জ্বালানির মূল্য সমন্বয় করা প্রয়োজন। তবে যারা নাজুক জনগোষ্ঠী, জ্বালানির দাম সমন্বয় হলে তাদের জন্য সুরক্ষার ব্যবস্থা যেন থাকে, সেদিকে সরকারকে নজর দিতে হবে।
No comments