গর্বের কাবাডিতে কলঙ্কের দাগ
নাসারা জিমনেসিয়ামে তখন সন্ধ্যা। একই সঙ্গে সন্ধ্যা নেমেছে বাংলাদেশের কাবাডির আকাশেও। এশিয়ান গেমসে এই প্রথম পদকশূন্য বাংলাদেশ পুরুষ কাবাডি।
পাকিস্তানের কাছে শেষ ম্যাচে পরাজয় ধরেই নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাই বলে ৩৬-১১ পয়েন্টে! জাপানের কাছে অপ্রত্যাশিত হার (১৫-১৪) দিয়ে বাংলাদেশের কাবাডির দৈন্যদশা প্রদর্শনের শুরু। মালয়েশিয়াকে হারানোয় অন্তত ব্রোঞ্জ পাওয়ার জন্য পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না। জয় দূরে থাক, বাংলাদেশ দাঁড়াতেই পারেনি।
বাংলাদেশ দল আগে ৩০-৩৫ পয়েন্ট সব সময় পেত কাছাকাছি মানের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে। কিন্তু এই দল কতটা দুর্বল হলে দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র পাঁচ পয়েন্টের বেশি তুলতে পারে না! একজন ভালো রেইডার নেই, নেই ক্যাচার। কিছুই নেই এই দলের। ফিটনেস, মানসিক শক্তির অভাব ফুটে উঠেছে খেলায়।
পাকিস্তানের কোচ পর্যন্ত মহা বিস্মিত, ‘বাংলাদেশের এই দলটি কোনো মানেরই না! স্কিল-টেকনিক-ট্যাকটিকস বলে কিছু নেই। বাংলাদেশের সঙ্গে অতীতে বহু ম্যাচ খেলেছি, কিন্তু এমন দুর্বল দল কখনো পাইনি।’
দল তো দুর্বল হবেই। দল গঠন নিয়ে ফেডারেশন করেছে স্বেচ্ছাচারিতা। অনেকে যাঁকে বিশ্বসেরা রেইডার মনে করেন, সেই জিয়াউর রহমানকে ফিটনেসের অজুহাতে দলে নেওয়া হয়নি। নিজেদের পছন্দের খেলোয়াড় বেছে নিয়ে এটিকে এমনই দুর্বল করে ফেলেছে ফেডারেশন যে, দলটি পাকিস্তানের বিপক্ষে চারবার অলআউট হয়ে ৮ পয়েন্টের লোনা দিয়েছে!
পছন্দের লোককে কোচ বানানো, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব—কাবাডি ফেডারেশন চলছে অদ্ভুত উটের পিঠে! দলের প্রয়োজনে নয়, অমুককে বিদেশে পাঠাতে হবে তাই একজনকে ধরে নিয়ে দলের সঙ্গে যোগ করে দেওয়া হয়।
কর্তাদের কোনো অনুশোচনা নেই। দল গঠন বিতর্ক, জিয়াকে না আনা, জাপানের কাছে হার প্রভৃতি বিষয়ে প্রশ্ন করলে দলের ম্যানেজার মুকিদুর রহমান উল্টো সাংবাদিকদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন! ‘আপনারা বিদেশে এসে কাকে দলে নেওয়া হলো-কাকে নয়, এসব নিয়ে কথা বলছেন কেন? আপনাদের তো দেশপ্রেমই নেই’—বলে বসলেন তিনি। দল নির্বাচন ও ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন করলে দেশপ্রেম চলে যায়! হায়, ইনিই আবার কাবাডি ফেডারেশনের সহসভাপতি! ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুনীর হোসেন জিমনেসিয়ামেই ছিলেন। কিন্তু সাংবাদিকেরা কথা বলতে চাইলেও তিনি আসেননি। বিচারকের আসনে বসে ছিলেন। দেশের কাবাডিকে ধ্বংসের প্রান্তে নিয়ে কর্তারা বিচারকের আসনে বসে মর্যাদা লাভ করেন। কাবাডি তাতে কোন উন্নতির সিঁড়ি দেখে?
১৯৯০ এশিয়ান গেমসে অভিষেকে রুপাজয়ী বাংলাদেশ ’৯৪-এ রুপা, ’৯৮ সালে ব্রোঞ্জ, ২০০২ সালে রুপা ও গতবার ব্রোঞ্জ পেয়েছে। এবার শূন্য হাত। মেয়েদের দল একটি ব্রোঞ্জ নিশ্চিত করলেও ছেলেদের ব্যর্থতা বড় হয়ে উঠেছে এর চেয়েও।
দুঃসংবাদ, ২০১৪ ইনচন এশিয়াডে কাবাডি নেই। জাতীয় খেলার পতাকা নিয়ে এত দিন এশিয়াড থেকে কিছু নিয়ে ফেরা যেত। সেটি আর হবে না। অবশ্য পরের গেমসে থাকলেও কিছু নিয়ে কি ফেরা যেত? কাবাডি তো হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে চলে গেছে!
তবে এমন ব্যর্থতাও বাংলাদেশ পুরুষ দলকে খুব স্পর্শ করেছে বলে মনে হলো না। অধিনায়ক মোশাররফ হোসেন নির্বিকার ভঙ্গিতে বললেন, ‘আমাদের একজন প্লেয়ার ইনজুরিতে। আমরা ভালো খেলতে পারিনি। পাকিস্তান খুব ভালো দল আমাদের চেয়ে।’
পুরুষ কাবাডির ব্যর্থতার দিনে অন্য খেলাতেও বাংলাদেশ ছিল যাচ্ছেতাই। নাজমুন নাহার বিউটি ২০০ মিটার স্প্রিন্টের হিটে ছয়জনে ষষ্ঠ, আর্চারিতে ইমদাদুল হক মিলন ও শেখ সজীব শেষ ষোলোয় প্রতিপক্ষের কাছে হেরেছেন সবচেয়ে বাজেভাবে। কারাতেতে জ প্রু ও হোসেন খানও ৫-০ পয়েন্টে হেরেছেন, শুধু শামীম ওসমান একটা পয়েন্ট তুলতে পেরেছেন।
পাকিস্তানের কাছে শেষ ম্যাচে পরাজয় ধরেই নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাই বলে ৩৬-১১ পয়েন্টে! জাপানের কাছে অপ্রত্যাশিত হার (১৫-১৪) দিয়ে বাংলাদেশের কাবাডির দৈন্যদশা প্রদর্শনের শুরু। মালয়েশিয়াকে হারানোয় অন্তত ব্রোঞ্জ পাওয়ার জন্য পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না। জয় দূরে থাক, বাংলাদেশ দাঁড়াতেই পারেনি।
বাংলাদেশ দল আগে ৩০-৩৫ পয়েন্ট সব সময় পেত কাছাকাছি মানের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে। কিন্তু এই দল কতটা দুর্বল হলে দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র পাঁচ পয়েন্টের বেশি তুলতে পারে না! একজন ভালো রেইডার নেই, নেই ক্যাচার। কিছুই নেই এই দলের। ফিটনেস, মানসিক শক্তির অভাব ফুটে উঠেছে খেলায়।
পাকিস্তানের কোচ পর্যন্ত মহা বিস্মিত, ‘বাংলাদেশের এই দলটি কোনো মানেরই না! স্কিল-টেকনিক-ট্যাকটিকস বলে কিছু নেই। বাংলাদেশের সঙ্গে অতীতে বহু ম্যাচ খেলেছি, কিন্তু এমন দুর্বল দল কখনো পাইনি।’
দল তো দুর্বল হবেই। দল গঠন নিয়ে ফেডারেশন করেছে স্বেচ্ছাচারিতা। অনেকে যাঁকে বিশ্বসেরা রেইডার মনে করেন, সেই জিয়াউর রহমানকে ফিটনেসের অজুহাতে দলে নেওয়া হয়নি। নিজেদের পছন্দের খেলোয়াড় বেছে নিয়ে এটিকে এমনই দুর্বল করে ফেলেছে ফেডারেশন যে, দলটি পাকিস্তানের বিপক্ষে চারবার অলআউট হয়ে ৮ পয়েন্টের লোনা দিয়েছে!
পছন্দের লোককে কোচ বানানো, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব—কাবাডি ফেডারেশন চলছে অদ্ভুত উটের পিঠে! দলের প্রয়োজনে নয়, অমুককে বিদেশে পাঠাতে হবে তাই একজনকে ধরে নিয়ে দলের সঙ্গে যোগ করে দেওয়া হয়।
কর্তাদের কোনো অনুশোচনা নেই। দল গঠন বিতর্ক, জিয়াকে না আনা, জাপানের কাছে হার প্রভৃতি বিষয়ে প্রশ্ন করলে দলের ম্যানেজার মুকিদুর রহমান উল্টো সাংবাদিকদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন! ‘আপনারা বিদেশে এসে কাকে দলে নেওয়া হলো-কাকে নয়, এসব নিয়ে কথা বলছেন কেন? আপনাদের তো দেশপ্রেমই নেই’—বলে বসলেন তিনি। দল নির্বাচন ও ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন করলে দেশপ্রেম চলে যায়! হায়, ইনিই আবার কাবাডি ফেডারেশনের সহসভাপতি! ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুনীর হোসেন জিমনেসিয়ামেই ছিলেন। কিন্তু সাংবাদিকেরা কথা বলতে চাইলেও তিনি আসেননি। বিচারকের আসনে বসে ছিলেন। দেশের কাবাডিকে ধ্বংসের প্রান্তে নিয়ে কর্তারা বিচারকের আসনে বসে মর্যাদা লাভ করেন। কাবাডি তাতে কোন উন্নতির সিঁড়ি দেখে?
১৯৯০ এশিয়ান গেমসে অভিষেকে রুপাজয়ী বাংলাদেশ ’৯৪-এ রুপা, ’৯৮ সালে ব্রোঞ্জ, ২০০২ সালে রুপা ও গতবার ব্রোঞ্জ পেয়েছে। এবার শূন্য হাত। মেয়েদের দল একটি ব্রোঞ্জ নিশ্চিত করলেও ছেলেদের ব্যর্থতা বড় হয়ে উঠেছে এর চেয়েও।
দুঃসংবাদ, ২০১৪ ইনচন এশিয়াডে কাবাডি নেই। জাতীয় খেলার পতাকা নিয়ে এত দিন এশিয়াড থেকে কিছু নিয়ে ফেরা যেত। সেটি আর হবে না। অবশ্য পরের গেমসে থাকলেও কিছু নিয়ে কি ফেরা যেত? কাবাডি তো হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে চলে গেছে!
তবে এমন ব্যর্থতাও বাংলাদেশ পুরুষ দলকে খুব স্পর্শ করেছে বলে মনে হলো না। অধিনায়ক মোশাররফ হোসেন নির্বিকার ভঙ্গিতে বললেন, ‘আমাদের একজন প্লেয়ার ইনজুরিতে। আমরা ভালো খেলতে পারিনি। পাকিস্তান খুব ভালো দল আমাদের চেয়ে।’
পুরুষ কাবাডির ব্যর্থতার দিনে অন্য খেলাতেও বাংলাদেশ ছিল যাচ্ছেতাই। নাজমুন নাহার বিউটি ২০০ মিটার স্প্রিন্টের হিটে ছয়জনে ষষ্ঠ, আর্চারিতে ইমদাদুল হক মিলন ও শেখ সজীব শেষ ষোলোয় প্রতিপক্ষের কাছে হেরেছেন সবচেয়ে বাজেভাবে। কারাতেতে জ প্রু ও হোসেন খানও ৫-০ পয়েন্টে হেরেছেন, শুধু শামীম ওসমান একটা পয়েন্ট তুলতে পেরেছেন।
No comments