আলোচনা- 'সেই আমি এই আমি' by আতিকুল হক চৌঁধুরী

মনে আছে, ব্রিটিশ আমলে সেই ত্রিশের সময় আমার বাল্যজীবন শুরু হয়েছিল সেই ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন থানায়, যেখানে আমার মরহুম আব্বা সেরাজুল হক চৌধুরী সাবরেজিস্ট্রার ছিলেন। আব্বার রংটা চাপা হলেও চেহারাটা সুন্দর ছিল। লম্বা মতন। মুখে ছোট্ট একটু গোঁফ ছিল। ছোটবেলার স্মৃতির দিকে তাকালে যে ছবিটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে তা হলো, আমি যেন এখনো দেখতে পাচ্ছি, সেই আমি ছোট্ট হুমায়ুনটি আম্মার কোলে কাত হয়ে বসে আছি, আর লাল-হলুদে রঙের ফর্সা আমার সুন্দরী আম্মা রওশন আরা বেগম চামচ দিয়ে আমাকে দুধ খাওয়াচ্ছেন। আমি খেতে চাচ্ছি না।
আম্মা কবুতর দেখিয়ে নানা কথা বলে তবু দুধ খাওয়াচ্ছেন। কেউ একজন বলছেন, 'ও যখন চাচ্ছে না, থাক না'। আম্মা তবু মুখে চামচ ঠেসে ধরে আছেন। বলছেন, "খা লক্ষ্মী খা, সোনা আমার খা।' মনে আছে, চৌকিতে বোধ করি মোটা পাটি বিছানো ছিল। বেশ কিছু চাল রাখা ছিল তার ওপর। কবুতর বসেছিল নির্বিঘ্নে। আমি বড় বড় চোখ মেলে তাকিয়ে দেখছিলাম কবুতর চাল খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে খাচ্ছে আর সেই ফাঁকে আম্মা আমাকে দুধ গেলাচ্ছেন। দেখলাম আম্মার পাশে দাঁড়িয়ে একজন ভদ্রলোককে। সাদা পাঞ্জাবি গায়ে। পরনে সবুজ লুঙ্গি। পরে জেনেছি, বুঝেছি ইনিই আমার পিতা, যাঁকে আব্বা বলে ডাকা শুরু করেছি। এই আম্মাই যে আমার মা, এই আব্বাই যে আমার বাবা_এ পৃথিবীতে তাঁরাই আমার শৈশবের দুই আশ্রয়, তা আস্তে আস্তে বুঝতে শিখেছি। সব শিশুই যেভাবে শেখে। দেখছি বলেই জানছি আর জানছি বলেই বোঝাও শুরু করেছি।
বোরহানউদ্দিনের সেই ছোট্ট ছোট্ট টিনের বাড়িটি এখনো চোখের সামনে আবছা আবছা ভেসে ওঠে। আমাদের শোয়ার ঘর। আর আম্মার নামাজ পড়ার ছোট্ট একটি ঘরের কথা ছাড়া আর কিছু মনে পড়ে না। আমি নাকি আম্মা-আব্বার বিয়ের এগারো বছর পর জন্মেছি। সন্তান পাওয়ার তীব্র আগ্রহ নিয়ে অনেক বছর নাকি কাটিয়েছেন তাঁরা। কলকাতায় বিধান চন্দ্র রায়ও নাকি আম্মার চিকিৎসক ছিলেন। আজমির শরিফ, গয়া, কাশি বৃন্দাবন, ডিব্রুগর থেকে শুরু করে ভারতের অনেক পুণ্যস্থানে আম্মাকে নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন আব্বা। এই ভ্রমণ নাকি ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনে বলা হতো 'চেইঞ্জে যাওয়া'। অর্থাৎ স্থান পরিবর্তন করা। একটু ঘুরে-টুরে আসা। বেড়িয়ে আসা। এতে মন ভালো থাকে। শরীর চাঙা হয়ে ওঠে। কাজের আগ্রহ বেড়ে যায় অনেক। এখন মধ্যবিত্ত মানুষজনের চেইঞ্জে যাওয়া খুব একটা বোধ করি হয়ে ওঠে না। তখন জীবনযাত্রা অনেক সহজ ছিল। আম্মার কাছে শুনেছি আমার নানুর কথা। যাঁকে চোখে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি। নানু নাকি আম্মার সঙ্গেই থাকতেন। অসম্ভব সুন্দরী ছিলেন আমার নানু। লম্বা ও ফর্সা চেহারা। সরল-সহজ একটি কল্যাণময়ী নারী মূর্তি। কথা বলতেন নাকি অল্প, তাও আস্তে আস্তে। দেশের বাড়িতে হিন্দু প্রজারা নানুকে দেবী বলত। সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করত তাঁকে। নানুর মুখে নাকি সারাক্ষণ একটা আলো ঝলমল করত। হায় রে! সেই আলো আমি দেখার সুযোগ পেলাম না। চোখে দেখতে পারলাম না আমার নানা সৈয়দ আলতাবুর রহমানকেও। নানাও দেখতে খুব সুপুরুষ ছিলেন। চলাফেরায়ও তিনি ছিলেন যাকে বলে এক হালফ্যাশনের বাবু। সকালে এক পোশাক, দুপুরে এক পোশাক। সন্ধ্যায় আরেক পোশাক। সাদা ধুতি, সাদা পাঞ্জাবি, কাঁধে ভাঁজ করা চাদর। পায়ে গ্লেসকিটের কালো জুতা, হাতে স্টিক মানে লাঠি। উহ! কল্পনাও করতে পারি না সেই রাজকুমার আর রাজকন্যার কথা। যা-হোক, বহু বছরের তীব্র প্রতীক্ষার পর অবশেষে এই হুমায়ুন বাদশার যখন আগমন ঘটল, তার আগেই নানা-নানি চলে গেলেন এই মাটির ধরণী ছেড়ে। নানা আগে, নানু পরে। নানুর নাকি কিছুটা হাঁপানির অসুখ ছিল। আম্মার সঙ্গে ডিব্রুগর বেড়াতে গিয়ে নানু একটি পাহাড়ে উঠতে গিয়ে অসুস্থ বোধ করেন। তাঁর হাঁপানি বেড়ে যায় আর কমে না। সেই অসুখ থেকেই নানু একদিন হঠাৎ হার্টফেল করে চিরতরেই চলে যান সবার কাছ থেকে। নানুর ব্যবহার করা একটি পাত্র ছিল আম্মার কাছে। পাতলা গোল স্বচ্ছ কাচের পাত্রটিতে করে নাকি নানু পানি খেতেন। কাচের এই পাত্রটি একদিন পড়ে গিয়ে ভেঙে যায়। কিন্তু আম্মার কাছে শোনা নানুর গল্পগুলো এখনো যেন শুনতে পাই। স্মৃতির পাত্র ভাঙে না কখনো। বোরহানউদ্দিনের কথা উঠলে আরো টুকরো টুকরো অনেক স্মৃতি চোখে ভাসে। আমাদের বাসার কাছেই ছিল আব্বার সাবরেজিস্ট্রি অফিস। টিনের চাল দেওয়া বেশ বড় একটি অফিস-ঘর। লাল সালু কাপড়ে ঘেরা আব্বার অফিসে এজলাসে গিয়ে কত দিন তাঁর কোলে বসে কাচের দোয়াতের ভেতর নিবের কলম ঢুকিয়ে কাগজে কত কিছু লিখেছি। আব্বার টেবিলে দুটি দোয়াত ছিল। একটা কালো কালির। আরেকটা লাল। আব্বার এজলাসের টেবিলে লাল ফিতায় আঁটা অনেক ফাইল ছিল। সিল ছিল, গালা সিল। অফিসের দেয়ালে রাজা পঞ্চম জর্জের ছবি ছিল। আব্বা চেয়ারে বসতেন। আমি কখনো তাঁর কোলে, আবার কখনো দাঁড়িয়ে থেকে তাকিয়ে ছোট্ট সাবরেজিস্ট্রার হয়ে এদিক-ওদিক কত দলিলপত্র নিয়ে নাড়াচাড়া করেছি। আব্বার অফিসের পিয়ন-চাপরাশিরা কত আদর করত আমাকে। তখনো কালো কাক ছিল। ছাই রঙের কবুতর ছিল। মাঠে সাদা-কালো রঙের গরু চড়ত। সাদা বক উড়ে বেড়াত। আমাদের ঘরের কাছে ছোট্ট কুচকুচে কালো রঙের ছাগছানাগুলো সবুজ ঘাস চিবুত। রোদের ছিল জাফরানি রং। এখনো সেই কা-কা ডাকা কাক আছে। কবুতর আছে। ঘুঘুও আছে। সাদা বক আছে। এখনো গরু লেজ নাচিয়ে সবুজ মাঠে ঘাস খায়। কিশোরী ছাগল ছানারাও সেই একই রকম দেখতে। তবু পৃথিবীটা কত বদলে গেছে আজ। ত্রিশ যুগের সেই মানুষদের জীবনে আজ কত পরিবর্তনই না ঘটেছে। আরো ঘটবে সামনে, কারণ পরিবর্তনই তো জীবন। তা না হলে তো পৃথিবী একটি জায়গায় এসে থেমে থাকত!
পরিবারে আত্মীয়, আত্মীয়তার সম্পর্ক প্রথমে বুঝলাম_যেদিন আমার ছোট খালু মোশারফ হোসেন সাহেব বোরহানউদ্দিনে আমাদের বাসায় প্রথম বেড়াতে এলেন। সেই যুগে বেশ দূরে থেকেও আত্মীয়স্বজনের বেড়াতে আসার ব্যাপারটি লক্ষ করতাম। খালুজান হ্নাখানেক আমাদের বাসায় ছিলেন। আমাকে কোলে নিয়ে আমাদের বাসাবাড়ি, আব্বার অফিসে ঘুরে বেড়িয়েছেন। মনে আছে, যেদিন খালুজান বিদায় নিয়ে চলে যান সেদিন খুব খারাপ লেগেছিল। বাসাটা কেমন যেন খালি হয়ে গেল। আম্মা খালুজানের জন্য কোর্মা-পোলাও রান্না করেছিলেন। অতিথি বাসায় বেড়াতে এলে তাঁর বিদায়ের দিন ভালো কিছু রান্নাবান্না করার ব্যাপারটি কৌতূহলের সঙ্গে লক্ষ করেছি। একদিন আমাদের বাসায় কারা যেন বড় একটা খাঁচায় করে একটা বাঘ ধরে এনেছিল। জীবনে সেই প্রথম মনে হয় বাঘ দেখলাম। সাদাকালো, খয়েরি ডোরাকাটা বাঘ বড় বড় চোখ তুলে খাঁচার ভেতরে এদিক-ওদিক ঘুরছিল। আমাদের বাসার উঠোনে এই বাঘ দেখার জন্য ওইসব লোকজনের কোন টাকা-পয়সা দেওয়া হয়েছিল কি না জানি না। আস্তে আস্তে বুঝতে শিখেছি, কেউ কিছু এনে দেখালে, মজা করলে বা আনন্দ দিলে তাকে পয়সা দিতে হয়। পয়সা দাও, মজা পাও। পয়সা খরচ করো। আনন্দ পাও। পয়সা ছাড়া দুনিয়া চলে না। তখন থেকে বোঝা শুরু করেছি। এখন তো পুরোদস্তুর বুঝে গেছি, দুনিয়াটা হচ্ছে টাকা-পয়সার বশে। দুনিয়াটা কার বশ? দুনিয়া টাকার বশ। প্রশ্ন ও উত্তর একই সঙ্গে!
আমাদের বড় উঠোনে একদিন বাঁদর খেলা দেখানো হচ্ছিল। জীবনে বাঘের পর যে পশুটির সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটেছিল তা ছিল বাঁদর। দেখেছিলাম বাঁদরদের নানা রকম বাঁদরামো। ঢুং ঢুং শব্দ করে ছোট্ট একটি ঢোল পিটিয়ে বাঁদরওয়ালা বলছেন, 'এই বাবু সাহেবদের সালাম করো। খেলা দেখাও। বিয়ার বউ হইয়া যাও।' বাঁদর দুটি খেলা দেখাল। সালামও করল। আমি একটু দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়ে ছিলাম_মনে আছে, আব্বা আর চাপরাশির হাত ধরে খেলা দেখলাম এই ভয়ে যে বাঁদর দুটি আমার কাঁধে চড়ে না বসে। আম্মাকেও দেখলাম দূরে আমাদের টিনের ঘরের জানালার শিক ধরে দাঁড়িয়ে খেলা দেখছেন আর মিটি মিটি হাসছেন। কেউ বলছেন, 'বান্দর খেলা বড় সোন্দর'। এখনো বানর, সাপ এসব নিয়ে মানুষ খেলা দেখিয়ে বেড়াচ্ছে। কারণ বোধ করি একটাই। দুটি পয়সা পাওয়া এবং পয়সার বিনিময়ে আনন্দ দেওয়া। অনেক বড় হয়ে জেনেছি, বিশ্ববিখ্যাত চিত্রনির্মাতা চার্লি চ্যাপলিনের কথা, যিনি একসময় তাঁর ক্ষুধার্ত ছোট ভাইটিকে হাসানোর জন্য, আনন্দ দেওয়ার জন্য নিজে বাঁদর সেজে নানা কসরত দেখাতেন। বাঁদরামো করার পেছনে তাহলে বেদনা আছে! চলি্লশ দশকে কলকাতায় একটি ছবি দেখেছিলাম_'শাপমুক্তি'। কানন দেবী আর প্রমথেশ বড়ুয়া ছিলেন। একটি ছেলে গান গেয়ে গেয়ে ভিক্ষা করে বলছিল, 'একটি পয়সা দাওগো বাবু একটি পয়সা দাও, একটি পয়সা তোমার কাছে সে কিছু নয়... কি দাম আছে। আমার কাছে সে যে রাজার মানিক, মুখের পানে চাওগো বাবু একটি পয়সা দাও।' এখনো এই দশকেও ভিখিরি আছে। বাবুদের বদলে সাহেবরা আছে। আমরা আছি। হাত পাতাও আছে সেই মতো। তবে সেই হাতে একটি পয়সা না, একটি টাকাও না, পাঁচ-দশ টাকাই দিতে হয়, নইলে 'এই টাকা দিয়া খামু কি?' শুনতে হয়। সেই ওয়াজেদ আলীর 'ভারতবর্ষ' গল্পের সেই ট্র্যাডিশন এখনো সামনে চলছে বৈকি। হয়তো ধরনটা কিছু পাল্টেছে। আমরা ভিখিরি হয়ে হাত পাততাম দেশি বাবু সাহেবদের কাছে, এখন হাত পাতছি বিদেশি...।
বোরহানউদ্দিনে সেই ইংরেজদের আমলে আব্বা চাকরিতে ছিলেন বোধ করি ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত। আমি তখন হাফ প্যান্ট-শার্ট পরতাম গ্যালিজ দিয়ে। কখনো কখনো সাদা সিল্কের ধুতি। পাঞ্জাবি। মনে আছে, ছোট্ট ঠেলাগাড়িতে করে আব্বার চাপরাশি আমাকে একটি পাকা ব্রিজের কাছে নিয়ে যেত। ব্রিজের নিচে একটা ছোট খাল ছিল। নৌকো বাঁধা থাকত বেশ কয়েকটি ঘাটে। জীবনে সেই প্রথম দেখলাম নৌকো। শুনলাম, এতে করে নাকি মানুষ জলপথে যাতায়াত করে। যদিও তখনো নৌকোতে চড়া আমার হয়ে ওঠেনি। তবে লক্ষ করে দেখতাম, নৌকো থেকে মাঝিমাল্লারা আমাকে হাত ইশারা করে ডাকত। চাপরাশি তাদের কাছে আমাকে নিয়ে যেতেন না। আমার খুব ইচ্ছে করত। কিন্তু যাওয়া হতো না।
ব্রিজের নিচে বয়ে যাওয়া ছোট্ট খালটিকে দেখে মনে হতো, আমার কত আপন। এই খালের মাঝে চলাচল করা পানিই একদিন আমাকে ডেকে নিয়ে গেল আব্বার অফিসের কাছে একটি পুকুরের ঘাটলার পানির কাছে। মনে আছে, আমার বাল্যজীবনের প্রথম বন্ধু আমাদের কাজের বুয়ার ছেলে আবু আমাকে কী মনে করে একদিন নিয়ে গেল সেই পুকুরের ঘাটলায়। আমি আর আবু বোধ হয় শসা জাতীয় কিছু একটা ফল খাচ্ছিলাম। হাত ধুতে গেছি পুকুরের পানিতে। আর কিছু মনে নেই। শুনেছি আমি নাকি পুকুরে ডুবে গিয়েছিলাম। আবু নাকি দৌড়ে বাসায় গিয়ে বলেছিল 'মনু পইরা গেছে'। আবু আমাকে মনু বলে ডাকত। লোকজন দৌড়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আমাকে খুঁজতে লাগল। অবশেষে আমি নাকি যখন পুকুরের মধ্যে একটা বড় গর্তে অথবা কুয়োর মধ্যে ডুবে যাচ্ছিলাম, তখনই হাত ধরে টেনে আমাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। আমার হায়াতই যদি না থাকত এই আমি সেদিনের সেই আবুর ডাকা মনু আজকের আতিকুল হক চৌধুরী এই আত্মজীবনী লিখতে পারতাম না। পানিতে পড়া, আমাকে পানি থেকে উদ্ধার করা সম্পর্কে তেমন কিছুই এখন আর আমার মনে নেই। এটুকু মনে আছে, আমি নাকে একটা ওষুধের কড়া গন্ধ পাচ্ছিলাম। আমাকে কারা যেন দুই হাত ধরে শূন্যে ঘুরপাক খাওয়াচ্ছিল। আমার জ্ঞান যখন ফিরল তখন বুঝতে পারলাম, আমি আমার আম্মার কোলে। আম্মা তাঁর ঘরে ছোট্ট নামাজের খাটে বসে কেঁদে কেঁদে কী বলে যেন মোনাজাত করছেন। আব্বাও দাঁড়িয়ে দুই হাত তুলে কাঁদছেন। আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না তখন কেন তারা কাঁদছেন। এখন বুঝতে পারছি, তাঁদের জীবনের প্রাণপ্রিয় সন্তানটি মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে তাঁদের দুচোখ থেকে পবিত্র অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল, তা মাটির ক্ষমতা ছিল না ধারণ করার। তাই আম্মা-আব্বাই সেই অশ্রুজল তাঁদের কাপড়ে ধারণ করে রেখেছিলেন। হায় রে! আম্মা-আব্বার চোখের জলে ভেজা সেই পবিত্র কাপড়ের একটি টুকরোও যদি কাছে পেতাম। শৈশবের চির অম্লান সেসব মধুর স্মৃতি সে কি কোনো দিন ভুলে যাওয়ার?
রাতের শিশিরের ওপর সকালবেলার প্রথম রোদটি উপুড় হয়ে এসে পড়লে শিশির কণাগুলো যেমন চিকচিক করে, আমার শৈশবের সেই স্মৃতিকণাগুলো যেন আজও স্মরণের বালুকাবেলায় জ্বলজ্বল করে উঠছে। আমি বারবার কেবল পেছনে ফিরে তাকাচ্ছি। ছোট্টবেলার সেই দিনগুলো কি আবার ফিরে আসবে? না, আসবে না। আর আসবে না বলেই কি তারা সুন্দর এত?
================================
ইতিহাস- 'কাউন্ট লিও তলস্তয়ের হৃদয়সংবেদী ডায়েরি' by দেবেশ রায়  স্মরণ- 'কাউন্ট লিও তলস্তয়ের মৃত্যু-শতবর্ষের শ্রদ্ধাঞ্জলি' by বেলাল চৌধুরী  ইতিহাস- 'বাংলায় সিপাহি বিদ্রোহ' by রিদওয়ান আক্রাম  শিল্প-অর্থনীতি 'এখন প্রয়োজন ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের' by সৈয়দ মাহবুবুর রশিদ  রাজনৈতিক আলোচনা- 'গণতন্ত্র : চাইলেই ধরা দেয় না' by এমাজউদ্দীন আহমদ  আন্তর্জাতিক- 'কোরীয় অঞ্চলে নতুন উত্তেজনা কত দূর যেতে পারে?' by জগলুল আহমেদ চৌধূরী  আলোচনা- 'মানসিক নির্যাতনের প্রতিকার কোথায়' by আশরাফ-উল-আলম  আসুন, ওদের দিকে মমতার হাত বাড়িয়ে দিইঃ গোলটেবিল বৈঠক।এইচআইভি/এইডস : প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সেবা ও মানবাধিকার  আলোচনা- 'আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস'  আলোচনা- 'নেত্রীর অশ্রুপাত, হরতাল এবং অ্যাকশনে বিএনপি' by সঞ্জীব রায়  আলোচনা- 'আরো আলোকিত হোক জনশক্তি রপ্তানি খাত'  আলোচনা- 'কানকুন সম্মেলনে আমাদের প্রত্যাশা' by শিরীন আখতার  আলোচনা- 'জনসংখ্যার বিপদ ও পরিত্রাণের পথ'  শিল্প-অর্থনীতি 'বিনিয়োগ ও মূল্যস্ফীতি:দুর্ভাবনার বিষয়' by ড. আর. এম. দেবনাথ  গল্পসল্প- 'হায়রে নাড়ি ছেঁড়াধন' by শিখা ব্যানার্জী  গল্পসল্প- 'জননী ও জন্মভূমি' by শুভ রহমান  গল্পালোচনা- ''বিভীষণ' বিদায় ও হরতাল সমাচার' by শুভ রহমান  খবর- হরতালের বিরুদ্ধে একজোট, উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা  আলোচনা- 'হজ ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে কিছু কথা' by এয়ার কমোডর (অব.) মুহম্মদ জাকীউল ইসলাম



দৈনিক কালের কণ্ঠ এর সৌজন্যে
লেখকঃ আতিকুল হক চৌঁধুরী


এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.