তাঁদের বাড়িতে ঈদ আসে না by মো. সুমন মোল্লা, ভৈরব
দেশ স্বাধীন করার দৃপ্ত অঙ্গীকার নিয়ে
একাত্তরে যাঁরা পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে মরণপণ লড়েছেন, তাঁরা অনেকেই
আজ লড়ছেন দুবেলা দুমুঠো অন্ন জোগাতে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কবে যে একবেলা
তৃপ্তির সঙ্গে খেয়েছিলেন, সে কথা স্মরণ করা যেন তাঁদের কাছে বিড়ম্বনা। ঈদ
আসে, চলেও যায়, তাঁদের ঘরে আনন্দ উছলায় না। দারিদ্র্যের ভেতর তাঁদের দিন
কাটে একঘেয়েভাবে। কিশোরগঞ্জের ভৈরবের প্রায় ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধার এবারের ঈদ
যাপনে এর ব্যতিক্রম ঘটেনি।
তাঁদের একজন হলেন মুক্তিযোদ্ধা ইদন মিয়া। ঈদের দিন দুপুরে ভৈরব পৌরশহরের আমলাপাড়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কাঁথা মুড়ে শুয়ে আছেন তিনি।
ইদন মিয়া (৬৫) জানান, রিকশা চালিয়ে তাঁর সংসার চলে। জটিল কয়েকটি রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর কয়েক মাস ধরে সেই কাজও বন্ধ। তিনি বলেন, ‘ঈদে কষ্ট বাড়ে। কারণ, দিনটিতে পরিবারের সদস্যদের জন্য আমার কিছুই করার থাকে না।’
কয়েক বছর ধরে বিছানায় শুয়ে দিন কাটছে উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আ. সাদেকের (৭০)। দুই ছেলে আর চার মেয়ে নিয়ে নিদারুণ কষ্টে দিন পার করছেন তিনি। কেমন কাটল ঈদ—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশীর দেওয়া গোশত দিয়ে ভাত খাই। মনে করতে পারি না কবে নিজের পয়সা দিয়ে গোশত কিনেছিলাম।’
তাঁর মেয়ে শিখা বলেন, ‘এক ভাই রিকশা চালায়, আমি সেলাইয়ের কাজ করি। দুজনের আয় দিয়ে সংসার চলে। তবে প্রতিদিন ৪০ টাকা বাবার ওষুধের পেছনে যায়।’
একই গ্রামের ইদ্রিস মিয়া (৬০) একসময় দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাতেন। অসুস্থতা তাঁর কাজ করার শক্তি কেড়ে নিয়েছে। স্ত্রী শেফালী বেগম ব্র্যাক স্কুলে শিক্ষকতা করে যা পান, তা দিয়েই সংসার চলে। তিনি বলেন, ‘কি পেলাম আর না পেলাম এ হিসাব মেলাতে যুদ্ধ করিনি। সবাই ভালো থাকলে ভালো লাগত। আমাদের মতো দেশের অনেকেই ভালো নেই, এখনো এসব বিষয় বেশি ভাবায়।’
একই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম দিনমজুরের কাজ করেন। সংসারের খরচ চালাতে হিমশিম খাওয়ার কারণে বড় ছেলে সোহাগের পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়েছেন। ছোট ছেলে সুহূদ স্থানীয় হাজি জহির উদ্দিন বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ছে। কষ্টের মধ্যে বড় হলেও বাবাকে নিয়ে তাঁর গর্ব অনেক ওপর। সে জানাল, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধার ছেলে। এ কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমার কাছ বেতন নেয় না।’
ভৈরব মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্র জানায়, ভৈরব উপজেলায় গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৪৬২ জন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন নয়জন। এ পর্যন্ত ভৈরববাসী ১০৫ জন মুক্তিযোদ্ধা হারিয়েছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা মিজু সরকার, মাইনউদ্দিন সরকার, আবদুর সবুর, আবুল বাসার, আকবর আলী, মজিদ মিয়ার মতো অনেক মুক্তিযোদ্ধা চিকিত্সা না পেয়ে এবং অর্ধাহারে-অনাহারে থেকে মারা গেছেন। এখনো অন্তত ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় দিন কাটাচ্ছেন।
তাঁদের একজন হলেন মুক্তিযোদ্ধা ইদন মিয়া। ঈদের দিন দুপুরে ভৈরব পৌরশহরের আমলাপাড়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কাঁথা মুড়ে শুয়ে আছেন তিনি।
ইদন মিয়া (৬৫) জানান, রিকশা চালিয়ে তাঁর সংসার চলে। জটিল কয়েকটি রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর কয়েক মাস ধরে সেই কাজও বন্ধ। তিনি বলেন, ‘ঈদে কষ্ট বাড়ে। কারণ, দিনটিতে পরিবারের সদস্যদের জন্য আমার কিছুই করার থাকে না।’
কয়েক বছর ধরে বিছানায় শুয়ে দিন কাটছে উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আ. সাদেকের (৭০)। দুই ছেলে আর চার মেয়ে নিয়ে নিদারুণ কষ্টে দিন পার করছেন তিনি। কেমন কাটল ঈদ—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশীর দেওয়া গোশত দিয়ে ভাত খাই। মনে করতে পারি না কবে নিজের পয়সা দিয়ে গোশত কিনেছিলাম।’
তাঁর মেয়ে শিখা বলেন, ‘এক ভাই রিকশা চালায়, আমি সেলাইয়ের কাজ করি। দুজনের আয় দিয়ে সংসার চলে। তবে প্রতিদিন ৪০ টাকা বাবার ওষুধের পেছনে যায়।’
একই গ্রামের ইদ্রিস মিয়া (৬০) একসময় দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাতেন। অসুস্থতা তাঁর কাজ করার শক্তি কেড়ে নিয়েছে। স্ত্রী শেফালী বেগম ব্র্যাক স্কুলে শিক্ষকতা করে যা পান, তা দিয়েই সংসার চলে। তিনি বলেন, ‘কি পেলাম আর না পেলাম এ হিসাব মেলাতে যুদ্ধ করিনি। সবাই ভালো থাকলে ভালো লাগত। আমাদের মতো দেশের অনেকেই ভালো নেই, এখনো এসব বিষয় বেশি ভাবায়।’
একই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম দিনমজুরের কাজ করেন। সংসারের খরচ চালাতে হিমশিম খাওয়ার কারণে বড় ছেলে সোহাগের পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়েছেন। ছোট ছেলে সুহূদ স্থানীয় হাজি জহির উদ্দিন বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ছে। কষ্টের মধ্যে বড় হলেও বাবাকে নিয়ে তাঁর গর্ব অনেক ওপর। সে জানাল, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধার ছেলে। এ কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমার কাছ বেতন নেয় না।’
ভৈরব মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্র জানায়, ভৈরব উপজেলায় গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৪৬২ জন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন নয়জন। এ পর্যন্ত ভৈরববাসী ১০৫ জন মুক্তিযোদ্ধা হারিয়েছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা মিজু সরকার, মাইনউদ্দিন সরকার, আবদুর সবুর, আবুল বাসার, আকবর আলী, মজিদ মিয়ার মতো অনেক মুক্তিযোদ্ধা চিকিত্সা না পেয়ে এবং অর্ধাহারে-অনাহারে থেকে মারা গেছেন। এখনো অন্তত ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় দিন কাটাচ্ছেন।
No comments