পাহাড়ে পাহাড়ে জুম কাটার উৎসব by নুরুল কবির
বান্দরবানের
পাহাড়ে পাহাড়ে চলছে জুমের পাকা ধান কাটার উৎসব। জেলার ৭টি উপজেলায় বিশেষ
করে দুর্গম পহাাড়গুলোতে চলতি মৌসুমে রোপিত জুমের পাহাড়ে পাহাড়ে পেকেছে ধান,
খাবার উপযোগী হয়ে পড়েছে মারফাসহ হরেক রকম কৃষিপণ্য। এসব কৃষিপণ্য জুমক্ষেত
থেকে আহরণ করে ক্ষেত-খামার এবং ঘরে তুলতে শুরু করেছেন জুমচাষিরা। ইতিমধ্যে
চাষিরা জুম থেকে পাকা ধানসহ রকমারি ফসল কাটতে শুরু করেছে। জেলা শহর থেকে
ওয়াইজংশন এবং চিম্বুক এলাকার পাহাড়ে পাহাড়ে দেখা গেছে পাকাধান কাটতে
নারী-পুরুষ জুমচাষিদের। চারদিকে যেন জুম কাটার ধুম। একই সঙ্গে ধুম পড়েছে
মারফা, বেগুন, মরিচ, ঢেঁড়শ, কাঁকরোল, কুমড়াসহ বিভিন্ন জুমের ফসল তোলার
কাজও। আর এ বছর পাহাড়ে জুমের মোটামুটি ভালো ফলন হওয়ায় উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে
জুমিয়া পরিবারগুলোর মাঝে প্রতিবছর এপ্রিল মাসের শেষের দিকে শুরু হয় জুমে
ধান লাগানোর প্রক্রিয়া।
প্রায় ৩-৪ মাস পরির্চযার পর সেপ্টেম্বর মাসের শেষদিক থেকে পাহাড়ে জুমের ধান কাটা শুরু করে জুমিয়ারা আর শেষ হয় অক্টোবর মাসে। তাই জুমের ফসল ঘরে তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে জুমিয়া পরিবারগুলো। শিশু-কিশোরসহ পরিবারের কেউই বসে নেই ঘরে। পরিবারের সবাই জুমের ধান কাটতে নেমেছে পাহাড়ে। তবে এবছর আবাহাওয়া অনুকূল থাকার কারণে ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় জুম চাষে বেশি ফলন পেতে শুরু করেছেন বান্দরবানের চাষিরা। জুমের ফসলের মধ্যে মারফা, ভুট্টা, তিল, তুলা, মরিচ কাকনচাল, বিনিচাল, ও ধান অন্যতম। জুমচাষিরা জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়িরা প্রতিবছর জেলার বিভিন্ন স্থানে শত শত একর পাহাড়ে জুম চাষ করে। জুমিয়ারা পাহাড়ে ধানের পাশাপাশি ভুট্টা, মরিচ, যব, সরিষা, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্নরকমের সবজির চাষ করে থাকে। তবে একই পাহাড়ে একাধিকবার জুম চাষ করা যায় না বলে জুমিয়ারা প্রতিবছর ভিন্ন ভিন্ন পাহাড়ে এ জুম চাষ করা হয়ে থাকে। জেলায় বসবাসরত মার্মা, চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা, খুমী, লুসাই, পাংখো, বম, চাকসহ ১১টি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই জুম চাষের উপর নির্ভরশীল। জেলা শহরে বসবাসরত কিছু শিক্ষিত পরিবার ছাড়া দুর্গম এলাকায় বসবাসরত পাহাড়িরা আজও জুম চাষের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। জুমিয়া পরিবারগুলো প্রতিবছর মার্চ-এপ্রিল মাসের দিকে জুম চাষের জন্য পাহাড়ে আগুন দেয়। আর মে-জুন মাসের দিকে আগুনে পোড়ানো পাহাড়ে জুম চাষ শুরু করে। চিম্বুক পাড়ার জুমচাষি মেনড্রং ম্রো জানান, এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় জুমের ফসল ভালো হয়েছে। নিজেদের জন্য রেখে বাকিটা বিক্রি করে ভালো টাকাও আয় করতে পারবো। আরেক জুমচাষি থংপ্রে ম্র্রো বলেন, জুমের ফলন ভালো হওয়ায় খুব খুশি লাগছে পরিশ্রমও সার্থক হয়েছে সারা বছর শান্তিতে খেতে পারব। ১১ টি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে একমাত্র ম্রো সম্প্রদায় আদিকাল থেকে এখনো পর্যন্ত জুম চাষের মাধ্যমেই সারা বছরের জীবিকা সংগ্রহ করে। ফসল ঘরে তোলার আনন্দে পাহাড়ি পল্লীগুলোতে চলছে এখন নবান্ন উৎসবও। গোত্র ভেদে পাহাড়িরা উৎপাদিত ফসল দেবতাকে উৎসর্গের মাধ্যমে এই নবান্ন উৎসব উদযাপন করে থাকে। কৃষি বিভাগ জানায়, চলতিবছর জেলায় ৮৮৯৫ হেক্টর জমিতে জুম ধান চাষ হয়েছে এর লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১২৪৫৩ মেট্রিক টন। এর মধ্যে নিড়িখা, উফশি, পিডি, ককরো, বিনি, গেলং, কানভূঁই জাতের ধান। আর গতবছর জুম চাষ করা হয়েছিল ৮৪৫৮ হেক্টর জমিতে সে হিসেবে এ বছর পাহাড়ে ৪৩৭ হেক্টর জমিতে জুম চাষ বেড়েছে।
থানছি চিম্বুক এলাকার জুমচাষি ম্রো কৃষক চিংরাই ম্রো এবং খামলিং ম্রো জানান, এবারে জুমক্ষেতে ফলন ভালো হয়েছে, কারণ চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো এবং উৎপাদন পরিবেশ ভালোই ছিল। ধানের পাশাপাশি ছোটমরিচ, মারফা, মিষ্টি কুমড়া, কুমড়া, তিল ও আদার ফলনও ভালো হয়েছে। তবে তিল ও আদা সংগ্রহ করা যাবে আরো কয়েক মাস পর।
বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক ড. একেএম নাজমুল হক বলেন বান্দরবান জেলায় প্রতিবছর জুম চাষ হয় জুমে আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন জাতের ধানের ফলন বাড়ানোর লক্ষ্যে কৃষি গবেষণা এবং কৃষি অধিদপ্তর কাজ করছে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিবছর জুম চাষ করা হলে তাদের আর্থসামজিক উন্নয়ন সহ আর্থিক সচ্ছলতা আসবে এবং সারা বছরের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে মনে করেন তিনি।
প্রায় ৩-৪ মাস পরির্চযার পর সেপ্টেম্বর মাসের শেষদিক থেকে পাহাড়ে জুমের ধান কাটা শুরু করে জুমিয়ারা আর শেষ হয় অক্টোবর মাসে। তাই জুমের ফসল ঘরে তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে জুমিয়া পরিবারগুলো। শিশু-কিশোরসহ পরিবারের কেউই বসে নেই ঘরে। পরিবারের সবাই জুমের ধান কাটতে নেমেছে পাহাড়ে। তবে এবছর আবাহাওয়া অনুকূল থাকার কারণে ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় জুম চাষে বেশি ফলন পেতে শুরু করেছেন বান্দরবানের চাষিরা। জুমের ফসলের মধ্যে মারফা, ভুট্টা, তিল, তুলা, মরিচ কাকনচাল, বিনিচাল, ও ধান অন্যতম। জুমচাষিরা জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়িরা প্রতিবছর জেলার বিভিন্ন স্থানে শত শত একর পাহাড়ে জুম চাষ করে। জুমিয়ারা পাহাড়ে ধানের পাশাপাশি ভুট্টা, মরিচ, যব, সরিষা, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্নরকমের সবজির চাষ করে থাকে। তবে একই পাহাড়ে একাধিকবার জুম চাষ করা যায় না বলে জুমিয়ারা প্রতিবছর ভিন্ন ভিন্ন পাহাড়ে এ জুম চাষ করা হয়ে থাকে। জেলায় বসবাসরত মার্মা, চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা, খুমী, লুসাই, পাংখো, বম, চাকসহ ১১টি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই জুম চাষের উপর নির্ভরশীল। জেলা শহরে বসবাসরত কিছু শিক্ষিত পরিবার ছাড়া দুর্গম এলাকায় বসবাসরত পাহাড়িরা আজও জুম চাষের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। জুমিয়া পরিবারগুলো প্রতিবছর মার্চ-এপ্রিল মাসের দিকে জুম চাষের জন্য পাহাড়ে আগুন দেয়। আর মে-জুন মাসের দিকে আগুনে পোড়ানো পাহাড়ে জুম চাষ শুরু করে। চিম্বুক পাড়ার জুমচাষি মেনড্রং ম্রো জানান, এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় জুমের ফসল ভালো হয়েছে। নিজেদের জন্য রেখে বাকিটা বিক্রি করে ভালো টাকাও আয় করতে পারবো। আরেক জুমচাষি থংপ্রে ম্র্রো বলেন, জুমের ফলন ভালো হওয়ায় খুব খুশি লাগছে পরিশ্রমও সার্থক হয়েছে সারা বছর শান্তিতে খেতে পারব। ১১ টি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে একমাত্র ম্রো সম্প্রদায় আদিকাল থেকে এখনো পর্যন্ত জুম চাষের মাধ্যমেই সারা বছরের জীবিকা সংগ্রহ করে। ফসল ঘরে তোলার আনন্দে পাহাড়ি পল্লীগুলোতে চলছে এখন নবান্ন উৎসবও। গোত্র ভেদে পাহাড়িরা উৎপাদিত ফসল দেবতাকে উৎসর্গের মাধ্যমে এই নবান্ন উৎসব উদযাপন করে থাকে। কৃষি বিভাগ জানায়, চলতিবছর জেলায় ৮৮৯৫ হেক্টর জমিতে জুম ধান চাষ হয়েছে এর লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১২৪৫৩ মেট্রিক টন। এর মধ্যে নিড়িখা, উফশি, পিডি, ককরো, বিনি, গেলং, কানভূঁই জাতের ধান। আর গতবছর জুম চাষ করা হয়েছিল ৮৪৫৮ হেক্টর জমিতে সে হিসেবে এ বছর পাহাড়ে ৪৩৭ হেক্টর জমিতে জুম চাষ বেড়েছে।
থানছি চিম্বুক এলাকার জুমচাষি ম্রো কৃষক চিংরাই ম্রো এবং খামলিং ম্রো জানান, এবারে জুমক্ষেতে ফলন ভালো হয়েছে, কারণ চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো এবং উৎপাদন পরিবেশ ভালোই ছিল। ধানের পাশাপাশি ছোটমরিচ, মারফা, মিষ্টি কুমড়া, কুমড়া, তিল ও আদার ফলনও ভালো হয়েছে। তবে তিল ও আদা সংগ্রহ করা যাবে আরো কয়েক মাস পর।
বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক ড. একেএম নাজমুল হক বলেন বান্দরবান জেলায় প্রতিবছর জুম চাষ হয় জুমে আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন জাতের ধানের ফলন বাড়ানোর লক্ষ্যে কৃষি গবেষণা এবং কৃষি অধিদপ্তর কাজ করছে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিবছর জুম চাষ করা হলে তাদের আর্থসামজিক উন্নয়ন সহ আর্থিক সচ্ছলতা আসবে এবং সারা বছরের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে মনে করেন তিনি।
No comments