গান্ধী পরিবারের রাজনীতির সমাপ্তি? by গীতা পান্ডে
যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভূমিধস বিজয় নিয়ে
মহীরূহ হিসেবে আবির্ভূত হলেন, তখন অন্যপ্রান্তে নেহরু-গান্ধী পরিবারের
উত্তরাধিকারী ও কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বিধ্বস্ত, বিপর্যস্ত।
গান্ধী পরিবারের প্রধানতম রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী এখন রাহুল। তার প্র-প্রপিতামহ জওহরলাল নেহরু ছিলেন ভারতের প্রথম ও সর্বচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী। রাহুলের দাদি ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন ভারতের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। আর তার পিতা রাজীব গান্ধী ছিলেন ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রী।
২০১৪ সালের নির্বাচনকে যদি কংগ্রেসের সবচেয়ে খারাপ পারফরমেন্স হিসেবে দেখা হয় তাহলে, এবারের নির্বাচনের ফল রাহুল গান্ধীর প্রতি তারই ডাবল আঘাত। এ নির্বাচনে কংগ্রেস বিজয়ী হয়েছে ৫০টির মতো আসন। তার প্রতিপক্ষ মোদির বিজেপি পেয়েছে তিন শতাধিক আসন। যদি তাও তার জন্য বাজে পারফরমেন্স না হয় তাহলে বলা যায়, তিনি উত্তর প্রদেশে পারিবারিক ঘাঁটি আমেথিও হারিয়েছেন। এ আসনে নির্বাচন করে তিনি হেরেছেন।
তারপরও তিনি পার্লামেন্টে একটি আসনে বসতে পারবেন। কারণ, তিনি কেরালায় ওয়ানাদে দ্বিতীয় আসন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়েছেন।
কিন্তু আমেথি রাহুল গান্ধীর কাছে ছিল প্রেস্টিজ লড়াই। এটা সেই আসন, যেখান থেকে তার পিতা রাজীব গান্ধী ও মা সোনিয়া গান্ধী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়েছিলেন। তারপর ১৫ বছর ধরে এই আসন ধরে রেখেছেন রাহুল। এমনকি নির্বাচনের আগে আমেথির প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে ‘মেরা আমেথি পরিবার’ বা আমার আমেথি পরিবার শীর্ষক একটি আবেগময় চিঠি পৌঁছে দিয়েছিলেন রাহুল। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি তাদের মনে স্থান পান নি। আমেথির জনগণের কাছে তিনি অপদস্থ হয়েছেন। বিজেপির হাই প্রোফাইল অভিনেত্রী কাম রাজনীতিক স্মৃতি ইরানির কাছে তিনি ধরাশায়ী হয়েছেন।
উত্তর প্রদেশের কেন্দ্রীয় এলাকা। উত্তর প্রদেশ হলো ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য। বলা হয় এ রাজ্যে যিনি বিজয়ী হন তিনিই নাকি ভারত শাসন করেন। ভারতে এ পর্যন্ত যে ১৪ জন প্রধানমন্ত্রী এসেছেন তার মধ্যে রাহুল গান্ধীর প্র-প্রপিতামহ, দাদি ও বাবাসহ আট জনই এই রাজ্যের। এই রাজ্যে সবচেয়ে বেশি এমপি নির্বাচিত হন। ভারতের ৫৪৫ আসনের নিম্নকক্ষে এ রাজ্যে আসন সংখ্যা ৮০। এমনকি নরেন্দ্র মোদি, যিনি এসেছেন গুজরাট থেকে, তিনি পর্যন্ত এমপি হিসেবে তার অভিষেক ঘটনা উত্তর প্রদেশ থেকে ২০১৪ সালে। ওই সময় তিনি প্রাচীন শহর বারানসি থেকে নির্বাচন করেছিলেন।
খুব বেশি মানুষ প্রত্যাশা করেন নি যে, এবার বড় জয় পাবে কংগ্রেস। তবে তারা এটা নিশ্চিত ছিলেন, ২০১৪ সালের তুলনায় এবার কংগ্রেস ভালো করবে। এ জন্যই এবারের নির্বাচনের ফল দলের ভেতরে ও বাইরে সবাইকে হতভম্ব করে দিয়েছে। কংগ্রেস হয়তো এবার পার্লামেন্টে নিস্তেজ হয়ে পড়বে। তবে বহু মানুষের মনে প্রশ্ন- এর অর্থ কি গান্ধী যুগের অবসান? না কি দলের ভাগ্য ফেরানোর জন্য এর শেষ হওয়া উচিত?
কংগ্রেস কি চায়?
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রাহুল গান্ধী। সেখানে তিনি মোদির কাছে পরাজয় মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জনগণ তাদের রায় দিয়েছে এবং তারা বেছে নিয়েছে বিজেপিকে। কংগ্রেস পার্টির পরাজয়ের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব তিনি নিজের কাঁধে তুলে নেন। এমন কি তার আসন আমেথিতে তখনো তিন লাখের বেশি ভোট গণনা করার বাকি যখন, তখন তিনি স্মৃতি ইরানির কাছে পরাজয় স্বীকার করে নেন। রাহুল বলেন, আমি তাকে অভিনন্দন জানাই। তিনি বিজয়ী হয়েছেন। এটাই গণতন্ত্র। আমি জনগণের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। তবে কংগ্রেসের পারফরমেন্স অথবা এর পরবর্তীতে কংগ্রেসের করণীয় কি হবে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানান। রাহুল বলেন, এসব বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠক করবে। সেখানে এসব নিয়ে আলোচনা করা হবে।
রাহুল গান্ধী কংগ্রেস নেতাকর্মীদের, যারা বিজয়ী হয়েছেন এবং যারা পরাজিত হয়েছেন, তাদের সবাইকে আশা না হারানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভীত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমরা কঠোর পরিশ্রম করবো এবং আমরা এরপর বিজয়ী হবো। কিন্তু লক্ষ্ণৌতে কংগ্রেস অফিসের চিত্র ভিন্ন। রাহুল গান্ধী ভবিষ্যতে বিজয়ী হওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাতে দৃশ্যত নেতাকর্মীদের হতাশ দেখা গেছে, তারা টিভির পর্দায় আঠার মতো লেগে ছিলেন। দলীয় বর্ষীয়ান নেতারা যখন একে একে ভূপাতিত হচ্ছিলেন তখন যেন দলের রক্তক্ষরণ দেখছিলেন তারা। দলীয় একজন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা একেবারে নিম্ন পর্যায়ের। আমাদের প্রতিশ্রুতিতে মানুষের আস্থা নেই। আমরা যা বলি তাতে তাদের কোনো বিশ্বাস নেই। নরেন্দ্র মোদি তার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু মানুষ তাকে বিশ্বাস করে এখনো।
কিন্তু এমনটা কেন?
এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরাও তো বুঝতে পারি না কেন!
এখন কংগ্রেসের যে বাজে পারফরমেন্স তাতে অনেক প্রশ্ন উঠবে। তার মধ্যে বড় প্রশ্ন উঠতে পারে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব নিয়ে। অনেক বিশ্লেষক এরই মধ্যে দলীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার কথা বলেছেন। তারা চান, রাহুল দলীয় প্রধানের পদ ত্যাগ করুন। কিন্তু অতীতের মতো, এবারো এসব আহ্বান বা ডাক এসেছে দলের বাইরে থেকে। এমন আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে দলের নেতৃত্ব থেকে। এ অবস্থায় রাহুল গান্ধী পদত্যাগ করতে চেয়েছেন বলে দিল্লিজুড়ে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। তবে কংগ্রেসের রাজনীতিক মণি শঙ্কর আইয়ার বিবিসিকে বলেছেন, দলের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলবে না কংগ্রেস। যদি রাহুল গান্ধী পদত্যাগ করতে চান তাহলে তা গৃহীত হবে না। তিনি আরো বলেন, দলের এমন পরাজয়ের জন্য নেতৃত্ব দায়ী নয়। এর অন্য কারণ আছে, আমাদেরকে তা খুঁজে বের করতে হবে।
লক্ষ্ণৌতে দলের স্থানীয় একজন মুখপাত্র ব্রিজেন্দ্র কুমার সিং ব্যাখ্যা করেন যে, সমস্যাটা রাহুল গান্ধীর ক্ষমতার মধ্যে নয়। সমস্যা হলো দলের ভেতরে আভ্যন্তরীণ কোন্দল ও দুর্বল নির্বাচনী প্রচারণা। তিনি আরো বলেন, দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে রয়েছে দুর্বলতা। আছে পদ নিয়ে আভ্যন্তরীণ কোন্দল। উত্তর প্রদেশ ও বিহারে আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে জোট গঠন করা ছিল একটি খারাপ আইডিয়া। কংগ্রেসের কোনো নেতা এখনো পর্যন্ত পরাজয়ের দায় রাহুল গান্ধীর ওপর চাপান নি। তবে তারা এর জন্য দায়ী করেছেন সাংগঠনিক ও নির্বাচনী প্রচারণার কৌশলকে।
ব্যক্তিত্বের প্রতিযোগিতা?
কংগ্রেস বিষয়ক বহু বিশ্লেষক ব্যক্তিগতভাবে স্বীকার করেন যে, ব্যক্তিত্বের প্রতিযোগিতায় রাহুল গান্ধী ছিলেন পরাজিত পক্ষে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা ছিলেন ‘ব্রান্ড মোদি’। এ কথা সবাই স্বীকার করেন। ব্রিজেন্দ্র কুমার সিং বলেন, এমন কি প্রধানমন্ত্রী মোদি গত নির্বাচনে দেয়া তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হলেও তিনি মানুষকে তার সরকারের নীতির বিষয়ে আশ্বস্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। মোদির হাতে বিধ্বস্ত হওয়ার মতো এমন ঘটনা রাহুল গান্ধীর কাছে এটাই প্রথম নয়। ২০১৪ সালে তার দল এ যাবৎকালের সবচেয়ে খারাপ ফল করে। তখন কংগ্রেস জেতে মাত্র ৪৪ আসনে।
বেশ কিছু রাজ্যে কংগ্রেস পরাজিত হয়েছেন। দূরে দূরে থাকা এবং নাগালের বাইরে থাকার জন্য রাহুল গান্ধী সমালোচিত হয়েছেন। তাকে সামাজিক যোগাযোগ মিডিয়ায় আনাড়ি, ক্লুহীন নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। নেহরু-গান্ধী পরিবারের সঙ্গে যোগসূত্র থাকায় পারিবারিক রাজত্বের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে রাহুল গান্ধীকে। আর পোড় খাওয়া জীবন থেকে উঠে আসা প্রধানমন্ত্রী মোদি তাই বার বার তাকে খোঁচা মেরেছেন। বলেছেন, রাহুল গান্ধী শীর্ষ পদে উঠে এসেছেন মেধার জোরে নয়। তিনি উঠে এসেছেন পারিবারিক সম্পর্কের জোরে।
ব্যক্তিগত পর্যায়ের আলাপচারিতায় কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা রাহুল গান্ধীকে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তারা বলেন, বিরোধী পক্ষকে ঘায়েল করার বাসনা নেই তার মধ্যে। তাহলে কি এই ব্যর্থতা একজন রাহুল গান্ধীর ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হবে না কি গান্ধী ব্রান্ডের ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হবে?
ঐতিহ্যবাহী পরিবারটির নাম সাম্প্রতিক সময়ে তার জেল্লা হারিয়েছে। বিশেষ করে শহরে ভোটার ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী যুবকদের মধ্যে তাদের সেই সুনাম কমে গেছে। এই দুটি শ্রেণির অবদান নেহরু ও ইন্দিরার জন্য ছিল বড় বিষয়। সে বিষয়টি এখন অনেক দূরের অতীত। এখন গান্ধী পরিবারের সঙ্গে তাদের সেই সংশ্লিষ্টতা নেই। এ শ্রেণিটি ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কংগ্রেসের ক্ষমতার ১০ বছরকে সামনে নিয়ে আসেন তারা। ওই সময় সরকার নানা রকম বিতর্ক ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার নির্বাচনের ফল আবার দেখিয়ে দিলো, কংগ্রেসের প্রতি ভোটারদের আস্থা এখনো অনেক নিম্ন এবং তাদের কাছে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি পৌঁছে দিতে ব্যর্থ হয়েছেন রাহুল গান্ধী।
গান্ধীর পুনর্জন্ম
দলের এমন অবস্থা হলেও দলীয় মেশিনারি এর জন্য রাহুল গান্ধীকে দায়ী করেন নি অথবা পরাজয়ের জন্য তার নাম উচ্চারণ করেন নি। দলীয় একজন নেতার মতে, রাহুল গান্ধীর হওয়া উচিত একজন ‘অমিত শাহ’। যিনি মোদির জয়কে ত্বরান্বিত করেছেন। প্রথমে গুজরাটে। পরে দিল্লিতে। তবে প্রকাশ্যে কেউ রাহুল গান্ধীকে দায়ী করবেন বলে মনে হয় না। যদি এক্ষেত্রে অতীত হয় নির্দেশক তাহলে তারা তার পিছু ধাবন করবেন।
গত দুই বছরে রাহুল গান্ধীর ক্যারিয়ারের গ্রাফ উন্নত হতে শুরু করেছে। তিনি ছায়ার ভেতর থেকে বেরিয়ে এসেছেন। রাজনৈতিক রূপ ধারণ করেছেন। তার সামাজিক আন্দোলন আগের থেকে স্মার্ট হয়েছে। তিনি কথা বলেছেন, সরকারের বহু বিতর্কিত মুদ্রা বাতিল, কর্মসংস্থানের অভাব, দেশের ভেতর ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা এবং অর্থনীতির ধীরগতি নিয়ে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ প্রচারণায় ছিলেন রাহুল। ডিসেম্বরে রাজস্থান, ছত্তিশগড় ও মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ বিজয়ে নেতৃত্ব দেন তিনি। এতে ধারণা করা হয় তিনি নতুন এজেন্ডা সেট করেছেন এবং দলকে নুতন করে জীবিত করে তুলছেন। এরপর আসে ফেব্রুয়ারি। এ সময়ে তার ক্যারিশমাটিক বোন প্রিয়াংকা গান্ধী ভদ্রকে উত্তর প্রদেশ (পূর্ব) সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত করেন। এর মধ্য দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করা হয়, গান্ধী পরিবারের এই উত্তরসূরিও অনেক কিছু। প্রিয়াংকাকে অনেকে তার দাদি ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে তুলনা করেন। অনেকে মনে করতে থাকেন প্রিয়াংকা গান্ধী পরিবারের রাজনীতিকে সুরক্ষিত রাখবেন। যেকোনো কারণেই হোক তিনি সেই রাজনীতির শিখা জ্বালিয়ে রাখতে অর্থাৎ রাজনীতিতে পা রাখতে ছিলেন অনিচ্ছুক। এখন রাহুল ও তার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। রাহুলকে সরিয়ে দেয়ার মতো কোনো পরিকল্পনাও নেই তার। তবে তিনি রাহুলকে সমর্থন দিতে আরো বড় ভূমিকা নিতে পারেন।
দিন শেষে এটাকে দেখা হচ্ছে কংগ্রেসের দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি ব্যর্থতা। দলীয় একজন কর্মকর্তা বীরেন্দ্র মদন বলেছেন, আমাদের মেনিফেস্টো দেখুন। এটাই সেরা। আমরা যে পলিসি ঘোষণা করেছি, যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা সেরা। আমরা ভোটারদের কাছে ভোট প্রত্যাশা করেছিলাম, তাদের সমর্থন প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু তা পাই নি। তিনি বলেন, দিল্লিতে দলীয় নেতারা এবং রাজ্য পর্যায়ের নেতারা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বৈঠক করবেন। তারা বের করবেন ভুলটা কি ছিল। তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের ফল যাই হোক নেতৃত্বের পাশে থাকবে না এমন বিষয় নেই পার্টিতে। তার ভাষায়, শুধু রাহুল গান্ধীই নন। আরো অনেক নেতাই বিজয়ী হতে পারেন নি। নির্বাচন আসবে এবং যাবে। কোনোটাতে আপনি জিতবেন। কোনোটাতে হারবেন। ১৯৮৪ সালের কথা স্মরণ করুন। ওই সময় বিজেপি মাত্র দুটি আসন পেয়েছিল। তারা কি ফিরে আসে নি? আমরাও ফিরে আসবো।
(অনলাইন বিবিসিতে প্রকাশিত লেখার অনুবাদ)
গান্ধী পরিবারের প্রধানতম রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী এখন রাহুল। তার প্র-প্রপিতামহ জওহরলাল নেহরু ছিলেন ভারতের প্রথম ও সর্বচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী। রাহুলের দাদি ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন ভারতের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। আর তার পিতা রাজীব গান্ধী ছিলেন ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রী।
২০১৪ সালের নির্বাচনকে যদি কংগ্রেসের সবচেয়ে খারাপ পারফরমেন্স হিসেবে দেখা হয় তাহলে, এবারের নির্বাচনের ফল রাহুল গান্ধীর প্রতি তারই ডাবল আঘাত। এ নির্বাচনে কংগ্রেস বিজয়ী হয়েছে ৫০টির মতো আসন। তার প্রতিপক্ষ মোদির বিজেপি পেয়েছে তিন শতাধিক আসন। যদি তাও তার জন্য বাজে পারফরমেন্স না হয় তাহলে বলা যায়, তিনি উত্তর প্রদেশে পারিবারিক ঘাঁটি আমেথিও হারিয়েছেন। এ আসনে নির্বাচন করে তিনি হেরেছেন।
তারপরও তিনি পার্লামেন্টে একটি আসনে বসতে পারবেন। কারণ, তিনি কেরালায় ওয়ানাদে দ্বিতীয় আসন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়েছেন।
কিন্তু আমেথি রাহুল গান্ধীর কাছে ছিল প্রেস্টিজ লড়াই। এটা সেই আসন, যেখান থেকে তার পিতা রাজীব গান্ধী ও মা সোনিয়া গান্ধী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়েছিলেন। তারপর ১৫ বছর ধরে এই আসন ধরে রেখেছেন রাহুল। এমনকি নির্বাচনের আগে আমেথির প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে ‘মেরা আমেথি পরিবার’ বা আমার আমেথি পরিবার শীর্ষক একটি আবেগময় চিঠি পৌঁছে দিয়েছিলেন রাহুল। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি তাদের মনে স্থান পান নি। আমেথির জনগণের কাছে তিনি অপদস্থ হয়েছেন। বিজেপির হাই প্রোফাইল অভিনেত্রী কাম রাজনীতিক স্মৃতি ইরানির কাছে তিনি ধরাশায়ী হয়েছেন।
উত্তর প্রদেশের কেন্দ্রীয় এলাকা। উত্তর প্রদেশ হলো ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য। বলা হয় এ রাজ্যে যিনি বিজয়ী হন তিনিই নাকি ভারত শাসন করেন। ভারতে এ পর্যন্ত যে ১৪ জন প্রধানমন্ত্রী এসেছেন তার মধ্যে রাহুল গান্ধীর প্র-প্রপিতামহ, দাদি ও বাবাসহ আট জনই এই রাজ্যের। এই রাজ্যে সবচেয়ে বেশি এমপি নির্বাচিত হন। ভারতের ৫৪৫ আসনের নিম্নকক্ষে এ রাজ্যে আসন সংখ্যা ৮০। এমনকি নরেন্দ্র মোদি, যিনি এসেছেন গুজরাট থেকে, তিনি পর্যন্ত এমপি হিসেবে তার অভিষেক ঘটনা উত্তর প্রদেশ থেকে ২০১৪ সালে। ওই সময় তিনি প্রাচীন শহর বারানসি থেকে নির্বাচন করেছিলেন।
খুব বেশি মানুষ প্রত্যাশা করেন নি যে, এবার বড় জয় পাবে কংগ্রেস। তবে তারা এটা নিশ্চিত ছিলেন, ২০১৪ সালের তুলনায় এবার কংগ্রেস ভালো করবে। এ জন্যই এবারের নির্বাচনের ফল দলের ভেতরে ও বাইরে সবাইকে হতভম্ব করে দিয়েছে। কংগ্রেস হয়তো এবার পার্লামেন্টে নিস্তেজ হয়ে পড়বে। তবে বহু মানুষের মনে প্রশ্ন- এর অর্থ কি গান্ধী যুগের অবসান? না কি দলের ভাগ্য ফেরানোর জন্য এর শেষ হওয়া উচিত?
কংগ্রেস কি চায়?
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রাহুল গান্ধী। সেখানে তিনি মোদির কাছে পরাজয় মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জনগণ তাদের রায় দিয়েছে এবং তারা বেছে নিয়েছে বিজেপিকে। কংগ্রেস পার্টির পরাজয়ের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব তিনি নিজের কাঁধে তুলে নেন। এমন কি তার আসন আমেথিতে তখনো তিন লাখের বেশি ভোট গণনা করার বাকি যখন, তখন তিনি স্মৃতি ইরানির কাছে পরাজয় স্বীকার করে নেন। রাহুল বলেন, আমি তাকে অভিনন্দন জানাই। তিনি বিজয়ী হয়েছেন। এটাই গণতন্ত্র। আমি জনগণের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। তবে কংগ্রেসের পারফরমেন্স অথবা এর পরবর্তীতে কংগ্রেসের করণীয় কি হবে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানান। রাহুল বলেন, এসব বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠক করবে। সেখানে এসব নিয়ে আলোচনা করা হবে।
রাহুল গান্ধী কংগ্রেস নেতাকর্মীদের, যারা বিজয়ী হয়েছেন এবং যারা পরাজিত হয়েছেন, তাদের সবাইকে আশা না হারানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভীত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমরা কঠোর পরিশ্রম করবো এবং আমরা এরপর বিজয়ী হবো। কিন্তু লক্ষ্ণৌতে কংগ্রেস অফিসের চিত্র ভিন্ন। রাহুল গান্ধী ভবিষ্যতে বিজয়ী হওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাতে দৃশ্যত নেতাকর্মীদের হতাশ দেখা গেছে, তারা টিভির পর্দায় আঠার মতো লেগে ছিলেন। দলীয় বর্ষীয়ান নেতারা যখন একে একে ভূপাতিত হচ্ছিলেন তখন যেন দলের রক্তক্ষরণ দেখছিলেন তারা। দলীয় একজন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা একেবারে নিম্ন পর্যায়ের। আমাদের প্রতিশ্রুতিতে মানুষের আস্থা নেই। আমরা যা বলি তাতে তাদের কোনো বিশ্বাস নেই। নরেন্দ্র মোদি তার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু মানুষ তাকে বিশ্বাস করে এখনো।
কিন্তু এমনটা কেন?
এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরাও তো বুঝতে পারি না কেন!
এখন কংগ্রেসের যে বাজে পারফরমেন্স তাতে অনেক প্রশ্ন উঠবে। তার মধ্যে বড় প্রশ্ন উঠতে পারে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব নিয়ে। অনেক বিশ্লেষক এরই মধ্যে দলীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার কথা বলেছেন। তারা চান, রাহুল দলীয় প্রধানের পদ ত্যাগ করুন। কিন্তু অতীতের মতো, এবারো এসব আহ্বান বা ডাক এসেছে দলের বাইরে থেকে। এমন আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে দলের নেতৃত্ব থেকে। এ অবস্থায় রাহুল গান্ধী পদত্যাগ করতে চেয়েছেন বলে দিল্লিজুড়ে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। তবে কংগ্রেসের রাজনীতিক মণি শঙ্কর আইয়ার বিবিসিকে বলেছেন, দলের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলবে না কংগ্রেস। যদি রাহুল গান্ধী পদত্যাগ করতে চান তাহলে তা গৃহীত হবে না। তিনি আরো বলেন, দলের এমন পরাজয়ের জন্য নেতৃত্ব দায়ী নয়। এর অন্য কারণ আছে, আমাদেরকে তা খুঁজে বের করতে হবে।
লক্ষ্ণৌতে দলের স্থানীয় একজন মুখপাত্র ব্রিজেন্দ্র কুমার সিং ব্যাখ্যা করেন যে, সমস্যাটা রাহুল গান্ধীর ক্ষমতার মধ্যে নয়। সমস্যা হলো দলের ভেতরে আভ্যন্তরীণ কোন্দল ও দুর্বল নির্বাচনী প্রচারণা। তিনি আরো বলেন, দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে রয়েছে দুর্বলতা। আছে পদ নিয়ে আভ্যন্তরীণ কোন্দল। উত্তর প্রদেশ ও বিহারে আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে জোট গঠন করা ছিল একটি খারাপ আইডিয়া। কংগ্রেসের কোনো নেতা এখনো পর্যন্ত পরাজয়ের দায় রাহুল গান্ধীর ওপর চাপান নি। তবে তারা এর জন্য দায়ী করেছেন সাংগঠনিক ও নির্বাচনী প্রচারণার কৌশলকে।
ব্যক্তিত্বের প্রতিযোগিতা?
কংগ্রেস বিষয়ক বহু বিশ্লেষক ব্যক্তিগতভাবে স্বীকার করেন যে, ব্যক্তিত্বের প্রতিযোগিতায় রাহুল গান্ধী ছিলেন পরাজিত পক্ষে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা ছিলেন ‘ব্রান্ড মোদি’। এ কথা সবাই স্বীকার করেন। ব্রিজেন্দ্র কুমার সিং বলেন, এমন কি প্রধানমন্ত্রী মোদি গত নির্বাচনে দেয়া তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হলেও তিনি মানুষকে তার সরকারের নীতির বিষয়ে আশ্বস্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। মোদির হাতে বিধ্বস্ত হওয়ার মতো এমন ঘটনা রাহুল গান্ধীর কাছে এটাই প্রথম নয়। ২০১৪ সালে তার দল এ যাবৎকালের সবচেয়ে খারাপ ফল করে। তখন কংগ্রেস জেতে মাত্র ৪৪ আসনে।
বেশ কিছু রাজ্যে কংগ্রেস পরাজিত হয়েছেন। দূরে দূরে থাকা এবং নাগালের বাইরে থাকার জন্য রাহুল গান্ধী সমালোচিত হয়েছেন। তাকে সামাজিক যোগাযোগ মিডিয়ায় আনাড়ি, ক্লুহীন নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। নেহরু-গান্ধী পরিবারের সঙ্গে যোগসূত্র থাকায় পারিবারিক রাজত্বের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে রাহুল গান্ধীকে। আর পোড় খাওয়া জীবন থেকে উঠে আসা প্রধানমন্ত্রী মোদি তাই বার বার তাকে খোঁচা মেরেছেন। বলেছেন, রাহুল গান্ধী শীর্ষ পদে উঠে এসেছেন মেধার জোরে নয়। তিনি উঠে এসেছেন পারিবারিক সম্পর্কের জোরে।
ব্যক্তিগত পর্যায়ের আলাপচারিতায় কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা রাহুল গান্ধীকে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তারা বলেন, বিরোধী পক্ষকে ঘায়েল করার বাসনা নেই তার মধ্যে। তাহলে কি এই ব্যর্থতা একজন রাহুল গান্ধীর ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হবে না কি গান্ধী ব্রান্ডের ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হবে?
ঐতিহ্যবাহী পরিবারটির নাম সাম্প্রতিক সময়ে তার জেল্লা হারিয়েছে। বিশেষ করে শহরে ভোটার ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী যুবকদের মধ্যে তাদের সেই সুনাম কমে গেছে। এই দুটি শ্রেণির অবদান নেহরু ও ইন্দিরার জন্য ছিল বড় বিষয়। সে বিষয়টি এখন অনেক দূরের অতীত। এখন গান্ধী পরিবারের সঙ্গে তাদের সেই সংশ্লিষ্টতা নেই। এ শ্রেণিটি ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কংগ্রেসের ক্ষমতার ১০ বছরকে সামনে নিয়ে আসেন তারা। ওই সময় সরকার নানা রকম বিতর্ক ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার নির্বাচনের ফল আবার দেখিয়ে দিলো, কংগ্রেসের প্রতি ভোটারদের আস্থা এখনো অনেক নিম্ন এবং তাদের কাছে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি পৌঁছে দিতে ব্যর্থ হয়েছেন রাহুল গান্ধী।
গান্ধীর পুনর্জন্ম
দলের এমন অবস্থা হলেও দলীয় মেশিনারি এর জন্য রাহুল গান্ধীকে দায়ী করেন নি অথবা পরাজয়ের জন্য তার নাম উচ্চারণ করেন নি। দলীয় একজন নেতার মতে, রাহুল গান্ধীর হওয়া উচিত একজন ‘অমিত শাহ’। যিনি মোদির জয়কে ত্বরান্বিত করেছেন। প্রথমে গুজরাটে। পরে দিল্লিতে। তবে প্রকাশ্যে কেউ রাহুল গান্ধীকে দায়ী করবেন বলে মনে হয় না। যদি এক্ষেত্রে অতীত হয় নির্দেশক তাহলে তারা তার পিছু ধাবন করবেন।
গত দুই বছরে রাহুল গান্ধীর ক্যারিয়ারের গ্রাফ উন্নত হতে শুরু করেছে। তিনি ছায়ার ভেতর থেকে বেরিয়ে এসেছেন। রাজনৈতিক রূপ ধারণ করেছেন। তার সামাজিক আন্দোলন আগের থেকে স্মার্ট হয়েছে। তিনি কথা বলেছেন, সরকারের বহু বিতর্কিত মুদ্রা বাতিল, কর্মসংস্থানের অভাব, দেশের ভেতর ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা এবং অর্থনীতির ধীরগতি নিয়ে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ প্রচারণায় ছিলেন রাহুল। ডিসেম্বরে রাজস্থান, ছত্তিশগড় ও মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ বিজয়ে নেতৃত্ব দেন তিনি। এতে ধারণা করা হয় তিনি নতুন এজেন্ডা সেট করেছেন এবং দলকে নুতন করে জীবিত করে তুলছেন। এরপর আসে ফেব্রুয়ারি। এ সময়ে তার ক্যারিশমাটিক বোন প্রিয়াংকা গান্ধী ভদ্রকে উত্তর প্রদেশ (পূর্ব) সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত করেন। এর মধ্য দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করা হয়, গান্ধী পরিবারের এই উত্তরসূরিও অনেক কিছু। প্রিয়াংকাকে অনেকে তার দাদি ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে তুলনা করেন। অনেকে মনে করতে থাকেন প্রিয়াংকা গান্ধী পরিবারের রাজনীতিকে সুরক্ষিত রাখবেন। যেকোনো কারণেই হোক তিনি সেই রাজনীতির শিখা জ্বালিয়ে রাখতে অর্থাৎ রাজনীতিতে পা রাখতে ছিলেন অনিচ্ছুক। এখন রাহুল ও তার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। রাহুলকে সরিয়ে দেয়ার মতো কোনো পরিকল্পনাও নেই তার। তবে তিনি রাহুলকে সমর্থন দিতে আরো বড় ভূমিকা নিতে পারেন।
দিন শেষে এটাকে দেখা হচ্ছে কংগ্রেসের দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি ব্যর্থতা। দলীয় একজন কর্মকর্তা বীরেন্দ্র মদন বলেছেন, আমাদের মেনিফেস্টো দেখুন। এটাই সেরা। আমরা যে পলিসি ঘোষণা করেছি, যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা সেরা। আমরা ভোটারদের কাছে ভোট প্রত্যাশা করেছিলাম, তাদের সমর্থন প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু তা পাই নি। তিনি বলেন, দিল্লিতে দলীয় নেতারা এবং রাজ্য পর্যায়ের নেতারা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বৈঠক করবেন। তারা বের করবেন ভুলটা কি ছিল। তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের ফল যাই হোক নেতৃত্বের পাশে থাকবে না এমন বিষয় নেই পার্টিতে। তার ভাষায়, শুধু রাহুল গান্ধীই নন। আরো অনেক নেতাই বিজয়ী হতে পারেন নি। নির্বাচন আসবে এবং যাবে। কোনোটাতে আপনি জিতবেন। কোনোটাতে হারবেন। ১৯৮৪ সালের কথা স্মরণ করুন। ওই সময় বিজেপি মাত্র দুটি আসন পেয়েছিল। তারা কি ফিরে আসে নি? আমরাও ফিরে আসবো।
(অনলাইন বিবিসিতে প্রকাশিত লেখার অনুবাদ)
No comments