তিনি কখনো চিকিৎসক, কখনো এনজিও কর্মকর্তা! চুরির কথা স্বীকার
প্রতারণার
আশ্রয় নিয়ে রাজধানীর ভাটারা এলাকার একটি বাসা থেকে সোনা চুরি করার কথা
স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন এক নারী। তাঁর নাম তানিয়া আক্তার
ওরফে তানি ওরফে অ্যানি ওরফে নদী ওরফে সাদিয়া ওরফে চিকিৎসক নওশীন (২৬)। এই
নারীর বাড়ি গাজীপুরের জয়দেবপুরে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতকে আজ প্রতিবেদন দিয়ে জানিয়েছে, তানিয়া নিজেকে কখনো চিকিৎসক কখনো এনজিও কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন। বিভিন্ন সময় ধনাঢ্য পরিবারের ছেলেদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। পরিচয়ের সুবাদে ওই সব বাসায় যাতায়াত করেন। পরে কৌশলে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বাসার নগদ টাকাসহ স্বর্ণালংকার চুরি করে সটকে পড়েন। তানিয়ার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ১০ থেকে ১২টি চুরির মামলা আছে।
১৪ লাখ টাকা সমমূল্যের স্বর্ণালংকার ও নগদ ৪৮ হাজার টাকা চুরির অভিযোগে খলিলুর রহমান (৭৭) নামের এক ব্যক্তি ১৯ মে ভাটারা থানায় চুরির মামলা করেন। মামলার এজাহারে অ্যানি নামের এক নারীকে তিনি আসামি করেন।
মামলায় খলিলুর রহমান বলেন, গত ১৯ মে সকাল সাড়ে ১১টায় এক নারী ভাটারায় তাঁর বাসার নিচে আসেন। বাড়ির দারোয়ানের কাছে ওই নারী পরিচয় দেন, তাঁর নাম অ্যানি। তিনি বাড়িওয়ালার মেয়ে খুরশিদ জাহানের বান্ধবী (ওমানে থাকেন)। দারোয়ান তাঁকে এ বিষয়টি জানানোর পর ওই নারীকে বাসায় আসার অনুমতি দেন খলিলুর। ঘরে ঢোকার পর ওই নারী তাঁর কাছে পরিচয় দেন, পেশায় তিনি চিকিৎসক, তাঁর স্বামীও একজন চিকিৎসক। তাঁর নাম অ্যানি। ওই দিনই বিদেশ থেকে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁর কাছে কিছু ডলার আছে, যা নিরাপদ স্থানে রাখতে চান । কিন্তু বাংলাদেশে তাঁর কোনো ব্যাংক হিসাব নেই। যে কারণে ডলারগুলো তাঁর (বাদীর) বাসায় রাখতে চান।
বাদী খলিলুর রহমান এজাহারে আরও বলেন, ওই নারীর সব কথা সরল মনে তিনি বিশ্বাস করেন। ওই নারী তাঁর কাছে জানতে চান, বাসায় কোনো আলমারি আছে কি না? জবাবে তিনি জানান, আছে। তখন বাদী খলিলুরের সঙ্গে ওই নারী বাসার ড্রয়িংরুমে ঢোকেন। তখন বাদীকে আলমারি খুলতে বলেন ওই নারী। বাদী তখন আলমারি খুলে দেন। ওই নারী তখন ফের জানতে চান, আলমারির গোপন কোনো ড্রয়ার আছে কি না? বাদী তখন গোপন ড্রয়ার খুলে দেন। ওই নারী ডলার রাখার নাম করে আলমারির গোপন ড্রয়ার থেকে ২৫ থেকে ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার নেন। নগদ নেন আরও ৪৮ হাজার টাকা। এরপর ওই নারী বাদীকে বলেন, তিনি তাঁর স্বামীকে নিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে আবার বাসায় আসবেন। ওই নারীর কথা বিশ্বাস করে বাদী খলিল রহমান অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু ওই নারী আর বাদীর বাসায় আসেননি। তখন বাদীর মনে সন্দেহ হয়। তিনি ওমানে থাকা তাঁর মেয়েকে টেলিফোন করেন। মেয়ের কাছে জানতে চান, তাঁর অ্যানি নামে কোনো বান্ধবী আছে কি না? বাদীকে তাঁর মেয়ে জানিয়ে দেন, এই নামের কোনো নারী তাঁর বান্ধবী নেই। তখন বৃদ্ধ খলিলুর রহমান বাসার আলমারির গোপন ড্রয়ার খুলে দেখেন, সেখানে রাখা স্বর্ণালংকার ও টাকা নেই।
খলিলুর রহমানের অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর বিভাগ)।
২৭ মে তানিয়াসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার আদালতে হাজির করে ডিবি পুলিশ। তানিয়া ছাড়া অপর দুই আসামি হলেন, আফসানা ওরফে দুলারী ও আবদুস সামাদ মিয়া রায়হান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির (উত্তর) গুলশান জোনাল টিমের উপপরিদর্শক হাবিবুর রহমান আদালতকে এক প্রতিবেদন দিয়ে জানান, চুরি করা তানিয়ার পেশা। বিভিন্ন সময় গুলশান, বনানীর অভিজাত হোটেলের ডিজে পার্টিতে তিনি হাজির হন। সেখানে আসা ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তানিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে। ভাটারা থেকে চুরি করে নিয়ে যাওয়া স্বর্ণালংকার আসামি আফসানার মাধ্যমে উত্তরার মাসকট প্লাজার নিউ পরমা জুয়েলার্সের কর্মচারী সামাদের কাছে বিক্রি করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামি আফসানা জানিয়েছেন, ভাটারা থেকে চুরি করে আনা দুই জোড়া কানের দুল, হাতের চুড়ি ১ লাখ ৭৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। আসামি সামাদের কাছ থেকে কানের দুল, হাতের চুরি এবং গলিত পাঁচ ভরি সোনা উদ্ধার করেন। এ ছাড়া তানিয়ার কাছ থেকে চুরি করা একটি নেকলেস, দুটি কানের দুল, দুটি পাশা, একটি চেন, তিনটি আংটিসহ নগদ দেড় লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা হয় একটি প্রাইভেট কার।
চুরির ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য তানিয়াসহ তিনজনকে দুই দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আদালত অনুমতি দেন। আদালতের কাছে সেদিন তানিয়া নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
দুই দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ডিবি আজ আদালতকে এক প্রতিবেদন দিয়ে জানান, তানিয়া চুরির ঘটনার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিতে চান।
তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই হাবিবুর রহমান বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, তানিয়া চুরির কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তানিয়া ছাড়াও আফসানা ও সামাদ ভাটারার চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, তানিয়ার বিরুদ্ধে চুরির মামলা আছে। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে একাধিকবার চুরি করেছেন। পুলিশ এবং আদালত সূত্র বলছে, তানিয়া গত বছরের অক্টোবর মাসে একবার র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতকে আজ প্রতিবেদন দিয়ে জানিয়েছে, তানিয়া নিজেকে কখনো চিকিৎসক কখনো এনজিও কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন। বিভিন্ন সময় ধনাঢ্য পরিবারের ছেলেদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। পরিচয়ের সুবাদে ওই সব বাসায় যাতায়াত করেন। পরে কৌশলে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বাসার নগদ টাকাসহ স্বর্ণালংকার চুরি করে সটকে পড়েন। তানিয়ার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ১০ থেকে ১২টি চুরির মামলা আছে।
১৪ লাখ টাকা সমমূল্যের স্বর্ণালংকার ও নগদ ৪৮ হাজার টাকা চুরির অভিযোগে খলিলুর রহমান (৭৭) নামের এক ব্যক্তি ১৯ মে ভাটারা থানায় চুরির মামলা করেন। মামলার এজাহারে অ্যানি নামের এক নারীকে তিনি আসামি করেন।
মামলায় খলিলুর রহমান বলেন, গত ১৯ মে সকাল সাড়ে ১১টায় এক নারী ভাটারায় তাঁর বাসার নিচে আসেন। বাড়ির দারোয়ানের কাছে ওই নারী পরিচয় দেন, তাঁর নাম অ্যানি। তিনি বাড়িওয়ালার মেয়ে খুরশিদ জাহানের বান্ধবী (ওমানে থাকেন)। দারোয়ান তাঁকে এ বিষয়টি জানানোর পর ওই নারীকে বাসায় আসার অনুমতি দেন খলিলুর। ঘরে ঢোকার পর ওই নারী তাঁর কাছে পরিচয় দেন, পেশায় তিনি চিকিৎসক, তাঁর স্বামীও একজন চিকিৎসক। তাঁর নাম অ্যানি। ওই দিনই বিদেশ থেকে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁর কাছে কিছু ডলার আছে, যা নিরাপদ স্থানে রাখতে চান । কিন্তু বাংলাদেশে তাঁর কোনো ব্যাংক হিসাব নেই। যে কারণে ডলারগুলো তাঁর (বাদীর) বাসায় রাখতে চান।
বাদী খলিলুর রহমান এজাহারে আরও বলেন, ওই নারীর সব কথা সরল মনে তিনি বিশ্বাস করেন। ওই নারী তাঁর কাছে জানতে চান, বাসায় কোনো আলমারি আছে কি না? জবাবে তিনি জানান, আছে। তখন বাদী খলিলুরের সঙ্গে ওই নারী বাসার ড্রয়িংরুমে ঢোকেন। তখন বাদীকে আলমারি খুলতে বলেন ওই নারী। বাদী তখন আলমারি খুলে দেন। ওই নারী তখন ফের জানতে চান, আলমারির গোপন কোনো ড্রয়ার আছে কি না? বাদী তখন গোপন ড্রয়ার খুলে দেন। ওই নারী ডলার রাখার নাম করে আলমারির গোপন ড্রয়ার থেকে ২৫ থেকে ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার নেন। নগদ নেন আরও ৪৮ হাজার টাকা। এরপর ওই নারী বাদীকে বলেন, তিনি তাঁর স্বামীকে নিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে আবার বাসায় আসবেন। ওই নারীর কথা বিশ্বাস করে বাদী খলিল রহমান অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু ওই নারী আর বাদীর বাসায় আসেননি। তখন বাদীর মনে সন্দেহ হয়। তিনি ওমানে থাকা তাঁর মেয়েকে টেলিফোন করেন। মেয়ের কাছে জানতে চান, তাঁর অ্যানি নামে কোনো বান্ধবী আছে কি না? বাদীকে তাঁর মেয়ে জানিয়ে দেন, এই নামের কোনো নারী তাঁর বান্ধবী নেই। তখন বৃদ্ধ খলিলুর রহমান বাসার আলমারির গোপন ড্রয়ার খুলে দেখেন, সেখানে রাখা স্বর্ণালংকার ও টাকা নেই।
খলিলুর রহমানের অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর বিভাগ)।
২৭ মে তানিয়াসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার আদালতে হাজির করে ডিবি পুলিশ। তানিয়া ছাড়া অপর দুই আসামি হলেন, আফসানা ওরফে দুলারী ও আবদুস সামাদ মিয়া রায়হান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির (উত্তর) গুলশান জোনাল টিমের উপপরিদর্শক হাবিবুর রহমান আদালতকে এক প্রতিবেদন দিয়ে জানান, চুরি করা তানিয়ার পেশা। বিভিন্ন সময় গুলশান, বনানীর অভিজাত হোটেলের ডিজে পার্টিতে তিনি হাজির হন। সেখানে আসা ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তানিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে। ভাটারা থেকে চুরি করে নিয়ে যাওয়া স্বর্ণালংকার আসামি আফসানার মাধ্যমে উত্তরার মাসকট প্লাজার নিউ পরমা জুয়েলার্সের কর্মচারী সামাদের কাছে বিক্রি করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামি আফসানা জানিয়েছেন, ভাটারা থেকে চুরি করে আনা দুই জোড়া কানের দুল, হাতের চুড়ি ১ লাখ ৭৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। আসামি সামাদের কাছ থেকে কানের দুল, হাতের চুরি এবং গলিত পাঁচ ভরি সোনা উদ্ধার করেন। এ ছাড়া তানিয়ার কাছ থেকে চুরি করা একটি নেকলেস, দুটি কানের দুল, দুটি পাশা, একটি চেন, তিনটি আংটিসহ নগদ দেড় লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা হয় একটি প্রাইভেট কার।
চুরির ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য তানিয়াসহ তিনজনকে দুই দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আদালত অনুমতি দেন। আদালতের কাছে সেদিন তানিয়া নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
দুই দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ডিবি আজ আদালতকে এক প্রতিবেদন দিয়ে জানান, তানিয়া চুরির ঘটনার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিতে চান।
তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই হাবিবুর রহমান বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, তানিয়া চুরির কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তানিয়া ছাড়াও আফসানা ও সামাদ ভাটারার চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, তানিয়ার বিরুদ্ধে চুরির মামলা আছে। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে একাধিকবার চুরি করেছেন। পুলিশ এবং আদালত সূত্র বলছে, তানিয়া গত বছরের অক্টোবর মাসে একবার র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন।
No comments