ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে by ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
ডেঙ্গু
ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীতে। ২৪ ঘণ্টায় ৫ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে
হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন। মে মাসেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে
হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩০জন। এছাড়া এবছর ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ২ জন। চলতি
বছরের এই পর্যন্ত ২০৫ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের ন্যাশনাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের
ইনচার্জ ডা. আয়েশা আক্তার মানবজমিনকে নিশ্চিত করেছেন। এডিস মশার মাধ্যমে
ডেঙ্গু জ্বর মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হচ্ছে। রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে বিশেষ
করে বেসরকারি হাসপাতালে প্রচুর ডেঙ্গু রোগী আসছেন। রাজধানীর ধানমন্ডি
সেন্ট্রাল হাসপাতালে ৪০ জন, ইসলামিক ব্যাংক হাসপাতাল কাকরাইলে ২৮ জন,
এ্যাপোল হাসপাতালে ২জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫ জন, আদ-দ্বীন
মেডিকেল হাসপাতালে ১৪ জন, ইউনাইটেড হাসপাতালে ১০জন, স্কয়ার হাসপাতালে ১৫
জন, সালাউদ্দিন হাসপাতালে ১১ জন, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪ জন,
ইবনে সিনা হাসপাতালে ১৮ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ১১ জন, বিএসএমএমইউতে ৪ জন,
সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৬ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ৪
জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন।
কন্ট্রোল রুম সূত্র জানা গেছে, জানুয়ারিতে ৩৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ফের্রুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল ১৭, মার্চে ১৩, এপ্রিলে ৪২ এবং ২৯শে মে পর্যন্ত ১৩০ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে ১৩ জন ছাড়া অন্যরা সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছেন। বেসরকারি হাসপাতালের অথবা প্রাইভেট চেম্বারের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী আসছেন। ভাইরাসজনিত এ জ্বরের ব্যবস্থাপনা এখন জানা আছে বলে চিকিৎসায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ২০০০ সালে ঢাকায় পাঁচ হাজার ৫৫১ ডেঙ্গু রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়। ওই বছর ৯৩ জন মারা যান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, ডেঙ্গু অথবা চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্তদের আমরা হাসপাতালে ভর্তি করতে চাই না। কারণ এটা ঘরে রেখেই চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। এ সম্বন্ধে এখন মানুষ বেশ সচেতন। জ্বরের রোগী ভর্তি করলে আমরা অন্য গুরুতর রোগীর চিকিৎসা করতে পারব না। অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ডেঙ্গু অথবা চিকুনগুনিয়ার প্রায় একই ধরনের চিকিৎসা। কেবল প্যারাসিটামল ছাড়া কোনো ব্যথানাশক অথবা স্টেরয়েড দেয়া যাবে না রোগীকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডেঙ্গু অথবা চিকুনগুনিয়া জ্বরই হোক তা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মশার বিস্তার কমাতে হবে। এডিস মশার দুইটি প্রজাতি এডিস ইজিপ্টাই ও এডিস অ্যালবুপিকপকটাসের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়াচ্ছেন আবার মানুষ থেকে মশার মাধ্যমে আসছে। পরে মশা থেকে আবার মানুষকে সংক্রমিত করছে। একবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে বার বার ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অন্যান্য মশা ময়লা নোংরা পানিতে বংশ বিস্তার করলেও এডিস মশা এর ব্যতিক্রম, পরিষ্কার পানিতে ডিম ছাড়ে। সহজে চোখে পড়ে না এমন জায়গার পরিষ্কার পানিতে এ মশা ডিম ছাড়ে। ফলে শহরে বিশেষ করে অভিজাত এলাকায় এডিস মশা বেশি দেখা যায়।
ডেঙ্গুর চিকিৎসা সম্বন্ধে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক খান আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, ডেঙ্গুজ্বর হলে প্রচুর পানি পান করতে হবে ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। জ্বর বাড়লে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ অথবা আরো বেশি জ্বর হলে তা কমিয়ে রাখার জন্য সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হবে। ডেঙ্গুর চিকিৎসা বাড়িতে রেখেও হতে পারে। বেশি দুর্বল বা শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়লে, নাক ও দাঁত দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকলে হাসপাতালে নেয়াই ভালো। ডেঙ্গুজ্বর সাধারণত ১০ দিনের মধ্যে সেরে যায়। কিন্তু দুর্বলতা আরো কিছু দিন থেকে যেতে পারে। ভাইরাসজনিত জ্বর বলে এর কোনো চিকিৎসা নেই। কেবল লক্ষ্মণ বুঝেই চিকিৎসা দিতে হবে।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুলাহ বলেন, মে জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বর হয়ে থাকে। শীতের সময় কমে আসবে। তিনি বলেন, এই সময়ে জ্বর বা গায়ে ব্যথা হলে ডেঙ্গুর কথা মাথায় রাখতে হবে। সাধারণ ডেঙ্গু জ্বর তেমন মারাত্মক রোগ নয়। ডেঙ্গু রোগীর যখন বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের প্রমাণ মেলে (যেমন মাড়ি বা নাক থেকে রক্তক্ষরণ, মলের সঙ্গে রক্তক্ষরণ ইত্যাদি) তখন একে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বলা হয়। অধিক রক্তক্ষরণের ফলে শরীরের জলীয় উপাদান কমে যায়। ডেঙ্গুজ্বর হলে প্রচুর পানি পান করতে হবে ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। জ্বর বাড়লে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ অথবা আরো বেশি জ্বর হলে তা কমিয়ে রাখার জন্য সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হবে।
স্থাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৮ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ১০ হাজার ১৪৮ জন। মারা গেছে ২৬ জন। ২০১৭ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৭৬৯ জন। মারা গেছেন ৮ জন। ২০১৬ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬০৬০ জন, মারা গেছে ১৪ জন। ২০১৫ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১৬২ জন, মারা গেছে ছয়জন। ২০১৪ সালে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৭৩ জন। কেউ মারে যায়নি। ২০১৩ সালে ১৪৭৮ জন, ২০১২ সালে ১২৮৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ২০১১ সালে ১৩৬২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ২০১০ সালে ৪০৯ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন। এই সালে ছয়জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ২০০৯ সালে ৪৭৪ জন, ২০০৮ সালে ১১৫৩ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগী হাসপাতলে আসেন।
কন্ট্রোল রুম সূত্র জানা গেছে, জানুয়ারিতে ৩৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ফের্রুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল ১৭, মার্চে ১৩, এপ্রিলে ৪২ এবং ২৯শে মে পর্যন্ত ১৩০ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে ১৩ জন ছাড়া অন্যরা সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছেন। বেসরকারি হাসপাতালের অথবা প্রাইভেট চেম্বারের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী আসছেন। ভাইরাসজনিত এ জ্বরের ব্যবস্থাপনা এখন জানা আছে বলে চিকিৎসায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ২০০০ সালে ঢাকায় পাঁচ হাজার ৫৫১ ডেঙ্গু রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়। ওই বছর ৯৩ জন মারা যান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, ডেঙ্গু অথবা চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্তদের আমরা হাসপাতালে ভর্তি করতে চাই না। কারণ এটা ঘরে রেখেই চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। এ সম্বন্ধে এখন মানুষ বেশ সচেতন। জ্বরের রোগী ভর্তি করলে আমরা অন্য গুরুতর রোগীর চিকিৎসা করতে পারব না। অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ডেঙ্গু অথবা চিকুনগুনিয়ার প্রায় একই ধরনের চিকিৎসা। কেবল প্যারাসিটামল ছাড়া কোনো ব্যথানাশক অথবা স্টেরয়েড দেয়া যাবে না রোগীকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডেঙ্গু অথবা চিকুনগুনিয়া জ্বরই হোক তা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মশার বিস্তার কমাতে হবে। এডিস মশার দুইটি প্রজাতি এডিস ইজিপ্টাই ও এডিস অ্যালবুপিকপকটাসের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়াচ্ছেন আবার মানুষ থেকে মশার মাধ্যমে আসছে। পরে মশা থেকে আবার মানুষকে সংক্রমিত করছে। একবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে বার বার ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অন্যান্য মশা ময়লা নোংরা পানিতে বংশ বিস্তার করলেও এডিস মশা এর ব্যতিক্রম, পরিষ্কার পানিতে ডিম ছাড়ে। সহজে চোখে পড়ে না এমন জায়গার পরিষ্কার পানিতে এ মশা ডিম ছাড়ে। ফলে শহরে বিশেষ করে অভিজাত এলাকায় এডিস মশা বেশি দেখা যায়।
ডেঙ্গুর চিকিৎসা সম্বন্ধে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক খান আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, ডেঙ্গুজ্বর হলে প্রচুর পানি পান করতে হবে ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। জ্বর বাড়লে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ অথবা আরো বেশি জ্বর হলে তা কমিয়ে রাখার জন্য সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হবে। ডেঙ্গুর চিকিৎসা বাড়িতে রেখেও হতে পারে। বেশি দুর্বল বা শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়লে, নাক ও দাঁত দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকলে হাসপাতালে নেয়াই ভালো। ডেঙ্গুজ্বর সাধারণত ১০ দিনের মধ্যে সেরে যায়। কিন্তু দুর্বলতা আরো কিছু দিন থেকে যেতে পারে। ভাইরাসজনিত জ্বর বলে এর কোনো চিকিৎসা নেই। কেবল লক্ষ্মণ বুঝেই চিকিৎসা দিতে হবে।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুলাহ বলেন, মে জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বর হয়ে থাকে। শীতের সময় কমে আসবে। তিনি বলেন, এই সময়ে জ্বর বা গায়ে ব্যথা হলে ডেঙ্গুর কথা মাথায় রাখতে হবে। সাধারণ ডেঙ্গু জ্বর তেমন মারাত্মক রোগ নয়। ডেঙ্গু রোগীর যখন বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের প্রমাণ মেলে (যেমন মাড়ি বা নাক থেকে রক্তক্ষরণ, মলের সঙ্গে রক্তক্ষরণ ইত্যাদি) তখন একে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বলা হয়। অধিক রক্তক্ষরণের ফলে শরীরের জলীয় উপাদান কমে যায়। ডেঙ্গুজ্বর হলে প্রচুর পানি পান করতে হবে ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। জ্বর বাড়লে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ অথবা আরো বেশি জ্বর হলে তা কমিয়ে রাখার জন্য সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হবে।
স্থাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৮ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ১০ হাজার ১৪৮ জন। মারা গেছে ২৬ জন। ২০১৭ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৭৬৯ জন। মারা গেছেন ৮ জন। ২০১৬ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬০৬০ জন, মারা গেছে ১৪ জন। ২০১৫ সালে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১৬২ জন, মারা গেছে ছয়জন। ২০১৪ সালে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৭৩ জন। কেউ মারে যায়নি। ২০১৩ সালে ১৪৭৮ জন, ২০১২ সালে ১২৮৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ২০১১ সালে ১৩৬২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ২০১০ সালে ৪০৯ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন। এই সালে ছয়জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ২০০৯ সালে ৪৭৪ জন, ২০০৮ সালে ১১৫৩ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগী হাসপাতলে আসেন।
No comments