জাকাত ট্র্যাজেডি: চার বছরেও থামেনি স্বজনহারাদের কান্না by আতাউর রহমান জুয়েল
‘মায়ের
মুখখানি কত দিন দেখি না। চার বছর কেটে গেছে। কিন্তু একদিনের জন্যও মাকে
ভুলে থাকতে পারিনি। আসলে মায়ের অভাব পূরণ হওয়ার নয়। ঈদের আগে-পরের দিনগুলো
খুব অসহ্য লাগে। মায়ের অভাবে চোখের জলে ভিজে আসে আমাদের ঈদ।’
কথাগুলো শেষ না হতেই ডুকরে কেঁদে ফেলেন মিতু। চার বছর আগে ময়মনসিংহ মহানগরীর নুরানি জর্দা ফ্যাক্টরির মালিক শামীম তালুকদারের বাসায় জাকাতের কাপড় আনতে গিয়ে পদদলিত হয়ে মারা যান মিতুর মা খোদেজা খাতুন। এখনও মা হারানোর যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন মিতু।
২০১৫ সালের ১০ জুলাই্ (২৫ রমজান) ভোররাতে নুরানি জর্দা ফ্যাক্টরির মালিক শামীম তালুকদারের বাসায় জাকাতের কাপড় আনতে গিয়ে পদদলিত হয়ে ২৭ জন নিহত হন। ওই সময় আহত হন আরও অন্তত দুই শতাধিক হতদরিদ্র মানুষ। এ ঘটনায় জর্দা ফ্যাক্টরির মালিক শামীম তালুকদারসহ ৮-১০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
ভাই রাব্বিকে নিয়ে এখনও থানাঘাট বস্তিতেই থাকেন ডেইজি আক্তার মিতু। তিনি জানান, নতুন কাপড়ের আশায় ২৫ রমজান রাতে আরও অনেকের সাথে শামীম তালুকদারের বাসার সামনে অপেক্ষা করছিলেন তার মা। ভোরবেলা বাসার গেট খোলার পর হুড়োহুড়ি করে ঢুকতে গিয়ে পদদলিত হয়ে তার মা মারা যান।
তিনি আরও জানান, তার মা গৃহকর্মীর কাজ করতেন। সেই আয়েই চলতো তাদের সংসার। মায়ের মৃত্যুর পর তারা অকূল পাথারে পড়েন। তখন কলেজে পড়তেন মিতু। মায়ের মৃত্যুর পর লেখাপড়াও বন্ধ হওয়ার অবস্থা তৈরি হয়েছিল। পরে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের একটি প্রকল্পে কাজ পান তিনি। বর্তমানে মিতু আনন্দ মোহন কলেজে রাষ্টবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স করছেন।
মিতু বলেন, ‘এক মুহূর্তের জন্যও মাকে ভুলে থাকতে পারি না। রমজান মাস আসলেই হাহাকারটা আরও বাড়ে। ঈদের দিনগুলো কাটে চোখের জলে।’
তিনি জানান, যখন তিনি ৪র্থ শ্রেণিতে, তখন তার বাবা আব্দুল খালেক তাদের ছেড়ে অন্যত্র চলে যান; নতুন করে বিয়ে করে সংসার বাধেন। মায়ের মৃত্যুর পর অনেক দুর্যোগের মধ্য দিয়ে গেছেন তারা; কিন্তু কেউ কখনও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসেনি।
শুধু মিতু নন; জাকাত ট্র্যাজেডিতে স্বজন হারানো মানুষগুলো এখনও রমজান মাস আসলে নীরবে চোখের জল ফেলেন। ঈদের আগের-পরের দিনগুলো কাটে বুকচাপা কান্না আড়ালের মধ্য দিয়ে।
২০১৫ সালের ১০ জুলাই্ জাকাতের কাপড় আনতে গিয়ে পদদলনে নিহত হন থানাঘাট বস্তির বিদ্যুৎমিস্ত্রি নুর ইসলামের স্ত্রী সখিন খাতুন ও তার দুই বছরের কোলের কন্যা লামিয়া আক্তার। স্ত্রীর মৃত্যুর পর আর বিয়ে করেননি নুর। ছেলে শরিফুল ইসলাম সুপ্তকে (১৫) নিয়ে দিনযাপন করছেন তিনি।
নুর জানান, সারা দিন কাজ শেষে রাতে বাসায় ফিরলেই সখিনা ও লামিয়ার কথা মনে পড়ে তার। ছেলে সুপ্তও তার মায়ের কথা ভুলতে পারেনি। মায়ের কথা মনে পড়লেই একা একা কাঁদে সে।
জাকাত ট্র্যাজেডিতে আহত হন আবুল কালাম। তিনি জানান, রোজা আসলেই সেই দিনের স্মৃতি চোখে ভেসে ওঠে; কিছুতেই তা ভুলে যেতে পারেন না। হতাহতদের সাহায্যে সরকারি কোনও সহায়তা এখনও তারা পাননি বলেও দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, জাকাত ট্র্যাজেডির হতাহতদের পরিবারকে সহায়তায় একটি তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। ওই সময় নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছিল।
কথাগুলো শেষ না হতেই ডুকরে কেঁদে ফেলেন মিতু। চার বছর আগে ময়মনসিংহ মহানগরীর নুরানি জর্দা ফ্যাক্টরির মালিক শামীম তালুকদারের বাসায় জাকাতের কাপড় আনতে গিয়ে পদদলিত হয়ে মারা যান মিতুর মা খোদেজা খাতুন। এখনও মা হারানোর যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন মিতু।
২০১৫ সালের ১০ জুলাই্ (২৫ রমজান) ভোররাতে নুরানি জর্দা ফ্যাক্টরির মালিক শামীম তালুকদারের বাসায় জাকাতের কাপড় আনতে গিয়ে পদদলিত হয়ে ২৭ জন নিহত হন। ওই সময় আহত হন আরও অন্তত দুই শতাধিক হতদরিদ্র মানুষ। এ ঘটনায় জর্দা ফ্যাক্টরির মালিক শামীম তালুকদারসহ ৮-১০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
ভাই রাব্বিকে নিয়ে এখনও থানাঘাট বস্তিতেই থাকেন ডেইজি আক্তার মিতু। তিনি জানান, নতুন কাপড়ের আশায় ২৫ রমজান রাতে আরও অনেকের সাথে শামীম তালুকদারের বাসার সামনে অপেক্ষা করছিলেন তার মা। ভোরবেলা বাসার গেট খোলার পর হুড়োহুড়ি করে ঢুকতে গিয়ে পদদলিত হয়ে তার মা মারা যান।
তিনি আরও জানান, তার মা গৃহকর্মীর কাজ করতেন। সেই আয়েই চলতো তাদের সংসার। মায়ের মৃত্যুর পর তারা অকূল পাথারে পড়েন। তখন কলেজে পড়তেন মিতু। মায়ের মৃত্যুর পর লেখাপড়াও বন্ধ হওয়ার অবস্থা তৈরি হয়েছিল। পরে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের একটি প্রকল্পে কাজ পান তিনি। বর্তমানে মিতু আনন্দ মোহন কলেজে রাষ্টবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স করছেন।
মিতু বলেন, ‘এক মুহূর্তের জন্যও মাকে ভুলে থাকতে পারি না। রমজান মাস আসলেই হাহাকারটা আরও বাড়ে। ঈদের দিনগুলো কাটে চোখের জলে।’
তিনি জানান, যখন তিনি ৪র্থ শ্রেণিতে, তখন তার বাবা আব্দুল খালেক তাদের ছেড়ে অন্যত্র চলে যান; নতুন করে বিয়ে করে সংসার বাধেন। মায়ের মৃত্যুর পর অনেক দুর্যোগের মধ্য দিয়ে গেছেন তারা; কিন্তু কেউ কখনও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসেনি।
শুধু মিতু নন; জাকাত ট্র্যাজেডিতে স্বজন হারানো মানুষগুলো এখনও রমজান মাস আসলে নীরবে চোখের জল ফেলেন। ঈদের আগের-পরের দিনগুলো কাটে বুকচাপা কান্না আড়ালের মধ্য দিয়ে।
২০১৫ সালের ১০ জুলাই্ জাকাতের কাপড় আনতে গিয়ে পদদলনে নিহত হন থানাঘাট বস্তির বিদ্যুৎমিস্ত্রি নুর ইসলামের স্ত্রী সখিন খাতুন ও তার দুই বছরের কোলের কন্যা লামিয়া আক্তার। স্ত্রীর মৃত্যুর পর আর বিয়ে করেননি নুর। ছেলে শরিফুল ইসলাম সুপ্তকে (১৫) নিয়ে দিনযাপন করছেন তিনি।
নুর জানান, সারা দিন কাজ শেষে রাতে বাসায় ফিরলেই সখিনা ও লামিয়ার কথা মনে পড়ে তার। ছেলে সুপ্তও তার মায়ের কথা ভুলতে পারেনি। মায়ের কথা মনে পড়লেই একা একা কাঁদে সে।
জাকাত ট্র্যাজেডিতে আহত হন আবুল কালাম। তিনি জানান, রোজা আসলেই সেই দিনের স্মৃতি চোখে ভেসে ওঠে; কিছুতেই তা ভুলে যেতে পারেন না। হতাহতদের সাহায্যে সরকারি কোনও সহায়তা এখনও তারা পাননি বলেও দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, জাকাত ট্র্যাজেডির হতাহতদের পরিবারকে সহায়তায় একটি তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। ওই সময় নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছিল।
No comments