বালিশ চাপা দিয়ে মায়ের গলায় ছুরি চালায় ছেলে
নবীগঞ্জের চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ আমিনা বেগমকে গলা কেটে হত্যার দায় স্বীকার করলেন ঘাতক ছেলে আমির আহমদ। রোববার হবিগঞ্জ আমল গ্রহণকারী আদালত-৫ এর বিচারক কাউছার আলমের কাছে এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে ছেলে। মা দিবসে গর্ভধারিণী মা হত্যার স্বীকারোক্তি প্রদান করলেন এসএসসি পাস করা মাদ্রাসার ছাত্র ছেলে। তার স্বীকারোক্তিতে ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় আমির। এর মধ্যে সম্পত্তি ও পরকীয়া অন্যতম কারণ। রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সুজিত চক্রবর্ত্তী গ্রেফতারকৃত ছেলে আমির আহমদকে আদালতে হাজির করলে সে স্বেচ্ছায় তার মা’কে হত্যার বর্ণনা দেয়। সে জানায়, তার মা নিহত আমিনা বেগম পরকীয়ায় আসক্ত। এছাড়া বাড়িঘরসহ সম্পত্তি তার মায়ের নামে থাকায় ওই সম্পত্তি থেকে সে বঞ্চিত থাকার আশংকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় শবেবরাতের রোজার ইফতারের আগে ২০টি ঘুমের ওষুধ রুহআফজা শরবতের সঙ্গে মিশিয়ে ইফতারের সময় তার মাকে খাওয়ায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মায়ের তন্দ্রাভাব দেখে সে তার শয়নকক্ষে ফিরে আসে। তার ধারণা ছিল ওষুধের কারণে তার মায়ের মৃত্যু ঘটবে। রাত সাড়ে ১১টা।
ছবি দেখে মায়ের খবর নিতে তার ঘরে যায়। গিয়ে দেখে দরজা খোলা, নাকে হাত দিয়ে বুঝতে পারে শ্বাস নিচ্ছেন। ওষুধে মরার সম্ভাবনা নেই ভেবে পরনের ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে আবারও তার ঘরে ফিরে আসে। রাত ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার দিকে হাতে ছুরি নিয়ে আবার তার মায়ের ঘরে যায়। প্রথমে বালিশ দিয়ে মুখে চেপে ধরে। এক হাত দিয়ে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে ধরে অন্য হাত দিয়ে গলায় ছুরি চালায়। এক পর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে তার কক্ষে ফিরে আসে। শনিবার সকাল ৮টার দিকে ছেলে আমির আহমেদ (১৭) বালিশ সরিয়ে মায়ের নিথর দেহ দেখে চিৎকার শুরু করে। এসময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে রক্তাক্ত মরদেহটি দেখতে পায়। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত আমিনার স্বামী জাবিদ উল্লাহ ও তার ছেলে আমির আহমেদকে থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে ছেলে আমির মাকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ সাংবাদিকদের জানিয়েছিল। তার দেয়া তথ্যমতে, পুলিশের এসআই সুজিত চক্রবর্ত্তী রান্না ঘর থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করেন। রোববার পুলিশ ঘাতক ছেলেকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
No comments