খাবারেই নিয়ন্ত্রণ হবে ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং অন্যান্য জটিলতার সম্ভাবনা কমানো। ইনসুলিন অনির্ভর ডায়াবেটিস রোগে খাদ্যনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে চিকিৎসাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। অন্যদিকে ইনসুলিন নির্ভর ডায়াবেটিস রোগেও পথ্য একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এই কারণে ডায়বেটিস রোগীদের খাবার হতে হবে পুষ্টিকর ও সুষম। মাঝারি শ্রমে নিয়োজিত ব্যক্তিরা প্রতি কেজি ওজনের জন্য ৩০ ক্যালরি খাদ্যশক্তির খাবার গ্রহণ করবেন। মোট ক্যালরির ৪০-৫০ শতাংশ শর্করা জাতীয় খাবার থেকে গ্রহণ করতে হবে। জটিল শর্করা যেমন ভূসিসহ আটা, ঢেঁকিছঁাটা চাল, ডাল, বাদাম, শিমের বিচি, ছোলা প্রভৃতি খাদ্য নির্বাচন করা উচিত। মোট ক্যালরির ১৫-২০ শতাংশ প্রোটিন জাতীয় খাদ্য থেকে গ্রহণ করতে হবে। সারা দিনের খাবারকে তিন ভাগে ভাগ করতে হবে। পঁাচ ভাগের এক ভাগ সকালের নাশতায়, দুই ভাগ দুপুরে এবং দুই ভাগ রাতে খেতে হবে। বেলা ১১টা ও বিকেল চারটার দিকে হালকা নাশতা খাওয়া যায়। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য পরিমাণমতো পুষ্টিকর খাবার গ্রহণেই রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
খাবারে টাটকা ফল রাখতে হবে। বিশেষ করে জাম্বুরা, আমড়া, পেয়ারা, কামরাঙা প্রভৃতি দৈনিক ১৫০-২৫০ গ্রাম পরিমাণ খাওয়া যেতে পারে। কারণ এগুলোতে তেমন ক্যালরি থাকে না। ডায়াবেটিস হলে খাওয়া বারণ এমন খাদ্যগুলো হলো চিনি, মধু, গুড়, মিষ্টি, জ্যাম, জেলি, মিষ্টি পানীয়, মদ, দুধের সর, আইসক্রিম, কেক, পেস্ট্রি, মিষ্টি বিস্কুট, মিষ্টি দই, ঘি, ডালডা, চর্বিযুক্ত মাংস, কলিজা, গলদা চিংড়ি, মগজ, ভাজা খাদ্য, পাকা কলা, খেজুর, কিশমিশ, আঙুর, আখের রস। তবে খাওয়া যাবে শস্য—চাল, গম, চিড়া, রুটি, নুডলস, নোনতা বিস্কুট, ডাল, বাদাম, িশমের বিচি, উদ্ভিজ্জ তেল, আলু, গাজর, শালগম, শাক (সব রকমের), চর্বিহীন মাংস, মাছ, ফল, ননিতোলা দুধ, পনির, ছানা ও ডিম। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা সকাল আটটার মধ্যে তিনটি ছোট পাতলা আটার রুটি বা পাউরুটি, একটি ডিম অথবা এক বাটি ডাল, সবজি ও ফল ইচ্ছেমতো খাবেন। বেলা ১১টায় খাবেন মুড়ি বা বিস্কুট এবং যেকোনো একটি ফল। দুপুরে খাবেন চার কাপ ভাত, দুই টুকরো মাছ বা মাংস, সবজি, শাক-সালাদ-লেবু। বিকেলে এক কাপ দুধ, সঙ্গে খাবেন ৩০ গ্রাম ডাল বা বাদাম। রাতে চারটি আটা রুটি বা তিন কাপ ভাত, এক টুকরো মাছ বা মাংস এবং সবজি খাবেন ইচ্ছেমতো।
লেখক, প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
লেখক, প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
No comments