কে এই কিসলিয়াক?
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এখন আলোচিত চরিত্র রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াক। তাঁর সঙ্গে ‘বিধিবহির্ভূত’ যোগাযোগের কারণে বরখাস্ত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন। এবার কিসলিয়াকের সঙ্গে বৈঠকের কথা গোপন করার অভিযোগেই চাপে পড়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস। ২০০৮ সাল থেকে ওয়াশিংটনে রুশ রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত সের্গেই কিসলিয়াক। তবে যুক্তরাষ্ট্রে এটাই তাঁর প্রথম দায়িত্ব পালন নয়। স্নায়ুযুদ্ধের সময় ১৯৮১ সালে তিনি কূটনীতিক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। প্রথমে জাতিসংঘে তখনকার সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলে ছিলেন। পরে ওয়াশিংটনে মস্কো দূতাবাসে নিযুক্ত হন। ১৯৮৯ সালে মস্কো ফিরে গিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। পরে বেলজিয়ামে রাষ্ট্রদূত হন। রাষ্ট্রদূত হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে দায়িত্ব নেওয়ার আগে রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেন। অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত ও চালাক-চতুর হিসেবে পরিচিত কূটনীতিক কিসলিয়াক। খুব একটা জনসমক্ষে আসেন না।
কথা বলেন মেপে। মার্কিন নির্বাচন নিয়ে রুশ গণমাধ্যমের আগ্রহ প্রসঙ্গে তাঁকে একবার প্রশ্ন করা হলে হেসে জবাব দেন, ‘এটা খুব মজার।’ রাশিয়ার সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন আর বিয়ারলি বলেন, ‘তিনি (কিসলিয়াক) বরাবরই পর্দার আড়াল থেকে কাজ করতে পছন্দ করেন। তিনি রাজনীতিবিদ নন, পুরোদস্তুর কূটনীতিবিদ।’ সাবেক মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি নিকোলাস বার্ন বলেন, কিসলিয়াকের মানসিকতায় সোভিয়েত আমলের প্রভাব রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে তাঁর মনোভাব আক্রমণাত্মক। মার্কিন টিভি চ্যানেল সিএনএন একটি বেনামি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলেছে, মার্কিন গোয়েন্দাদের অভিমত, কিসলিয়াক নিজে একজন উচ্চপর্যায়ের গুপ্তচর। এর পাশাপাশি তিনি গুপ্তচর নিয়োগও করেন। মস্কো অবশ্য সিএনএনের প্রতিবেদনে বেশ ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছে, এটি ডাহা মিথ্যা কথা। এমএসএনবিসি টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে ক্লিনটন প্রশাসনের অধীনে সিআইয়ের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী জন ম্যাকললিন কিসলিয়াক সম্পর্কে বলেন, ‘আমার মনে হয় না তিনি আক্ষরিক অর্থেই গুপ্তচর। বরং বরাবর তাঁকে একজন দুঁদে কূটনীতিক বলেই মনে হয়েছে আমার। তবে তিনি অত্যন্ত চতুর।’ অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনসের মতেও কিসলিয়াক অনেকটা সোভিয়েত ধাঁচের কূটনীতিবিদ।
No comments