ছোট্ট আরিফা বাচতে চায়
চটপটে আরিফা। প্রতিদিন স্কুলে যায়। মক্তবে পড়ে। গ্রামের ধুলাবালুতে বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করে। ধুরুং খালের হঁাটুপানিতে সঁাতার কাটে। সবেমাত্র দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। বয়স সাত বছর। কিন্তু এমন দুরন্তপনার শিশুটি নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। শরীরে ধরা পড়েছে ব্লাড ক্যানসার। সে বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার জয়দীপ নন্দীর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছে। ফটিকছড়ি উপজেলার দুর্গম কাঞ্চননগর ইউনিয়নের ফকির টিলা গ্রামের দিনমজুর শহর আলী ও ছকিনা খাতুনের প্রথম সন্তান আরিফা আকতার। আরিফার মা ছকিনা খাতুন বলেন, ‘মেয়ের শরীরে মাঝেমধ্যে জ্বর হতো। ওষুধ খাওয়ালে ভালো লাগত। আবার জ্বর হতো। এভাবে জ্বর পড়ে একসময় মেয়ে আমার দুর্বল হয়ে পড়ে। তখন আমার বাপের বাড়ি মানিকছড়ি এলাকায় নিয়ে যাই। সেখানে ডাক্তার তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করাতে বলে। সেখানে পরীক্ষা করে ডাক্তার বলে আরিফার ব্লাড ক্যানসার হয়েছে।’ আরিফার বাবা শহর আলী বলেন, অরিফার চিকিৎসা করাতে গিয়ে তঁারা এখন িনঃস্ব।
প্রায় ২৫ ব্যাগ রক্ত দিতে হয়েছে। ওষুধের খরচ পড়ে দৈনিক ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। আরিফা স্থানীয় মোহাম্মদ রাজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। তার ছোট ভাই মোহাম্মদ আরিফ শিশু শ্রেণিতে পড়ে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান বলেন, ‘আরিফা প্রথম শ্রেণিতে ভালো ফল করেছে। এমন একটি শিশুর শরীরে ক্যানসার ভাবতে অবাক লাগে। কয়েক দিন আগে স্কুলে এসে তার মা বিষয়টি জানালে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কিছু টাকা সংগ্রহ করে দিই তার চিকিৎসার খরচের জন্য।’ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার জয়দীপ নন্দী বলেন, আরিফার এই রোগের চিকিৎসার খরচ ব্যয়বহুল। দ্রুত চিকিৎসা করাতে পারলে শিশুটি নতুন জীবন ফিরে পেতে পারে। কাঞ্চন নগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রশিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সমাজের বিত্তবানেরা এগিয়ে এলে আরিফার বঁাচতে পারে। তার চিকিৎসা–সহায়তার জন্য ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম জেলা সমাজসেবা অফিসে একটি আবেদন করা হয়েছে। আরিফার চিকিৎসা–সহায়তার জন্য একটি বিকাশ (০১৮২৯২৪১১৮৭) এবং একটি ডাচ্-বাংলা মোবাইল ব্যাংকে (০১৮৫০০৪৫৭৬৬) অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে।
No comments