দুর্নীতি দমনে দুদকের ভূমিকা দৃশ্যমান নয়
গত
বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আয়োজিত সেমিনারে প্রায় সব বক্তাই
দুর্নীতি বন্ধে রাজনৈতিক সদিচ্ছার পাশাপাশি অপরাধীদের শাস্তি ও সামাজিক
সচেতনতার ওপর জোর দিয়েছেন। প্রতিবছরই দুদক এ ধরনের সেমিনার ও সপ্তাহ পালন
করে থাকে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনতা তৈরির ক্ষেত্রে এর হয়তো একটি
ভূমিকা আছে। কিন্তু সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানের আসল কাজ দুর্নীতির বিরুদ্ধে
কার্যকর আইনি ব্যবস্থা, যা সেমিনারে একাধিক বক্তার বক্তব্যে উঠে এসেছে।
অস্বীকার করা যাবে না যে অপরাধের বিচার এবং অপরাধীর শাস্তিই দুর্নীতি দমনের
প্রধান উপায়। প্রশ্ন হলো বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? দুর্নীতি দমন
ব্যুরো নামে সংস্থাটি সেই কাজ করতে পারেনি বলে এক যুগ আগে মহা ঢাকঢোল
পিটিয়ে স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করা হয়। কিন্তু তাদের
দুর্নীতিবিরোধী কাজকর্ম এখনো তেমন দৃশ্যমান নয়। সেমিনারেও কোনো কোনো
বক্তা রাঘববোয়াল দুর্নীতিবাজদের শাস্তি হয় না বলে অভিযোগ করেছেন। বিশেষ
করে, তাঁরা ক্ষমতাসীন দলের হলে বরাবর ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যান। দুদক
অধিকাংশ ক্ষেত্রে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে তঁাদের দায়মুক্তির সনদ দিয়ে
দেয়। দুদকের নতুন চেয়ারম্যান রুই-কাতলাদের দুর্নীতি সম্পর্কে জনশ্রুতি
থাকলেও আইনি কাঠামোয় আনা যায় না বলে যে মন্তব্য করেছেন, তা গ্রহণযোগ্য
নয়। এ ধরনের বক্তব্য ভুল বার্তা দেবে। ব্যাংকিং খাতসহ প্রশাসনে গত এক যুগে
যেসব পুকুরচুরির ঘটনা ঘটেছে, দুদক কয়টির তদন্ত করে অপরাধীদের বিচারে
সোপর্দ করেছে? ক্ষমতার হাতবদলের সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতিবাজদের তালিকা বদলের
বদভ্যাস রদেই বা তারা কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সেসব জানার অধিকার জনগণের আছে।
তথ্য–প্রমাণ জোগাড় করে অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করা দুদকেরই দায়িত্ব।
দুর্নীতি নিয়ে দুদকের কর্তাব্যক্তিরা অনেক কথা বলেছেন। এবার কাজ করে দেখাক।
No comments