দুই মাস আগেই পরিকল্পনা হয় ৪ শিশু হত্যার -র্যাবের ছায়াতদন্ত
সুন্দ্রাটিকির
চার শিশু হত্যার পরিকল্পনা হয় দুই মাস আগেই। আর পরিকল্পনাকারী ছিলেন আবদুল
আলী বাগাল। নেপথ্যে কাজ করেছে বাচ্চু, আরজুসহ অন্যরা। ৮ থেকে ৯ জন এ কাজে
যুক্ত ছিল। বাহুবলের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের চার শিশু হত্যাকাণ্ডের তদন্ত
করতে গিয়ে এ তথ্য পেয়েছে র্যাব। ঘটনার পরপরই র্যাব-৯ এর পক্ষ থেকে একটি
দল ছায়া তদন্তে কাজ শুরু করে। এজন্য তারা আশ্রয় নেয় প্রযুক্তির। তারা
সুন্দ্রাটিকি গ্রামের একটি মানচিত্র এঁকে কাজ শুরু করে। নৃশংস হত্যাকাণ্ডের
শিকার চার শিশুর বাড়ি, স্কুল, রাস্তা, বাচ্চুর বাড়ি, আবদুল আলী বাগালের
বাড়ি, সম্ভাব্য হত্যাকাণ্ডের স্থান, চার শিশুকে অপহরণের স্থান চিহ্নিত করে
তদন্তে হাত দেয়। ইতিমধ্যে তদন্তের কাজ শেষ করে র্যাব তাদের পর্যবেক্ষণ
তদন্তকারী সংস্থা ডিবির কাছে হস্তান্তর করেছে। এ ব্যাপারে চার শিশু অপহরণ ও
হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির ওসি মোক্তাদির হোসেন বলেছেন, এ ঘটনার
তদন্তকারী সংস্থা আমরা। তিনি বলেন, অন্য কোনো সংস্থা তদন্ত করে থাকতে পারে।
র্যাবও হয়তো তাদের মতো করে তদন্ত করেছে। তবে তাদের কোনো রিপোর্ট আমাদের
কাছে দিতে তারা বাধ্য নন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় সোমবার ছায়েদকে আদালতে হাজির
করে ৩ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে,
র্যাব দুদিন আগে তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ওই রিপোর্টে হত্যাকাণ্ডের
বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- পরিকল্পনা, অপহরণ, শিশুদের হত্যা
ও মাটি চাপায় পর্যন্ত আবদুল আলী বাগাল, তার ছেলে রুবেল, জুয়েল, বাচ্চু,
আরজুসহ ৮/৯ জন জড়িত। এ ছাড়া রিপোর্টে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা দুই মাস আগে
করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তবে নিহত চার শিশুর মধ্যে দুই জনের পিতাকে
হত্যা করার কথা ছিল তাদের। এর মধ্যে টার্গেট ছিলেন নিহত শিশু মনিরের পিতা
আবদাল মিয়া তালুকদার। কিন্তু এতে ব্যর্থ হয়ে তারা দিশাহারা হয়ে পড়ে। পরে
শিশুদের হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। র্যাব সূত্র জানিয়েছে, বাচ্চু মিয়াই এই
চার শিশুকে হত্যা করতে উৎসাহ যুগিয়েছে। আর হত্যার জন্য দুইমাস আগেই কেনা
হয়েছিল চেতনা নাশক ওষুধ ক্লোরাফিম। এ সব কিছুই ইতিমধ্যে আবদুল আলী বাগালের
ছেলে রুবেল ও জুয়েল তাদের ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে। কিভাবে অপহরণ
করা হয়, কখন হত্যা করা হয় সবই তারা বলেছে। ওই রিপোর্টে পঞ্চায়েতে প্রভাব
বিস্তারই অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া র্যাবের ছায়া তদন্তে ১২ই
ফেব্রুয়ারি শুক্রবার অপহরণের দিন থেকে বুধবার লাশ উদ্ধারের ঘটনা পর্যন্ত
প্রতি মুহূর্তের ঘটনাবলি তুলে ধরা হয়েছে। ভাদেশ্বর ইউনিয়নের সুন্দ্রাটিকি
গ্রামের তালুকদার পঞ্চায়েতের ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আহমেদ শুভ, আবদুল
আজিজের পুত্র তাজেল মিয়া, আবদাল মিয়ার পুত্র মনির মিয়া ও আবদুল কাদিরের
পুত্র ইসমাঈল হোসেনকে বাচ্চু মিয়ার সিএনজি অটোরিকশায় অপহরণ করা হয়। এর পাঁচ
দিন পর বুধবার সুন্দ্রাটিকির পাশেই ইছাবিল থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ
ঘটনায় আবদুল আলী বাগাল, তার পুত্র রুবেল ও জুয়েল, ভাতিজা ছায়েদসহ ৬ জনকে
গ্রেপ্তার করা হয়। এরই মধ্যে রুবেল ও জুয়েল ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে
হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। এ ছাড়া আবদুল আলী বাগালকে ১০ দিন রিমান্ড
শেষে রোববার কারাগারে পাঠানো হয়।
হবিগঞ্জের বাহুবলের সুন্দ্রাটিকি গ্রামে চার শিশু নিখোঁজের পাঁচ দিন পর তাদের লাশ উদ্ধার করা হয় |
ছায়েদ ৩ দিনের রিমান্ডে
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে জানান, ৪ শিশু হত্যা ঘটনায় গতকাল সোমবার আবদুল আলী বাগালের ভাতিজা ছায়েদ মিয়াকে আবারও ৩ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। ৫ দিনের রিমান্ড শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা হবিগঞ্জ ডিবির ওসি মোক্তাদির হোসেন তাকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. কাওসার আলমের আদালতে হাজির করে পুনরায় ৭ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করেন। বিচারক শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির ওসি মোক্তাদির হোসেন জানান, ২৫শে ফেব্রুয়ারি ছায়েদ মিয়াকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ছায়েদ যে তথ্য দিয়েছে তাতে গরমিল পাওয়া যায়। তাই তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ দরকার।
আইনি সহায়তা দেবেন পিপি সিরাজুল হক: হবিগঞ্জ জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের শিকার চার শিশুর পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছেন। রোববার বিকালে তিনি ওই গ্রাম পরিদর্শন করতে গিয়ে নিহত শিশুদের পরিবারের উদ্দেশ্যে বলেন, আইনি সহায়তার জন্য যা যা প্রয়োজন তা তিনি করবেন। এমনকি খুব দ্রুত হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি যাতে হয় সে লক্ষ্যেও কাজ করবেন। তিনি ওই পরিবারগুলোর সুখে-দুঃখে সব সময় পাশে থাকবেন বলে তাদের আশ্বস্ত করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ৭নং ভাদেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মত্তাছির মিয়া।
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে জানান, ৪ শিশু হত্যা ঘটনায় গতকাল সোমবার আবদুল আলী বাগালের ভাতিজা ছায়েদ মিয়াকে আবারও ৩ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। ৫ দিনের রিমান্ড শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা হবিগঞ্জ ডিবির ওসি মোক্তাদির হোসেন তাকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. কাওসার আলমের আদালতে হাজির করে পুনরায় ৭ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করেন। বিচারক শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির ওসি মোক্তাদির হোসেন জানান, ২৫শে ফেব্রুয়ারি ছায়েদ মিয়াকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ছায়েদ যে তথ্য দিয়েছে তাতে গরমিল পাওয়া যায়। তাই তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ দরকার।
আইনি সহায়তা দেবেন পিপি সিরাজুল হক: হবিগঞ্জ জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের শিকার চার শিশুর পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছেন। রোববার বিকালে তিনি ওই গ্রাম পরিদর্শন করতে গিয়ে নিহত শিশুদের পরিবারের উদ্দেশ্যে বলেন, আইনি সহায়তার জন্য যা যা প্রয়োজন তা তিনি করবেন। এমনকি খুব দ্রুত হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি যাতে হয় সে লক্ষ্যেও কাজ করবেন। তিনি ওই পরিবারগুলোর সুখে-দুঃখে সব সময় পাশে থাকবেন বলে তাদের আশ্বস্ত করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ৭নং ভাদেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মত্তাছির মিয়া।
No comments