একা হয়ে গেল জারিফ
জারিফ
বিন নেওয়াজ। এগার বছরের দুরন্ত শিশু। দুঃস্বপ্নের মতো এক আকস্মিক
অগ্নিকাণ্ড কেড়ে নিয়েছে তার দুরন্তপনা। মারা গেছে তার প্রিয় বড় ভাই সারলিন
বিন নেওয়াজ (১৫)। ১৪ মাসের ছোটভাই জায়ান বিন নেওয়াজের মৃত্যুতে বড্ড একা
হয়ে গেছে জারিফ। শাহনেওয়াজ শাহীন (৫০)-এর মৃত্যুতে সে এখন পিতৃহারা। মা
সুমাইয়া বেগমও মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। একে একে পরিবারের সদস্যদের হারিয়ে একা
হয়ে পড়ছে শিশুটি। কিন্তু সেই নিঃসঙ্গতার ভয়াবহ খবরটি এখনও জানে না জারিফ।
যন্ত্রণাকাতর দগ্ধ মায়ের সঙ্গে গতকাল ফোনে কথা বলেছে সে। মায়ের কণ্ঠস্বর
ছিল অস্পষ্ট। জারিফ জানে না তার মা সুমাইয়ার কী অবস্থা। সর্বনাশা আগুনে
হাত-পা পুড়ে যাওয়া জারিফ এখন রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সিটি হাসপাতালের
বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের এইচডিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গত রোববার তাকে সেখানে ভর্তি করা হয়। ওই দিন ও পরদিন গতকাল সোমবার দু’দফা ড্রেসিং হয়েছে। তাকে আরও সপ্তাহখানেক হাসপাতালে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তবে সে শঙ্কামুক্ত। এদিকে গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালের রেফ্রিজারেটর থেকে তার পিতা শাহনেওয়াজ শাহীনের মরদেহ নিয়ে স্বজনরা গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। সোমবার রাতে গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি সদরের ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে ছয়মাস আগে মারা যাওয়া বাবার কবরের পাশে তাকে সমাহিত করার কথা ছিল। গতকাল সোমবার সিটি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ড্রেসিংয়ের পর হাত-পায়ে পুরো ব্যান্ডেজ নিয়ে ৫০৪ নম্বর কেবিনে শুয়ে আছে জারিফ। মলিন মুখ। কিছু জিজ্ঞেস করলে মাথা নেড়ে অস্ফুট শব্দে জবাব দেয়ার চেষ্টা করে। শুক্রবার গ্যাসের অগ্নিকাণ্ডের সময় সে ছিল বাসার মাস্টার বেডরুমে। তাতেই সে কম পুড়েছে। গ্যাসের আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করেছে অপর চারজনকে। ঘটনার দিন তার বাবা-মা ও অপর দু’ভাইয়ের সঙ্গে তাকেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেয়া হয়। তাকে চিকিৎসা দিয়ে এক মামার বাসায় সরিয়ে নেয়া হয়। পরে শুক্রবার দুই ভাইয়ের মৃত্যুর পর শনিবার তার বাবাও না ফেরার দেশে চলে গেছেন। তার মা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে ঢামেকের আইসিইউতে। গতকাল সকালে সে মায়ের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে। কিন্তু মায়ের কণ্ঠ বিকৃত হয়ে পড়ায় সব কথা ঠিকঠাক বুঝতে পারে নি। মা তাকে জানিয়েছে ভালো আছে। সেও মাকে ভালো আছে বলে জানায়। এ সময় সে মায়ের কাছে যেতে চায়। মা সুমাইয়া বলেন- আব্বু, তুমি কী ভালো আছো? জারিফ জানতে চায়-আম্মু তুমি কী ভালো আছো? জবাবে ৯০ ভাগ পুড়ে যাওয়া মা বলেন, আমি ভালো আছি। আমি তোকে দেখবো। জবাবে জারিফ বলে, মা আমি সুস্থ হয়ে আগেই তোমাকে দেখতে যাবো। সিটি হাসপাতালে পাশে থাকা জেঠাতো বোন মিথিলা জাহান পান্থিকে জারিফ বার বার জিজ্ঞেস করছে, আমার আব্বু-আম্মু কী ভালো আছে? বড় ভাই কী ভালো আছে? তারা কী কথা বলতে পারে? জায়ান কী ভালো আছে? সে কী করছে? ওর কী আমার মতো ব্যথা করে? তাকে আমার কোলে এনে দাও। আমাদের বাসার ড্রয়িং রুমে খেলনা আছে। আমার সব খেলনা এনে দাও। হাসপাতালে আমার ভালো লাগে না। আমি বাবা-মা’র কাছে বাসায় যাবো। জারিফ উত্তরার মাইলস্টোন প্রিপারেটরি কেজি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে। জারিফের চাচাতো বোন পান্থি মানবজমিনকে বলেন, আগুনের ঘটনা তাকে খুবই পীড়া দিচ্ছে। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। বাসায় বাবা-মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য ছটফট করছে। আমরা তাকে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। একে একে দু’ভাই ও বাবা মারা যাওয়ার বিষয়টি তাকে জানানো হয়নি। ঢামেক’র আইসিইউতে থাকা তার মায়ের অবস্থাও খুব খারাপ।
বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের এইচডিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গত রোববার তাকে সেখানে ভর্তি করা হয়। ওই দিন ও পরদিন গতকাল সোমবার দু’দফা ড্রেসিং হয়েছে। তাকে আরও সপ্তাহখানেক হাসপাতালে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তবে সে শঙ্কামুক্ত। এদিকে গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালের রেফ্রিজারেটর থেকে তার পিতা শাহনেওয়াজ শাহীনের মরদেহ নিয়ে স্বজনরা গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। সোমবার রাতে গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি সদরের ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে ছয়মাস আগে মারা যাওয়া বাবার কবরের পাশে তাকে সমাহিত করার কথা ছিল। গতকাল সোমবার সিটি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ড্রেসিংয়ের পর হাত-পায়ে পুরো ব্যান্ডেজ নিয়ে ৫০৪ নম্বর কেবিনে শুয়ে আছে জারিফ। মলিন মুখ। কিছু জিজ্ঞেস করলে মাথা নেড়ে অস্ফুট শব্দে জবাব দেয়ার চেষ্টা করে। শুক্রবার গ্যাসের অগ্নিকাণ্ডের সময় সে ছিল বাসার মাস্টার বেডরুমে। তাতেই সে কম পুড়েছে। গ্যাসের আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করেছে অপর চারজনকে। ঘটনার দিন তার বাবা-মা ও অপর দু’ভাইয়ের সঙ্গে তাকেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেয়া হয়। তাকে চিকিৎসা দিয়ে এক মামার বাসায় সরিয়ে নেয়া হয়। পরে শুক্রবার দুই ভাইয়ের মৃত্যুর পর শনিবার তার বাবাও না ফেরার দেশে চলে গেছেন। তার মা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে ঢামেকের আইসিইউতে। গতকাল সকালে সে মায়ের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে। কিন্তু মায়ের কণ্ঠ বিকৃত হয়ে পড়ায় সব কথা ঠিকঠাক বুঝতে পারে নি। মা তাকে জানিয়েছে ভালো আছে। সেও মাকে ভালো আছে বলে জানায়। এ সময় সে মায়ের কাছে যেতে চায়। মা সুমাইয়া বলেন- আব্বু, তুমি কী ভালো আছো? জারিফ জানতে চায়-আম্মু তুমি কী ভালো আছো? জবাবে ৯০ ভাগ পুড়ে যাওয়া মা বলেন, আমি ভালো আছি। আমি তোকে দেখবো। জবাবে জারিফ বলে, মা আমি সুস্থ হয়ে আগেই তোমাকে দেখতে যাবো। সিটি হাসপাতালে পাশে থাকা জেঠাতো বোন মিথিলা জাহান পান্থিকে জারিফ বার বার জিজ্ঞেস করছে, আমার আব্বু-আম্মু কী ভালো আছে? বড় ভাই কী ভালো আছে? তারা কী কথা বলতে পারে? জায়ান কী ভালো আছে? সে কী করছে? ওর কী আমার মতো ব্যথা করে? তাকে আমার কোলে এনে দাও। আমাদের বাসার ড্রয়িং রুমে খেলনা আছে। আমার সব খেলনা এনে দাও। হাসপাতালে আমার ভালো লাগে না। আমি বাবা-মা’র কাছে বাসায় যাবো। জারিফ উত্তরার মাইলস্টোন প্রিপারেটরি কেজি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে। জারিফের চাচাতো বোন পান্থি মানবজমিনকে বলেন, আগুনের ঘটনা তাকে খুবই পীড়া দিচ্ছে। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। বাসায় বাবা-মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য ছটফট করছে। আমরা তাকে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। একে একে দু’ভাই ও বাবা মারা যাওয়ার বিষয়টি তাকে জানানো হয়নি। ঢামেক’র আইসিইউতে থাকা তার মায়ের অবস্থাও খুব খারাপ।
No comments