পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এমন ফলই চেয়েছিল by আনোয়ার হোসেন
বিএনপিসহ
অন্যদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে অর্জিত ফলকে নিজেদের রাজনৈতিক
বিজয় মনে করছে আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপি অধ্যুষিত বলে পরিচিত কিছু এলাকায়
আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থীদের ভোটের
ব্যবধানকে কিছুটা বিব্রতকর মনে করছেন কোনো কোনো নেতা। এখন আওয়ামী লীগের
মূল লক্ষ্য, নির্বাচন নিয়ে যাতে বিতর্ক তৈরি না হয় তা দেখা।
নির্বাচন তদারক-সংশ্লিষ্ট আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে এই মনোভাব জানা গেছে। নিজস্ব জরিপ পর্যালোচনা করে ভোটের আগেই আওয়ামী লীগ বলেছিল যে দুই শতাধিক পৌরসভায় তাদের প্রার্থীরা এগিয়ে।
নির্বাচনের আগে পুলিশের এক গোপন জরিপে বলা হয়েছিল, আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ১২৮ এবং বিএনপির প্রার্থীরা ৪৯টি পৌরসভায় এগিয়ে আছেন। বিএনপি যে ২২টি পৌরসভায় জিতেছে তার অধিকাংশই এই জরিপে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বিএনপিকে পৌর নির্বাচনের ফল মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ফল প্রত্যাখ্যান করার ঘোষণা দিয়ে বিএনপি প্রকারান্তরে জনগণের রায়কে অপমান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা অনুরোধ করব, এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন, ফল মেনে নেন।’ তিনি আরও বলেন, এই নির্বাচনে জনগণ এমন বার্তা দিয়েছে যে তারা বাংলাদেশে পাকিস্তানি প্রেতাত্মার কোনো রাজনৈতিক দলকে দেখতে চায় না। বিএনপিকে জনগণের এই মনোভাব ভালোভাবে বিবেচনায় নিতে হবে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভোট গণনা পর্যন্ত বিএনপিকে নির্বাচনে রাখতে চেয়েছিল সরকার। নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনও ছিল অগ্রাধিকার। এর দুটিই অর্জিত হওয়ায় ফুরফুরে আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে-পরে বিদেশিদের কাছে বিএনপির একমাত্র বক্তব্য ছিল, তারা মানুষের কাছে খুব জনপ্রিয়। এ জন্যই পৌরসভা নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করে বিএনপির এ বক্তব্যের ফয়সালা চেয়েছিল সরকার।
পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অর্জন কী? ভোট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব উল আলম হানিফকে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রমাণ করেছে যে বর্তমান সরকার বৈধ। এই রাজনৈতিক দলটি (বিএনপি) সরকারকে মানে না। নির্বাচন কমিশনকে মানে না। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে পৌরসভা নির্বাচন করতে বাধ্য হয়েছে তারা। এই নির্বাচনে এটাই আওয়ামী লীগের বড় অর্জন।’
ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে—এমন অভিযোগের বিষয়ে হানিফ বলেন, ‘বিএনপি যদি নির্বাচনকে সত্যিকার অর্থে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিত, তাহলে তাদের সব পর্যায়ের নেতারা প্রচারে অংশ নিত। তাদের এই সুযোগ ছিল। কিন্তু তারা সেটা কাজে লাগায়নি। খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদের সংখ্যা নিয়ে যে কটাক্ষ করেছেন, তাতে দেশের জনগণ তাদের ওপর চড়াও হতে পারে, এই ভয়ে কেউ এজেন্ট না হলে এর দায়ভার তো আওয়ামী লীগের না।’
বিএনপির ভবিষ্যৎ আন্দোলন পরিকল্পনা সম্পর্কে হানিফ বলেন, গত ৫ জানুয়ারির আন্দোলনের সহিংসতা ও জনগণের শিক্ষা তাদের মনে থাকলে তারা সন্ত্রাস করার জন্য মাঠে নামবে না। আর নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করার সাংগঠনিক শক্তিও দলটির নেই। বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতার ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি মাজাভাঙা রাজনৈতিক দল, মেরুদণ্ড ভাঙা দল, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করার মতো সাংগঠনিক শক্তিও নেই।’
বিপুল বিজয়ে ফুরফুরে ভাব থাকলেও কিছু কিছু পৌরসভায় জয়-পরাজয়ের ব্যবধান অনেক বড় হওয়ায় কিছুটা বিব্রত আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। নির্বাচন তদারকের দায়িত্বে নিয়োজিত একাধিক নেতা বলেন, ঢাকা বিভাগ, বৃহত্তর ময়মনসিংহ, রংপুর বিভাগ, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের বেশির ভাগ পৌরসভায় ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া ভালো ছিল। কিন্তু চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের বেশির ভাগ ও অন্য কিছু পৌরসভায় অতি উৎসাহী হয়ে ব্যাপক জোর-জবরদস্তি করেছে। ফলে বিএনপির ঘাঁটি বলে পরিচিত এলাকাগুলোতেও দলটির মেয়র প্রার্থীরা ১০ শতাংশের কম ভোট পেয়েছেন, যা অনেকের মনে প্রশ্নের জন্ম দেবে।
বিদ্রোহীদের ভালো ফল: নানা চাপ প্রয়োগের পরও ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের ১৭ জন বিদ্রোহী মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছেন। দলটির নেতারা মনে করছেন, স্থানীয় মন্ত্রী-সাংসদের মদদের কারণেই অধিকাংশ বিদ্রোহী জয়ী হয়েছেন। তবে এবার বিদ্রোহীদের ফুলের মালা দিয়ে দলে ভিড়িয়ে নেওয়া হবে না। কারণ এবার ছাড় দেওয়া হলে আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রচুর বিদ্রোহী দাঁড়িয়ে যাবেন। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
বিদ্রোহীদের বিষয়ে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব উল আলম হানিফের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, বিদ্রোহীদের জনগণ রায় দিয়েছে, মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তবে তাঁরা দলে ফিরে আসার রায় পাননি। তাঁদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা বহাল থাকবে। তবে তিনি স্বীকার করেন, সময়ের স্বল্পতার কারণে ১০ শতাংশ পৌরসভায় প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল হয়ে থাকতে পারে।
নির্বাচন তদারক-সংশ্লিষ্ট আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে এই মনোভাব জানা গেছে। নিজস্ব জরিপ পর্যালোচনা করে ভোটের আগেই আওয়ামী লীগ বলেছিল যে দুই শতাধিক পৌরসভায় তাদের প্রার্থীরা এগিয়ে।
নির্বাচনের আগে পুলিশের এক গোপন জরিপে বলা হয়েছিল, আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ১২৮ এবং বিএনপির প্রার্থীরা ৪৯টি পৌরসভায় এগিয়ে আছেন। বিএনপি যে ২২টি পৌরসভায় জিতেছে তার অধিকাংশই এই জরিপে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বিএনপিকে পৌর নির্বাচনের ফল মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ফল প্রত্যাখ্যান করার ঘোষণা দিয়ে বিএনপি প্রকারান্তরে জনগণের রায়কে অপমান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা অনুরোধ করব, এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন, ফল মেনে নেন।’ তিনি আরও বলেন, এই নির্বাচনে জনগণ এমন বার্তা দিয়েছে যে তারা বাংলাদেশে পাকিস্তানি প্রেতাত্মার কোনো রাজনৈতিক দলকে দেখতে চায় না। বিএনপিকে জনগণের এই মনোভাব ভালোভাবে বিবেচনায় নিতে হবে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভোট গণনা পর্যন্ত বিএনপিকে নির্বাচনে রাখতে চেয়েছিল সরকার। নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনও ছিল অগ্রাধিকার। এর দুটিই অর্জিত হওয়ায় ফুরফুরে আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে-পরে বিদেশিদের কাছে বিএনপির একমাত্র বক্তব্য ছিল, তারা মানুষের কাছে খুব জনপ্রিয়। এ জন্যই পৌরসভা নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করে বিএনপির এ বক্তব্যের ফয়সালা চেয়েছিল সরকার।
পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অর্জন কী? ভোট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব উল আলম হানিফকে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রমাণ করেছে যে বর্তমান সরকার বৈধ। এই রাজনৈতিক দলটি (বিএনপি) সরকারকে মানে না। নির্বাচন কমিশনকে মানে না। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে পৌরসভা নির্বাচন করতে বাধ্য হয়েছে তারা। এই নির্বাচনে এটাই আওয়ামী লীগের বড় অর্জন।’
ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে—এমন অভিযোগের বিষয়ে হানিফ বলেন, ‘বিএনপি যদি নির্বাচনকে সত্যিকার অর্থে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিত, তাহলে তাদের সব পর্যায়ের নেতারা প্রচারে অংশ নিত। তাদের এই সুযোগ ছিল। কিন্তু তারা সেটা কাজে লাগায়নি। খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদের সংখ্যা নিয়ে যে কটাক্ষ করেছেন, তাতে দেশের জনগণ তাদের ওপর চড়াও হতে পারে, এই ভয়ে কেউ এজেন্ট না হলে এর দায়ভার তো আওয়ামী লীগের না।’
বিএনপির ভবিষ্যৎ আন্দোলন পরিকল্পনা সম্পর্কে হানিফ বলেন, গত ৫ জানুয়ারির আন্দোলনের সহিংসতা ও জনগণের শিক্ষা তাদের মনে থাকলে তারা সন্ত্রাস করার জন্য মাঠে নামবে না। আর নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করার সাংগঠনিক শক্তিও দলটির নেই। বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতার ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি মাজাভাঙা রাজনৈতিক দল, মেরুদণ্ড ভাঙা দল, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করার মতো সাংগঠনিক শক্তিও নেই।’
বিপুল বিজয়ে ফুরফুরে ভাব থাকলেও কিছু কিছু পৌরসভায় জয়-পরাজয়ের ব্যবধান অনেক বড় হওয়ায় কিছুটা বিব্রত আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। নির্বাচন তদারকের দায়িত্বে নিয়োজিত একাধিক নেতা বলেন, ঢাকা বিভাগ, বৃহত্তর ময়মনসিংহ, রংপুর বিভাগ, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের বেশির ভাগ পৌরসভায় ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া ভালো ছিল। কিন্তু চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের বেশির ভাগ ও অন্য কিছু পৌরসভায় অতি উৎসাহী হয়ে ব্যাপক জোর-জবরদস্তি করেছে। ফলে বিএনপির ঘাঁটি বলে পরিচিত এলাকাগুলোতেও দলটির মেয়র প্রার্থীরা ১০ শতাংশের কম ভোট পেয়েছেন, যা অনেকের মনে প্রশ্নের জন্ম দেবে।
বিদ্রোহীদের ভালো ফল: নানা চাপ প্রয়োগের পরও ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের ১৭ জন বিদ্রোহী মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছেন। দলটির নেতারা মনে করছেন, স্থানীয় মন্ত্রী-সাংসদের মদদের কারণেই অধিকাংশ বিদ্রোহী জয়ী হয়েছেন। তবে এবার বিদ্রোহীদের ফুলের মালা দিয়ে দলে ভিড়িয়ে নেওয়া হবে না। কারণ এবার ছাড় দেওয়া হলে আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রচুর বিদ্রোহী দাঁড়িয়ে যাবেন। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
বিদ্রোহীদের বিষয়ে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব উল আলম হানিফের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, বিদ্রোহীদের জনগণ রায় দিয়েছে, মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তবে তাঁরা দলে ফিরে আসার রায় পাননি। তাঁদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা বহাল থাকবে। তবে তিনি স্বীকার করেন, সময়ের স্বল্পতার কারণে ১০ শতাংশ পৌরসভায় প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল হয়ে থাকতে পারে।
No comments