দেশে গণতন্ত্র নয় রাজতন্ত্র কায়েম হয়েছে, ভোট ডাকাতি করে আনন্দের কিছু নেই : খালেদা জিয়া
দেশে
গণতন্ত্র নেই মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন,
বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র তো নাই, স্বৈরশাসনও না, এখন হয়েছে রাজতন্ত্র কায়েম।
এক ব্যক্তি যিনি তার ইচ্ছা প্রকাশ করবেন তার ইচ্ছায় সব। তাকে সালামী দিয়ে
এবং সালাম দিয়ে সেই ইচ্ছা পূরণ করতে হচ্ছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ছাত্রদলের
এক সমাবেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার নয়, ডাইনি বাহিনী। রক্তের
প্রতি তাদের নেশা হয়ে গেছে। এদের হাতে শুধু রক্ত আর রক্ত। রক্ত ছাড়া থাকতে
পারে না। তারা রক্ত পিপাসু এবং নরপিশাচ হয়ে জন্মেছে। পৌর নির্বাচন প্রসঙ্গে
তিনি বলেন, হাসিনা-রকিব মার্কা নির্বাচন আমরা প্রত্যাখান করেছি। তাদের
অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় তা আরেকবার প্রমাণিত হলো। খুব শিগগিরই
দেশে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ছাত্রসমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেগম জিয়া বলেন, আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। দেশের গণতন্ত্র নির্বাসনে। কোথাও কোনো উন্নয়ন নেই। শুধু ঢাকায় কয়েকটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করে দেখাচ্ছে। কারণ এসব প্রকল্পে কমিশন পাওয়া যায়।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের নামে বিদ্যুৎ খাতকে ধ্বংস করেছে। কুইক রেন্টাল বিদ্যুতে ভর্তুকি দিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। আর সেই বোঝা জনগণের ওপর চাপাচ্ছে।
সরকারের উদ্দেশে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, পৌর নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করে কতটি আসন পেলেন তা নিয়ে আনন্দ পাওয়ার কিছু নেই। কারণ এ কাজ কারা করেছে তা তারা (সরকার) ভালোভাবেই জানে। এই নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় কর্মীর মতো ব্যবহার করে নষ্ট করা হয়েছে।
সমাবেশে বক্তব্য দেয়ার আগে অনুষ্ঠানস্থলে এসে খালেদা জিয়া জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং পায়রা উড়িয়ে ছাত্র সমাবেশের উদ্বোধন করেন।
এর আগে সকালে শেরেবাংলা নগরে শহীদ জিয়ার মাজারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় ছাত্রদল। সেখানে ফাতেহা পাঠ ও মুনাজাত হয়।
সদ্য অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, পৌরসভা নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। এ নির্বাচন ইতোমধ্যে আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। জনগণও নির্বাচন মানে না। হাসিনা-রকিব মার্কা নির্বাচন যে অচল তা আরেকবার প্রমাণিত হলো। প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদেরকে দলীয় কর্মী হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। বিজয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে।
খুব শিগগিরই সরকারের পরিবর্তন হবে মন্তব্য করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো সরকারেরই স্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নেই। সরকার আসবে এবং যাবে। এ সরকারও ক্ষমতায় চিরদিন থাকতে পারবে না। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকদেরকে থাকতে হবে। সরকারের কর্মকর্তারা থাকবেন। খুব শিগগিরই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে এ সরকারের বিদায় হবে। তাই, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। কারণ, সরকারের পরিবর্তন হলেও আপনাদের থাকতে হবে।
দেশে কেউ খুন ও গুম হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন বেশি করে ভাত খান মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু স্বৈরাচার নয়, তারা ডাইনি বাহিনি। রক্তের প্রতি তাদের নেশা হয়ে গেছে। এ নিয়ে অতীতে হাসিনারই সহকর্মী ‘আমার ফাঁসি চাই’ গ্রন্থে লিখেছেন। এদের থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য আমাদের অনেক সন্তানকে জীবন দিতে হয়েছে।
দেশে রাজতন্ত্র কায়েম হয়েছে মন্তব্য করে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্র নাই, স্বৈরতন্ত্রও নাই, দেশে রাজতন্ত্র কায়েম হয়েছে। এক ব্যক্তির কথাই সব। তাকে সালাম দিয়ে সব করতে হয়।
ছাত্রলীগ সব দখল করে নিয়েছে দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে দেয় অস্ত্র। সব জায়গায় চাঁদাবাজি করে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে আজ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ নেই।
বিদেশীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে ভয় পায় জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ। বিদেশী হত্যা হচ্ছে। বিনিয়োগের পরিবেশ না থাকায় বিদেশীরা বিনিয়োগ করছে না।
পৌর নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে দেশের মানুষ দেখেছে পৌর নির্বাচন কেমন হয়েছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো হাসিনা এবং রকিবের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে না।
তিনি বলেন, এর মানে এই নয় যে, দেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না? অবশ্যই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আমরা চাই। জনগণ সেই নির্বাচনে ভোট দিতে পারলে বিএনপি অবশ্যই ক্ষমতায় যাবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনে সরকারী দল প্রিজাইডিং অফিসারদের দলীয় কর্মীর মত ব্যবহার করেছে। প্রিজাডিং অফিসাররা অনেক অসহায়, তাদের কোনো দোষ নেই। বর্তমান ইসি অথর্ব ও মেরুদণ্ডহীন। তাদেরকে বার বার আমরা সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু তিনি বলেছেন, সেই পরিস্থিতি না কি সৃষ্টি হয়নি।
খালেদা জিয়া বলেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের লক্ষ্য ছিল, বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে এবং নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, এ কথা সবার কাছে বলবে!
দেশের অর্থনীতির অবস্থা অনেক খারাপ দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, ব্যাংকগুলোতে আজ টাকা নেই, লুট হয়েছে। দেশে চাকরি নেই, চাকরির আশায় মানুষ ঢাকামুখী হচ্ছে। তারা কষ্ট করে ঢাকায় কিছু একটা করে জীবনধারণ করছে।
প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, খুব দ্রুত সরকারের পরিবর্তন হবে। আপনারা নিরপেক্ষ থাকুন। আওয়ামী লীগ সরকার বলে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আপনাদের চাকরি যাবে। কিন্তু আমি বলবো আপনাদের চাকরি যাবে না। আপনারা আপনাদের মেধা ও যোগ্যতা বলেই চাকরি করবেন।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সবাইকে সাথে নিয়ে কাজ করেছিলেন মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, তিনি দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ শুরু করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি দেশকে গুছিয়ে নিয়েছিলেন। পাহাড়ে-সমতলে কোথাও বৈষম্য সৃষ্টি করেননি। বর্তমানে অনেকে কর্মকর্তা আছে যারা সেদিন জিয়াউর রহমানের সাথে খাল কেটেছিলেন। আজ কেনো হঠাৎ করে তাদের মস্তিষ্ক বিকৃত হলো?
ছাত্রদলের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিগত দিনের আন্দোলনে তোমাদের প্রত্যেকেরই অনেক অবদান রয়েছে। তবে তোমাদেরকে আরো শৃঙ্খলিত হতে হবে, সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। তা না হলে লক্ষ্য অর্জন হবে না। কেবল কোনো নেতার নামে আর এলাকার নামে শ্লোগান দিলে হবে না। পড়ালেখা করে অনেক কিছু শিখতে হবে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে লিফলেট বানিয়ে তা সমগ্র দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। মানুষের সুখে-দুখে পাশে থাকতে হবে। জনপ্রিয়তা অর্জন করতে হবে। নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু, এম ইলিয়াস আলীর মতো অনেক ছাত্রনেতা এমপি হয়েছিলেন। আজ তাদেরকে গুম ও হত্যা করা হয়েছে। এসবের বিচার একদিন হবে।
বেগম জিয়া বলেন, সবকিছু বিবেচনা করে ত্যাগীদের সমন্বয়ে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কমিটি করা হবে। কেউ পদ না পেলে মন খারাপ করা যাবে না। অন্য সংগঠনে পদ দেয়া হবে। মন খারাপ না করে এক হয়ে কাজ করতে হবে। সবাইকে নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ছাত্রদলের জট কমানো হবে।
ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসানসহ সব রাজবন্দির মুক্তি দাবি করেন তিনি।
ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাসসুজ্জামান দুদু, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় নেতা ড. আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবির খোকন, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, এবিএম মোশাররফ হোসেন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু প্রমুখ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান।
দর্শক সারিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যাস্টিার মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. জেড এম জাহিদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন ছাড়াও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ছাত্রসমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেগম জিয়া বলেন, আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। দেশের গণতন্ত্র নির্বাসনে। কোথাও কোনো উন্নয়ন নেই। শুধু ঢাকায় কয়েকটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করে দেখাচ্ছে। কারণ এসব প্রকল্পে কমিশন পাওয়া যায়।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের নামে বিদ্যুৎ খাতকে ধ্বংস করেছে। কুইক রেন্টাল বিদ্যুতে ভর্তুকি দিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। আর সেই বোঝা জনগণের ওপর চাপাচ্ছে।
সরকারের উদ্দেশে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, পৌর নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করে কতটি আসন পেলেন তা নিয়ে আনন্দ পাওয়ার কিছু নেই। কারণ এ কাজ কারা করেছে তা তারা (সরকার) ভালোভাবেই জানে। এই নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় কর্মীর মতো ব্যবহার করে নষ্ট করা হয়েছে।
সমাবেশে বক্তব্য দেয়ার আগে অনুষ্ঠানস্থলে এসে খালেদা জিয়া জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং পায়রা উড়িয়ে ছাত্র সমাবেশের উদ্বোধন করেন।
এর আগে সকালে শেরেবাংলা নগরে শহীদ জিয়ার মাজারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় ছাত্রদল। সেখানে ফাতেহা পাঠ ও মুনাজাত হয়।
সদ্য অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, পৌরসভা নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। এ নির্বাচন ইতোমধ্যে আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। জনগণও নির্বাচন মানে না। হাসিনা-রকিব মার্কা নির্বাচন যে অচল তা আরেকবার প্রমাণিত হলো। প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদেরকে দলীয় কর্মী হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। বিজয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে।
খুব শিগগিরই সরকারের পরিবর্তন হবে মন্তব্য করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো সরকারেরই স্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নেই। সরকার আসবে এবং যাবে। এ সরকারও ক্ষমতায় চিরদিন থাকতে পারবে না। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকদেরকে থাকতে হবে। সরকারের কর্মকর্তারা থাকবেন। খুব শিগগিরই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে এ সরকারের বিদায় হবে। তাই, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। কারণ, সরকারের পরিবর্তন হলেও আপনাদের থাকতে হবে।
দেশে কেউ খুন ও গুম হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন বেশি করে ভাত খান মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু স্বৈরাচার নয়, তারা ডাইনি বাহিনি। রক্তের প্রতি তাদের নেশা হয়ে গেছে। এ নিয়ে অতীতে হাসিনারই সহকর্মী ‘আমার ফাঁসি চাই’ গ্রন্থে লিখেছেন। এদের থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য আমাদের অনেক সন্তানকে জীবন দিতে হয়েছে।
দেশে রাজতন্ত্র কায়েম হয়েছে মন্তব্য করে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্র নাই, স্বৈরতন্ত্রও নাই, দেশে রাজতন্ত্র কায়েম হয়েছে। এক ব্যক্তির কথাই সব। তাকে সালাম দিয়ে সব করতে হয়।
ছাত্রলীগ সব দখল করে নিয়েছে দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে দেয় অস্ত্র। সব জায়গায় চাঁদাবাজি করে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে আজ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ নেই।
বিদেশীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে ভয় পায় জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ। বিদেশী হত্যা হচ্ছে। বিনিয়োগের পরিবেশ না থাকায় বিদেশীরা বিনিয়োগ করছে না।
পৌর নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে দেশের মানুষ দেখেছে পৌর নির্বাচন কেমন হয়েছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো হাসিনা এবং রকিবের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে না।
তিনি বলেন, এর মানে এই নয় যে, দেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না? অবশ্যই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আমরা চাই। জনগণ সেই নির্বাচনে ভোট দিতে পারলে বিএনপি অবশ্যই ক্ষমতায় যাবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনে সরকারী দল প্রিজাইডিং অফিসারদের দলীয় কর্মীর মত ব্যবহার করেছে। প্রিজাডিং অফিসাররা অনেক অসহায়, তাদের কোনো দোষ নেই। বর্তমান ইসি অথর্ব ও মেরুদণ্ডহীন। তাদেরকে বার বার আমরা সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু তিনি বলেছেন, সেই পরিস্থিতি না কি সৃষ্টি হয়নি।
খালেদা জিয়া বলেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের লক্ষ্য ছিল, বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে এবং নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, এ কথা সবার কাছে বলবে!
দেশের অর্থনীতির অবস্থা অনেক খারাপ দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, ব্যাংকগুলোতে আজ টাকা নেই, লুট হয়েছে। দেশে চাকরি নেই, চাকরির আশায় মানুষ ঢাকামুখী হচ্ছে। তারা কষ্ট করে ঢাকায় কিছু একটা করে জীবনধারণ করছে।
প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, খুব দ্রুত সরকারের পরিবর্তন হবে। আপনারা নিরপেক্ষ থাকুন। আওয়ামী লীগ সরকার বলে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আপনাদের চাকরি যাবে। কিন্তু আমি বলবো আপনাদের চাকরি যাবে না। আপনারা আপনাদের মেধা ও যোগ্যতা বলেই চাকরি করবেন।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সবাইকে সাথে নিয়ে কাজ করেছিলেন মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, তিনি দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ শুরু করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি দেশকে গুছিয়ে নিয়েছিলেন। পাহাড়ে-সমতলে কোথাও বৈষম্য সৃষ্টি করেননি। বর্তমানে অনেকে কর্মকর্তা আছে যারা সেদিন জিয়াউর রহমানের সাথে খাল কেটেছিলেন। আজ কেনো হঠাৎ করে তাদের মস্তিষ্ক বিকৃত হলো?
ছাত্রদলের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিগত দিনের আন্দোলনে তোমাদের প্রত্যেকেরই অনেক অবদান রয়েছে। তবে তোমাদেরকে আরো শৃঙ্খলিত হতে হবে, সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। তা না হলে লক্ষ্য অর্জন হবে না। কেবল কোনো নেতার নামে আর এলাকার নামে শ্লোগান দিলে হবে না। পড়ালেখা করে অনেক কিছু শিখতে হবে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে লিফলেট বানিয়ে তা সমগ্র দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। মানুষের সুখে-দুখে পাশে থাকতে হবে। জনপ্রিয়তা অর্জন করতে হবে। নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু, এম ইলিয়াস আলীর মতো অনেক ছাত্রনেতা এমপি হয়েছিলেন। আজ তাদেরকে গুম ও হত্যা করা হয়েছে। এসবের বিচার একদিন হবে।
বেগম জিয়া বলেন, সবকিছু বিবেচনা করে ত্যাগীদের সমন্বয়ে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কমিটি করা হবে। কেউ পদ না পেলে মন খারাপ করা যাবে না। অন্য সংগঠনে পদ দেয়া হবে। মন খারাপ না করে এক হয়ে কাজ করতে হবে। সবাইকে নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ছাত্রদলের জট কমানো হবে।
ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসানসহ সব রাজবন্দির মুক্তি দাবি করেন তিনি।
ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাসসুজ্জামান দুদু, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় নেতা ড. আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবির খোকন, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, এবিএম মোশাররফ হোসেন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু প্রমুখ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান।
দর্শক সারিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যাস্টিার মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. জেড এম জাহিদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন ছাড়াও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
No comments