আশা জাগানিয়া সেই সুরাইয়া by ইফতেখার মাহমুদ
মা নাজমা খাতুনের কোলে পাঁচ মাস বয়সী সুরাইয়া। মাগুরা শহরের দোয়ারপাড়ার বাড়িতে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় l এহসান-উদ-দৌলা |
চোখে-মুখে
তার রাজ্যের বিস্ময়। মা নাজমা খাতুনের কোলে বসে পাঁচ মাস এক সপ্তাহ বয়সী
সুরাইয়া এদিক-ওদিক তাকাচ্ছিল। খানিক বাদে তার মুখে হাসির আভা। সেই আভা যেন
মাগুরা শহরের দোয়ারপাড়ার সন্ধ্যা বেলার মৃদু অন্ধকারকেও ছাপিয়ে গেল। কে
বলবে, সুরাইয়া নামের এই শিশুটি মায়ের পেটে থাকতেই গুলিবিদ্ধ হয়েছিল!
সুরাইয়া নামের এই ফুটফুটে মেয়েটি যেন নতুন বছরে নতুন আশার প্রতীক। সমাজের অমানবিক সংঘাত-সংঘর্ষের বিপরীতে সুরাইয়া এক উজ্জ্বল নাম। সুরাইয়ার অমলিন হাসি মানুষের অন্তহীন প্রীতি আর ভালোবাসার জয় ঘোষণা করছে।
গত ২৩ জুলাই ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে মায়ের গর্ভে শিশু সুরাইয়া গুলিবিদ্ধ হয়। গুলি মায়ের তলপেট ভেদ করে গর্ভের শিশুর হাত, গলা ও চোখে আঘাত করে। এতে তার চোখ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাগুরা সদর হাসপাতালে জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম হয় তার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুদিন পর ওকে নিয়ে আসা হয় ঢাকায়। চিকিৎসকদের চেষ্টায় আশঙ্কাজনক অবস্থা থেকে সুরাইয়া সুস্থ হয়ে ওঠে। এখন দেখলে সে দিনের কথা অনেকটাই অবিশ্বাস্য মনে হয়। ওর ওজনও এখন সাড়ে ছয় কেজি ছাড়িয়েছে।
গত ২৯ ডিসেম্বর মাগুরায় ওদের বাড়ি গিয়ে জানা গেল, সুরাইয়াদের বাসায় বিস্তর ভিড় ছিল বিকেলে। নির্বাচনে পৌর মেয়র ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা এসে দেখে গেছেন ওকে। অনেক প্রার্থী আবার মুখ ফুটে বলেই গেছেন, এই বাড়িতে এলে ভোট বাড়বে।
সুরাইয়ার চাচি শিলা খাতুন বলছিলেন, ‘এই বাড়িতে আগে কেউ ঢুঁ দিত না। এখন সব প্রার্থীই পালা করে আসছে। মাঝে মাঝে বসার জায়গাও দিতে পারিনে, লাইন ধরে যায়।’ ওর আরেক চাচি হাজেরা বেগম বলছিলেন তাঁদের যত পরিচিতি সবই সুরাইয়ার কারণে। সুরাইয়ার স্বজনেরা বলছিলেন সুরাইয়াকে দেখতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন থেকে শুরু করে বিদেশ থেকেও অনেকে এসেছেন। কানাডা-প্রবাসী হিল্লাল নামে একজন এসে ২০ সেট বিদেশি কাপড় ও আকিকার জন্য একটি ছাগল দিয়ে গেছেন।
ওই বাড়িতেই শোনা গেল, ‘সুয্যিমামা জাগার আগে’ প্রতিদিন জেগে ওঠে সুরাইয়া। বাবা বাচ্চু ভূঁইয়ার কোলে উঠে কিছুক্ষণ এঘর-ওঘর করে আবার ঘুমিয়ে পড়ে। বাবা বাচ্চু ভূঁইয়া ভোরে কিছুটা সময় মেয়ের সঙ্গে কাটালেও কাজ সেরে দুপুরে ভাত খেতে আসার ফাঁকে মেয়েকে চোখের আড়াল করেন না। সে কারণেই কি না কে জানে স্বজনেরা বলছিলেন, সুরাইয়া কিছুক্ষণ পরপরই আব্বু বলার চেষ্টায় বু-বু-বু শব্দ করে। সুরাইয়া যে বেঁচে আছে এটাই বাবা বাচ্চু ভুঁইয়াকে অনাবিল আনন্দ দেয়। আর, মা নাজমার চিন্তা সে শতভাগ সুস্থ হয়ে উঠবে কি না তা নিয়ে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুরাইয়া শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কানিজ হাসিনার তত্ত্বাবধানে ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার কানিজ হাসিনা প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই মাস পর পর সুরাইয়া চেকআপে ঢাকায় আসে। আগামী ৫ জানুয়ারি ওর আসার কথা আছে। ডান চোখটা ছাড়া আর কোথাও কোনো সমস্যা নেই। গুলি লাগা চোখটির কী অবস্থা, এই চোখ দিয়ে সুরাইয়া কতটা দেখতে পাবে সেটা হয়তো এবার বোঝা যাবে।’
শিশু সুরাইয়ার জন্ম ও বেড়ে ওঠায় চিকিৎসকদের কাছে তাঁদের ঋণের শেষ নেই। সুরাইয়ার মা নাজমা বলছিলেন, ‘মেয়েকে মমতাময়ী ডাক্তার বানাতে চাই। যে মমতা নামের জিনিসটা পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাচ্ছিল তার জোরেই আমার মেয়ে আজ বাঁইচে আছে।’
সুরাইয়া নামের এই ফুটফুটে মেয়েটি যেন নতুন বছরে নতুন আশার প্রতীক। সমাজের অমানবিক সংঘাত-সংঘর্ষের বিপরীতে সুরাইয়া এক উজ্জ্বল নাম। সুরাইয়ার অমলিন হাসি মানুষের অন্তহীন প্রীতি আর ভালোবাসার জয় ঘোষণা করছে।
গত ২৩ জুলাই ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে মায়ের গর্ভে শিশু সুরাইয়া গুলিবিদ্ধ হয়। গুলি মায়ের তলপেট ভেদ করে গর্ভের শিশুর হাত, গলা ও চোখে আঘাত করে। এতে তার চোখ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাগুরা সদর হাসপাতালে জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম হয় তার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুদিন পর ওকে নিয়ে আসা হয় ঢাকায়। চিকিৎসকদের চেষ্টায় আশঙ্কাজনক অবস্থা থেকে সুরাইয়া সুস্থ হয়ে ওঠে। এখন দেখলে সে দিনের কথা অনেকটাই অবিশ্বাস্য মনে হয়। ওর ওজনও এখন সাড়ে ছয় কেজি ছাড়িয়েছে।
গত ২৯ ডিসেম্বর মাগুরায় ওদের বাড়ি গিয়ে জানা গেল, সুরাইয়াদের বাসায় বিস্তর ভিড় ছিল বিকেলে। নির্বাচনে পৌর মেয়র ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা এসে দেখে গেছেন ওকে। অনেক প্রার্থী আবার মুখ ফুটে বলেই গেছেন, এই বাড়িতে এলে ভোট বাড়বে।
সুরাইয়ার চাচি শিলা খাতুন বলছিলেন, ‘এই বাড়িতে আগে কেউ ঢুঁ দিত না। এখন সব প্রার্থীই পালা করে আসছে। মাঝে মাঝে বসার জায়গাও দিতে পারিনে, লাইন ধরে যায়।’ ওর আরেক চাচি হাজেরা বেগম বলছিলেন তাঁদের যত পরিচিতি সবই সুরাইয়ার কারণে। সুরাইয়ার স্বজনেরা বলছিলেন সুরাইয়াকে দেখতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন থেকে শুরু করে বিদেশ থেকেও অনেকে এসেছেন। কানাডা-প্রবাসী হিল্লাল নামে একজন এসে ২০ সেট বিদেশি কাপড় ও আকিকার জন্য একটি ছাগল দিয়ে গেছেন।
ওই বাড়িতেই শোনা গেল, ‘সুয্যিমামা জাগার আগে’ প্রতিদিন জেগে ওঠে সুরাইয়া। বাবা বাচ্চু ভূঁইয়ার কোলে উঠে কিছুক্ষণ এঘর-ওঘর করে আবার ঘুমিয়ে পড়ে। বাবা বাচ্চু ভূঁইয়া ভোরে কিছুটা সময় মেয়ের সঙ্গে কাটালেও কাজ সেরে দুপুরে ভাত খেতে আসার ফাঁকে মেয়েকে চোখের আড়াল করেন না। সে কারণেই কি না কে জানে স্বজনেরা বলছিলেন, সুরাইয়া কিছুক্ষণ পরপরই আব্বু বলার চেষ্টায় বু-বু-বু শব্দ করে। সুরাইয়া যে বেঁচে আছে এটাই বাবা বাচ্চু ভুঁইয়াকে অনাবিল আনন্দ দেয়। আর, মা নাজমার চিন্তা সে শতভাগ সুস্থ হয়ে উঠবে কি না তা নিয়ে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুরাইয়া শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কানিজ হাসিনার তত্ত্বাবধানে ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার কানিজ হাসিনা প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই মাস পর পর সুরাইয়া চেকআপে ঢাকায় আসে। আগামী ৫ জানুয়ারি ওর আসার কথা আছে। ডান চোখটা ছাড়া আর কোথাও কোনো সমস্যা নেই। গুলি লাগা চোখটির কী অবস্থা, এই চোখ দিয়ে সুরাইয়া কতটা দেখতে পাবে সেটা হয়তো এবার বোঝা যাবে।’
শিশু সুরাইয়ার জন্ম ও বেড়ে ওঠায় চিকিৎসকদের কাছে তাঁদের ঋণের শেষ নেই। সুরাইয়ার মা নাজমা বলছিলেন, ‘মেয়েকে মমতাময়ী ডাক্তার বানাতে চাই। যে মমতা নামের জিনিসটা পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাচ্ছিল তার জোরেই আমার মেয়ে আজ বাঁইচে আছে।’
No comments