ওবামার বিস্ট : বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত গাড়ি
গাড়িটির
কোড নেম 'দি বিস্ট'। মার্কিন প্রেসিডেন্টর ব্যবহৃত গাড়ি। গাড়িটি আক্ষরিক
অর্থেই বিস্ট-ই বটে! গাড়ির অন্তঃসজ্জা থেকে শুরু করে নিরাপত্তা ও
যোগাযোগ-ব্যবস্থা প্রত্যেকটা জিনিসই অত্যাধুনিক। যার জন্য বিস্ট-কে বিশ্বের
সবচেয়ে সুরক্ষিত গাড়ির আখ্যা দেয়া হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিদেশে
গেলেও গাড়িটি সেখানে যায়। বসতে পারেন সাতজন।
প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেট কার হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ব্যবহৃত স্টেট কার। ১৯৩০-এর দশক থেকেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রেসিডেন্টকে গাড়ি বরাদ্দ দিয়ে আসছে যাতে থাকে উন্নত যোগাযোগ সরঞ্জাম, বর্ম এবং সামরিক প্রতিরক্ষা।
বর্তমান প্রেসিডেন্সিয়াল লিমুজিন ব্যবহৃত হচ্ছে ২০০৯ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে।
এক ঝলকে দেখে নেয়া যাক মার্কিন প্রেসিডেনশিয়াল গাড়িতে কী কী আছে—
কালো রঙের লিমুজিন-ঘরানার গাড়িটির নির্মাতা জেনারেল মোটর্স। পোশাকি নাম দ্য বিস্ট হলেও অনেক সময়ে তাকে ‘ক্যাডিলাক ওয়ান’ বা ‘লিমো ওয়ান’ বলে ডাকা হয়। সাধারণভাবে প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেট কার বলা হয়। ক্যাডিলাক মডেলের চিহ্ন বহন করলেও গাড়িটির বহু অংশই শেভ্রলে কোডিয়াক ট্রাকের থেকে নেয়া।
প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেট কার হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ব্যবহৃত স্টেট কার। ১৯৩০-এর দশক থেকেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রেসিডেন্টকে গাড়ি বরাদ্দ দিয়ে আসছে যাতে থাকে উন্নত যোগাযোগ সরঞ্জাম, বর্ম এবং সামরিক প্রতিরক্ষা।
বর্তমান প্রেসিডেন্সিয়াল লিমুজিন ব্যবহৃত হচ্ছে ২০০৯ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে।
এক ঝলকে দেখে নেয়া যাক মার্কিন প্রেসিডেনশিয়াল গাড়িতে কী কী আছে—
কালো রঙের লিমুজিন-ঘরানার গাড়িটির নির্মাতা জেনারেল মোটর্স। পোশাকি নাম দ্য বিস্ট হলেও অনেক সময়ে তাকে ‘ক্যাডিলাক ওয়ান’ বা ‘লিমো ওয়ান’ বলে ডাকা হয়। সাধারণভাবে প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেট কার বলা হয়। ক্যাডিলাক মডেলের চিহ্ন বহন করলেও গাড়িটির বহু অংশই শেভ্রলে কোডিয়াক ট্রাকের থেকে নেয়া।
গাড়িটি
স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, টাইটেনিয়াম ও সেরামিক দিয়ে তৈরি। দরজায় আট-ইঞ্চি
পুরু স্টিল প্লেটের বর্ম রয়েছে (যেমনটি যুদ্ধের ট্যাঙ্কে থাকে) যা বুলেট
থেকে রকেট, আইইডি হামলা- সব প্রতিরোধ করতে সক্ষম। এমনকি, জানলার কাচও
পাঁচ-ইঞ্চি পুরু বহুস্তরবিশিষ্ট। ফলে, স্টিলের বর্ম ও কাচ মিলিয়ে বিস্টের
দরজার ওজন আর একটি বোয়িং ৭৫৭ বিমানের দরজার ওজন প্রায় সমান। চালকের দরজার
কাচ ছাড়া আর কোনো জানলা খোলা যায় না। ফলে, রাসায়নিক ও জৈবিক হামলা হলেও
প্রেসিডেন্ট অক্ষত থাকবেন।
গাড়ির স্যাসির ওজন প্রায় ৬,৩৫০ কিলোগ্রাম। পুরো গাড়ির ওজন প্রায় ৮ টন। তুলনায় রোলস রয়েস ফ্যান্টম-এর (বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গাড়ির মডেল) স্যাসির ওজন মাত্র ২,৫৫০ কেজি। ফলে গাড়ি না বলে একে ট্যাঙ্ক বলাই উচিত।
শুধু গাড়ির স্যাসিই নয়, তার তেলের ট্যাঙ্কও আর্মার-দিয়ে মোড়া. যাতে তাকে তাক করে কোনো হামলা না হয়। পাশাপাশি, ফুয়েল ট্যাঙ্ককে মুড়ে থাকে একটি ফোমের জ্যাকেট। যাতে কোনো কারণে আগুন ধরে গেলেও তেলের ট্যাঙ্কে কোনো বিস্ফোরণ ঘটবে না।
বিস্টের পুরো গাড়ি যেখানে
অত্যাধুনিক, সেখানে চাকাই বা বাদ যাবে কেন! গাড়ির চাকাগুলো কেভলার
(বুলেটপ্রুফ) দিয়ে মোড়া। ফলে কোনোভাবে তাতে ফুটো হবে না, বা হাওয়া বের
হবে না। যদিও বা কোনোভাবে সে রকম পরিস্থিতি হয়ও, বা চাকার রবার খুলে গেলেও,
তার স্টিলের রিমের সাহায্যেই প্রেসিডেন্টের গাড়ি দিব্যি দৌড়বে।
গাড়ির ডিকিতে প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার জন্য সব উপকরণই মজুত থাকে। যেমন টিয়ার গ্যাস, শটগান। রয়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডার, প্রেসিডেন্টের রক্তের গ্রুপের মানানসই রক্তের পাউচ, আপত্কালীন মেডিক্যাল কিট, নিজস্ব অত্যাধুনিক অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা– যেমন দেখা যায় জেমস বন্ডের ছবিতে।
গাড়ির চালকের আসনে থাকেন ইউএস সিক্রেট সার্ভিসের অফিসার। যিনি এই গাড়ি চালাতে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। ওই বিশাল ও ভারি গাড়ির মুখকে মুহূর্তের মধ্যে উল্টো অভিমুখে ঘোরাতে তিনি সিদ্ধহস্ত। চালকের সুবিধের জন্য গাড়িতে রয়েছে নাইট-ভিসন ক্যামেরা, ইনফ্রা-রেড সেন্সর। ফলে, নিকষ আঁধার হোক বা ধোঁয়ায় ভরা পরিবেশ— কোনো পরিস্থিতিতেই গাড়ি চালাতে অসুবিধে হবে না।
গাড়িতে রয়েছে অত্যাধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিস্টে রয়েছে বিশেষ জিপিএস প্রযুক্তি, ওয়াই-ফাই ও স্যাটেলাইট ফোনের ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে যেকোনো সময়ে গাড়ি থেকেই ভাইস-প্রেসিডেন্ট, পেন্টাগন, সামরিক কর্তা ও বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে ‘পোটাস’ বা ‘ইগল’ (মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এই কোডনামেই ডাকা হয়) যোগাযোগ বজায় রাখতে পারেন। গাড়িতে বসেই প্রেসিডেন্ট যোগাযোগ করতে পারবেন পৃথিবীর যে কারো সাথে। চাইলে পৃথিবীর যেকোনো স্থানে পরমাণু হামলার নির্দেশও দিতে পারবেন!
এহেন একটি গাড়ি তৈরি
করতে খরচ পড়ে প্রায় ১৫ লাখ মার্কিন ডলার। তবে, সব ভালো হলেও বিস্টের
অপারগতা এক জায়গাতেই, তা হলো এই গাড়ি বেশি উচ্চগতি তুলতে পারে না।
সুপারচার্জার থাকা সত্ত্বেও এত ভারী গাড়ি ঘণ্টায় ৬০ মাইলের বেশি গতি তুলতে
অক্ষম। শুধু তাই নয়, এই গাড়ির তেল খরচও যথেষ্ট। গড়ে ৩ লিটারে এক
কিলোমিটার। তবে, গাড়ির সওয়ারির নাম যখন বারাক হুসেন ওবামা, সেখানে তেলের
খরচ কম হলো না বেশি, তাতে কী-ই বা এসে যায়!
No comments