আক্রমণাত্মক রাহুল গান্ধী
দিল্লির অদূরে হরিয়ানা রাজ্যের সোনপেড গ্রামের দলিত হত্যার জন্য সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর দলের ‘মনোভাবকে’ দায়ী করলেন কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুল গান্ধী। গতকাল বুধবার তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহনলাল খাট্টার, বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস) যে মনোভাব নিয়ে চলছে, এই ঘটনা তারই ফল। রাহুলের কথায়, ‘ওঁরা মনে করেন, কেউ যদি দুর্বল হয় তাহলে তাকে পিষে দাও। তাকে দাবিয়ে রাখো। আজ দেশের চতুর্দিকে যা হচ্ছে তা এই মনোভাবেরই ফল। এই সরকার গরিবদের তোয়াক্কা করে না।’ গত মঙ্গলবার ভোরে সোনপেড গ্রামের এক দলিত পরিবারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুনে পুড়ে মারা যায় দুই শিশু, একজনের বয়স আড়াই, অন্যজনের এক বছর। তাদের মা রেখা ও বাবা জিতেন্দ্র গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন। অভিযোগ, বিবাদের জেরে গ্রামের সংখ্যাগরিষ্ঠ উচ্চবর্ণের বাসিন্দারাই এ কাণ্ড ঘটিয়েছে।
ভোরবেলায় সবাই যখন ঘুমে অচেতন, তখন পেট্রল ছড়িয়ে ওই পরিবারের ঘরটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই অভিযোগে পুলিশ গতকাল পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করলেও অনেকে ফেরার। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে গ্রামবাসী গতকাল ফরিদাবাদ-বল্লভগড় মহাসড়ক অবরোধ করেন। বিক্ষোভের কারণে মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টার উপদ্রুত গ্রামে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল করে দেন। রাহুলকে প্রশ্ন করা হয়, মিডিয়ায় ছবি ছাপানোই তাঁর এই সফরের উদ্দেশ্য কি না। উত্তরে রাহুল বিজেপি শীর্ষ নেতাদের একহাত নেন। তিনি বলেন, ‘ছবি তোলা? দেশের সর্বত্র দুর্বল, গরিব মানুষ মারা যাচ্ছে। তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানো, তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ানোই তো উচিত।’ কংগ্রেস সহসভাপতি অভিযোগ করে বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দলের মনোভাবই দায়ী। তাঁরা দুর্বল ও গরিবদের পিষে ফেলতে চান। এসব সেই মনোভাবেরই প্রতিফলন।’ হরিয়ানায় কংগ্রেসকে হারিয়ে বিজেপি সরকার গঠন করেছে। সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি মুসলমানদের গরুর মাংস না খাওয়ার নিদান দিয়েছেন। দলিতদের প্রতি এই আক্রমণ বিহারের নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে সে রাজ্যের শাসকগোষ্ঠীর একটা বড় হাতিয়ার হতে পারে। রাহুলের মন্তব্যের রাজনৈতিক তাৎপর্য সেটাই।
No comments