আ.লীগের ১৬ প্রার্থীকে মামলা থেকে রেহাই by হারুন আল রশীদ ও মোশতাক আহমেদ
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত ১৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থীকে ২২টি হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মামলা থেকে বিভিন্ন উপায়ে রেহাই দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নয়জনের পাঁচটি হত্যা ও সাতটি হত্যাচেষ্টার মামলা আওয়ামী লীগ সরকারের গত মেয়াদে রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করা হয়।
২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৯৩টি সাধারণ ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীদের দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। অন্য ১০টি মামলা কবে প্রত্যাহার করা হয়েছে, তা হলফনামায় উল্লেখ নেই। তাঁরা এসব মামলাকে মিথ্যা হিসেবে উল্লেখ করে দাবি করেছেন, ষড়যন্ত্র বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ শত্রুতা করে এসব মামলা করেছিল।
স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচন নির্দলীয় হলেও বাস্তবে তা হচ্ছে দলীয়ভাবে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই দলের পক্ষ থেকে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে সমর্থন দিয়েছে। ঢাকার দুই সিটিতে বিএনপি-সমর্থিত ৫৪ জন প্রার্থীর নামে বর্তমানে ফৌজদারি মামলা আছে। এঁদের মধ্যে অন্তত ১৭ জন হত্যা মামলা এবং ২২ জন হত্যাচেষ্টার মামলার আসামি। এসব মামলার বেশির ভাগই ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা। কয়েকজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে করা মামলাও রয়েছে।
উত্তর সিটি: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩৬টি সাধারণ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ছয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা বা হত্যাচেষ্টার মামলা হলেও চারজনই হয় অব্যাহতি অথবা খালাস পেয়েছেন। বাকি দুজনের মামলা বিচারাধীন।
এ ছাড়া চারজনের বিরুদ্ধে অন্য ধারায় মামলা থাকলেও সেগুলো প্রত্যাহার, খালাস বা নিষ্পত্তি হয়েছে। তবে ২৫ জনের বিরুদ্ধে বর্তমান ও অতীতে কোনো মামলা ছিল না।
হলফনামা পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী সলিম উল্লাহ সলুর বিরুদ্ধে ৩০২/৩৪ দণ্ডবিধিতে চারটি মামলা ছিল। এর মধ্যে সব কটি থেকেই অব্যাহতি বা খালাস পেয়েছেন তিনি।
৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী জামাল মোস্তফার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা ছিল। কাফরুল থানায় ৩০৭ ধারায় করা একটি মামলা (২৮ নম্বর মামলা) তদন্ত কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে তাঁকে অব্যাহতি দিয়েছেন। বাকি চারটি মামলার তিনটি প্রত্যাহার ও একটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে জামাল মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তাঁকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এসব মামলা করেছিল, যা মিথ্যা। তাঁর ভাষায় প্রতিপক্ষ ‘শয়তানি’ করে এসব মামলা করেছিল।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুর রউফও দুটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।
২৪ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী সফিউল্লার বিরুদ্ধে ৩০২/৩৪ দণ্ডবিধিতে ২০০২ সালে তেজগাঁও থানায় মামলা হলেও তাঁকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অন্য ধারায় আরও দুই মামলায় অব্যাহতি ও চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ফোনে যোগাযোগ করা হলে একজন ফোন ধরে জানান, সফিউল্লা জনসংযোগে ব্যস্ত।
২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ঢাকা উত্তরের আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুর রহমান খানের বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারায় একটি মামলা সাক্ষী পর্যায়ে আছে। তবে মোহাম্মদপুর থানায় করা ৩০২/৩৪ ধারায় করা আরেকটি মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে ফরিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় ১৫ বছর আগে তাঁদের মহল্লায় একজন ছিনতাইকারীকে পিটিয়েছিল মহল্লাবাসী। তখন বিরোধী দলে থাকায় রাজনৈতিকভাবে তাঁকে ওই মামলায় জড়ানো হয়।
ঢাকা উত্তর সিটির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী কাজী জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারায় পল্লবী থানায় একটি মামলা আছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন।
এর বাইরে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী মোবাশ্বের চৌধুরীর নামে অতীতে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি এবং অন্যান্য ধারায় আরেকটি মামলায় প্রত্যাহার করা হয়।
দক্ষিণ সিটি: আওয়ামী লীগ-সমর্থিত ৫৭ জন প্রার্থীর মধ্যে নয়জন প্রার্থীর পাঁচটি হত্যা ও সাতটি হত্যাচেষ্টার মামলা আওয়ামী লীগ সরকারের গত মেয়াদে রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ২০টি মামলা প্রত্যাহার করা হয়।
মামলা প্রত্যাহার, অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি ও আদালত থেকে খালাস পাওয়ায় ১২ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে কোনো মামলা নেই। পাঁচজনের বিরুদ্ধে এখনো মামলা আছে। ৪০ জনের বিরুদ্ধে অতীতে কোনো মামলা ছিল না, বর্তমানেও নেই।
২ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষমতাসীন দলের কাউন্সিলর প্রার্থী আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে ৩০২ ধারায় একটি হত্যা মামলা হয়। এ ছাড়া ২০০৭ সালে বিস্ফোরক আইনে ও অন্য ধারায় দুটি মামলা হয়। তিনটি মামলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করেছে বলে তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মোহাম্মদ আসরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে একটি হত্যা মামলাসহ দুটি মামলা হলেও তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইভাবে প্রত্যাহার করা হয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সুলতান মিয়ার মামলা। এই হত্যা মামলা হয়েছিল ২০০৬ সালে। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী গোলাম আশরাফের প্রত্যাহার করা মামলাটি ছিল হত্যাচেষ্টার (৩০৭ ধারা)। ৫২ ওয়ার্ডের নাছিম মিয়ার প্রত্যাহার করা মামলাটি হয়েছিল ২০০৩ সালে অস্ত্র আইনে।
জানতে চাইলে সুলতান মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে লগি-বইঠার মিছিলের ওপর হামলায় কয়েকজন মারা যান। তখন রাজনৈতিক উদ্দেশে খুনের মামলা হয়। তাঁকেও সেই মামলার আসামি করা হয়। রাজনৈতিক উদ্দেশে মামলাটি হওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মামলাটি প্রত্যাহার করেছে।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হোসেন হায়দার হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, ১৯৯৯ সালে তাঁর নামে হত্যা মামলা হয়েছিল। মামলাটি ২০১০ সালে প্রত্যাহার করা হয়। ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী গোলাম মোস্তফার মোট চারটি মামলা প্রত্যাহার করা হয়। এর মধ্যে একটি হত্যাচেষ্টার। বাকিগুলো বিস্ফোরক আইনসহ দণ্ডবিধির অন্যান্য ধারায়।
দুটি মামলায় পুলিশের অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মোহাম্মদ সাহিদকে। ৫০ ওয়ার্ডের সায়েম খন্দকারের বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা ছিল। সবকটি থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি হত্যা ও তিনটি হত্যাচেষ্টার মামলা।
৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ইলিয়াস রশীদের নামে ২৩টি মামলা ছিল। এর মধ্যে একটি হত্যা ও দুটি হত্যাচেষ্টার। এগুলোর মধ্যে আটটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাকিগুলো থেকে তিনি অব্যাহতি অথবা খালাস পেয়েছেন। তবে তাঁর নামে ২০০৭ সালের একটি হত্যা মামলা এখনো বিচারাধীন।
জানতে চাইলে ইলিয়াস রশীদ বলেন, ২০০১ সালের আগে তাঁর নামে থানায় কোনো সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) ছিল না। বিএনপির নেতারা খুন করে তাঁর নামে মামলা করেছেন।
৪০ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আসাদুল্লাহর বিরুদ্ধে বর্তমানে একটি হত্যা মামলাসহ চারটি মামলা আছে। অতীতে দুটি মামলা ছিল। এর মধ্যে একটি হত্যা মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে তাঁকে ফোন করলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে সংযোগ কেটে দেন।
৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাসান আসকারীর নামে বর্তমানে একটি হত্যা মামলা আছে। একটি হত্যা মামলাসহ তিনটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কালাম। তবে তাঁর নামে এখনো দুটি মামলা আছে। ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের ময়নুল হকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা হয় ২০১৪ সালে। মামলাটি শুনানির অপেক্ষায় আছে।
২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৯৩টি সাধারণ ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীদের দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। অন্য ১০টি মামলা কবে প্রত্যাহার করা হয়েছে, তা হলফনামায় উল্লেখ নেই। তাঁরা এসব মামলাকে মিথ্যা হিসেবে উল্লেখ করে দাবি করেছেন, ষড়যন্ত্র বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ শত্রুতা করে এসব মামলা করেছিল।
স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচন নির্দলীয় হলেও বাস্তবে তা হচ্ছে দলীয়ভাবে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই দলের পক্ষ থেকে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে সমর্থন দিয়েছে। ঢাকার দুই সিটিতে বিএনপি-সমর্থিত ৫৪ জন প্রার্থীর নামে বর্তমানে ফৌজদারি মামলা আছে। এঁদের মধ্যে অন্তত ১৭ জন হত্যা মামলা এবং ২২ জন হত্যাচেষ্টার মামলার আসামি। এসব মামলার বেশির ভাগই ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা। কয়েকজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে করা মামলাও রয়েছে।
উত্তর সিটি: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩৬টি সাধারণ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ছয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা বা হত্যাচেষ্টার মামলা হলেও চারজনই হয় অব্যাহতি অথবা খালাস পেয়েছেন। বাকি দুজনের মামলা বিচারাধীন।
এ ছাড়া চারজনের বিরুদ্ধে অন্য ধারায় মামলা থাকলেও সেগুলো প্রত্যাহার, খালাস বা নিষ্পত্তি হয়েছে। তবে ২৫ জনের বিরুদ্ধে বর্তমান ও অতীতে কোনো মামলা ছিল না।
হলফনামা পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী সলিম উল্লাহ সলুর বিরুদ্ধে ৩০২/৩৪ দণ্ডবিধিতে চারটি মামলা ছিল। এর মধ্যে সব কটি থেকেই অব্যাহতি বা খালাস পেয়েছেন তিনি।
৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী জামাল মোস্তফার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা ছিল। কাফরুল থানায় ৩০৭ ধারায় করা একটি মামলা (২৮ নম্বর মামলা) তদন্ত কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে তাঁকে অব্যাহতি দিয়েছেন। বাকি চারটি মামলার তিনটি প্রত্যাহার ও একটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে জামাল মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তাঁকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এসব মামলা করেছিল, যা মিথ্যা। তাঁর ভাষায় প্রতিপক্ষ ‘শয়তানি’ করে এসব মামলা করেছিল।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুর রউফও দুটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।
২৪ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী সফিউল্লার বিরুদ্ধে ৩০২/৩৪ দণ্ডবিধিতে ২০০২ সালে তেজগাঁও থানায় মামলা হলেও তাঁকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অন্য ধারায় আরও দুই মামলায় অব্যাহতি ও চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ফোনে যোগাযোগ করা হলে একজন ফোন ধরে জানান, সফিউল্লা জনসংযোগে ব্যস্ত।
২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ঢাকা উত্তরের আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুর রহমান খানের বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারায় একটি মামলা সাক্ষী পর্যায়ে আছে। তবে মোহাম্মদপুর থানায় করা ৩০২/৩৪ ধারায় করা আরেকটি মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে ফরিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় ১৫ বছর আগে তাঁদের মহল্লায় একজন ছিনতাইকারীকে পিটিয়েছিল মহল্লাবাসী। তখন বিরোধী দলে থাকায় রাজনৈতিকভাবে তাঁকে ওই মামলায় জড়ানো হয়।
ঢাকা উত্তর সিটির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী কাজী জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারায় পল্লবী থানায় একটি মামলা আছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন।
এর বাইরে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী মোবাশ্বের চৌধুরীর নামে অতীতে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি এবং অন্যান্য ধারায় আরেকটি মামলায় প্রত্যাহার করা হয়।
দক্ষিণ সিটি: আওয়ামী লীগ-সমর্থিত ৫৭ জন প্রার্থীর মধ্যে নয়জন প্রার্থীর পাঁচটি হত্যা ও সাতটি হত্যাচেষ্টার মামলা আওয়ামী লীগ সরকারের গত মেয়াদে রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ২০টি মামলা প্রত্যাহার করা হয়।
মামলা প্রত্যাহার, অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি ও আদালত থেকে খালাস পাওয়ায় ১২ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে কোনো মামলা নেই। পাঁচজনের বিরুদ্ধে এখনো মামলা আছে। ৪০ জনের বিরুদ্ধে অতীতে কোনো মামলা ছিল না, বর্তমানেও নেই।
২ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষমতাসীন দলের কাউন্সিলর প্রার্থী আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে ৩০২ ধারায় একটি হত্যা মামলা হয়। এ ছাড়া ২০০৭ সালে বিস্ফোরক আইনে ও অন্য ধারায় দুটি মামলা হয়। তিনটি মামলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করেছে বলে তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মোহাম্মদ আসরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে একটি হত্যা মামলাসহ দুটি মামলা হলেও তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইভাবে প্রত্যাহার করা হয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সুলতান মিয়ার মামলা। এই হত্যা মামলা হয়েছিল ২০০৬ সালে। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী গোলাম আশরাফের প্রত্যাহার করা মামলাটি ছিল হত্যাচেষ্টার (৩০৭ ধারা)। ৫২ ওয়ার্ডের নাছিম মিয়ার প্রত্যাহার করা মামলাটি হয়েছিল ২০০৩ সালে অস্ত্র আইনে।
জানতে চাইলে সুলতান মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে লগি-বইঠার মিছিলের ওপর হামলায় কয়েকজন মারা যান। তখন রাজনৈতিক উদ্দেশে খুনের মামলা হয়। তাঁকেও সেই মামলার আসামি করা হয়। রাজনৈতিক উদ্দেশে মামলাটি হওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মামলাটি প্রত্যাহার করেছে।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হোসেন হায়দার হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, ১৯৯৯ সালে তাঁর নামে হত্যা মামলা হয়েছিল। মামলাটি ২০১০ সালে প্রত্যাহার করা হয়। ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী গোলাম মোস্তফার মোট চারটি মামলা প্রত্যাহার করা হয়। এর মধ্যে একটি হত্যাচেষ্টার। বাকিগুলো বিস্ফোরক আইনসহ দণ্ডবিধির অন্যান্য ধারায়।
দুটি মামলায় পুলিশের অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মোহাম্মদ সাহিদকে। ৫০ ওয়ার্ডের সায়েম খন্দকারের বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা ছিল। সবকটি থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি হত্যা ও তিনটি হত্যাচেষ্টার মামলা।
৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ইলিয়াস রশীদের নামে ২৩টি মামলা ছিল। এর মধ্যে একটি হত্যা ও দুটি হত্যাচেষ্টার। এগুলোর মধ্যে আটটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাকিগুলো থেকে তিনি অব্যাহতি অথবা খালাস পেয়েছেন। তবে তাঁর নামে ২০০৭ সালের একটি হত্যা মামলা এখনো বিচারাধীন।
জানতে চাইলে ইলিয়াস রশীদ বলেন, ২০০১ সালের আগে তাঁর নামে থানায় কোনো সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) ছিল না। বিএনপির নেতারা খুন করে তাঁর নামে মামলা করেছেন।
৪০ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আসাদুল্লাহর বিরুদ্ধে বর্তমানে একটি হত্যা মামলাসহ চারটি মামলা আছে। অতীতে দুটি মামলা ছিল। এর মধ্যে একটি হত্যা মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে তাঁকে ফোন করলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে সংযোগ কেটে দেন।
৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাসান আসকারীর নামে বর্তমানে একটি হত্যা মামলা আছে। একটি হত্যা মামলাসহ তিনটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কালাম। তবে তাঁর নামে এখনো দুটি মামলা আছে। ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের ময়নুল হকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা হয় ২০১৪ সালে। মামলাটি শুনানির অপেক্ষায় আছে।
No comments