নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে অন্তঃহীন অভিযোগ by কাজী জেবেল
ঢাকা
উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচন নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই প্রার্থীদের।
নির্বাচনী সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকা, প্রতিপক্ষের আচরণবিধি লংঘন, পুলিশের
হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা। প্রচারণা শুরুর পর
থেকে গত কয়েক দিনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ও নির্বাচন কমিশনে (ইসি) বেশ কয়েকজন
প্রার্থী লিখিত অভিযোগ করেছেন। তারা এসব বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে নির্বাচনে
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার দাবি জানান। এর আগে মতবিনিময় সভায় প্রধান
নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদসহ পুরো কমিশনের সামনেই
অনেক প্রার্থী নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ করেন।
শনিবার পর্যন্ত ঢাকার দুই সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে অন্তত ১৫ কাউন্সিলর প্রার্থী লিখিত অভিযোগ করেছেন। নির্বাচন কমিশনেও আবেদন করেছেন কয়েকজন। আবার ‘ঝামেলা’ এড়াতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করছেন না বলে জানান অনেক প্রার্থী। জমা পড়া অভিযোগের বেশির ভাগেই পুলিশি হয়রানি ও প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। কয়েকজন প্রার্থী ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চেয়েও চিঠি দিয়েছেন। ওইসব অভিযোগের বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে আইনশৃংখলা বাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা। তবে বেশিরভাগ অভিযোগের ক্ষেত্রেই প্রার্থীরা কাক্সিক্ষত প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানতে চাওয়া হলে ঢাকা দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ যুগান্তরকে বলেন, আমি ৭-৮টি অভিযোগ পেয়েছি। এছাড়া দু’জন মেয়র প্রার্থী ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চেয়েছেন। তিনি বলেন, একজন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার নেতৃত্বে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তা আইনশৃংখলা বাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
একাধিক সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে আজ রোববার আইনশৃংখলাসংক্রান্ত বৈঠকে প্রার্থীদের আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগের বিষয়টি আলোচনা করার কথা রয়েছে। বৈঠকে ভোটগ্রহণের দিন পর্যন্ত আচরণবিধি লংঘন রোধে আইনশৃংখলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেয়া হবে। তারা আরও বলেন, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও প্রার্থীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে পৃথক দুটি ‘আইনশৃংখলা রক্ষাকারী সেল গঠন’ করা হয়েছে। এছাড়া ভিজিলেন্স ও মনিটরিং কমিটিও গঠন করা হয়েছে। দুটি কমিটি নির্বাচনী কার্যক্রম ও সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে অভিযোগকারীদের একজন ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. আবুল হাশেম শনিবার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দুটি অভিযোগ করেছি। একটিতে বলেছি, আমার সমর্থকরা পোস্টার লাগাতে গেলে পুলিশ অহেতুক আটক করে নিয়ে গেছে। আরেক অভিযোগে আমি বলেছি, রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার ৭ নম্বর সড়কে ১৬ এপ্রিল আমার নির্বাচনী ক্যাম্পে পুলিশ হানা দিয়ে চেয়ার-টেবিল বাইরে ফেলে দিয়েছে। আমার সমর্থকদের ক্যাম্প থেকে বের করে তালাবদ্ধ করে দেয়। ওই ঘটনার কিছু সময় পরই আমার এক কর্মীকে পুলিশ আটক করে রিমান্ডে নিয়েছে।’ রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অভিযোগ দেয়ার পর প্রতিকার পেয়েছেন কী কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আবুল হাশেম বলেন, ‘যেহেতু একবার পুলিশ এসেছে, তাই গ্রেফতার আতংকে আমার কর্মীদের ক্যাম্পে না যেতে বলেছি।’
আরেক অভিযোগকারী মিরপুর এলাকার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মাসুদ খান। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হওয়ায় প্রতিদিন হত্যা ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে ইসিতে লিখিতভাবে জানিয়েছেন তিনি। ১৬ এপ্রিল দেয়া অভিযোগে তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রাভাবশালী প্রার্থী আবু তাহের লাল্টু ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের লোকজন প্রচারণা চালাতে বাধা দিচ্ছে। এমনকি নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ালে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। অভিযোগে আরও বলেন, প্রতিদিন তার ও সমর্থকদের বাসায় পুলিশ গিয়ে হয়রানি করছে। এ অবস্থায় প্রচারণা চালানো তো দূরের কথা নির্বাচনী ক্যাম্পও স্থাপন করতে পারছি না। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আমাকে ও আমার কর্মী-সমর্থকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি পুলিশি হয়রানি বন্ধ ও নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনর দাবি জানান তিনি। উত্তরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী এএলএম কাওছার আহমেদকে বৃহস্পতিবার প্রচারণা চালানোর সময় মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর পরিবার ও নেতাকর্মীরা আতংকে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসিতে অনেক আগে অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা হয়নি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না ইসি। ঢাকা সিটি উত্তরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী অ্যাডভোকেট এনায়েত অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নাজমুল আলম ভূঁইয়া জুয়েল ও তার সমর্থকরা তার সমর্থকদের ওপর হামলা, মাইক ভাংচুর ও ড্রাইভারকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। এক সপ্তাহে জুয়েলের লোকজন তিন দফা আমার প্রচার কর্মীদের মারধর, মাইক ভাংচুর ও আমার ড্রাইভারকে হুমকি প্রদান করেছে। এ অবস্থায় প্রচারণা চালানো সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
প্রার্থীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহ আলম যুগান্তরকে বলেন, আমি ৬-৭টি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগপত্র পাওয়ার পর আইনশৃংখলা বাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পাঠিয়ে দিচ্ছি। তারা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন তা আমাদে জানাচ্ছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাউকে অযথা হয়রানি না করতে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছে ইসি। এরপর কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী এবিএম পারভেজ রেজা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার লোকদের নির্বাচনী প্রচারণায় নানাভাবে বাধা দেয়া হচ্ছে। কর্মীদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। কখনও কখনও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। একই সিটির ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. শহীদুল হক বলেন, প্রচারণা চালানোর সময় আমার লোকজনকে ধাওয়া দিয়েছে। প্রকাশ্যে প্রচারণা চালাতে পারছি না। পথে পথে বাধা দেয়া হচ্ছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা কোনো প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেয়নি।
একই সিটি কর্পোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শফিউদ্দিন আহমেদ সেন্টুর মা সুফিয়া বেগম অভিযোগ করেন, শনিবার বিকালে পুলিশের একদল সদস্য প্রার্থীর বাসায় গিয়ে তাকে খুঁজতে থাকে। এ সময় বাসার জিনিসপত্র তছনছ করে। ছেলেকে না পেলে অন্যদের গ্রেফতার করা হবে বলেও পুলিশ শাসিয়ে গেছে। শফিউদ্দিন আহমেদ সেন্টুর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। মামলায় জামিন না থাকায় এ প্রার্থী আত্মগোপনে রয়েছেন। এছাড়া আরও কয়েকজন প্রার্থী একই ধরনের অভিযোগ করেছেন।
শনিবার পর্যন্ত ঢাকার দুই সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে অন্তত ১৫ কাউন্সিলর প্রার্থী লিখিত অভিযোগ করেছেন। নির্বাচন কমিশনেও আবেদন করেছেন কয়েকজন। আবার ‘ঝামেলা’ এড়াতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করছেন না বলে জানান অনেক প্রার্থী। জমা পড়া অভিযোগের বেশির ভাগেই পুলিশি হয়রানি ও প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। কয়েকজন প্রার্থী ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চেয়েও চিঠি দিয়েছেন। ওইসব অভিযোগের বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে আইনশৃংখলা বাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা। তবে বেশিরভাগ অভিযোগের ক্ষেত্রেই প্রার্থীরা কাক্সিক্ষত প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানতে চাওয়া হলে ঢাকা দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ যুগান্তরকে বলেন, আমি ৭-৮টি অভিযোগ পেয়েছি। এছাড়া দু’জন মেয়র প্রার্থী ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চেয়েছেন। তিনি বলেন, একজন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার নেতৃত্বে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তা আইনশৃংখলা বাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
একাধিক সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে আজ রোববার আইনশৃংখলাসংক্রান্ত বৈঠকে প্রার্থীদের আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগের বিষয়টি আলোচনা করার কথা রয়েছে। বৈঠকে ভোটগ্রহণের দিন পর্যন্ত আচরণবিধি লংঘন রোধে আইনশৃংখলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেয়া হবে। তারা আরও বলেন, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও প্রার্থীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে পৃথক দুটি ‘আইনশৃংখলা রক্ষাকারী সেল গঠন’ করা হয়েছে। এছাড়া ভিজিলেন্স ও মনিটরিং কমিটিও গঠন করা হয়েছে। দুটি কমিটি নির্বাচনী কার্যক্রম ও সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে অভিযোগকারীদের একজন ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. আবুল হাশেম শনিবার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দুটি অভিযোগ করেছি। একটিতে বলেছি, আমার সমর্থকরা পোস্টার লাগাতে গেলে পুলিশ অহেতুক আটক করে নিয়ে গেছে। আরেক অভিযোগে আমি বলেছি, রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার ৭ নম্বর সড়কে ১৬ এপ্রিল আমার নির্বাচনী ক্যাম্পে পুলিশ হানা দিয়ে চেয়ার-টেবিল বাইরে ফেলে দিয়েছে। আমার সমর্থকদের ক্যাম্প থেকে বের করে তালাবদ্ধ করে দেয়। ওই ঘটনার কিছু সময় পরই আমার এক কর্মীকে পুলিশ আটক করে রিমান্ডে নিয়েছে।’ রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অভিযোগ দেয়ার পর প্রতিকার পেয়েছেন কী কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আবুল হাশেম বলেন, ‘যেহেতু একবার পুলিশ এসেছে, তাই গ্রেফতার আতংকে আমার কর্মীদের ক্যাম্পে না যেতে বলেছি।’
আরেক অভিযোগকারী মিরপুর এলাকার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মাসুদ খান। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হওয়ায় প্রতিদিন হত্যা ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে ইসিতে লিখিতভাবে জানিয়েছেন তিনি। ১৬ এপ্রিল দেয়া অভিযোগে তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রাভাবশালী প্রার্থী আবু তাহের লাল্টু ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের লোকজন প্রচারণা চালাতে বাধা দিচ্ছে। এমনকি নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ালে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। অভিযোগে আরও বলেন, প্রতিদিন তার ও সমর্থকদের বাসায় পুলিশ গিয়ে হয়রানি করছে। এ অবস্থায় প্রচারণা চালানো তো দূরের কথা নির্বাচনী ক্যাম্পও স্থাপন করতে পারছি না। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আমাকে ও আমার কর্মী-সমর্থকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি পুলিশি হয়রানি বন্ধ ও নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনর দাবি জানান তিনি। উত্তরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী এএলএম কাওছার আহমেদকে বৃহস্পতিবার প্রচারণা চালানোর সময় মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর পরিবার ও নেতাকর্মীরা আতংকে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসিতে অনেক আগে অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা হয়নি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না ইসি। ঢাকা সিটি উত্তরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী অ্যাডভোকেট এনায়েত অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নাজমুল আলম ভূঁইয়া জুয়েল ও তার সমর্থকরা তার সমর্থকদের ওপর হামলা, মাইক ভাংচুর ও ড্রাইভারকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। এক সপ্তাহে জুয়েলের লোকজন তিন দফা আমার প্রচার কর্মীদের মারধর, মাইক ভাংচুর ও আমার ড্রাইভারকে হুমকি প্রদান করেছে। এ অবস্থায় প্রচারণা চালানো সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
প্রার্থীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহ আলম যুগান্তরকে বলেন, আমি ৬-৭টি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগপত্র পাওয়ার পর আইনশৃংখলা বাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পাঠিয়ে দিচ্ছি। তারা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন তা আমাদে জানাচ্ছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাউকে অযথা হয়রানি না করতে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছে ইসি। এরপর কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী এবিএম পারভেজ রেজা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার লোকদের নির্বাচনী প্রচারণায় নানাভাবে বাধা দেয়া হচ্ছে। কর্মীদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। কখনও কখনও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। একই সিটির ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. শহীদুল হক বলেন, প্রচারণা চালানোর সময় আমার লোকজনকে ধাওয়া দিয়েছে। প্রকাশ্যে প্রচারণা চালাতে পারছি না। পথে পথে বাধা দেয়া হচ্ছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা কোনো প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেয়নি।
একই সিটি কর্পোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শফিউদ্দিন আহমেদ সেন্টুর মা সুফিয়া বেগম অভিযোগ করেন, শনিবার বিকালে পুলিশের একদল সদস্য প্রার্থীর বাসায় গিয়ে তাকে খুঁজতে থাকে। এ সময় বাসার জিনিসপত্র তছনছ করে। ছেলেকে না পেলে অন্যদের গ্রেফতার করা হবে বলেও পুলিশ শাসিয়ে গেছে। শফিউদ্দিন আহমেদ সেন্টুর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। মামলায় জামিন না থাকায় এ প্রার্থী আত্মগোপনে রয়েছেন। এছাড়া আরও কয়েকজন প্রার্থী একই ধরনের অভিযোগ করেছেন।
No comments