যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে শিল্পীদের মানববন্ধন
দেশের
সংস্কৃতি অঙ্গনের শিল্পীরা স্লোগান তুললেন, ‘তারুণ্য আরও একবার রুখে
দাঁড়াও এই শহরে পুরুষ নামের নপুংসকদের বিরুদ্ধে, নারী নিগ্রহের বিরুদ্ধে
হোক প্রতিবাদ।’ এমন দৃশ্যের অবতারণা হয় গতকাল বিকালে ঢাকার জাতীয় প্রেস
ক্লাবের সামনে। পহেলা বৈশাখে নারীদের যৌন হয়রানির ঘটনায় প্রতিবাদমুখর হয়ে
উঠেছেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শিল্পীরা। আর তারই প্রকাশস্বরূপ অনুষ্ঠিত এক
মানববন্ধনে এমন দৃশ্য দেখা যায়। মানববন্ধনে যৌন হয়রানির ঘটনাকে
‘পূর্বপরিকল্পিত’ উল্লেখ করে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক
শাস্তি দাবি করেছেন তারা। একই সঙ্গে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার
করতে না পারলে অবস্থান ধর্মঘটে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছেন। বাংলা
নববর্ষ উদযাপন আয়োজনে যোগ দিয়ে বেশ কয়েকজন নারী নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, এ
খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। এই ধারাবাহিকতায় অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টি তার
সহ-অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের প্রতি একটি মানববন্ধনের ডাক দেন। তার ডাকে সাড়া
দিয়ে তারকারাও প্রতিবাদ জানাতে হাজির হন প্রেস ক্লাবের সামনে। এ আয়োজনে এসে
সাবেক সংসদ সদস্য ও অভিনেত্রী-নির্মাতা তারানা হালিম বলেন, পহেলা বৈশাখ
বাঙালি সংস্কৃতি তথা বাঙালি চেতনার অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানে এমন ন্যক্কারজনক
হামলা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। সরকারকে এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স দেখাতে
হবে। এ ঘৃণ্য অপরাধীর সবাইকে চিহ্নিত করতে হবে। নারী নিপীড়কদের
দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। অভিনেত্রী-নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন বলেন, এ
ঘটনাকে আমার পূর্বপরিকল্পিত বলেই মনে হয়। দোষীদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে
বিচারের সম্মুখীন করতে হবে। হয়রানির শিকার নারীদের বাঁচাতে এগিয়ে আসা সাহসী
তরুণদের প্রশংসা করে শাওন বলেন, যারা সেদিন নারীদের রক্ষা করতে এসেছেন,
নারীদের সম্ভ্রম বাঁচাতে নিজেরা মার খেয়েছেন তারা আমাদের ভাই, আমাদের
বন্ধু। আমরা সবাইকে নিয়ে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। অভিনেত্রী
তমালিকা কর্মকার বলেন, এমন জঘন্য অপরাধের প্রতিবাদের ভাষা আমার জানা নেই। এ
ধরনের বর্বরতা কোনভাবেই সভ্যতার নিদর্শন নয়। আমার মতে, এ ধরনের অপরাধের
সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত মৃত্যুদণ্ড। এ প্রতিবাদে আরও অংশ নেন অভিনেত্রী
অরুণা বিশ্বাস, সাবেরী আলম, রুনা খান, সানজিদা প্রীতি, শর্মিমালা, পরিচালক
চয়নিকা চৌধুরী। উল্লেখ্য, এ অয়োজনে নারী শিল্পীদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন
পুরুষ শিল্পীও অংশ নেন। এদের মধ্যে ছিলেন অভিনেতা শহীদুল আলম সাচ্চু, ঝুনা
চৌধুরী, শাহরিয়ার নাজিম জয়, মাজনুন মিজান, কল্যাণ কোরাইয়া, জামিল হাসেন,
ডিজাইনার বিপ্লব সাহা প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে জানানো হয়, ‘হোক প্রতিবাদ’
কার্যক্রম শুধু মানববন্ধনেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। যত দিন পর্যন্ত সরকার
দোষীদের খুঁজে বের করতে না পারবে, তত দিন পর্যন্ত প্রতিবাদ জানিয়েই যাবেন
তারা।
No comments