অনির্বাচন by মাহবুব তালুকদার
রাজনীতিতে
শেষ কথা বলে কিছু নেই এবং এটাই হচ্ছে রাজনীতির শেষ কথা। সম্প্রতি পত্রিকায়
প্রকাশিত মহাত্মা গান্ধীর পূর্ণাঙ্গ মূর্তির আনুষ্ঠানিক উন্মোচন পর্বের
ছবিটি দেখে আমার মনে এই ভাবনার উদয় হলো। সেন্ট্রাল লন্ডনের সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ স্থান পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত গান্ধীর মূর্তিতে ওই
সময়ে
ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। এর পাশেই রয়েছে যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের মূর্তি, যিনি গান্ধীকে ‘অর্ধনগ্ন ফকির’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।
মহাত্মা গান্ধী ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক। তিনি ব্রিটিশদের কবল থেকে ভারতকে
মুক্ত করার জন্য আন্দোলন করে কারাগারে যান। এই ‘অর্ধনগ্ন ফকির’ এক সময় ব্রিটিশদের চক্ষুশূল ছিলেন। আজ সেই ব্রিটিশরা তাদের পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণে মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি স্থাপন করে, বিশেষভাবে তাঁদের দেশের আরেক মহানায়ক উইনস্টন চার্চিলের পাশে গান্ধীকে স্থান দিয়ে বিশ্বব্যাপী একটি বার্তাই পৌঁছে দিয়েছে যে, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। এক সময়ের শত্রু চিরকালের মিত্র হতে পারে।
আমি চাচাকে বললাম, চাচা! এমন কি হতে পারে না যে, আমাদের সংসদ ভবনের সামনে হাসিনা ও খালেদার পূর্ণাঙ্গ মূর্তি পাশাপাশি স্থাপিত হলো?
কী বলছো তুমি? তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে?
আমি এখনকার কথা বলছি না। ধরুন, পঞ্চাশ ষাট বা একশ’ বছর পরের কথা বলছি।
চাচা অগ্নিদৃষ্টি হেনে তাকালেন আমার দিকে। বললেন, একশ’ বছর পানি দিয়ে ধুলেও কি খালেদা জিয়ার হাতের রক্তের ছাপ মুছে যাবে?
বললাম, অতীতের ঘটনার উপর ভিত্তি করেই তো ভবিষ্যতের ইতিহাস নির্মিত হয়। এক-এগারোর সময় উভয়নেত্রী জাতীয় সংসদ সংলগ্ন দুটি ভবনে অন্তরীণ ছিলেন ওই সময়ে তাদের একজন আরেকজনকে তরকারি রান্না করে পাঠিয়েছেন। বাংলায় প্রবাদ আছে ‘ঠেলায় পড়লে বাঘে ও গরুতে এক ঘাটে পানি খায়।’ ওই সময়ে প্রবাদটি সার্থক মনে হয়েছিল। তাই, দুই নেত্রীর বৈরী সম্পর্ক ভবিষ্যতে কী রূপ নেবে, তা একমাত্র সময়ই বলতে পারে।
চাচা রূঢ়কণ্ঠে বললেন, তুমি সবসময় শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে এক পাল্লায় মাপতে চাও। তাদের দু’জনকে পাশাপাশি দেখাতে চাও। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেরও এরকম হীন প্রবণতা রয়েছে। এটা ভারি অন্যায়।
দুই নেত্রী অবশ্যই ভিন্ন ব্যক্তিত্ব। তাদের পৃথক রাজনৈতিক সত্তা রয়েছে। দুজনের রাজনৈতিক আদর্শও আলাদা।
আবার দুই নেত্রী! চাচা এবারে ক্ষেপে গেলেন। আগে তোমার ‘দুই নেত্রী’ কথাটা উইথড্র করো। একটু থেমে আবার তিনি বললেন, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক আদর্শটা কি? মানুষ পুড়িয়ে মারাকে কেউ রাজনীতি বলে না।
চাচা! এতটা অনড় হলে তো কথা বলা যাবে না।
কথা বলা মানে সংলাপ তো? বাংলাদেশে এখন কেউ আর সংলাপের পক্ষে নয়। এমনকি, স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যেও সংলাপ বন্ধ রাখা উচিত।
চাচা খেয়াল করতে পারেননি, চাচি দরজার পর্দা সরিয়ে ততক্ষণে ঘরের ভেতরে এসে দাঁড়িয়েছেন। বললেন, স্বামী-স্ত্রী’র সংলাপও যদি বন্ধ রাখতে বলা হয়, সেটা মঞ্জুর। তিন বেলা খাবার ও নাশতা দেয়ার কথা আশা করি বলবে না।
চাচির কথা শুনে চাচা কিঞ্চিৎ ভড়কে গেলেন। বললেন, ঠিক আছে। আমি চিরকুট লিখে লিখে আমার প্রয়োজনের বিষয় জানাবো। সেটা নিশ্চয়ই সংলাপ হবে না।
আমি উভয়ের দাম্পত্য পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য বললাম, বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদের অন্তর্ধানের ব্যাপারে সমগ্র দেশের মানুষ উদ্বিগ্ন। এভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে রাতের বেলা কোন নাগরিককে তুলে নিয়ে গেলে নাগরিক নিরাপত্তার আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উচ্চ আদালতকে জানিয়েছে, সালাহউদ্দিনকে তারা তুলে নিয়ে যায়নি।
তারা ঠিকই বলেছে। চাচা বললেন, সালাহউদ্দিন আত্মগোপনে ছিলেন। আরও অধিকতর আত্মগোপনে গিয়ে লুকিয়ে আছেন। পুলিশ তো তাকে অনেক আগে থেকেই গ্রেপ্তার করতে চাচ্ছিল। কিন্তু তাকে পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না।
চাচা! বারবারই দেখা যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মী বা অন্য কাউকে তুলে নিয়ে গুম করা হচ্ছে। পুলিশ যদি এসব অস্বীকার করে তাহলে এ ধরনের ঘটনা পুলিশের ইমেজের জন্য আরও মারাত্মক।
তুমি এমনভাবে কথা বলছো যেন পুলিশই এসব করাচ্ছে।
চাচি বললেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মান্নাকে ২১ ঘণ্টা পরে জনসমক্ষে হাজির করার ব্যাপারে পুলিশ যে বয়ান দিয়েছে, মানুষ তা বিশ্বাস করছে না। এসব কি বন্ধ করা যায় না?
কিভাবে বন্ধ হবে?
চাচি আবার বললেন, কাউকে যদি তুলে নিতে হয় বা গ্রেপ্তার করতে হয়, সংশ্লিষ্ট থানার ওসি বা তার অধীনস্থ কর্মকর্তা অকুস্থলে উপস্থিত থাকবেন। ওয়ারেন্ট দেখিয়েই কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে। কিন্তু অপরিচিত সাদা পোশাকের ব্যক্তিরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রাতের আঁধারে কাউকে তুলে নিয়ে গুম করবে এবং পরে তার লাশ পাওয়া যাবে, গণতান্ত্রিক দেশে তা হতে পারে না। সালাহউদ্দিন আহমেদের অন্তর্ধানের দায় সরকারকেই নিতে হবে।
মোটেই না। সালাহউদ্দিনের ব্যাপারটা একেবারে আলাদা। খালেদা জিয়ার গুলশানের কার্যালয়েই তিনি লুকিয়ে ছিলেন। সেখান থেকে ২০ দলের টাইপ করা আপত্তিকর বিবৃতিগুলোতে সই করে গণমাধ্যমে পাঠিয়ে দিতেন। চাচা জানালেন।
তবে যে গণমাধ্যমে খবর ছাপা হয়েছে, তাকে উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ৪৯/বি নম্বর বাড়ি থেকে তুলে নেয়া হয়েছে। আমি বললাম।
একেবারেই ভুয়া। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন, সালাহউদ্দিনকে ৮ বস্তা ময়লার সঙ্গে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। কোথায় পাঠানো হয়েছে তা খালেদা জিয়াই ভালো বলতে পারবেন।
চাচা! মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঐ বক্তব্য আমিও শুনেছি। সরকার প্রধান হিসেবে তিনি যখন কোন কথা বলেন, আমি তা শতভাগ সত্য বলে মনে করি। কারণ তিনি কখনো মিথ্যা বলতে পারেন না। কিন্তু এ বিষয়ে আমার কিছু কথা আছে।
কী কথা?
আমি বললাম, ৮টি ময়লার বস্তার সঙ্গে সালাহউদ্দিনকে যে বাইরে পাঠানো হয়েছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তা জানলেন কোত্থেকে? গোয়েন্দারা নিশ্চয়ই বলেছে। গুলশান কার্যালয়ের গেটে কর্তব্যরত পুলিশরা তা ধরলো না কেন? কর্তব্যে অবহেলার জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলো না কেন? তাছাড়া, আদালতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো যখন প্রতিবেদন দাখিল করল, তখন ময়লার বস্তাগুলোর উল্লেখ করে তারা খালেদা জিয়ার ওপরে দায় চাপাল না কেন? আমি মনে করি, গোয়েন্দারা মিথ্যা তথ্য দিলে তাদেরও শাস্তি হওয়া উচিত।
চাচা আমার কথার কী উত্তর দেবেন, তা বোধহয় ভেবে পাচ্ছিলেন না। তিনি আমতা আমতা করতে থাকলেন। তাকে এই অবস্থা থেকে উদ্ধার করলেন চাচি। বললেন, সারাক্ষণ কেবল খালেদা জিয়া আর খালেদা জিয়া! প্রায় আড়াই মাস ধরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিটি বক্তৃতার ৫০ ভাগ জুড়ে খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ। অন্য কয়েকজন মন্ত্রী ও খালেদা জিয়া ছাড়া বক্তৃতার বিষয়বস্তু খুঁজে পান না। আমাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রায় সবটুকু জুড়েই তার প্রসঙ্গ। আমার ভয় হয়, এতে কেবল খালেদা জিয়ারই লাভ হচ্ছে। তোমরা বরং সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে পার। বলে চাচি অন্য ঘরে চলে গেলেন। সম্ভবত রান্নাঘরে।
সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সম্পর্কে আমার ভিন্নমত রয়েছে। দেশের এই নাজুক পরিস্থিতিতে এহেন নির্বাচন করার জন্য সরকার তড়িঘড়ি করছে। এর আগে নানা অজুহাতে বেশ কয়েক বছর ধরে নির্বাচন বন্ধ রাখা হয়। এখন বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারা সম্পর্কে সরকারের ব্যাপক প্রচারণার সুফল ঘরে তুলতে চায় আওয়ামী লীগ। বিশেষভাবে এই সময়ে বিএনপি-জামায়াতের হাজার হাজার নেতাকর্মী যখন জেলে এবং হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে যখন মামলা চলছে, তখন তাদের নির্বাচনী প্রচারণার বাইরে রেখে নির্বাচন করতে পারলে সরকারি দলের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কাগজে-কলমে এবং নির্বাচন কমিশনের আত্মপ্রচারাভিযানে এহেন দুর্যোগপূর্ণ সময়ের নির্বাচনকে ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ হিসেবে দেখাতে পারলে মন্দ কি! আর ‘নির্দলীয়’ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয়ভাবে প্রার্থী ঘোষণা করা এবং দলীয় মনোনয়নের বাইরে দলের কাউকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে না দেয়ার ‘প্রহসন’ তো আছেই। এ নির্বাচনে ‘সব দলের অংশগ্রহণ’ কথাটি কি আদৌ প্রযোজ্য?
চাচাকে এসব কথা বলব কিনা ভাবছিলাম। পরে মনে হলো, এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চাচার মনোভাবই আমার জেনে নেয়া দরকার। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, চাচা! ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সম্পর্কে আপনার অভিমত কী?
চাচা জানালেন, সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের চাবিকাঠিও খালেদা জিয়ার আঁচলে বাঁধা। আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার তো এখন তার মুখের দিকেই তাকিয়ে আছেন।
এর মানে কী? আমি সবিস্ময়ে জিজ্ঞাসা করলাম।
চাচা বললেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা দ্রুত নির্বাচনের জন্য একটা শিডিউল ঠিক করে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে দিয়েছেন। সে অনুযায়ী শিডিউলও ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু খালেদা জিয়া বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিলে এক কথা আর বিএনপি নির্বাচনে না এলে অন্য কথা।
এ কথার অর্থও আমি বুঝতে পারছি না।
চাচা আমার কানের কাছে মুখ নামিয়ে বললেন, তোমাকে অনেক কথা নির্বিবাদে বলতে পারি। তোমার চাচির সামনে তা বলতে পারি না।
কী কথা?
প্রধান নির্বাচন কমিশনার চান, বিএনপি যেন নির্বাচনে না আসে।
সে কি কথা? তবে যে তিনি বলেছেন, সবার অংশগ্রহণে-
ওটা তার মুখস্থ কথা। তার মনের কথা নয়।
আমার ইচ্ছা হচ্ছিল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মনের কথা তিনি কীভাবে জানলেন, জিজ্ঞাসা করি। কথাটা সরাসরি না বলে জানতে চাইলাম, বিএনপি নির্বাচনে এলে নির্বাচন কমিশনের অসুবিধা কী?
চাচা বললেন, নির্বাচন কমিশনের যে ফরম্যাটে ইতোপূর্বে কয়েকটি সিটি নির্বাচন হয়েছে, তার সবগুলোতে সরকারি দল হেরে গেছে। অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি না থাকায় নির্বাচন কমিশন যে ফরম্যাটে নির্বাচন করেছে, তা সরকারের জন্য খুবই উপযোগী ছিল। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে জাতীয় নির্বাচনের ফরম্যাট রেখে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তাতে নির্বাচন কমিশনের যেমন লাভ, সরকারেরও লাভ।
সরকারের লাভ না হয় বুঝলাম, নির্বাচন কমিশনের লাভ কীভাবে হবে?
নির্বাচনের ব্যাপারে তুমি কিছুই বোঝ না। চাচা হাসিমুখে বললেন, জাতীয় নির্বাচনে ১৫৩ পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যেভাবে নির্বাচন করা গেল, এখানেও যদি তেমন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবাই জয়যুক্ত হয়, তাহলে কমিশন সফল। জাতীয় নির্বাচনের মতো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটা নির্বাচন উপহার দেয়া বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পক্ষেই সম্ভব।
কিন্তু চাচা! কাউন্সিলর পদে যদি বিএনপির প্রার্থীরা তলে তলে নির্বাচন করে?
তাদের সবার নামে হামলার অভিযোগ ও মামলা আছে। নির্বাচনে দাঁড়ানোর আগে তাদের কারাগারে শোয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
কিন্তু বিএনপির সবার বিরুদ্ধে তো মামলা নেই।
কে বলল নেই? চাচা সরোষে বলে উঠলেন, যারা আত্মগোপনে থেকে নির্বাচনে দাঁড়াবে, তাদের সবারই নাম পুলিশের ‘অজ্ঞাতনামা’ তালিকায় আছে। সেই ‘অজ্ঞাতনামা’দের তালিকায় এখন প্রার্থীদের নাম ধরে ধরে বসিয়ে দিলেই কাম ফতে।
কিন্তু বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসে? ঢাকা ও চট্টগ্রামের মেয়রের তিনটি পদে বিএনপি প্রার্থী যদি জিতে যায়? তাহলে সরকারের কী দশা হবে?
কুচ পরোয়া নেই। চাচা হাসিমুখে বললেন, আগের ৫টি সিটি করপোরেশনের পদে জিতে বিএনপির মেয়রদের কী অবস্থা হয়েছে? তারা এখন কেউ জেলে, কেউ ফেরারি। এবারও তিনটি মেয়র পদে বিএনপি প্রার্থীরা যদি খোদা না করুন, জিতেই যায়, তাহলে অনিবার্যভাবে তাদের পরিণতিও আগের মেয়রদের মতোই হবে।
ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। এর পাশেই রয়েছে যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের মূর্তি, যিনি গান্ধীকে ‘অর্ধনগ্ন ফকির’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।
মহাত্মা গান্ধী ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক। তিনি ব্রিটিশদের কবল থেকে ভারতকে
মুক্ত করার জন্য আন্দোলন করে কারাগারে যান। এই ‘অর্ধনগ্ন ফকির’ এক সময় ব্রিটিশদের চক্ষুশূল ছিলেন। আজ সেই ব্রিটিশরা তাদের পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণে মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি স্থাপন করে, বিশেষভাবে তাঁদের দেশের আরেক মহানায়ক উইনস্টন চার্চিলের পাশে গান্ধীকে স্থান দিয়ে বিশ্বব্যাপী একটি বার্তাই পৌঁছে দিয়েছে যে, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। এক সময়ের শত্রু চিরকালের মিত্র হতে পারে।
আমি চাচাকে বললাম, চাচা! এমন কি হতে পারে না যে, আমাদের সংসদ ভবনের সামনে হাসিনা ও খালেদার পূর্ণাঙ্গ মূর্তি পাশাপাশি স্থাপিত হলো?
কী বলছো তুমি? তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে?
আমি এখনকার কথা বলছি না। ধরুন, পঞ্চাশ ষাট বা একশ’ বছর পরের কথা বলছি।
চাচা অগ্নিদৃষ্টি হেনে তাকালেন আমার দিকে। বললেন, একশ’ বছর পানি দিয়ে ধুলেও কি খালেদা জিয়ার হাতের রক্তের ছাপ মুছে যাবে?
বললাম, অতীতের ঘটনার উপর ভিত্তি করেই তো ভবিষ্যতের ইতিহাস নির্মিত হয়। এক-এগারোর সময় উভয়নেত্রী জাতীয় সংসদ সংলগ্ন দুটি ভবনে অন্তরীণ ছিলেন ওই সময়ে তাদের একজন আরেকজনকে তরকারি রান্না করে পাঠিয়েছেন। বাংলায় প্রবাদ আছে ‘ঠেলায় পড়লে বাঘে ও গরুতে এক ঘাটে পানি খায়।’ ওই সময়ে প্রবাদটি সার্থক মনে হয়েছিল। তাই, দুই নেত্রীর বৈরী সম্পর্ক ভবিষ্যতে কী রূপ নেবে, তা একমাত্র সময়ই বলতে পারে।
চাচা রূঢ়কণ্ঠে বললেন, তুমি সবসময় শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে এক পাল্লায় মাপতে চাও। তাদের দু’জনকে পাশাপাশি দেখাতে চাও। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেরও এরকম হীন প্রবণতা রয়েছে। এটা ভারি অন্যায়।
দুই নেত্রী অবশ্যই ভিন্ন ব্যক্তিত্ব। তাদের পৃথক রাজনৈতিক সত্তা রয়েছে। দুজনের রাজনৈতিক আদর্শও আলাদা।
আবার দুই নেত্রী! চাচা এবারে ক্ষেপে গেলেন। আগে তোমার ‘দুই নেত্রী’ কথাটা উইথড্র করো। একটু থেমে আবার তিনি বললেন, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক আদর্শটা কি? মানুষ পুড়িয়ে মারাকে কেউ রাজনীতি বলে না।
চাচা! এতটা অনড় হলে তো কথা বলা যাবে না।
কথা বলা মানে সংলাপ তো? বাংলাদেশে এখন কেউ আর সংলাপের পক্ষে নয়। এমনকি, স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যেও সংলাপ বন্ধ রাখা উচিত।
চাচা খেয়াল করতে পারেননি, চাচি দরজার পর্দা সরিয়ে ততক্ষণে ঘরের ভেতরে এসে দাঁড়িয়েছেন। বললেন, স্বামী-স্ত্রী’র সংলাপও যদি বন্ধ রাখতে বলা হয়, সেটা মঞ্জুর। তিন বেলা খাবার ও নাশতা দেয়ার কথা আশা করি বলবে না।
চাচির কথা শুনে চাচা কিঞ্চিৎ ভড়কে গেলেন। বললেন, ঠিক আছে। আমি চিরকুট লিখে লিখে আমার প্রয়োজনের বিষয় জানাবো। সেটা নিশ্চয়ই সংলাপ হবে না।
আমি উভয়ের দাম্পত্য পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য বললাম, বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদের অন্তর্ধানের ব্যাপারে সমগ্র দেশের মানুষ উদ্বিগ্ন। এভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে রাতের বেলা কোন নাগরিককে তুলে নিয়ে গেলে নাগরিক নিরাপত্তার আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উচ্চ আদালতকে জানিয়েছে, সালাহউদ্দিনকে তারা তুলে নিয়ে যায়নি।
তারা ঠিকই বলেছে। চাচা বললেন, সালাহউদ্দিন আত্মগোপনে ছিলেন। আরও অধিকতর আত্মগোপনে গিয়ে লুকিয়ে আছেন। পুলিশ তো তাকে অনেক আগে থেকেই গ্রেপ্তার করতে চাচ্ছিল। কিন্তু তাকে পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না।
চাচা! বারবারই দেখা যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মী বা অন্য কাউকে তুলে নিয়ে গুম করা হচ্ছে। পুলিশ যদি এসব অস্বীকার করে তাহলে এ ধরনের ঘটনা পুলিশের ইমেজের জন্য আরও মারাত্মক।
তুমি এমনভাবে কথা বলছো যেন পুলিশই এসব করাচ্ছে।
চাচি বললেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মান্নাকে ২১ ঘণ্টা পরে জনসমক্ষে হাজির করার ব্যাপারে পুলিশ যে বয়ান দিয়েছে, মানুষ তা বিশ্বাস করছে না। এসব কি বন্ধ করা যায় না?
কিভাবে বন্ধ হবে?
চাচি আবার বললেন, কাউকে যদি তুলে নিতে হয় বা গ্রেপ্তার করতে হয়, সংশ্লিষ্ট থানার ওসি বা তার অধীনস্থ কর্মকর্তা অকুস্থলে উপস্থিত থাকবেন। ওয়ারেন্ট দেখিয়েই কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে। কিন্তু অপরিচিত সাদা পোশাকের ব্যক্তিরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রাতের আঁধারে কাউকে তুলে নিয়ে গুম করবে এবং পরে তার লাশ পাওয়া যাবে, গণতান্ত্রিক দেশে তা হতে পারে না। সালাহউদ্দিন আহমেদের অন্তর্ধানের দায় সরকারকেই নিতে হবে।
মোটেই না। সালাহউদ্দিনের ব্যাপারটা একেবারে আলাদা। খালেদা জিয়ার গুলশানের কার্যালয়েই তিনি লুকিয়ে ছিলেন। সেখান থেকে ২০ দলের টাইপ করা আপত্তিকর বিবৃতিগুলোতে সই করে গণমাধ্যমে পাঠিয়ে দিতেন। চাচা জানালেন।
তবে যে গণমাধ্যমে খবর ছাপা হয়েছে, তাকে উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ৪৯/বি নম্বর বাড়ি থেকে তুলে নেয়া হয়েছে। আমি বললাম।
একেবারেই ভুয়া। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন, সালাহউদ্দিনকে ৮ বস্তা ময়লার সঙ্গে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। কোথায় পাঠানো হয়েছে তা খালেদা জিয়াই ভালো বলতে পারবেন।
চাচা! মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঐ বক্তব্য আমিও শুনেছি। সরকার প্রধান হিসেবে তিনি যখন কোন কথা বলেন, আমি তা শতভাগ সত্য বলে মনে করি। কারণ তিনি কখনো মিথ্যা বলতে পারেন না। কিন্তু এ বিষয়ে আমার কিছু কথা আছে।
কী কথা?
আমি বললাম, ৮টি ময়লার বস্তার সঙ্গে সালাহউদ্দিনকে যে বাইরে পাঠানো হয়েছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তা জানলেন কোত্থেকে? গোয়েন্দারা নিশ্চয়ই বলেছে। গুলশান কার্যালয়ের গেটে কর্তব্যরত পুলিশরা তা ধরলো না কেন? কর্তব্যে অবহেলার জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলো না কেন? তাছাড়া, আদালতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো যখন প্রতিবেদন দাখিল করল, তখন ময়লার বস্তাগুলোর উল্লেখ করে তারা খালেদা জিয়ার ওপরে দায় চাপাল না কেন? আমি মনে করি, গোয়েন্দারা মিথ্যা তথ্য দিলে তাদেরও শাস্তি হওয়া উচিত।
চাচা আমার কথার কী উত্তর দেবেন, তা বোধহয় ভেবে পাচ্ছিলেন না। তিনি আমতা আমতা করতে থাকলেন। তাকে এই অবস্থা থেকে উদ্ধার করলেন চাচি। বললেন, সারাক্ষণ কেবল খালেদা জিয়া আর খালেদা জিয়া! প্রায় আড়াই মাস ধরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিটি বক্তৃতার ৫০ ভাগ জুড়ে খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ। অন্য কয়েকজন মন্ত্রী ও খালেদা জিয়া ছাড়া বক্তৃতার বিষয়বস্তু খুঁজে পান না। আমাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রায় সবটুকু জুড়েই তার প্রসঙ্গ। আমার ভয় হয়, এতে কেবল খালেদা জিয়ারই লাভ হচ্ছে। তোমরা বরং সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে পার। বলে চাচি অন্য ঘরে চলে গেলেন। সম্ভবত রান্নাঘরে।
সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সম্পর্কে আমার ভিন্নমত রয়েছে। দেশের এই নাজুক পরিস্থিতিতে এহেন নির্বাচন করার জন্য সরকার তড়িঘড়ি করছে। এর আগে নানা অজুহাতে বেশ কয়েক বছর ধরে নির্বাচন বন্ধ রাখা হয়। এখন বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারা সম্পর্কে সরকারের ব্যাপক প্রচারণার সুফল ঘরে তুলতে চায় আওয়ামী লীগ। বিশেষভাবে এই সময়ে বিএনপি-জামায়াতের হাজার হাজার নেতাকর্মী যখন জেলে এবং হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে যখন মামলা চলছে, তখন তাদের নির্বাচনী প্রচারণার বাইরে রেখে নির্বাচন করতে পারলে সরকারি দলের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কাগজে-কলমে এবং নির্বাচন কমিশনের আত্মপ্রচারাভিযানে এহেন দুর্যোগপূর্ণ সময়ের নির্বাচনকে ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ হিসেবে দেখাতে পারলে মন্দ কি! আর ‘নির্দলীয়’ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয়ভাবে প্রার্থী ঘোষণা করা এবং দলীয় মনোনয়নের বাইরে দলের কাউকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে না দেয়ার ‘প্রহসন’ তো আছেই। এ নির্বাচনে ‘সব দলের অংশগ্রহণ’ কথাটি কি আদৌ প্রযোজ্য?
চাচাকে এসব কথা বলব কিনা ভাবছিলাম। পরে মনে হলো, এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চাচার মনোভাবই আমার জেনে নেয়া দরকার। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, চাচা! ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সম্পর্কে আপনার অভিমত কী?
চাচা জানালেন, সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের চাবিকাঠিও খালেদা জিয়ার আঁচলে বাঁধা। আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার তো এখন তার মুখের দিকেই তাকিয়ে আছেন।
এর মানে কী? আমি সবিস্ময়ে জিজ্ঞাসা করলাম।
চাচা বললেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা দ্রুত নির্বাচনের জন্য একটা শিডিউল ঠিক করে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে দিয়েছেন। সে অনুযায়ী শিডিউলও ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু খালেদা জিয়া বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিলে এক কথা আর বিএনপি নির্বাচনে না এলে অন্য কথা।
এ কথার অর্থও আমি বুঝতে পারছি না।
চাচা আমার কানের কাছে মুখ নামিয়ে বললেন, তোমাকে অনেক কথা নির্বিবাদে বলতে পারি। তোমার চাচির সামনে তা বলতে পারি না।
কী কথা?
প্রধান নির্বাচন কমিশনার চান, বিএনপি যেন নির্বাচনে না আসে।
সে কি কথা? তবে যে তিনি বলেছেন, সবার অংশগ্রহণে-
ওটা তার মুখস্থ কথা। তার মনের কথা নয়।
আমার ইচ্ছা হচ্ছিল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মনের কথা তিনি কীভাবে জানলেন, জিজ্ঞাসা করি। কথাটা সরাসরি না বলে জানতে চাইলাম, বিএনপি নির্বাচনে এলে নির্বাচন কমিশনের অসুবিধা কী?
চাচা বললেন, নির্বাচন কমিশনের যে ফরম্যাটে ইতোপূর্বে কয়েকটি সিটি নির্বাচন হয়েছে, তার সবগুলোতে সরকারি দল হেরে গেছে। অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি না থাকায় নির্বাচন কমিশন যে ফরম্যাটে নির্বাচন করেছে, তা সরকারের জন্য খুবই উপযোগী ছিল। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে জাতীয় নির্বাচনের ফরম্যাট রেখে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তাতে নির্বাচন কমিশনের যেমন লাভ, সরকারেরও লাভ।
সরকারের লাভ না হয় বুঝলাম, নির্বাচন কমিশনের লাভ কীভাবে হবে?
নির্বাচনের ব্যাপারে তুমি কিছুই বোঝ না। চাচা হাসিমুখে বললেন, জাতীয় নির্বাচনে ১৫৩ পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যেভাবে নির্বাচন করা গেল, এখানেও যদি তেমন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবাই জয়যুক্ত হয়, তাহলে কমিশন সফল। জাতীয় নির্বাচনের মতো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটা নির্বাচন উপহার দেয়া বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পক্ষেই সম্ভব।
কিন্তু চাচা! কাউন্সিলর পদে যদি বিএনপির প্রার্থীরা তলে তলে নির্বাচন করে?
তাদের সবার নামে হামলার অভিযোগ ও মামলা আছে। নির্বাচনে দাঁড়ানোর আগে তাদের কারাগারে শোয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
কিন্তু বিএনপির সবার বিরুদ্ধে তো মামলা নেই।
কে বলল নেই? চাচা সরোষে বলে উঠলেন, যারা আত্মগোপনে থেকে নির্বাচনে দাঁড়াবে, তাদের সবারই নাম পুলিশের ‘অজ্ঞাতনামা’ তালিকায় আছে। সেই ‘অজ্ঞাতনামা’দের তালিকায় এখন প্রার্থীদের নাম ধরে ধরে বসিয়ে দিলেই কাম ফতে।
কিন্তু বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসে? ঢাকা ও চট্টগ্রামের মেয়রের তিনটি পদে বিএনপি প্রার্থী যদি জিতে যায়? তাহলে সরকারের কী দশা হবে?
কুচ পরোয়া নেই। চাচা হাসিমুখে বললেন, আগের ৫টি সিটি করপোরেশনের পদে জিতে বিএনপির মেয়রদের কী অবস্থা হয়েছে? তারা এখন কেউ জেলে, কেউ ফেরারি। এবারও তিনটি মেয়র পদে বিএনপি প্রার্থীরা যদি খোদা না করুন, জিতেই যায়, তাহলে অনিবার্যভাবে তাদের পরিণতিও আগের মেয়রদের মতোই হবে।
No comments