কম্বোডিয়ায় গণহত্যাকারীরা রাজনীতি করতে পারেন না -সাক্ষাৎকারে: হেলেন জারভিস by সোহরাব হাসান
একাত্তরে
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তার দোসরেরা বাংলাদেশে ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছিল।
দেরিতে হলেও সেই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলছে। এই বিচার যেমন
ইতিহাসের দায়মুক্তি, তেমনি জাতি হিসেবে আমাদের সামনে চলারও প্রেরণা। এই
প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা ও বিচার’
সম্মেলনে যোগদানকারী এক্সট্রাঅর্ডিনারি চেম্বার্স ইন দ্য কোর্টস অব
কম্বোডিয়ার বিশেষজ্ঞ হেলেন জারভিসের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।
প্রথম আলো: বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে যে গণহত্যা, গণধর্ষণ, তথা মানবতার বিরুদ্ধে ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, বিলম্বে হলেও তার বিচার শুরু হয়েছে। এ সম্পর্কে আপনার অভিমত কী?
হেলেন জারভিস: দীর্ঘদিন বিচার নাকচ করার যে সংস্কৃতি চলে আসছিল, তা থেকে বেরিয়ে এসে বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হচ্ছে। এই ঘটনা আমাকে অভিভূত করেছে। এর মাধ্যমে যাঁরা এত দিন বিচারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন, তাঁদের সেই দাবি পূরণ হতে চলেছে। এতে যেমন ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হবে, তেমনি নিহত ব্যক্তিদের স্মৃতি জাগরূক রাখা স্বজনেরাও সান্ত্বনা খুঁজে পাবেন।
প্রথম আলো: কিন্তু এই বিচার নিয়ে মহলবিশেষ বিতর্ক তোলার চেষ্টা করছে। বিচার আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
হেলেন জারভিস: গত তিন দিন আমরা সম্মেলনে যে আলোচনা করেছি, তার সারমর্ম হলো, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংঘটিত গণহত্যাগুলোর ধরন ও চরিত্র যেহেতু আলাদা, এর বিচার–প্রক্রিয়াও আলাদা হবে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সহায়তা ছাড়াই এই বিচারকাজ সম্পন্ন করছে। এটি খুবই ইতিবাচক। প্রতিটি দেশের নিজস্ব আইন ও বৈশিষ্ট্য আছে। সেই অনুযায়ী তারা বিচার করছে। এ ক্ষেত্রে বিচারের আন্তর্জাতিক মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।
প্রথম আলো: বাংলাদেশে গণহত্যা বা যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়টি ব্যতিক্রমী নয় কি? এই বিচার–প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সহায়তা চাওয়া হয়নি। এর তদন্ত ও শুনানি—দুটোই হচ্ছে স্থানীয়ভাবে।
হেলেন জারভিস: কম্বোডিয়ায়ও বিচার–প্রক্রিয়া শুরু হয় নিজস্ব উদ্যোগে। পরবর্তীকালে তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চেয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমি বলব, কম্বোডিয়া, বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনা—এই তিনটি দেশেই বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে স্থানীয়ভাবে। কম্বোডিয়ার সরকারই অপরাধীদের চিহ্নিত করে এবং পরবর্তীকালে বিচার–প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য জাতিসংঘকে অনুরোধ জানায়। এটি এমন নয় যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কম্বোডিয়ায় বিচারটি হচ্ছে। বাংলাদেশ অবশ্য বাইরের সহায়তা ছাড়াই বিচারকাজটি সম্পন্ন করছে। আপনারা শুনে অবাক হবেন, সেখানে পলপট সরকার জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ মানুষকে হত্যা করে। বিশেষ করে, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষিত মানুষকে বেছে বেছে হত্যা করা হয়।
প্রথম আলো: কম্বোডিয়ার বিচার–প্রক্রিয়া নিয়েও কি সমালোচনা হচ্ছে, দেশের ভেতরে ও বাইরে?
হেলেন জারভিস: হ্যাঁ, অনেকেই সমালোচনা করছেন। তবে ভেতরের চেয়ে বাইরেই সমালোচনা বেশি হচ্ছে। কিন্তু আমরা বলেছি, সুষ্ঠু প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই এই বিচারকাজ চলছে।
প্রথম আলো: পলপটের অনুসারীরা কি সেখানে কেউ রাজনীতি করতে পারছেন? তাঁদের রাজনৈতিক দল আছে?
হেলেন জারভিস: না, পলপটের অনুসারীরা কেউ রাজনীতি করছেন না। তবে সেই সময়ে ক্ষমতাসীনদের সমর্থক অনেকেই বিভিন্ন দলে যোগ দিয়ে সমাজে একীভূত হয়ে গেছেন।
প্রথম আলো: সমঝোতা (রিকন্সিলিয়েশন) নয় কেন?
হেলেন জারভিস: অনেকেই সমঝোতার কথা বলেন। কিন্তু যাঁরা গণহত্যার মতো গুরুতর অপরাধ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে সমঝোতা কীভাবে?
প্রথম আলো: পলপটের অনুসারীরা কি অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন?
হেলেন জারভিস: কেউ কেউ ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু তাঁরা প্রথমে ক্ষমা চাননি। যখন তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তখন কেউ কেউ দোষ স্বীকার করেছেন। ১৯৯৪ সালে আইন করা হয় যে যাঁরা অপরাধ করেছেন, তাঁরা কোনো সংগঠন করতে পারবেন না।
প্রথম আলো: ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার সঙ্গে আশির দশকে কম্বোডিয়ার গণহত্যাকে কীভাবে তুলনা করবেন?
হেলেন জারভিস: কোনো দেশের গণহত্যার সঙ্গে অন্য দেশের গণহত্যা তুলনীয় নয়। অন্তত প্রতিটি ঘটনাই মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশার শিকার হয়। এসব অপরাধের গভীরতা ও ভয়াবহতার পরিমাপ করা যায় না।
প্রথম আলো: জাতিসংঘের বিশেষ দূত আদামা দিয়েং তাঁর বার্তায় বলেছেন, আমি আশা করব, এই সম্মেলনে বিচারের যথাযথ প্রক্রিয়া (ডিউ প্রসেস) নিয়ে আলোচনা হবে। বাংলাদেশের বিচার–প্রক্রিয়া নিয়ে সম্মেলনে কী ধরনের আলোচনা হয়েছে বা কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে কি না?
হেলেন জারভিস: সম্মেলনে যে একটি বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, তা হলো মৃত্যুদণ্ড। আমি মনে করি, কোনো সমাজেই মৃত্যুদণ্ড থাকা উচিত নয়। কিন্তু সেটি তো কেবল যুদ্ধাপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে নয়, সব ধরনের বিচারের বেলায় প্রযোজ্য। কিন্তু বাংলাদেশে ফৌজদারি আইনে তো মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।
প্রথম আলো: যেসব নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাঁদের সম্মান পাওয়ার বা সমাজে একীভূত হওয়ার সমস্যাটি কীভাবে দেখেছেন। স্বাধীনতার পর সরকার ওই সব নারীকে বীরাঙ্গনা হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন। আপনার অভিমত কী?
হেলেন জারভিস: আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এই সিদ্ধান্তকে আমি অত্যন্ত প্রগতিশীল বলে মনে করি। বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার জন্য তাঁদেরকে বীরাঙ্গনা উপাধি দিয়েছিলেন, সেটি ছিল সহায়তার স্বীকৃতি। কিন্তু এবারে আদালত তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সম্মানিত করলেন। আমি মনে করি, সমাজ ও রাষ্ট্রের উচিত তাদের যথাযথ সম্মান দেওয়া এবং একাত্ম করে নেওয়া। ইতিমধ্যে তাঁরা অনেক দুঃখ-দুর্দশার শিকার হয়েছেন।
আমি মনে করি আদালত সবকিছু করে দেবেন না। রাষ্ট্র ও সমাজকেই দায়িত্ব নিতে হবে। এসব নির্যাতিত নারীর চিকিৎসা, স্বাস্থ্যসেবা, আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের কাজটি রাষ্ট্রকেই করতে হবে। তাঁরা যাতে সমাজে যথাযথ সম্মান পান, সে ব্যাপারে নাগরিক সমাজও সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারে।
প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।
হেলেন জারভিস: ধন্যবাদ।
প্রথম আলো: বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে যে গণহত্যা, গণধর্ষণ, তথা মানবতার বিরুদ্ধে ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, বিলম্বে হলেও তার বিচার শুরু হয়েছে। এ সম্পর্কে আপনার অভিমত কী?
হেলেন জারভিস: দীর্ঘদিন বিচার নাকচ করার যে সংস্কৃতি চলে আসছিল, তা থেকে বেরিয়ে এসে বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হচ্ছে। এই ঘটনা আমাকে অভিভূত করেছে। এর মাধ্যমে যাঁরা এত দিন বিচারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন, তাঁদের সেই দাবি পূরণ হতে চলেছে। এতে যেমন ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হবে, তেমনি নিহত ব্যক্তিদের স্মৃতি জাগরূক রাখা স্বজনেরাও সান্ত্বনা খুঁজে পাবেন।
প্রথম আলো: কিন্তু এই বিচার নিয়ে মহলবিশেষ বিতর্ক তোলার চেষ্টা করছে। বিচার আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
হেলেন জারভিস: গত তিন দিন আমরা সম্মেলনে যে আলোচনা করেছি, তার সারমর্ম হলো, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংঘটিত গণহত্যাগুলোর ধরন ও চরিত্র যেহেতু আলাদা, এর বিচার–প্রক্রিয়াও আলাদা হবে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সহায়তা ছাড়াই এই বিচারকাজ সম্পন্ন করছে। এটি খুবই ইতিবাচক। প্রতিটি দেশের নিজস্ব আইন ও বৈশিষ্ট্য আছে। সেই অনুযায়ী তারা বিচার করছে। এ ক্ষেত্রে বিচারের আন্তর্জাতিক মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।
প্রথম আলো: বাংলাদেশে গণহত্যা বা যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়টি ব্যতিক্রমী নয় কি? এই বিচার–প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সহায়তা চাওয়া হয়নি। এর তদন্ত ও শুনানি—দুটোই হচ্ছে স্থানীয়ভাবে।
হেলেন জারভিস: কম্বোডিয়ায়ও বিচার–প্রক্রিয়া শুরু হয় নিজস্ব উদ্যোগে। পরবর্তীকালে তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চেয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমি বলব, কম্বোডিয়া, বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনা—এই তিনটি দেশেই বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে স্থানীয়ভাবে। কম্বোডিয়ার সরকারই অপরাধীদের চিহ্নিত করে এবং পরবর্তীকালে বিচার–প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য জাতিসংঘকে অনুরোধ জানায়। এটি এমন নয় যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কম্বোডিয়ায় বিচারটি হচ্ছে। বাংলাদেশ অবশ্য বাইরের সহায়তা ছাড়াই বিচারকাজটি সম্পন্ন করছে। আপনারা শুনে অবাক হবেন, সেখানে পলপট সরকার জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ মানুষকে হত্যা করে। বিশেষ করে, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষিত মানুষকে বেছে বেছে হত্যা করা হয়।
প্রথম আলো: কম্বোডিয়ার বিচার–প্রক্রিয়া নিয়েও কি সমালোচনা হচ্ছে, দেশের ভেতরে ও বাইরে?
হেলেন জারভিস: হ্যাঁ, অনেকেই সমালোচনা করছেন। তবে ভেতরের চেয়ে বাইরেই সমালোচনা বেশি হচ্ছে। কিন্তু আমরা বলেছি, সুষ্ঠু প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই এই বিচারকাজ চলছে।
প্রথম আলো: পলপটের অনুসারীরা কি সেখানে কেউ রাজনীতি করতে পারছেন? তাঁদের রাজনৈতিক দল আছে?
হেলেন জারভিস: না, পলপটের অনুসারীরা কেউ রাজনীতি করছেন না। তবে সেই সময়ে ক্ষমতাসীনদের সমর্থক অনেকেই বিভিন্ন দলে যোগ দিয়ে সমাজে একীভূত হয়ে গেছেন।
প্রথম আলো: সমঝোতা (রিকন্সিলিয়েশন) নয় কেন?
হেলেন জারভিস: অনেকেই সমঝোতার কথা বলেন। কিন্তু যাঁরা গণহত্যার মতো গুরুতর অপরাধ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে সমঝোতা কীভাবে?
প্রথম আলো: পলপটের অনুসারীরা কি অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন?
হেলেন জারভিস: কেউ কেউ ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু তাঁরা প্রথমে ক্ষমা চাননি। যখন তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তখন কেউ কেউ দোষ স্বীকার করেছেন। ১৯৯৪ সালে আইন করা হয় যে যাঁরা অপরাধ করেছেন, তাঁরা কোনো সংগঠন করতে পারবেন না।
প্রথম আলো: ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার সঙ্গে আশির দশকে কম্বোডিয়ার গণহত্যাকে কীভাবে তুলনা করবেন?
হেলেন জারভিস: কোনো দেশের গণহত্যার সঙ্গে অন্য দেশের গণহত্যা তুলনীয় নয়। অন্তত প্রতিটি ঘটনাই মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশার শিকার হয়। এসব অপরাধের গভীরতা ও ভয়াবহতার পরিমাপ করা যায় না।
প্রথম আলো: জাতিসংঘের বিশেষ দূত আদামা দিয়েং তাঁর বার্তায় বলেছেন, আমি আশা করব, এই সম্মেলনে বিচারের যথাযথ প্রক্রিয়া (ডিউ প্রসেস) নিয়ে আলোচনা হবে। বাংলাদেশের বিচার–প্রক্রিয়া নিয়ে সম্মেলনে কী ধরনের আলোচনা হয়েছে বা কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে কি না?
হেলেন জারভিস: সম্মেলনে যে একটি বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, তা হলো মৃত্যুদণ্ড। আমি মনে করি, কোনো সমাজেই মৃত্যুদণ্ড থাকা উচিত নয়। কিন্তু সেটি তো কেবল যুদ্ধাপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে নয়, সব ধরনের বিচারের বেলায় প্রযোজ্য। কিন্তু বাংলাদেশে ফৌজদারি আইনে তো মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।
প্রথম আলো: যেসব নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাঁদের সম্মান পাওয়ার বা সমাজে একীভূত হওয়ার সমস্যাটি কীভাবে দেখেছেন। স্বাধীনতার পর সরকার ওই সব নারীকে বীরাঙ্গনা হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন। আপনার অভিমত কী?
হেলেন জারভিস: আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এই সিদ্ধান্তকে আমি অত্যন্ত প্রগতিশীল বলে মনে করি। বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার জন্য তাঁদেরকে বীরাঙ্গনা উপাধি দিয়েছিলেন, সেটি ছিল সহায়তার স্বীকৃতি। কিন্তু এবারে আদালত তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সম্মানিত করলেন। আমি মনে করি, সমাজ ও রাষ্ট্রের উচিত তাদের যথাযথ সম্মান দেওয়া এবং একাত্ম করে নেওয়া। ইতিমধ্যে তাঁরা অনেক দুঃখ-দুর্দশার শিকার হয়েছেন।
আমি মনে করি আদালত সবকিছু করে দেবেন না। রাষ্ট্র ও সমাজকেই দায়িত্ব নিতে হবে। এসব নির্যাতিত নারীর চিকিৎসা, স্বাস্থ্যসেবা, আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের কাজটি রাষ্ট্রকেই করতে হবে। তাঁরা যাতে সমাজে যথাযথ সম্মান পান, সে ব্যাপারে নাগরিক সমাজও সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারে।
প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।
হেলেন জারভিস: ধন্যবাদ।
No comments