পার্বত্য চট্টগ্রাম : একটি সাহসী সিদ্ধান্ত by মনিরুজ্জামান মনির
সম্প্রতি
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু সাহসী সিদ্ধান্ত
নিয়েছে। বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী বাস্তবভিত্তিক এই সিদ্ধান্তে,
সাম্প্রদায়িক ও বিচ্ছিন্নতাবাদী মহলের আঁতে ঘা লেগেছে। ফলে ঢাকাসহ তিন
পার্বত্য জেলার একটি গোষ্ঠী এর বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। যারা পাহাড়কে
বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন ‘জুমল্যান্ড’ বানাতে চায়, যারা এ যাবত অন্তত ৩৫
হাজার পার্বত্যবাসী বাঙালি ও উপজাতিকে বর্বর হানাদার শান্তিবাহিনীর
ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে, যারা নিজেদের বাংলাদেশী বলে স্বীকার করে না, যারা
নিজেদের জুম্মজাতি বলে জাহির করছে, তাদের পে ওকালতির এই চিত্র দেখে সমগ্র
পার্বত্যবাসী ক্ষােভে, দুঃখে, অভিমানে, ক্রোধে জ্বলে উঠেছে। তারা কি
একটি অখণ্ড, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ দেখতে চান না? তারা কি দেশের
এক-দশমাংশ অঞ্চল কেড়ে নিয়ে যারা স্বাধীন জুমল্যান্ড ঘোষণা দিয়েছিল, তাদেরই
সমর্থন করছে না? তারা কি ৩০ লাখ শহীদের রক্তের দামে কেনা মুক্তিযুদ্ধের ফসল
৫৫, ৫৯৮ বর্গমাইলের বাংলাদেশকে খণ্ডবিখণ্ড করতে চান?
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর পাতায় লেখা পঙ্কজ ভট্টাচার্য, মেসবাহ কামাল, দীপায়ন খিসা, জান্নাত এ ফেরদৌসী ও রোবায়েত ফেরদৌস লিখিত পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক ‘বর্ণবাদী, সাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যমূলক নির্দেশনা শীর্ষক বিরাট প্রবন্ধটি পড়ে বিস্মিত হয়েছি। যারা নিজেদের দেশপ্রেমিক, বুদ্ধিজীবী নাগরিক সমাজ বলে দাবি করেন, তাদের থেকে এ ধরনের দেশবিরোধী, সাম্প্রদায়িক, বিচ্ছিন্নতাবাদীবান্ধব লেখা কাম্য ছিল না।
বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র, আমরা কারো উপনিবেশ নই। অতএব, বাংলাদেশের এক ও অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ পার্বত্য চট্টগ্রামে যখন তখন কোনো বিদেশী প্রবেশ করবেন এবং রাষ্ট্রদ্রোহী সশস্ত্র সন্ত্রাসী ক্যাডারসহ নেতাদের সাথে দহরম মহরম করবেন, তা আমরা মেনে নিতে পারি না। তা ছাড়া, পাহাড়ে প্রতিদিনই বন্দুকযুদ্ধ হচ্ছে, শান্তিচুক্তির বেশির ভাগ সরকার মেনে নিলেও অস্ত্রধারী ক্যাডারেরা তা মানেনি। ফলে শান্তিচুক্তি শুধু সরকারকেই মানতে বাধ্য করা হচ্ছে। অন্যপক্ষ চুক্তির প্রধান কনসেপ্ট মোতাবেক তাদের বেআইনি অস্ত্রশস্ত্র গোলাবারুদ ইত্যাদি বাস্তবে জমা না দেয়াতেই যত বিপত্তি। ঢাকাভিত্তিক বামপন্থী বুদ্ধিজীবী নাগরিক সমাজ পাহাড়ে বন্দুকযুদ্ধ বন্ধের কথা বলে না। বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার, চাঁদাবাজি, মুক্তিপণ, খুন, সন্ত্রাস বন্ধের কথা বলে না। ‘শান্তিচুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়ন হলেই পাহাড়ের সব সমস্যা মিটে যাবে?
পার্বত্য চট্টগ্রামে শেল অয়েল কোম্পানির ছয় বিদেশী প্রকৌশলীকে বাঘাইছড়িতে খনিজসম্পদ আবিষ্কারের সময় সন্তু লারমা বাহিনী আটক করেছিল। তাদের মুক্তিপণ বাবদ এরশাদ সরকারকে ২২ কেজি স্বর্ণ এবং এক কোটি রুপি দিতে হয়েছিল। বাবু উপেন্দ্রলাল চাকমার মাধ্যমে ওই মুক্তিপণ দিয়ে বিদেশীদের উদ্ধার করা হয়। তা ছাড়া নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান (ইউপিডিএফ নেতা) আকিমডিস চাকমার মাধ্যমেও ১৬ কোটি ডলার মুক্তিপণ দিয়ে ডেনিশ ব্রিটিশ প্রকৌশলীদের মুক্ত করা হয়েছিল। টেলিটকের কর্মী, বন বিভাগের কর্মকর্তা, ইটখোলার ম্যানেজার, ঠিকাদারের ম্যানেজার প্রভৃতি বহু লোকই এখানে মুক্তিপণের অর্থ শোধ করে বিচ্ছিন্নতাবাদী পাহাড়ি ক্যাডার জেএসএস ও ইউপিডিএফ নেতাদের অর্থভাণ্ডার সমৃদ্ধ করছেন। কাজেই পাহাড়ে বাংলাদেশী কিংবা বিদেশী কোনো নাগরিকই নিরাপদ নন। তা হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবেশের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তা কি যুক্তিযুক্ত নয়? বিদেশীরা যদি অপহৃত হন, তাদের মুক্তিপণ কে দেবেন?
এ সিদ্ধান্ত খুবই যুক্তিসঙ্গত। সশস্ত্র রাষ্ট্রদ্রোহী সন্ত্রাসীদের গডফাদার কিংবা কোনো সন্দেহজনক নেতার সাথে বৈঠক করতে চাইলে, তা সরকার কি চেয়ে চেয়ে দেখবেন? বিদেশীরা কিংবা কূটনীতিকেরা এ ধরনের কাজে জড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশের সার্বভৌম মতা কি থাকবে? এসব মনিটরিং করার অধিকার কি রাষ্ট্রের থাকতে নেই? ইউএনডিপি পাহাড়ে কোটি কোটি মিলিয়ন ডলার অর্থ ব্যয় করেছে। এসব অর্থের হিসাব-নিকাশ সরকার অবশ্যই চাইতে পারে। বাংলাদেশ জাতিসঙ্ঘের একজন সম্মানিত সদস্য। যেসব শান্তিবাহিনী সদস্য সরকারি চাকরি করছেন, রাষ্ট্র তাদের দেশের যেকোনো স্থানে জাতীয় প্রয়োজনে বদলি, নিয়োগ, পোস্টিং দিতে পারে। এটি বাংলাদেশ সরকারের মতারই একটি অংশ। অনেক অযোগ্য উপজাতিকে লাভজনক পদে চাকরি দেয়া হয়েছিল এই শর্তে যে, তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সমতলে চাকরি করতেও বাধ্য থাকবেন। এ ছাড়া সিএইচটি কমিশন নামক একটি এনজিও সন্ত্রাসী বাঙালিদের বিরুদ্ধে হামলা করতে উৎসাহিত করেন। সম্প্রতি লন্ডনে লর্ড এরিক অ্যাভিবুরি সিএইচটি কমিশন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করেছেন তাদের সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ডের কারণে। ১৯৯২ সালে সিএইচটি কমিশন ভিত্তিহীন ও রাষ্ট্রবিরোধী রিপোর্ট দিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্ববাসীর কাছে হেয় করেছিল। বর্তমান সরকার ওই এনজিওর নামের সামনে থাকা কমিশন শব্দটি প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ করেছেন।
উপজাতি নেতারা প্রায়ই বলে থাকেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নাকি বাংলাদেশ সরকারের কোনো ভূমি অধিকার নেই। তা হলে ৫০৯৩ বর্গমাইল ভূমির মালিক কি সন্তু লারমারা? ব্রিটিশ হিল ট্র্যাক্টস ম্যানুয়েল মোতাবেক পাহাড়ের ৫০৯৩ বর্গমাইল ভূমির মালিক বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে উপজাতি নেতারা কোথায় ছিলেন, রাজা ত্রিদিব রায় পাকিস্তানের দালালি করতে জাতিসঙ্ঘে গিয়েছিলেন। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য। ব্রিটিশদের তাড়িয়ে ১৯৪৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান এনেছি এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের পরাজিত করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ এনেছি। এসব করেছি পার্বত্য চট্টগ্রামসহ ৫৫৫৯৮ বর্গমাইল এলাকায় বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানোর জন্য। যারা আদিবাসী বলে উপজাতিদের প্রমাণ দিতে চান, তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। তারা চান পূর্বতিমুর কিংবা দণি সুদানের মতো পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন হোক, কিন্তু ১৬ কোটি মানুষ তা চায় না। বাঙালি জাতি বড় শান্তিপ্রিয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরা বাঙালি ও উপজাতিরা পরস্পর মিলেমিশে বসবাস করছি। কিন্তু কিছু উপজাতীয় নেতা ও তাদের দোসররা সেটি সহ্য করতে পারেন না। আমরা আশা করি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে বাংলাদেশ উপকৃত হবে। এ দেশের ১৬ কোটি মানুষ উপকৃত হবে এবং বাংলাদেশের অখণ্ড-মানচিত্র আরো সুসংহত হবে।
লেখক : কেন্দ্রীয় মহাসচিব, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর পাতায় লেখা পঙ্কজ ভট্টাচার্য, মেসবাহ কামাল, দীপায়ন খিসা, জান্নাত এ ফেরদৌসী ও রোবায়েত ফেরদৌস লিখিত পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক ‘বর্ণবাদী, সাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যমূলক নির্দেশনা শীর্ষক বিরাট প্রবন্ধটি পড়ে বিস্মিত হয়েছি। যারা নিজেদের দেশপ্রেমিক, বুদ্ধিজীবী নাগরিক সমাজ বলে দাবি করেন, তাদের থেকে এ ধরনের দেশবিরোধী, সাম্প্রদায়িক, বিচ্ছিন্নতাবাদীবান্ধব লেখা কাম্য ছিল না।
বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র, আমরা কারো উপনিবেশ নই। অতএব, বাংলাদেশের এক ও অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ পার্বত্য চট্টগ্রামে যখন তখন কোনো বিদেশী প্রবেশ করবেন এবং রাষ্ট্রদ্রোহী সশস্ত্র সন্ত্রাসী ক্যাডারসহ নেতাদের সাথে দহরম মহরম করবেন, তা আমরা মেনে নিতে পারি না। তা ছাড়া, পাহাড়ে প্রতিদিনই বন্দুকযুদ্ধ হচ্ছে, শান্তিচুক্তির বেশির ভাগ সরকার মেনে নিলেও অস্ত্রধারী ক্যাডারেরা তা মানেনি। ফলে শান্তিচুক্তি শুধু সরকারকেই মানতে বাধ্য করা হচ্ছে। অন্যপক্ষ চুক্তির প্রধান কনসেপ্ট মোতাবেক তাদের বেআইনি অস্ত্রশস্ত্র গোলাবারুদ ইত্যাদি বাস্তবে জমা না দেয়াতেই যত বিপত্তি। ঢাকাভিত্তিক বামপন্থী বুদ্ধিজীবী নাগরিক সমাজ পাহাড়ে বন্দুকযুদ্ধ বন্ধের কথা বলে না। বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার, চাঁদাবাজি, মুক্তিপণ, খুন, সন্ত্রাস বন্ধের কথা বলে না। ‘শান্তিচুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়ন হলেই পাহাড়ের সব সমস্যা মিটে যাবে?
পার্বত্য চট্টগ্রামে শেল অয়েল কোম্পানির ছয় বিদেশী প্রকৌশলীকে বাঘাইছড়িতে খনিজসম্পদ আবিষ্কারের সময় সন্তু লারমা বাহিনী আটক করেছিল। তাদের মুক্তিপণ বাবদ এরশাদ সরকারকে ২২ কেজি স্বর্ণ এবং এক কোটি রুপি দিতে হয়েছিল। বাবু উপেন্দ্রলাল চাকমার মাধ্যমে ওই মুক্তিপণ দিয়ে বিদেশীদের উদ্ধার করা হয়। তা ছাড়া নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান (ইউপিডিএফ নেতা) আকিমডিস চাকমার মাধ্যমেও ১৬ কোটি ডলার মুক্তিপণ দিয়ে ডেনিশ ব্রিটিশ প্রকৌশলীদের মুক্ত করা হয়েছিল। টেলিটকের কর্মী, বন বিভাগের কর্মকর্তা, ইটখোলার ম্যানেজার, ঠিকাদারের ম্যানেজার প্রভৃতি বহু লোকই এখানে মুক্তিপণের অর্থ শোধ করে বিচ্ছিন্নতাবাদী পাহাড়ি ক্যাডার জেএসএস ও ইউপিডিএফ নেতাদের অর্থভাণ্ডার সমৃদ্ধ করছেন। কাজেই পাহাড়ে বাংলাদেশী কিংবা বিদেশী কোনো নাগরিকই নিরাপদ নন। তা হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবেশের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তা কি যুক্তিযুক্ত নয়? বিদেশীরা যদি অপহৃত হন, তাদের মুক্তিপণ কে দেবেন?
এ সিদ্ধান্ত খুবই যুক্তিসঙ্গত। সশস্ত্র রাষ্ট্রদ্রোহী সন্ত্রাসীদের গডফাদার কিংবা কোনো সন্দেহজনক নেতার সাথে বৈঠক করতে চাইলে, তা সরকার কি চেয়ে চেয়ে দেখবেন? বিদেশীরা কিংবা কূটনীতিকেরা এ ধরনের কাজে জড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশের সার্বভৌম মতা কি থাকবে? এসব মনিটরিং করার অধিকার কি রাষ্ট্রের থাকতে নেই? ইউএনডিপি পাহাড়ে কোটি কোটি মিলিয়ন ডলার অর্থ ব্যয় করেছে। এসব অর্থের হিসাব-নিকাশ সরকার অবশ্যই চাইতে পারে। বাংলাদেশ জাতিসঙ্ঘের একজন সম্মানিত সদস্য। যেসব শান্তিবাহিনী সদস্য সরকারি চাকরি করছেন, রাষ্ট্র তাদের দেশের যেকোনো স্থানে জাতীয় প্রয়োজনে বদলি, নিয়োগ, পোস্টিং দিতে পারে। এটি বাংলাদেশ সরকারের মতারই একটি অংশ। অনেক অযোগ্য উপজাতিকে লাভজনক পদে চাকরি দেয়া হয়েছিল এই শর্তে যে, তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সমতলে চাকরি করতেও বাধ্য থাকবেন। এ ছাড়া সিএইচটি কমিশন নামক একটি এনজিও সন্ত্রাসী বাঙালিদের বিরুদ্ধে হামলা করতে উৎসাহিত করেন। সম্প্রতি লন্ডনে লর্ড এরিক অ্যাভিবুরি সিএইচটি কমিশন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করেছেন তাদের সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ডের কারণে। ১৯৯২ সালে সিএইচটি কমিশন ভিত্তিহীন ও রাষ্ট্রবিরোধী রিপোর্ট দিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্ববাসীর কাছে হেয় করেছিল। বর্তমান সরকার ওই এনজিওর নামের সামনে থাকা কমিশন শব্দটি প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ করেছেন।
উপজাতি নেতারা প্রায়ই বলে থাকেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নাকি বাংলাদেশ সরকারের কোনো ভূমি অধিকার নেই। তা হলে ৫০৯৩ বর্গমাইল ভূমির মালিক কি সন্তু লারমারা? ব্রিটিশ হিল ট্র্যাক্টস ম্যানুয়েল মোতাবেক পাহাড়ের ৫০৯৩ বর্গমাইল ভূমির মালিক বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে উপজাতি নেতারা কোথায় ছিলেন, রাজা ত্রিদিব রায় পাকিস্তানের দালালি করতে জাতিসঙ্ঘে গিয়েছিলেন। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য। ব্রিটিশদের তাড়িয়ে ১৯৪৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান এনেছি এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের পরাজিত করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ এনেছি। এসব করেছি পার্বত্য চট্টগ্রামসহ ৫৫৫৯৮ বর্গমাইল এলাকায় বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানোর জন্য। যারা আদিবাসী বলে উপজাতিদের প্রমাণ দিতে চান, তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। তারা চান পূর্বতিমুর কিংবা দণি সুদানের মতো পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন হোক, কিন্তু ১৬ কোটি মানুষ তা চায় না। বাঙালি জাতি বড় শান্তিপ্রিয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরা বাঙালি ও উপজাতিরা পরস্পর মিলেমিশে বসবাস করছি। কিন্তু কিছু উপজাতীয় নেতা ও তাদের দোসররা সেটি সহ্য করতে পারেন না। আমরা আশা করি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে বাংলাদেশ উপকৃত হবে। এ দেশের ১৬ কোটি মানুষ উপকৃত হবে এবং বাংলাদেশের অখণ্ড-মানচিত্র আরো সুসংহত হবে।
লেখক : কেন্দ্রীয় মহাসচিব, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন
No comments