সরকারের ‘বিপদের বন্ধু’ হতে চায় জাপা
বর্তমান
রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকারের পাশে থাকবে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয়
পার্টি (জাপা)। তাই সরকারের সমালোচনা করা থেকে আপাতত বিরত থাকার সিদ্ধান্ত
নিয়েছে দলটি। জাপার নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে
জানা গেছে, ‘বিপদে বন্ধুর পরিচয়’—অনেকটা এ নীতি থেকে জাপা বর্তমান সংকটে
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে পরিস্থিতি
স্বাভাবিক হলে আবার সরকারের বিভিন্ন ব্যর্থতা নিয়ে সমালোচনা করে
‘সত্যিকার’ বিরোধী দলের ভাব দেখানোর পুরোনো কৌশল অনুসরণ করা হবে। এরই
মধ্যে জাপার চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ ও মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু
গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর জাতীয় সংসদের কার্যালয়ে
প্রায় আধা ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠক-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, চলমান
রাজনৈতিক সংকটে সরকারের পাশে থাকা এবং আন্দোলন দমনে বিএনপির যেকোনো
পর্যায়ের নেতাকে গ্রেপ্তার করাসহ সব ধরনের প্রশাসনিক পদক্ষেপে জাপার
সর্বাত্মক সমর্থন থাকবে বলে বৈঠকে কথা দেন এরশাদ। বৈঠকের একপর্যায়ে সরকারের
কয়েকজন মন্ত্রীও সেখানে যান। অবশ্য জাপার মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ
বাবলু দাবি করেন, ‘এটি ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ।’ হাই-হ্যালো করা আর কি।’
চলমান রাজনৈতিক সংকট নিয়ে কথা হয়েছে কি—এ প্রশ্নের জবাবে জাপা মহাসচিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যেহেতু রাজনীতি করি, দেশের অবস্থা, রাজনীতি, এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হতেই পারে।’
তবে জাপার উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র জানায়, গত বছর ৫ জানুয়ারির ‘একতরফা’ নির্বাচনের পর থেকে জাপার শীর্ষ নেতৃত্বের শেষ কথা হচ্ছে ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা। এ কারণে কোনো রাজনৈতিক সংকট দেখা দিলে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কখনো দোদুল্যমান অবস্থান গ্রহণ করেন। আবার কখনো দলে বিভক্তির ভাব দেখিয়ে এরশাদ ও তাঁর স্ত্রী রওশন দ্বিমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, গত বছরের মতো এবার বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের অবরোধ কর্মসূচি ঘিরে সৃষ্ট সংকটের নিরসন প্রশ্নেও শুরুতে এরশাদ ও তাঁর স্ত্রী সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বিপরীত অবস্থান নিয়েছিলেন। এরশাদ ১ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলীয় সমাবেশে চলমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসার প্রস্তাব করেন। এরপর তিনি প্রয়োজনে আলোচনার উদ্যোগ নিতে আগ্রহ দেখান। অন্যদিকে রওশন এরশাদ চলমান সংকট নিরসনের জন্য কোনো সংলাপ বা সমঝোতার কথা বলেননি। বরং তিনি গত মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বলেছেন, ২০-দলীয় জোট সারা দেশে হরতাল অবরোধের নামে নৈরাজ্য চালাচ্ছে। এটা কঠোর হস্তে দমন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে রওশন বলেন, ‘দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী যে পদক্ষেপই নেবেন আমরা তার সাথে থাকব।’
রওশনের ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা জানান, জাপা একই সঙ্গে সংসদে বিরোধী দল ও সরকারে থাকা নিয়ে সমালোচনা থেকে রেহাই পেতে এরশাদ অনেক দিন ধরে চাচ্ছিলেন মন্ত্রিসভা থেকে তাঁর দলের নেতারা পদত্যাগ করুক। কিন্তু রওশন সায় দেননি। কিন্তু সম্প্রতি সরকারের দিক থেকে ইঙ্গিত পেয়ে এ বিষয়ে স্বামীর সঙ্গে রওশনও একমত হন। যার ফলে কিছুদিন আগে রওশন দলীয় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, মন্ত্রিসভা থেকে জাপা নেতাদের পদত্যাগ সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়ায় জাপা নীতি-নির্ধারকেরা মনে করছেন, এখন মন্ত্রিসভা থেকে জাপা নেতারা পদত্যাগ করলে সরকার চাপে পড়বে। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরে এ বিষয়ে দলের সভাপতিমণ্ডলী ও সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে।
এর আগে গত বছর ৫ জানুয়ারির ‘একতরফা’ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে এরশাদ গোয়েন্দা সংস্থার তত্ত্বাবধানে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হয়েছিলেন। তখন রওশন দলের একটি অংশকে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। পরে বিরোধীদলীয় নেতা হন। এরশাদও সিএমএইচে থেকে সাংসদ এবং পরে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে নিযুক্ত হন। জাপার সভাপতিমণ্ডলী ও যুগ্ম মহাসচিব পদের চারজন নেতার সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলে জানা গেছে, এরশাদের নির্দেশ অমান্য করে যাঁরা ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরা এখন এরশাদের ঘনিষ্ঠজন। আর যাঁরা নির্দেশ মেনে মনোনয়নপত্র তুলে নিয়েছিলেন, তাঁরা এখন কোণঠাসা।
এই চার নেতা দাবি করেন, এখন সরকারের আনুকূল্য পাওয়া ও ক্ষমতার কাছাকাছি থাকার কৌশল নিয়েছেন এরশাদ দম্পতি। চলমান আন্দোলনকে ঘিরে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আশঙ্কা থেকে রওশন সহিংসতা দমনে কঠোর হতে সরকারের পক্ষে, আর সংলাপ-সমঝোতার কথা বলে এরশাদ প্রতিপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন বলে নেতাদের একটি অংশ মনে করছেন। অবশ্য দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলুর দাবি, এরশাদ ও রওশনের অবস্থান বিপরীতমুখী নয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি কী হওয়া উচিত সে ব্যাপারে স্যার (এরশাদ) আলোচনার কথা বলেছেন। আর উনি (রওশন) হয়তো সহিংসতা দমনকে হাইলাইট করেছেন। কিন্তু তিনি সংলাপের বিরোধিতা করেননি।’
চলমান রাজনৈতিক সংকট নিয়ে কথা হয়েছে কি—এ প্রশ্নের জবাবে জাপা মহাসচিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যেহেতু রাজনীতি করি, দেশের অবস্থা, রাজনীতি, এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হতেই পারে।’
তবে জাপার উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র জানায়, গত বছর ৫ জানুয়ারির ‘একতরফা’ নির্বাচনের পর থেকে জাপার শীর্ষ নেতৃত্বের শেষ কথা হচ্ছে ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা। এ কারণে কোনো রাজনৈতিক সংকট দেখা দিলে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কখনো দোদুল্যমান অবস্থান গ্রহণ করেন। আবার কখনো দলে বিভক্তির ভাব দেখিয়ে এরশাদ ও তাঁর স্ত্রী রওশন দ্বিমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, গত বছরের মতো এবার বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের অবরোধ কর্মসূচি ঘিরে সৃষ্ট সংকটের নিরসন প্রশ্নেও শুরুতে এরশাদ ও তাঁর স্ত্রী সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বিপরীত অবস্থান নিয়েছিলেন। এরশাদ ১ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলীয় সমাবেশে চলমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসার প্রস্তাব করেন। এরপর তিনি প্রয়োজনে আলোচনার উদ্যোগ নিতে আগ্রহ দেখান। অন্যদিকে রওশন এরশাদ চলমান সংকট নিরসনের জন্য কোনো সংলাপ বা সমঝোতার কথা বলেননি। বরং তিনি গত মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বলেছেন, ২০-দলীয় জোট সারা দেশে হরতাল অবরোধের নামে নৈরাজ্য চালাচ্ছে। এটা কঠোর হস্তে দমন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে রওশন বলেন, ‘দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী যে পদক্ষেপই নেবেন আমরা তার সাথে থাকব।’
রওশনের ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা জানান, জাপা একই সঙ্গে সংসদে বিরোধী দল ও সরকারে থাকা নিয়ে সমালোচনা থেকে রেহাই পেতে এরশাদ অনেক দিন ধরে চাচ্ছিলেন মন্ত্রিসভা থেকে তাঁর দলের নেতারা পদত্যাগ করুক। কিন্তু রওশন সায় দেননি। কিন্তু সম্প্রতি সরকারের দিক থেকে ইঙ্গিত পেয়ে এ বিষয়ে স্বামীর সঙ্গে রওশনও একমত হন। যার ফলে কিছুদিন আগে রওশন দলীয় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, মন্ত্রিসভা থেকে জাপা নেতাদের পদত্যাগ সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়ায় জাপা নীতি-নির্ধারকেরা মনে করছেন, এখন মন্ত্রিসভা থেকে জাপা নেতারা পদত্যাগ করলে সরকার চাপে পড়বে। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরে এ বিষয়ে দলের সভাপতিমণ্ডলী ও সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে।
এর আগে গত বছর ৫ জানুয়ারির ‘একতরফা’ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে এরশাদ গোয়েন্দা সংস্থার তত্ত্বাবধানে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হয়েছিলেন। তখন রওশন দলের একটি অংশকে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। পরে বিরোধীদলীয় নেতা হন। এরশাদও সিএমএইচে থেকে সাংসদ এবং পরে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে নিযুক্ত হন। জাপার সভাপতিমণ্ডলী ও যুগ্ম মহাসচিব পদের চারজন নেতার সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলে জানা গেছে, এরশাদের নির্দেশ অমান্য করে যাঁরা ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরা এখন এরশাদের ঘনিষ্ঠজন। আর যাঁরা নির্দেশ মেনে মনোনয়নপত্র তুলে নিয়েছিলেন, তাঁরা এখন কোণঠাসা।
এই চার নেতা দাবি করেন, এখন সরকারের আনুকূল্য পাওয়া ও ক্ষমতার কাছাকাছি থাকার কৌশল নিয়েছেন এরশাদ দম্পতি। চলমান আন্দোলনকে ঘিরে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আশঙ্কা থেকে রওশন সহিংসতা দমনে কঠোর হতে সরকারের পক্ষে, আর সংলাপ-সমঝোতার কথা বলে এরশাদ প্রতিপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন বলে নেতাদের একটি অংশ মনে করছেন। অবশ্য দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলুর দাবি, এরশাদ ও রওশনের অবস্থান বিপরীতমুখী নয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি কী হওয়া উচিত সে ব্যাপারে স্যার (এরশাদ) আলোচনার কথা বলেছেন। আর উনি (রওশন) হয়তো সহিংসতা দমনকে হাইলাইট করেছেন। কিন্তু তিনি সংলাপের বিরোধিতা করেননি।’
No comments