স্মিথ মানেই সেঞ্চুরি
একেবারে অব্যর্থ ফর্মুলা। স্টিভেন স্মিথ + অধিনায়কত্ব = সেঞ্চুরি! নেতৃত্বের গুরুভার কাঁধে চাপলে স্মিথকে সেঞ্চুরিবঞ্চিত করা ও অস্ট্রেলিয়াকে হারানো অসম্ভব। সম্প্রতি বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজের যে তিন টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্মিথ, প্রতি ম্যাচেই তার ব্যাট থেকে এসেছে ঝলমলে সেঞ্চুরি। যার একটিও বিফলে যায়নি। প্রতিপক্ষের মতো ফরম্যাটও বদলেছে, কিন্তু বদলাননি অধিনায়ক স্মিথ। কাল প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিলেন এবং সেঞ্চুরি করে দলকে জেতালেন। সিডনি ও মেলবোর্নে দাপুটে জয়ের পর হোবার্টেও চেনা রূপে অস্ট্রেলিয়া। শুক্রবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন উইকেটের রোমাঞ্চকর জয়ে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের ফাইনালে উঠে গেছে স্বাগতিকরা। স্মিথের দুরন্ত শতকে মাঠে মারা গেছে ইয়ান বেলের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসটি। বেলের মহাকাব্যিক ১৪১ রানে ভর করে আট উইকেটে ৩০৩ রানের বড়সড় সংগ্রহ পেয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু স্মিথের দৃঢ়তায় এক বল ও তিন উইকেট হাতে রেখেই তা টপকে যায় অস্ট্রেলিয়া। শেষ দুই ওভারে নাটকীয় পরিস্থিতির জš§ হলেও স্মিথ ছিলেন অবিচল। ১০২ রানে অপরাজিত থেকে ইংল্যান্ডের হার নিশ্চিত করেন তিনি। স্লো ওভার রেটের কারণে নিয়মিত অধিনায়ক জর্জ বেইলি নিষিদ্ধ হওয়ায় রঙিন পোশাকে নেতৃত্বের অভিষেক হয়ে গেল স্মিথের। তবে টস জিতে তার ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্তটা এক পর্যায়ে ভুলই মনে হচ্ছিল। শুরু থেকেই সাবলীল ছিলেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ১৭.৩ ওভারে ১১৩ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন মঈন আলী (৪৬) ও বেল। তৃতীয় উইকেটে জো রুটের সঙ্গে ১২১ রানের আরেকটি বড় জুটি গড়েন বেল। ১২৫ বলে ১৫ চার ও এক ছক্কায় ১৪১ রানের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস খেলার পথে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়ে গেছেন বেল। তার বিদায়ের পরই পথ হারায় ইংল্যান্ড। বেল ছাড়া ৭০ বলে ৬৯ রান করেন রুট।
৪১ ওভারে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল দুই উইকেটে ২৫৩। লোয়ারঅর্ডারের ব্যর্থতায় শেষ নয় ওভারে মাত্র ৫০ রান যোগ হয় স্কোরবোর্ডে। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ দুই উইকেট নেন সান্ধু। ৩০৪ তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটাও খারাপ হয়নি। অ্যারন ফিঞ্চ (৩২) ও শন মার্শের (৪৫) উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৭৬ রান। এরপর ৯২ রানে তিন উইকেট পড়ে গেলেও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৩৭), জেমস ফকনার (৩৫) ও ব্র্যাড হ্যাডিনকে (২৯ বলে ৪২) নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান স্মিথ। শেষ ৭৬ বলে প্রয়োজন ছিল ৮৮ রান। ষষ্ঠ উইকেটে ৬১ বলে ৮১ রানের ঝড়ো জুটি গড়ে সমীকরণটা সহজ করে ফেলেন স্মিথ ও হ্যাডিন। শেষ দুই ওভারে দরকার মাত্র পাঁচ রান। কিন্তু হ্যাডিনের বিদায়ের পর ক্রিজে আসা হেনরিকস গোটা কয়েক ডট বল খেলে চাপে ফেলে দেন স্বাগতিকদের। শেষ ওভারের তৃতীয় বলে তার রানআউট রক্ষা করে অস্ট্রেলিয়াকে! স্টার্ককে নিয়ে বাকি পথটুকু পাড়ি দিতে আর সমস্যা হয়নি স্মিথের। ৯৫ বলে ছয় চার ও এক ছয়ে অপরাজিত ১০২ রানের ইনিংসটির সুবাদে স্মিথই পেয়েছেন ম্যাচসেরার স্বীকৃতি। ইংল্যান্ডের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন ক্রিস ওকস, মঈন ও স্টিভেন ফিন। ইংল্যান্ড ৩০৩/৮, ৫০ ওভারে (মঈন আলী ৪৬, ইয়ান বেল ১৪১, জো রুট ৬৯, জস বাটলার ২৫। গুরিন্দর সান্ধু ২/৪৯)। অস্ট্রেলিয়া ৩০৪/৭, ৪৯.৫ ওভারে (অ্যারন ফিঞ্চ ৩২, শন মার্শ ৪৫, স্টিভেন স্মিথ ১০২, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৩৭, জেমস ফকনার ৩৫, ব্র্যাড হ্যাডিন ৪২। ক্রিস ওকস ২/৫৮, মঈন আলী ২/৫০, স্টিভেন ফিন ২/৬৫)। ফল : অস্ট্রেলিয়া ৩ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ : স্টিভেন স্মিথ (অস্ট্রেলিয়া)। ক্রিকইনফো।
No comments