গায়ে হলুদ মাখা হলো না তাসমিয়ার
তাসমিয়া
ঈসমাইল তাম্মির ২২শে জানুয়ারি গায়ে হলুদ। ২৪শে জানুয়ারি বিয়ে। আর ২৬শে
জানুয়ারি বৌভাত। দু’পরিবারের মুরব্বীরা বসে এভাবেই দিনক্ষণ ঠিক করেছিলেন।
সম্ভ্রান্ত দু’পরিবারের এসব অনুষ্ঠানকে ঘিরে আয়োজনও ছিল ব্যাপক।
বস্তি-বাবুর্চিদের নিয়ে খাবারের দীর্ঘ ফর্দ ঠিক করা থেকে শুরু করে কমিউনিটি
সেন্টার ও আলোকবাতির জন্য নামী-দামি ডেকোরেশন বুকিং, কার্ড বানানো ও বিলি
সবই সম্পন্ন হয়েছে। কনে নিজ হাতে দুশ’রও বেশি বিয়ের কার্ড বিলি করেছেন।
ঘনিষ্ঠদের অনেককে ওয়াদাও করিয়েছেন বিয়েতে উপস্থিত হওয়ার জন্য। কেনাকাটাও
প্রায় শেষ পর্যায়ে। শেষ প্রস্তুতির জন্য যাচ্ছিলেন গ্রামের বাড়ি
চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে। যাওয়ার পথে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের
চকরিয়াস্থ বড়ইতলি নামক এলাকায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণপ্রদীপ
নিভে গেছে তাসমিয়া ঈসমাইল তাম্মির। একই ঘটনায় প্রাণ গেছে মা তাহেরা বেগম,
কাজের মেয়ে কোহিনূর ও গাড়িচালক জয়নালের। তাহেরা বেগমের ছেলে রাজীব ও গাড়ির
হেলপারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে
ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মর্মান্তিক এ হতাহতের খবর জানাজানি হলে এলাকায়
কান্নার রোল পড়ে যায়। কক্সবাজার শহরের বদরমোকাম এলাকায় নেমে আসে শোকের
ছায়া। আপনজনদের হারিয়ে বিলাপ করে কান্না করেন অনেকেই। আবার অনেক স্বজনকে
তাসমিয়ার বিয়ের কার্ড বুকে জড়িয়ে কান্না করতে দেখা গেছে। তাসমিয়া ঈসমাইল
তাম্মির মামাতো ভাই আবদুল্লাহ আল মাসুদ রুমেল জানিয়েছেন, বিয়ের কার্ড
দেরিতে পাওয়ায় সকালে বোনের সঙ্গে অভিমানী সুরে কথা বলেছিলেন তিনি। কিন্তু
বোন যাওয়ার সময় বিয়েতে সবার আগে তাকে উপস্থিত হওয়ার জন্য ওয়াদা করিয়ে যায়।
তিনি বলেন, এখন কার বিয়েতে যাবো আমি? জানাযায়, তাসমিয়ারা ৩ ভাই বোন। একভাই ও
২ বোনের মধ্যে তাসমিয়া মেজো। তিনি এবার ঢাকার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
মাস্টার্স শেষ করেছেন। কয়েকদিন আগে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী তাহমিদ হাসান
রাইতুল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার ‘নিকাহ’ হয়েছিল। রাইতুল চট্টগ্রাম শহরের
ও আর নিজাম রোড এলাকার এএমএম তোহা ও শিরিন আকতারের পুত্র।
No comments