আন্তর্জাতিক মানের স্থাপত্য ইনস্টিটিউট চালুর ঘোষণা
বক্তব্য দেন স্থপতি ফুমিহিকো মাকি |
স্থাপত্য,
নকশা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দিতে ও গবেষণার
মান বাড়াতে চালু হচ্ছে বেঙ্গল আর্কিটেকচার অ্যান্ড ডিজাইন ইনস্টিটিউট। এটি
হবে আন্তর্জাতিক মানের একটি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। ‘এনগেজ ঢাকা
২০১৫’ শীর্ষক তিন দিনের আন্তর্জাতিক স্থাপত্য সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে গতকাল
শুক্রবার এই ঘোষণা দেওয়া হয়। রাজধানীর বিজয় সরণির সামরিক জাদুঘর মাঠে এই
সম্মেলনের আয়োজন করেছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন।
এ ছাড়া গতকাল প্রিট্জকার অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী জাপানের বয়োজ্যেষ্ঠ স্থপতি ফুমিহিকো মাকিসহ কয়েকজন খ্যাতনামা স্থপতি তাঁদের স্থাপত্যকর্ম প্রদর্শন এবং স্থাপত্যচিন্তা ও দর্শন নিয়ে আলোচনা করেন। এই আয়োজনের সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার। রেডিও পার্টনার এবিসি রেডিও এবং সম্প্রচার সহযোগী চ্যানেল আই। মিডিয়া পার্টনার আইস মিডিয়া। বিকেলে নতুন ইনস্টিটিউট চালুর ঘোষণায় জানানো হয়, আগামী আগস্ট থেকে এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে। এটির শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন দেশি-বিদেশি খ্যাতিমান স্থপতি, ইতিহাসবিদ, পেশাজীবী শিক্ষকেরা।
এ সময় স্থপতি সামসুল ওয়ারেস বলেন, একটি ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জ্ঞানের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করে। দেশে বর্তমানে ২০টির মতো স্থাপত্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। তা সত্ত্বেও স্থাপত্যের মতো উদ্ভাবনী বিষয়ে জ্ঞান আহরণে ভালো একটি প্রতিষ্ঠানের বিকল্প নেই।
বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, ‘শিল্পকলার সর্বোচ্চ স্তর বা রূপ হচ্ছে স্থাপত্য। যদিও আমাদের দেশের ৮০ শতাংশ মানুষের এ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। তাই স্থাপত্যকলা বিষয়ে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি ও এটির গুরুত্ব বিবেচনায় সম্মেলন আয়োজনের পাশাপাশি এ-বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক মানের ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
এ সময় আরও বক্তব্য দেন বেঙ্গল আর্কিটেকচার অ্যান্ড ডিজাইন ইনস্টিটিউটের পরিচালক কাজী খালিদ আশরাফ ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চীনের বিখ্যাত ল্যান্ডস্কেপ স্থপতি কনজিয়ান ইয়ু। কনজিয়ান ইয়ুও এই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থাপত্যকর্ম প্রদর্শন: গতকাল সকাল থেকে সম্মেলনে আমন্ত্রিত বিশ্বের খ্যাতিমান ব্যক্তিরা স্থাপত্যকলার বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। তাঁরা বিশ্বের প্রসিদ্ধ বিভিন্ন স্থাপত্য নিদর্শন তুলে ধরে সেগুলোর খুঁটিনাটি দিক বিশ্লেষণ করেন। তাঁরা নকশানির্ভর স্থাপনার পরিবর্তে প্রকৃতি, স্থান, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরে স্থাপত্যবিদ্যা চর্চার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে স্থপতিরা কীভাবে একটি স্থাপনাকে অনন্য করে তুলতে পারেন, তারও ধারণা দেন।
ফুমিহিকো মাকি প্রজেক্টরের মাধ্যমে তুলে ধরেন ‘মাকি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’-এর নির্মিত এবং বর্তমানে নির্মাণাধীন আন্তর্জাতিক বিভিন্ন স্থাপনা-প্রকল্প। এর মধ্যে রয়েছে ২০০৭ সালে সিঙ্গাপুরে নির্মিত রিপাবলিক পলিটেকনিক, জাপানের মিহারা পারফর্মিং আর্টস সেন্টার। নিউইয়র্কে নির্মাণাধীন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার (নির্মাণ শেষ হবে ২০১৫ সালে), সিঙ্গাপুরের মিডিয়া করপোরেশন, ভারতের বিহার মিউজিয়াম এবং চীনে শেনজেন সি ওয়ার্ল্ড কালচারাল আর্টস সেন্টার, নির্মাণাধীন বৈরুত’স ব্লক ২০-২০ অফিস টাওয়ার (নির্মাণ শেষ হবে ২০১৭ সালে)। অধিবেশনে মাকিকে ঘিরে টুইন টাওয়ার প্রকল্পের ওপর একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়।
স্থাপত্যকর্ম প্রদর্শনকালে মাকি মানবতার জন্য স্থাপত্যের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, অবয়ব ও পরিচয়, প্রকৃতি ও সংস্কৃতি—এই বিষয়গুলো পারস্পরিক নির্ভরশীল। সেদিক থেকে মানুষ, প্রকৃতি ও মহাবিশ্বের পরস্পরের নৈসর্গিক সম্পর্কের ভারসাম্য ক্ষুণ্ন হয়—এমন কিছু করা উচিত নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, স্থাপত্য-ইতিহাসবিদ অধ্যাপক কাজী খালেদ আশরাফ স্থাপত্যকর্ম প্রদর্শনকালে বলেন, দিন পাল্টানোর সঙ্গে মানুষের পছন্দ পাল্টাচ্ছে। স্থাপত্য এখন একটি সংস্কৃতি। মানুষ আজ মজবুত ভবনের পাশাপাশি স্থাপনার সৌন্দর্যের প্রতিও আগ্রহ রাখছে।
ভারতের অরোভিল এবং স্পেনের মাদ্রিদে কর্মরত স্থপতি অনুপমা কুন্ডু তাঁর স্থাপত্যকর্ম প্রদর্শন করেন। প্রদর্শনীতে উঠে আসে বিভিন্ন স্থানের মানুষকে ঘিরে অনুপমার স্থাপত্যকাজের বিবরণ।
স্থাপত্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন মাদ্রিদের হেক্টর ফার্নান্দেজ এলোরজা এবং হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জন লিন।
বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী অদিতি মহসিন ও সরোদশিল্পী রাজরূপা চৌধুরীর পরিবেশনা দিয়ে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের আয়োজন শেষ হয়।
‘এনগেজ ঢাকা ২০১৫’ শীর্ষক স্থাপত্য সম্মেলনের আয়োজন করা হয় নতুন ধরনের চিন্তা থেকে। আয়োজকদের মতে, শুধু নকশা প্রণয়ন, ত্রিমাত্রিক গঠন ও অট্টালিকা নির্মাণের সংকীর্ণতর গণ্ডির মধ্যে স্থাপত্যচর্চাকে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। এতে স্থাপত্যরুচির পথ অনালোকিত এবং অবরুদ্ধ হয়, প্রশ্রয় পায় অনুকরণপ্রিয়তা।
এ ছাড়া গতকাল প্রিট্জকার অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী জাপানের বয়োজ্যেষ্ঠ স্থপতি ফুমিহিকো মাকিসহ কয়েকজন খ্যাতনামা স্থপতি তাঁদের স্থাপত্যকর্ম প্রদর্শন এবং স্থাপত্যচিন্তা ও দর্শন নিয়ে আলোচনা করেন। এই আয়োজনের সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার। রেডিও পার্টনার এবিসি রেডিও এবং সম্প্রচার সহযোগী চ্যানেল আই। মিডিয়া পার্টনার আইস মিডিয়া। বিকেলে নতুন ইনস্টিটিউট চালুর ঘোষণায় জানানো হয়, আগামী আগস্ট থেকে এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে। এটির শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন দেশি-বিদেশি খ্যাতিমান স্থপতি, ইতিহাসবিদ, পেশাজীবী শিক্ষকেরা।
এ সময় স্থপতি সামসুল ওয়ারেস বলেন, একটি ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জ্ঞানের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করে। দেশে বর্তমানে ২০টির মতো স্থাপত্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। তা সত্ত্বেও স্থাপত্যের মতো উদ্ভাবনী বিষয়ে জ্ঞান আহরণে ভালো একটি প্রতিষ্ঠানের বিকল্প নেই।
বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, ‘শিল্পকলার সর্বোচ্চ স্তর বা রূপ হচ্ছে স্থাপত্য। যদিও আমাদের দেশের ৮০ শতাংশ মানুষের এ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। তাই স্থাপত্যকলা বিষয়ে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি ও এটির গুরুত্ব বিবেচনায় সম্মেলন আয়োজনের পাশাপাশি এ-বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক মানের ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
এ সময় আরও বক্তব্য দেন বেঙ্গল আর্কিটেকচার অ্যান্ড ডিজাইন ইনস্টিটিউটের পরিচালক কাজী খালিদ আশরাফ ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চীনের বিখ্যাত ল্যান্ডস্কেপ স্থপতি কনজিয়ান ইয়ু। কনজিয়ান ইয়ুও এই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থাপত্যকর্ম প্রদর্শন: গতকাল সকাল থেকে সম্মেলনে আমন্ত্রিত বিশ্বের খ্যাতিমান ব্যক্তিরা স্থাপত্যকলার বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। তাঁরা বিশ্বের প্রসিদ্ধ বিভিন্ন স্থাপত্য নিদর্শন তুলে ধরে সেগুলোর খুঁটিনাটি দিক বিশ্লেষণ করেন। তাঁরা নকশানির্ভর স্থাপনার পরিবর্তে প্রকৃতি, স্থান, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরে স্থাপত্যবিদ্যা চর্চার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে স্থপতিরা কীভাবে একটি স্থাপনাকে অনন্য করে তুলতে পারেন, তারও ধারণা দেন।
ফুমিহিকো মাকি প্রজেক্টরের মাধ্যমে তুলে ধরেন ‘মাকি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’-এর নির্মিত এবং বর্তমানে নির্মাণাধীন আন্তর্জাতিক বিভিন্ন স্থাপনা-প্রকল্প। এর মধ্যে রয়েছে ২০০৭ সালে সিঙ্গাপুরে নির্মিত রিপাবলিক পলিটেকনিক, জাপানের মিহারা পারফর্মিং আর্টস সেন্টার। নিউইয়র্কে নির্মাণাধীন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার (নির্মাণ শেষ হবে ২০১৫ সালে), সিঙ্গাপুরের মিডিয়া করপোরেশন, ভারতের বিহার মিউজিয়াম এবং চীনে শেনজেন সি ওয়ার্ল্ড কালচারাল আর্টস সেন্টার, নির্মাণাধীন বৈরুত’স ব্লক ২০-২০ অফিস টাওয়ার (নির্মাণ শেষ হবে ২০১৭ সালে)। অধিবেশনে মাকিকে ঘিরে টুইন টাওয়ার প্রকল্পের ওপর একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়।
স্থাপত্যকর্ম প্রদর্শনকালে মাকি মানবতার জন্য স্থাপত্যের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, অবয়ব ও পরিচয়, প্রকৃতি ও সংস্কৃতি—এই বিষয়গুলো পারস্পরিক নির্ভরশীল। সেদিক থেকে মানুষ, প্রকৃতি ও মহাবিশ্বের পরস্পরের নৈসর্গিক সম্পর্কের ভারসাম্য ক্ষুণ্ন হয়—এমন কিছু করা উচিত নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, স্থাপত্য-ইতিহাসবিদ অধ্যাপক কাজী খালেদ আশরাফ স্থাপত্যকর্ম প্রদর্শনকালে বলেন, দিন পাল্টানোর সঙ্গে মানুষের পছন্দ পাল্টাচ্ছে। স্থাপত্য এখন একটি সংস্কৃতি। মানুষ আজ মজবুত ভবনের পাশাপাশি স্থাপনার সৌন্দর্যের প্রতিও আগ্রহ রাখছে।
ভারতের অরোভিল এবং স্পেনের মাদ্রিদে কর্মরত স্থপতি অনুপমা কুন্ডু তাঁর স্থাপত্যকর্ম প্রদর্শন করেন। প্রদর্শনীতে উঠে আসে বিভিন্ন স্থানের মানুষকে ঘিরে অনুপমার স্থাপত্যকাজের বিবরণ।
স্থাপত্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন মাদ্রিদের হেক্টর ফার্নান্দেজ এলোরজা এবং হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জন লিন।
বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী অদিতি মহসিন ও সরোদশিল্পী রাজরূপা চৌধুরীর পরিবেশনা দিয়ে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের আয়োজন শেষ হয়।
‘এনগেজ ঢাকা ২০১৫’ শীর্ষক স্থাপত্য সম্মেলনের আয়োজন করা হয় নতুন ধরনের চিন্তা থেকে। আয়োজকদের মতে, শুধু নকশা প্রণয়ন, ত্রিমাত্রিক গঠন ও অট্টালিকা নির্মাণের সংকীর্ণতর গণ্ডির মধ্যে স্থাপত্যচর্চাকে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। এতে স্থাপত্যরুচির পথ অনালোকিত এবং অবরুদ্ধ হয়, প্রশ্রয় পায় অনুকরণপ্রিয়তা।
No comments