সব ধর্মকে সুরক্ষা দেবে ফ্রান্স
ফ্রান্স সব ধর্মকে সুরক্ষা দেবে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলান্দ। একই সঙ্গে তিনি স্বীকার করেছেন চরমপন্থার প্রধান ভুক্তভোগী মুসলিম সম্প্রদায়। বৃহস্পতিবার আরব ওয়ার্ল্ড ইন্সটিটিউটকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেছেন। ইসলামসহ সব ধর্মকে সুরক্ষার ঘোষণাকে ‘ভণ্ডামি’ হিসেবে দেখছেন মুসলিম বিশ্বের অনেকেই। একদিকে ধর্মকে সুরক্ষা দেয়ার কথা বলে অন্যদিকে ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে অবমাননায় সরাসরি রাষ্ট্রীয় সহায়তা দেয়া হয়। ফ্রান্সেই মুসলিম নারীদের জন্য বোরকা পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত সপ্তাহে প্যারিসে হামলার নিন্দায় সব মুসলিম এগিয়ে এলেও বিতর্কিত কার্টুন আঁকা বন্ধে কোনো উদ্যোগ নেয়নি ফরাসি সরকার। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, আরব মুসলিমদের ওলান্দ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তার দেশকে সংহতি জানানোর জন্য। ওলান্দ বলেন, ইসলাম গণতন্ত্রের সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি বলেন, অন্যান্য ফরাসির মতো মুসলিম ফরাসিদেরও একই অধিকার রয়েছে। কার্টুনিস্টদের মৃত্যুর জন্য সম্পাদক দায়ী : বিতর্কিত ফরাসী সাময়িকী শার্লি হেবদোর কার্টুনিস্টদের মৃত্যুর জন্য পত্রিকাটির নিহত সম্পাদককেই দায়ী করলেন পত্রিকাটির একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। আল জাজিরা। শার্লি হেবদোর এই প্রতিষ্ঠাতা বলেন, সম্পাদক স্টেফান শার্বনিয়ার ক্রমবর্ধমানভাবে উস্কানিমূলক ও বিদ্রুপাত্মক কার্টুন ছাপিয়ে নিজের ও তার দলের মৃত্যু ডেকে এনেছেন। ৮০ বছর বয়সী হেনরি রাসেল যিনি ১৯৭০ সালে এই সাপ্তাহিক পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যা প্রকাশে অবদান রেখেছিলেন তিনি ফ্রান্সের বামপন্থী ম্যাগাজিন ‘নুভেল অবসে’ নিহত সম্পাদকের উদ্দেশে লিখেছেন,
‘আমি বাস্তবিকই আপনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি’। শার্বনিয়ারকে ‘বিস্ময় বালক’ আখ্যায়িত করে হেনরি বলেন, তিনি একজন জেদি মাথা পাগলাও ছিলেন। মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষোভের আগুন : ফ্রান্সের বিতর্কিত শার্লি হেবদো ম্যাগাজিনের নতুন সংখ্যায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে নিয়ে অবমাননাকর কার্টুন প্রচ্ছদ প্রকাশ করায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। কেউ কেউ প্রকাশ্যে বিক্ষোভে নামলেও অধিকাংশই ধৈর্য্য ধরাকে শ্রেয় মনে করছেন। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ধর্ম-সংক্রান্ত আপত্তিকর বিদেশী উপাদান প্রকাশের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। আল আজহার বিশ্ববিদ্যারয়ের ইসলামী স্কলাররা ‘অনৈতিক’ কার্টুনকে উপেক্ষা করে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নি স্কলারদের সংগঠন দার-আল ইফতা ফরাসি সংবাদপত্রে মুহাম্মদ (সা.)-এর অবমাননাকর কার্টুনের সমালোচনা করে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন ‘এ ধরনের ধর্ম অব্যাহত রাখলে তা ফ্রান্স ও পশ্চিমা সমাজে ঘৃণার বিস্তার ঘটাবে। এতে প্রমাণিত হয় মুসলিমের সঙ্গে সহাবস্থানে তারা বিশ্বাসী নয়।’ এদিকে মিসর ও তুরস্কের কেউ কেউ স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকার ও ব্লাসফেমি আইন তুলে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। ব্লাসফেমির আওতায় সম্প্রতি নাস্তিকতার অভিযোগে ২১ বছরের এক শিক্ষার্থীকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন মিসরের আদালত। হিজবুল্লাহ : লেবাননের শিয়া গ্র“প হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নসরুল্লাহ বলেছেন, ‘এটা বিশ্বের দেড়শ কোটি মুসলমানকে উসকে দেয়ার প্ররোচণা। এ ধরনের পদক্ষেপ সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা বাড়াতে সরাসরি অবদান রাখেন।’ নিউইয়র্ক টাইমস।
তালেবান : এদিকে আফগানিস্তানের তালেবান গ্র“প এক বিবৃতিতে নতুন কার্টুনের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘ফরাসি ম্যাগাজিন ঘৃণ্য ও অমানবিক কাজ করেছে। এর প্রকাশক ও সমর্থকরা মানবতার শত্রু।’ বিবিসি।
No comments