খোকন রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলার রায় আজ
ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার মেয়র ও বিএনপি নেতা পলাতক এমএ জাহিদ হোসেন খোকনের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় আজ। বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক। রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল রায় ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
১৭ এপ্রিল এ মামলার বিচার কার্যক্রম শেষে ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা অপেক্ষমাণ (সিএভি-কেস অ্যাওয়েটিং ভারডিক্ট) রাখেন। ২০১৩ সালের ১৪ আগস্ট জাহিদকে পলাতক ঘোষণা করে তার অনুপস্থিতিতেই মামলার কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। পলাতক থাকায় তার পক্ষে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আবদুস শুকুর খানকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। এর আগে তাকে ১০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়ে দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। তবে তিনি হাজির হননি। গত বছরের ৯ অক্টোবর জাহিদ হোসেনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ১১টি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল।অভিযোগ গঠনের আদেশে বলা হয়, জাহিদ হোসেন ওরফে খোকন রাজাকার একাত্তরের ২১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত নগরকান্দায় পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী হিসেবে হত্যা, ধর্ষণ, ধর্মান্তরিত করা, দেশান্তরে বাধ্য করা, অগ্নিসংযোগ প্রভৃতি মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।একাত্তরে ১৬ জন নারী-শিশুসহ ৫০ জন নিরস্ত্র গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ঘরে আগুন দিয়ে তিনজনকে পুড়িয়ে হত্যা, দুজনকে ধর্ষণ, ১৭ জনকে আটক রেখে নির্যাতন, নয়জনকে ধর্মান্তরে বাধ্য করা, ১০টি গ্রামের দুটি মন্দিরসহ অসংখ্য বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ, সন্তানসহ সাতজনকে দেশত্যাগে বাধ্য করা প্রভৃতি অভিযোগ রয়েছে।২১ নভেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। তদন্ত কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেন ২৪ জন। আসামিপক্ষে কোনো সাক্ষী হাজির করতে পারেননি রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী। ১৭ এপ্রিল জাহিদ হোসেনের বিরুদ্ধে মামলায় চূড়ান্ত যুক্তি উপস্থাপন করেন আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আবদুস শুকুর খান। তিনি বলেন, সাক্ষীরা বলেছেন, অপরাধ সংঘটনের সময় জাহিদ হোসেনের সঙ্গে অন্য রাজাকাররাও সম্পৃক্ত ছিল। কিন্তু এখানে শুধু জাহিদ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়নি। মামলার তদন্তে ও আসামি করার ক্ষেত্রে ত্র“টি রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।গণহত্যার অভিযোগ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনাল যুক্তি দিতে বললে আবদুস শুকুর বলেন, আসামিপক্ষের প্রধান যুক্তি হচ্ছে, এমএ জাহিদ হোসেন এবং খোকন রাজাকার এক ব্যক্তি নন। সাক্ষীরা তাদের বক্তব্যে আসামিকে খোকন রাজাকার নামে উল্লেখ করেছেন। এ জন্য তিনি অভিযোগের বিষয়ে আর কোনো যুক্তি দিতে চান না।এর আগে যুক্তিতে রাষ্ট্রপক্ষ বলেন, একাত্তরে নগরকান্দায় খোকন রাজাকার নামে জাহিদ হোসেন বেশি পরিচিত ছিলেন। সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোকলেছুর রহমান দাবি করেন, জাহিদ হোসেনের বিরুদ্ধে গঠিত সব অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে। এ জন্য তিনি জাহিদ হোসেনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন। পরে ট্রাইব্যুনাল এ মামলার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করে রায় অপেক্ষমাণ রাখেন।এটি হবে পলাতক আসামি হিসেবে মানবতাবিরোধী অপরাধের তৃতীয় মামলার রায়। প্রথমটি হল জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সদস্য (রুকন) আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে মামলা। ট্রাইব্যুনালের জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে পুলিশ তার বাড়িতে যাওয়ার আগেই তিনি পালিয়ে যান। তাকে পলাতক ঘোষণা করে তার অনুপস্থিতিতেই বিচার হয়, গত বছরের ২১ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনাল-২ তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। অপর মামলায় পলাতক দুই আলবদর নেতা চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানকে বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিতভাবে নিধনের দায়ে গত বছরের ৩ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। এ দুজন মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরপরই বিদেশে পালিয়ে যান। বর্তমানে মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যে ও আশরাফুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত সংস্থা জানায়, নগরকান্দা পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি জাহিদ হোসেন পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। মেয়র হিসেবে শপথ নেয়ার পর জাহিদ হোসেন দেশ ছেড়ে পালান। সর্বশেষ তথ্যমতে, তিনি বর্তমানে সুইডেনে আছেন।
১৭ এপ্রিল এ মামলার বিচার কার্যক্রম শেষে ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা অপেক্ষমাণ (সিএভি-কেস অ্যাওয়েটিং ভারডিক্ট) রাখেন। ২০১৩ সালের ১৪ আগস্ট জাহিদকে পলাতক ঘোষণা করে তার অনুপস্থিতিতেই মামলার কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। পলাতক থাকায় তার পক্ষে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আবদুস শুকুর খানকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। এর আগে তাকে ১০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়ে দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। তবে তিনি হাজির হননি। গত বছরের ৯ অক্টোবর জাহিদ হোসেনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ১১টি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল।অভিযোগ গঠনের আদেশে বলা হয়, জাহিদ হোসেন ওরফে খোকন রাজাকার একাত্তরের ২১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত নগরকান্দায় পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী হিসেবে হত্যা, ধর্ষণ, ধর্মান্তরিত করা, দেশান্তরে বাধ্য করা, অগ্নিসংযোগ প্রভৃতি মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।একাত্তরে ১৬ জন নারী-শিশুসহ ৫০ জন নিরস্ত্র গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ঘরে আগুন দিয়ে তিনজনকে পুড়িয়ে হত্যা, দুজনকে ধর্ষণ, ১৭ জনকে আটক রেখে নির্যাতন, নয়জনকে ধর্মান্তরে বাধ্য করা, ১০টি গ্রামের দুটি মন্দিরসহ অসংখ্য বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ, সন্তানসহ সাতজনকে দেশত্যাগে বাধ্য করা প্রভৃতি অভিযোগ রয়েছে।২১ নভেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। তদন্ত কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেন ২৪ জন। আসামিপক্ষে কোনো সাক্ষী হাজির করতে পারেননি রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী। ১৭ এপ্রিল জাহিদ হোসেনের বিরুদ্ধে মামলায় চূড়ান্ত যুক্তি উপস্থাপন করেন আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আবদুস শুকুর খান। তিনি বলেন, সাক্ষীরা বলেছেন, অপরাধ সংঘটনের সময় জাহিদ হোসেনের সঙ্গে অন্য রাজাকাররাও সম্পৃক্ত ছিল। কিন্তু এখানে শুধু জাহিদ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়নি। মামলার তদন্তে ও আসামি করার ক্ষেত্রে ত্র“টি রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।গণহত্যার অভিযোগ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনাল যুক্তি দিতে বললে আবদুস শুকুর বলেন, আসামিপক্ষের প্রধান যুক্তি হচ্ছে, এমএ জাহিদ হোসেন এবং খোকন রাজাকার এক ব্যক্তি নন। সাক্ষীরা তাদের বক্তব্যে আসামিকে খোকন রাজাকার নামে উল্লেখ করেছেন। এ জন্য তিনি অভিযোগের বিষয়ে আর কোনো যুক্তি দিতে চান না।এর আগে যুক্তিতে রাষ্ট্রপক্ষ বলেন, একাত্তরে নগরকান্দায় খোকন রাজাকার নামে জাহিদ হোসেন বেশি পরিচিত ছিলেন। সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোকলেছুর রহমান দাবি করেন, জাহিদ হোসেনের বিরুদ্ধে গঠিত সব অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে। এ জন্য তিনি জাহিদ হোসেনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন। পরে ট্রাইব্যুনাল এ মামলার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করে রায় অপেক্ষমাণ রাখেন।এটি হবে পলাতক আসামি হিসেবে মানবতাবিরোধী অপরাধের তৃতীয় মামলার রায়। প্রথমটি হল জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সদস্য (রুকন) আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে মামলা। ট্রাইব্যুনালের জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে পুলিশ তার বাড়িতে যাওয়ার আগেই তিনি পালিয়ে যান। তাকে পলাতক ঘোষণা করে তার অনুপস্থিতিতেই বিচার হয়, গত বছরের ২১ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনাল-২ তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। অপর মামলায় পলাতক দুই আলবদর নেতা চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানকে বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিতভাবে নিধনের দায়ে গত বছরের ৩ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। এ দুজন মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরপরই বিদেশে পালিয়ে যান। বর্তমানে মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যে ও আশরাফুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত সংস্থা জানায়, নগরকান্দা পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি জাহিদ হোসেন পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। মেয়র হিসেবে শপথ নেয়ার পর জাহিদ হোসেন দেশ ছেড়ে পালান। সর্বশেষ তথ্যমতে, তিনি বর্তমানে সুইডেনে আছেন।
No comments