নেহরুর জন্মবার্ষিকীতে আমন্ত্রিত নন মোদি
ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর আসন্ন ১২৫তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কংগ্রেস দল সারা বিশ্বের ৫৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে এই উপলক্ষে দাওয়াত দিলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, তাঁর দল বিজেপি, অকালি দল ও শিবসেনাকে আমন্ত্রণ জানায়নি। এ নিয়ে দৃষ্টিকটূভাবেই সামনে চলে এসেছে দুই দলের সম্পর্কে সাম্প্রতিক টানাপোড়েন। কংগ্রেস মুখপাত্র রাজ্যসভার ডেপুটি লিডার আনন্দ শর্মা গতকাল মঙ্গলবার বলেন, দল তাঁদেরই আমন্ত্রণ জানিয়েছে, যাঁরা নেহরুর আদর্শে বিশ্বাসী ও যে দলগুলোর সঙ্গে কংগ্রেসের যোগাযোগ বহুদিনের। নেহরুর জন্মদিন ১৪ নভেম্বর। সেই দিন রাজধানীতে তালকাটোরা স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী নেহরুর আদর্শ ও নীতিতে বিশ্বাসীদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন। ১৭ ও ১৮ নভেম্বর বিজ্ঞান ভবনে অনুষ্ঠিত হবে এক আন্তর্জাতিক আলোচনা সভা। কংগ্রেস সূত্রের খবর, অন্যদের মধ্যে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টি, দক্ষিণ আফ্রিকার আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও বাংলাদেশের শাসক দল আওয়ামী লীগকে এতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নেহরু-গান্ধী পরিবার ও কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর একটা টানাপোড়েন চলছে।
২ অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে দেশের সমস্ত সরকারি স্কুল ও প্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একইভাবে ১৪ নভেম্বর (নেহরুর জন্মদিন) থেকে ১৯ নভেম্বর (ইন্দিরা গান্ধীর জন্মদিন) পর্যন্ত সারা দেশের সব স্কুলে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ওদের তো এখন আর কিছুই করার নেই। ওরা বরং সরকারের এই অভিযানে শামিল হোক। কংগ্রেসের ক্ষুব্ধ হওয়ার আরেকটি কারণও রয়েছে। ৩১ অক্টোবর কংগ্রেস ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুদিবস পালন করে। ওই দিন দেশের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বাধীনতাসংগ্রামী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলেরও জন্মদিন। সরকারিভাবে ওই দিনটি প্যাটেলের সম্মানে ‘একতা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। সরকারিভাবে ইন্দিরার মৃত্যুদিন পালিত হয় না। কংগ্রেস সমালোচনা করায় বিজেপি জবাবে বলে, কংগ্রেস নেহরু-গান্ধীর নজরের বাইরে ইতিহাসকে দেখতে চায় না। রেষারেষির সাম্প্রতিকতম নজির মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ নিয়ে। রাষ্ট্রপতি ভবনের অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী অনুপস্থিত ছিলেন। কংগ্রেস বলেছে, রোববারের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ সেই দিনেই একেবারে শেষ সময়ে পাঠানো হয়েছিল। মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ নিয়ে কংগ্রেস মোদি সরকারের কড়া সমালোচনা করেছে। তবে জাতীয় রাজনীতির বিভিন্ন অভিযোগ ও সমালোচনা স্বাভাবিক হলেও আন্তর্জাতিক স্তরের অনুষ্ঠানে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ না জানানো কংগ্রেস ও মোদি দুজনের পক্ষেই নিতান্ত বিড়ম্বনার। কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্ত নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।
No comments