চট্টগ্রামে স্বপ্নিল সূচনা by ইশতিয়াক পারভেজ
তামিম ইকবালের তখন ৯৮ রান। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ২ রান দূরে। তখনই ইমরুল কায়েসকে দেখা গেল কিছু একটা বলছেন। পার্টনার তামিমকে দেয়া সেই মন্ত্রটায় শেষ পর্যন্ত কাজও হলো। টেস্ট ক্যারিয়ারে ৬ষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নিলেন তামিম। ইমরুলের বলা সেই কথা কি ছিল? ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তামিমকে প্রশ্নটি করতেই তিনি ইমরুলকে উত্তরটা দিতে বললেন। ইমরুল বলেন, ‘আসলে আমি বলেছিলাম আর মাত্র ২টা রান লাগবে। যদি তাড়াহু ড়ো করতে যাই রান আউট হয়ে যেতে পারি। যদি উইকেটে থাকি তাহলে রান আসবেই।’ একই ভাবে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিতে রেকর্ড উপহার দেয়ার পথে তাদের দেখা গেল বেশ কয়েকবার একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে। ইমরুল কায়েসও শেষ পর্যন্ত টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন। তাদের সেই অসাধারণ বোঝাপড়াটাই ছিল রানের চাকা সচল রাখার আসল হেতু। আর শেষ পর্যন্ত ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ ২২৪ রানের জুটি। সেই সুবাদে সাগরিকায় প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোর বোর্ডে ৯০ ওভারে ৩০৩ রান ২ উইকেট হারিয়ে। নিজেদের এই বোঝাপড়া নিয়ে তামিম বলেন, ‘এটা সত্য যে, আমি আর ইমরুল দু’জন দু’জনকে বুঝি বিশেষ করে ব্যাটিংটা। আর এই কারণেই আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা খুব ভাল হয়। ৫৫-৬৫ রান করার সময় আমি একটু বাজে শট খেলছিলাম। তখনও ইমরুল আমাকে শান্ত করে। আর সেই কারণেই সেঞ্চুরিটা চলে এসেছে।’ আজ জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে ৪৬ রানে মুমিনুল ও ৫ রান করে অপরাজিত থাকা মাহমুদুল্লাহ দ্বিতীয় দিন শুরু করবে। এর আগে বাংলাদেশ একদিনে ৩ শ’ রান তুলতে এত কম উইকেট হারায়নি। ২০১২ সালে খুলনায় বাংলাদেশ একদিনে সর্বোচ্চ ৩৬৫ রান সংগ্রহ করলেও উইকেট হারিয়েছিল ৮টি। আর ৩০৩ রান করে একদিনে মাত্র ২টি উইকেট হারানো এটি বাংলাদেশের জন্য প্রথম। আর চট্টগ্রামে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ের ম্যাচে এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের একদিনে এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই সংগ্রহ ছিল ২৮০ রান ৪ উইকেট হারিয়ে। আর জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের একদিনে সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল ২৫৫ রান ৪ উইকেট হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। গতকাল সাগরিকায় একদিনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এমন শক্ত ভিত গড়তে তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে এসেছে ১০৯ ও ইমরুলের ক্যারিয়ার সেরা ১৩০ রান। প্রায় তিন বছর পর ইমরুল এই বছর এই চট্টগ্রামে টেস্ট খেলতে নামে। তখন মাঠে ফিরেই ক্যারিয়ারে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকান। এরপর দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি আসে আবারও এই মাঠেই। তামিম ইকবাল তার টেস্টে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় বারের মতো ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি হাঁকান। সাগরিকায় গতকাল ইমরুল হাঁকান ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি। খুলনায় ১০৯ রান করতে তামিম খেলেছিলেন ৩৩২ বল। কিন্তু গতকাল ১০৯ রান করতে খেলেছেন মাত্র ১৭১টি বল। নিজের এমন ইনিংস নিয়ে তামিম বলেন, ‘আসলে আমি বলবো এই সেঞ্চুরির চেয়ে খুলনারটি সবচেয়ে বেশি কঠিন ছিল। কারণ উইকেট ফ্লাট মনে হলেও সেখানে টিকে থাকা ছিল কঠিন। আর একটি বিষয় আমি আমার টেস্ট ক্যারিয়ারে একদিন টিকে থেকে আগে ব্যাট করিনি। সেটি ছিল প্রথম। তাই সারাদিনে আমি করেছিলাম ৭৪ রান এটি আমার জন্য বেশ কঠিন ছিল। আর এখানে খুব সহজ না হলেও আত্মবিশ্বাসী ছিলাম।’ তবে নিজের ৬টি টেস্ট সেঞ্চুরির কোনটিকে বড় করে দেখতে চান না। তিনি বলেন, ‘আমার সবগুলো সেঞ্চুরিই আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।’ দলীয় ২২৪ রানের সময় বাজে একটি শট খেলতে গিয়ে অবশ্য সিকান্দার রাজার শিকার হন তামিম অন্যদিকে তামিম ইকবালের বিদায়ের পর মুমিনুলকে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়ার পথে ২৭৫ বল খেলে ১৩০ রান করে আউট হন ইমরুল।
অন্যদিকে বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিং সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী জুটি এখন ইমরুল-তামিম ইকবালেরই। এই দু’জনের ব্যাটে ২০০৮ সাল থেকে এই পর্যন্ত ৩৩ ইনিংসে ওপেনিং জুটিতে এসেছে ১৪৫৩ রান। ওপেনিং দ্বিতীয় সেরা জুটিতেও আছেন তামিম ইকবালের বড় ভাই নাফিস ইকবাল ও জাবেদ ওমর। তাদের সংগ্রহ ছিল ১৯ ইনিংসে ৬৬৫ রান। বলা চলে বাংলাদেশের ১৪ বছরে টেস্ট ক্যারিয়ারে ওপেন করতে নেমে এই এখন পর্যন্ত ইমরুল ও তামিমই সেরা। ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের শত রানের জুটি এত দিন ছিল মাত্র ৪টি। আগের এই চার সেরা জুটির তিনটিতেই ইমরুল কায়েস ও তামিম ইকবালের অবদান। গতকাল এই দু’জন আবারও ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের সেরা জুটির রেকর্ড উপহার দিলেন। শুধু কি তাই, এখন পর্যন্ত কোন ওপেনিং জুটিতেই আসেনি জোড়া সেঞ্চুরিও। কিন্তু সাগরিকায় ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের জোড়া সেঞ্চুরিতে ২২৪ রান সংগ্রহ করে নিজের ২০১০ সালে লর্ডসে গড়া ১৮৫ রানের রেকর্ড ভাঙেন তারা। বাংলাদেশের সব উইকেটে রানের জুটির দিক থেকে এটি বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটি। ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা জুটি ছিল এই পর্যন্ত জুনায়েদ ও তামিম ইকবালের নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডুনেডিনে ১৬১ রান। তবে ওপেনিং বাংলাদেশের মাটিতে গতকালেরটি সর্বোচ্চ রানের জুটি। দেশের মাটিতে ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জাবেদ ওমর ও নাফিস ইকবালের ১৩৩ রান।
ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের সেরা ৫ জুটি :
জুটি রান প্রতিপক্ষ ভেন্যু/সাল
ইমরুল-তামিম ২২৪ জিম্বাবুয়ে চট্টগ্রাম/২০১৪
ইমরুল-তামিম ১৮৫ ইংল্যান্ড লর্ডস/ ২০১০
জুনায়েদ-তামিম ১৬১ নিউজিল্যান্ড ডুনেডিন/২০০৮
জাবেদ-নাফিস ইকবাল ১৩৩ জিম্বাবুয়ে ঢাকা/২০০৫
ইমরুল-তামিম ১২৬ ইংল্যান্ড ম্যানচেষ্টার/২০১০
অন্যদিকে বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিং সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী জুটি এখন ইমরুল-তামিম ইকবালেরই। এই দু’জনের ব্যাটে ২০০৮ সাল থেকে এই পর্যন্ত ৩৩ ইনিংসে ওপেনিং জুটিতে এসেছে ১৪৫৩ রান। ওপেনিং দ্বিতীয় সেরা জুটিতেও আছেন তামিম ইকবালের বড় ভাই নাফিস ইকবাল ও জাবেদ ওমর। তাদের সংগ্রহ ছিল ১৯ ইনিংসে ৬৬৫ রান। বলা চলে বাংলাদেশের ১৪ বছরে টেস্ট ক্যারিয়ারে ওপেন করতে নেমে এই এখন পর্যন্ত ইমরুল ও তামিমই সেরা। ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের শত রানের জুটি এত দিন ছিল মাত্র ৪টি। আগের এই চার সেরা জুটির তিনটিতেই ইমরুল কায়েস ও তামিম ইকবালের অবদান। গতকাল এই দু’জন আবারও ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের সেরা জুটির রেকর্ড উপহার দিলেন। শুধু কি তাই, এখন পর্যন্ত কোন ওপেনিং জুটিতেই আসেনি জোড়া সেঞ্চুরিও। কিন্তু সাগরিকায় ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের জোড়া সেঞ্চুরিতে ২২৪ রান সংগ্রহ করে নিজের ২০১০ সালে লর্ডসে গড়া ১৮৫ রানের রেকর্ড ভাঙেন তারা। বাংলাদেশের সব উইকেটে রানের জুটির দিক থেকে এটি বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটি। ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা জুটি ছিল এই পর্যন্ত জুনায়েদ ও তামিম ইকবালের নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডুনেডিনে ১৬১ রান। তবে ওপেনিং বাংলাদেশের মাটিতে গতকালেরটি সর্বোচ্চ রানের জুটি। দেশের মাটিতে ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জাবেদ ওমর ও নাফিস ইকবালের ১৩৩ রান।
ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের সেরা ৫ জুটি :
জুটি রান প্রতিপক্ষ ভেন্যু/সাল
ইমরুল-তামিম ২২৪ জিম্বাবুয়ে চট্টগ্রাম/২০১৪
ইমরুল-তামিম ১৮৫ ইংল্যান্ড লর্ডস/ ২০১০
জুনায়েদ-তামিম ১৬১ নিউজিল্যান্ড ডুনেডিন/২০০৮
জাবেদ-নাফিস ইকবাল ১৩৩ জিম্বাবুয়ে ঢাকা/২০০৫
ইমরুল-তামিম ১২৬ ইংল্যান্ড ম্যানচেষ্টার/২০১০
No comments