প্রমাণের অভাবে ৯৮ শতাংশ ধর্ষক পার পেয়ে যায়
সরকারি কৌঁসুলিদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, প্রমাণের অভাবে ৯৮ শতাংশ ধর্ষক পার পেয়ে যায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে 'হিউম্যান রাইটস ইন বাংলাদেশ: পাস্ট, প্রেজেন্ট, ফিউচার' শীর্ষ মানবাধিকার-বিষয়ক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ বিভাগ ও প্রকাশনা সংস্থা ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল)। অনুষ্ঠানে ড. মিজানুর রহমান বলেন, “আমাদের দেশে ধর্ষককে নির্দোষ হিসেবে বিবেচনা করে আইনি প্রক্রিয়া এগোয়; আর সে কারণে ধর্ষণের অপরাধ প্রমাণ করার পর শাস্তি হয়। কিন্তু প্রমাণের অভাবে ৯৮ শতাংশের বেশি ধর্ষক পার পেয়ে যায়।” রাষ্ট্রীয় কৌঁসুলিদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে মানবাধিকার চেয়ারম্যান বলেন, “তাহলে আমাদের রাষ্ট্রীয় কৌঁসুলিরা (পাবলিক প্রসিকিউটররা) কী করেন? যদি তারা কোনো কাজই ঠিকমতো না করেন, তাহলে কেন তাদের বেতন দেয়া হয়?' দুর্নীতির কারণে মানবাধিকার রক্ষা করা সম্ভব হয় না, এ কথা উল্লেখ করে ড. মিজানুর বলেন, “দুর্নীতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জায়গাকে ব্যাহত করে। হয়তো দুর্নীতির কারণে অপরাধীদের শাস্তি হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু দুর্নীতির ফলে জনগণের যে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে, তা জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য ব্যবহার করতে আমরা পারি নাই।” একটি জেলার পুলিশকে নিয়ে তার বক্তব্যের প্রতিবাদে পুলিশের বিবৃতির কথা উল্লেখ করে নিজের আগের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেন কমিশন চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “যত বড় অপরাধী হোক, তার অপরাধ প্রমাণের আগে তাকে কোনোভাবে শাস্তি দেয়া যাবে না।” ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও জেনেসাইড স্টাডিজের পরিচালক ড. ইমতিয়াজ আহমেদে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ ড. বিনায়ক সেন ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির সভাপতি সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ, মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমান ও ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক সায়মা আহমেদসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
No comments