কংগ্রেসের কাছে হাত পাতবেন ওবামা
ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য মার্কিন আইন প্রণেতাদের কাছে অতিরিক্ত ৩২০ কোটি ডলার অর্থ চাইবেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। শুক্রবার বিষয়টি কংগ্রেসের সভায় তোলার কথা রয়েছে। এই তহবিল হতে ইরাকের সরকারি বাহিনীর জন্য অস্ত্র ও প্রশিক্ষণের জন্যও ব্যয় করা হবে। দুজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, বিশাল এই তহবিল আইএস জিহাদিদের বিরুদ্ধে কয়েক সপ্তাহব্যাপী মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিমান হামলার খরচ জোগাতে সহায়তা করবে। এছাড়াও চলমান এই লড়াইয়ে ইরাকের সেনাবাহিনী ও কুর্দি বাহিনীর জন্য স্থলযুদ্ধে সহায়তা করবে।সিরিয়া ও ইরাকে আইএসের উপর বিমান যুদ্ধ কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পেন্টাগনের তথ্যানুযায়ী এ অভিযানে প্রতিদিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৮৩ লাখ ডলার খরচ হচ্ছে।কিন্তু স্বাধীন বিশ্লেষকদের মতে, বিমান হামলার সম্পূর্ণ খরচ, বিশেষ করে অত্যাধুনিক নজরদারি বিমান দ্বারা পরিচালিত অসংখ্য বিমান হামলার পুরো খরচ বিবেচনায় নেয়া হলে ব্যয়ের পরিমাণ আরও বেশি হবে। পেন্টাগনের হিসেব মতে, ১৬ অক্টোবর হতে শুরু হওয়া চলমান এই বিমান যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৫৮ কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে। এছাড়াও প্রস্তাবিত এই তহবিল হতে ইরাকি ও কুর্দি বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছেন এমন প্রায় ৬০০ মার্কিন সামরিক উপদেষ্টা এবং মার্কিন দূতাবাস ও বাগদাদ বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রায় ৮০০ আমেরিকান সৈন্যের জন্য অর্থ প্রদান করা হবে।বুধবার ওবামা জানান, তিনি যুদ্ধের জন্য কংগ্রেস কর্তৃপক্ষের কাছে অর্থ অনুমোদনের জন্য অনুরোধ জানাবেন। এর আগে হোয়াইট হাউস থেকে বলা হয়েছিল, যুদ্ধের জন্য অর্থ ব্যয় করতে কংগ্রেসের অনুমোদন নেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।বিশেষজ্ঞদের ধারণা, নতুন এই অনুমোদন নেয়ার প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। কারণ, নির্বাচনী ফলাফল অনুযায়ী মার্কিন কংগ্রেস এখন আর ওবামার হাতে নেই। কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ এখন রিপাবলিকানদের। সুতরাং, অর্থ চাইলেই যে তা সহজেই পেয়ে যাবেন- সে বিষয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। এএফপিখামেনিকে গোপন চিঠিইরাক ও সিরিয়ার বিস্তৃত অঞ্চলের দখল নেয়া জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) দমনে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সাহায্য চেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি সম্প্রতি খামেনিকে লেখা এক গোপন চিঠিতে এই সহায়তা চেয়েছেন। বিখ্যাত ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, চিঠিতে ওবামা খামেনিকে পরমাণু চুক্তিতে সই করার জন্যও অনুরোধ করেছেন।আগামী ২৪ নভেম্বর ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ছয় জাতির আলোচনা শুরু হবে। সেখানে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইরানের যে কোনো সহযোগিতা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে ওবামা তার চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। তবে হোয়াইট হাউস ওবামার ব্যক্তিগত এই চিঠির ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। গত অক্টোবরে ওবামার চিঠিটি খামেনির কাছে পাঠানো হয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এ নিয়ে চতুর্থবার ওবামা ইরানি এই সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতাকে চিঠি লিখলেন।গোষ্ঠীশাসনের অবসানই জয়ের চাবিকাঠিইসলামিক স্টেট (আইএস) জিহাদিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মার্কিন কমান্ডার জেনারেল লয়েড অস্টিন বৃহস্পতিবার বলেছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে কতজন মার্কিন সৈন্য রয়েছে তা বড় কথা নয়, বাগদাদে গোষ্ঠীগত শাসনের অবসানই আইএস জিহাদিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয়ের চাবিকাঠি। তিনি বলেন, যদি তিনি নিশ্চিত হন যে, রণক্ষেত্রে আরও সৈন্য পাঠানো প্রয়োজন তবে তিনি এ ব্যাপারে সুপারিশ করতে প্রস্তুত রয়েছেন। আটলান্টিক কাউন্সিল থিংক ট্যাংক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অস্টিন এসব কথা বলেন। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরাকে বসবাসরত সুন্নিদের প্রতি দেশটির সরকারের আচরণ এই সংঘাতের ফলশ্র“তির ক্ষেত্রে চূড়ান্ত ভূমিকা রাখবে। জেনারেল অস্টিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের প্রধান হিসেবে আইএসের বিরুদ্ধে বিমানহামলা পরিচালনা করছেন। মার্কিন এই জেনারেল আরও বলেন, কিন্তু আমি আপনাদের বলছি যে, ইরাকের নেতৃত্বে যদি সুন্নী ও কুর্দিদের অন্তর্ভুক্ত করা না যায়, আপনি যত সৈন্যই রণক্ষেত্রে মোতায়েন করেন না কেন, তা কোনোই কাজে আসবে না।
No comments