বছরে দু’বার এমন হয়! by আবদুর রহিম
সে অনেক দিন আগের কথা। বাগদাদের ব্যস্ত বাজারের এক টিলার ওপরে দাঁড়িয়ে অর্ধনগ্ন এক ব্যক্তি উচ্চৈস্বরে দেশের প্রচলিত আচার-আচরণ, নিয়মকানুন, সর্বোপরি মানুষের ধর্মকর্ম নিয়ে নানা কুৎসিত উক্তি করে যাচ্ছিল। এ নব্য দরবেশ ইসলামের পাঁচ স্তম্ভকে হেঁচকা টানে ধূলির সাথে মিশিয়ে দিতে খায়েশ প্রকাশ করে। অর্ধনগ্ন মুসলিম নামধারী দরবেশের এমন নতুন কথা শুনে তাজ্জব বনে যায় নাবালক নগ্ন শিশুরা। এমন উদ্ভট কথা তারা কোনো পাগলের মুখেও শোনেনি তাদের এ ক্ষুদ্র জীবনে। তবে তারা বড়দের কাছে শুনেছে, বাগদাদের এক রইস আদমি বাদশার নেক নজরে পড়ার মানসে বলেছিল, কয়েক ডজন সরকারবিরোধী ব্যক্তি প্রচণ্ড ধাক্কা দিয়ে বিশাল এক রাজপ্রাসাদ ধূলিতে মিশিয়ে দেয় এবং এর ফলে বহু উজির-নাজিরসহ সহস্রাধিক কর্মরত শ্রমিকের মৃত্যু ঘটে।
ওটা অনেক আগের ঘটনা। আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় নব্য এক দরবেশকে নিয়ে। এক সময়ের কুখ্যাত ডাকাত জেল এড়াতে, প্রায় এক যুগ ভিন দেশে থেকে,দরবেশের ভেক ধরে দেশে ফেরে এবং এখানে-ওখানে ওয়াজ করে বেড়াতে শুরু করে।
কিছু তরুণ ভক্তও তার আখড়ায় আসা-যাওয়া শুরু করে। মধ্য রাতে হুজুরের হুজরাখানায় ধূম্র্রজালের সৃষ্টি হয়। ওই সময় জিকিরে মাঝে মধ্যে বাগদাদের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরাও শরিক হতেন। সচেতন প্রভাবশালীরা সাধারণত কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে যেতেন নব্য দরবেশের আখড়ায়। ক্রমেই নব্য দরবেশের নাম-যশ বাড়তে থাকে এবং তার আস্তানায় যাতায়াতকারীদের ভাগ্যও জ্যামিতিক হারে বেড়ে যায়।
দরবেশ সাহেব বাগদাদের অদূরে বিরাট এলাকা দখল করে সেখানে নির্মাণ করেন বিরাট অট্টালিকা, দুম্বা ও উটের খামার। সরকারি জমি ছাড়াও ওই এলাকার বহু নিরীহ লোকের ভিটামাটি চলে যায় ‘আল্লার রাহে’। হুজুর নারীদের তার আস্তানায় ‘এবাদত-বন্দেগি’র জন্য বিশেষ আয়োজন করেছে, ওই জায়গায় আবার হুজুর ব্যতীত অন্য পুরুষের প্রবেশাধিকার নেই।
এক সন্ধ্যায় বাদশাহ ছদ্মবেশে শহর প্রদক্ষিণ করতে বেরিয়ে ভিড় দেখে এগিয়ে যান টিলার কাছে। তখন দরবেশ নব উদ্যমে তার জালাময়ী ভাষায় শুরু করলেন; স্বয়ং বাদশাহজাদা সম্পর্কে নানা কটূক্তি। এ ছাড়া প্রচলিত ধর্মকর্মের প্রতি তার কুৎসিত মন্তব্য করতেও ভোলেননি। নতুন এক ধর্ম প্রচার করার কথা মাঝে মধ্যে নিকটজনদের কাছে বলতেন নব্য দরবেশ।
বাদশাহ হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে গেলেন ভণ্ড দরবেশের কাছে। তিনি তখন ছদ্মবেশ খুললেনÑ এ অবস্থায় দরবেশ বাদশার পায়ে পড়ে রোদনভরা কণ্ঠে বলল, হুজুর বছরে দু’বার আমি পাগল হইÑ একবার গ্রীষ্মে আর একবার শীতে। বাদশাহ তখন কোতোয়ালকে বললেন, ওকে যথাযোগ্য স্থানে পাঠিয়ে দাও। মাথা ওর ঠাণ্ডা হলে দেখা যাবে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে দেয়া যায় কি না। ওর কিছু গুণ তো আছে, স্বগতোক্তি স্বয়ং বাদশার।
লেখক : প্রবীণ সাংবাদিক
ওটা অনেক আগের ঘটনা। আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় নব্য এক দরবেশকে নিয়ে। এক সময়ের কুখ্যাত ডাকাত জেল এড়াতে, প্রায় এক যুগ ভিন দেশে থেকে,দরবেশের ভেক ধরে দেশে ফেরে এবং এখানে-ওখানে ওয়াজ করে বেড়াতে শুরু করে।
কিছু তরুণ ভক্তও তার আখড়ায় আসা-যাওয়া শুরু করে। মধ্য রাতে হুজুরের হুজরাখানায় ধূম্র্রজালের সৃষ্টি হয়। ওই সময় জিকিরে মাঝে মধ্যে বাগদাদের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরাও শরিক হতেন। সচেতন প্রভাবশালীরা সাধারণত কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে যেতেন নব্য দরবেশের আখড়ায়। ক্রমেই নব্য দরবেশের নাম-যশ বাড়তে থাকে এবং তার আস্তানায় যাতায়াতকারীদের ভাগ্যও জ্যামিতিক হারে বেড়ে যায়।
দরবেশ সাহেব বাগদাদের অদূরে বিরাট এলাকা দখল করে সেখানে নির্মাণ করেন বিরাট অট্টালিকা, দুম্বা ও উটের খামার। সরকারি জমি ছাড়াও ওই এলাকার বহু নিরীহ লোকের ভিটামাটি চলে যায় ‘আল্লার রাহে’। হুজুর নারীদের তার আস্তানায় ‘এবাদত-বন্দেগি’র জন্য বিশেষ আয়োজন করেছে, ওই জায়গায় আবার হুজুর ব্যতীত অন্য পুরুষের প্রবেশাধিকার নেই।
এক সন্ধ্যায় বাদশাহ ছদ্মবেশে শহর প্রদক্ষিণ করতে বেরিয়ে ভিড় দেখে এগিয়ে যান টিলার কাছে। তখন দরবেশ নব উদ্যমে তার জালাময়ী ভাষায় শুরু করলেন; স্বয়ং বাদশাহজাদা সম্পর্কে নানা কটূক্তি। এ ছাড়া প্রচলিত ধর্মকর্মের প্রতি তার কুৎসিত মন্তব্য করতেও ভোলেননি। নতুন এক ধর্ম প্রচার করার কথা মাঝে মধ্যে নিকটজনদের কাছে বলতেন নব্য দরবেশ।
বাদশাহ হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে গেলেন ভণ্ড দরবেশের কাছে। তিনি তখন ছদ্মবেশ খুললেনÑ এ অবস্থায় দরবেশ বাদশার পায়ে পড়ে রোদনভরা কণ্ঠে বলল, হুজুর বছরে দু’বার আমি পাগল হইÑ একবার গ্রীষ্মে আর একবার শীতে। বাদশাহ তখন কোতোয়ালকে বললেন, ওকে যথাযোগ্য স্থানে পাঠিয়ে দাও। মাথা ওর ঠাণ্ডা হলে দেখা যাবে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে দেয়া যায় কি না। ওর কিছু গুণ তো আছে, স্বগতোক্তি স্বয়ং বাদশার।
লেখক : প্রবীণ সাংবাদিক
No comments