বিয়ের আগে অপহৃত হয়েছিল চাঁদনী
বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ৬ মাস আগে
অপহরণ করা হয়েছিল স্কুলছাত্রী চাঁদনী (১৪)-কে। এরপর অপহরণকারী মন্টু মনিদাস
তাকে জোর করে বিয়ে করে। অপহরণ ও বিয়ের ৬ মাস যেতে না যেতেই পৃথিবী থেকে
চিরবিদায় নিতে হলো চাঁদনীকে। আর প্রশ্ন উঠেছে, চাঁদনীকে হত্যা করা হয়েছে
নাকি সে আত্মহত্যা করেছে। এ নিয়ে দুই দিন ধরে চলছে ময়নাতদন্ত। তবে চাঁদনীর
পরিবারের সাফ সাফ অভিযোগ, তাদের মেয়েকে মন্টু শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। এ
ঘটনায় বুধবার বিকালেই নিহত চাঁদনীর পিতা অজিত সরকার মানিকগঞ্জ নারী ও শিশু
নির্যাতন দমন আইনে মন্টু মনিদাসকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা
মামলা করেছে। নিহত চাঁদনীর বাড়ি ঘিওর উপজেলার শ্রীবাড়ী গ্রামে এবং মন্টু
মনিদাসের বাড়ি সিংগাইরের বৈন্যা গ্রামে। অজিত সরকার জানান, তার মেয়ে
স্থানীয় একটি স্কুলের ৪র্থ শ্রেণীতে লেখাপড়া করতো। শারীরিক গঠন ভাল হওয়ায়
দেখতে বড়সড় লাগতো। ৭-৮ মাস আগে মন্টু মনিদাস শ্রীবাড়ি এলাকায় একটি বাড়িতে
বিয়ে খেতে এসে চাঁদনীকে পছন্দ করে। এরপর বিয়ের প্রস্তাব দেয়। মেয়ে
অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তিনি বিয়ের প্রস্তার নাকচ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত
২২শে এপ্রিল মন্টু সন্ত্রাসী বাহিনী ভাড়া করে তার মেয়েকে জোর করে একটি
মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে ঘিওর থানায় অভিযোগ করা হলেও কোন কাজে
আসেনি। মেয়ের খোঁজে মন্টুর বাড়ি গেলেও ওই পরিবার তার মেয়েকে সরিয়ে ফেলে।
এভাবে ৬ মাসেও তার মেয়ের কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। অজিত সরকার বলেন,
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমাদের কাছে খবর আসে চাঁদনী আত্মহত্যা করেছে।
সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যাই সিংগাইরে। গিয়েই দেখতে পাই মেয়ের লাশ। কিন্তু লাশ
নিয়ে যেতে চাইলে মন্টুর পরিবার বাধা দেয়। অজিত সরকারের আরও অভিযোগ- প্রথমত,
তার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, জোর করে বিয়ে করেছে। আর তৃতীয়ত,
শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এ
ঘটনায় মন্টু মনিদাস, কেশব মনিদাস, সন্তোষ মনিদাস, রুবেল মনিদাস, সদানন্দ
মনিদাস, সুবল চন্দ্র দাস, চিনু রানী সরকার, নিখিল সরকারকে আসামি করে
মানিকগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়েছে। এদিকে সিংগাইর
থানার উপ-পরিদর্শক হাসান বুলবুল জানান, চাঁদনীর লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে।
রিপোর্ট হাতে পেলেই সঠিক কারণ জানা যাবে। অপরদিকে বুধবার বিকালে নিহত
চাঁদনী সরকারের মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলে রাতে ঘিওরের
শ্রীবাড়ি এলাকায় পিতার বাড়িতে সৎকার্য সম্পন্ন হয়।
No comments