রংপুরের ‘বাহে’র মারাকানা দর্শন- আমরা ক্রিকেট খেলি আর ফুটবল নিয়ে পাগলামো করি by আনিসুল হক
মারাকানা দেখতে এসে পকেটমারের মারে একেবারে তালকানা বনে গেলাম। নিজেকে ‘মফিজ’ মনে হচ্ছে। জীবনে বিদেশ তো কম গেলাম না, এই রকম বোকা কখনো বনে যাইনি।
ছিলাম কোপাকাবানা সৈকতের পাশের হোটেলে। কোকাকোলার সহযাত্রী ২২ জন, যাঁরা এসেছেন সার্ক দেশগুলো থেকে, তাঁরা সৈকতে চলে গেলেন ফানফেস্ট জোনে বড় পর্দায় খেলা দেখবেন। আমি কয়েক হাজার মাইল উড়ে এসেছি, একটা টিকিটও পকেটে আছে, যত্ন করে এনেছি সুদূর ঢাকা থেকে, জার্মানি-ফ্রান্স ম্যাচটা অবশ্যই মারাকানা স্টেডিয়ামেই দেখতে হবে।
গাইডের পরামর্শে টিউব রেলে উঠলাম, প্রচণ্ড ভিড়, সবাই যাচ্ছে খেলা দেখতে, মারাকানা স্টেশনে নামতেই বুকটা ধড়াক করে উঠল। পকেটমারের ভয়ে মানিব্যাগ, পাসপোর্ট এমনকি টিকিট প্যান্টের সামনের পকেটে রেখেছি। টিকিটের সাদা খামটা তো দেখি না!
এক শ বার সবাই বলে দিয়েছে, রিও ডি জেনিরো ভয়ংকর জায়গা, ব্যাকপ্যাক পিঠে রাখবে না, পেটে রাখবে। ট্রেন থেকে নেমে পকেট হাতড়ালাম, পাসপোর্ট আছে, মানিব্যাগ আছে, শুধু ৩৩০ ডলারের টিকিটটা নেই, যার কিনা এখনকার দাম এক হাজার ডলার। সহযাত্রীরা সৈকতে খেলা দেখছে, ওদের কাছে ফিরে যাব? ফেরার ট্রেন কোনটা? ফেসবুকে লিখেছি, মারাকানায় খেলা দেখব। লোকে কী বলবে?
রংপুর থেকে যে একদিন ঢাকা এসেছিলাম, ‘বাহে’ ব্যাপারটা যে আমার মধ্যে প্রবল, রিও ডি জেনিরোর মারাকানা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে তা মনে হওয়া ছাড়া উপায় কী? উপায় আছে। মনে পড়ল জিনেদিন জিদানের একটা উক্তি বলে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বাংলা কবিতার অমর বাণীটি, জিদান নাকি বলেছেন, ছোটবেলায় জুতা পরে খেলতে পারিনি, জুতা ছিল না, একদিন তাকিয়ে দেখলাম, একজনের পা নেই...আমার তো মানিব্যাগ পকেটমারে নিতে পারত, পাসপোর্ট নিলে আমি পড়তাম সবচেয়ে বড় বিপদে। যাক, একটা টিকিটই তো। যাই ফিরে কোপাকাবানায়!
ধীরে ধীরে হাঁটছি। মফিজের মতো করে। দেখি, স্টেশনে একজন পুলিশ। বললাম তাঁকে সমস্যাটা। তিনি বললেন, স্টেশনের বাইরে পুলিশ স্টেশন আছে, সেখানে যাও। কী মনে করে খুঁজে বের করলাম পুলিশের ডেরা। একটা পুলিশের ভ্যানকে অফিস বানিয়েছে। ঢুকতে চাইলাম, বলল, ওই দেখো, লাইন, ওর পেছনে গিয়ে দাঁড়াও। এই ফরমটা পূরণ করো। আমার সামনে অন্তত কুড়িজন। প্রায় ৪০ মিনিট পরে সেই ভ্যানে উঠে বললাম সমস্যা। আমার কাছে টিকিটের কোনো ফটোকপি নেই; নম্বর আছে, তবে ফেসবুকে, ফেসবুক এখন খুলতে পারছি না। পুলিশ আমাকে একটা টাইপ করা কাগজ দিয়ে বলল, ফিফার কাছে যাও। একে-ওকে জিজ্ঞেস করে স্টেডিয়ামে ঢোকার লাইনে এসে দেখি, একজন কোটপরা কর্তার বুকে লেখা ফিফা। হাতের কাগজটা তাঁকে দিতেই তিনি একটা নতুন টিকিট দিয়ে বললেন, যাও, ঢোকো। বাপ রে! এরা এত ভালো। এই টিকিট আজ এক হাজার ডলারে বাইরে বিক্রি হচ্ছে।
এই জন্য বলি, ব্রাজিল খুব ভালো, ফিফা আরও ভালো। আমি গ্যালারিতে আমার আসনে বসতেই রেফারি খেলা শুরুর বাঁশি বাজালেন। আমি বাংলাদেশের পতাকা বুকে ধরে খেলা দেখতে লাগলাম। সত্যি কথা বলব, গ্যালারিতে খেলা দেখার আনন্দ হইচইয়ে, সমর্থকদের অবিরাম গানে আর নাচে। আসল খেলা ভালো করে দেখা যায় না। দেশের মাঠে আমার ক্রিকেট দেখার অভিজ্ঞতাও একই কথা বলবে, স্টেডিয়ামের গ্যালারি থেকে খেলা খুব ভালো বোঝা যায় না। ফাস্ট বোলারের বল কোথায় গেল আপনি যখন খুঁজছেন, ততক্ষণে ব্যাটসম্যান ড্রেসিং রুমের পথে পা বাড়িয়েছে। ৪ জুলাইও তাই হলো, মারাকানায় সেলফি তুলতে যাচ্ছি, অমনি গোল। তবে খেলাটা জমেওনি বলতে হবে। আমার পাশে বসেছিলেন মেক্সিকোর এক তরুণ, তিনি জার্মানি সমর্থন করছেন, আরেক পাশে ফরাসি এক পরিবার, বাবা-মা, টিনএজার ছেলেমেয়ে। তাঁরা বিরস বদনে খেলা দেখলেন। আমি বললাম, খেলোয়াড়দের এত ক্লান্ত মনে হচ্ছে কেন? গরম বেশি বলে। গ্যালারিতে তো আমাদের তত গরম লাগছে না।
ব্রাজিলের খেলাটা দেখেছি রিওর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ফানফেস্ট জোনে। বড় পর্দায়। এখানকার খেলাটা বরং ঠিকঠাক উপভোগ করা গেল। এখানে সবাই ব্রাজিলের সমর্থক, একটা মিস মানেই প্রবল ‘আহ’, ‘উহ’, ‘ওওও’। কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে ব্রাজিলের প্রথমার্ধের খেলা দেখে মন ভরে গিয়েছিল। খেলা শেষ করার আগেই বিমানে উঠে বসতে হলো, আর্জেন্টিনা-বেলজিয়াম ৫ জুলাইয়ের খেলা দেখতে ব্রাসিলিয়া যাচ্ছি। মন পড়ে আছে খেলায়। একজন যাত্রী তাঁর মোবাইলে খেলা চালু করে দিলেন, আমরা সবাই বিমানের ভেতরে দাঁড়িয়ে বসে ওই ছোট পর্দায় খেলা দেখলাম। খেলা শেষ হলে ঘোষণা এল, এবার মোবাইল অফ করুন। আমরা এবার উড়াল দেব। সবাই করতালি দিলে বিমান নড়ে উঠল।
নেইমারের পিঠের হাড় ভেঙেছে শুনে আমার নিজের মনই ভেঙে গেল। জার্মানি-ব্রাজিল সেমিফাইনাল দেখতে বেলো হরিজন্তে যাব। নেইমারই থাকবেন না? সে কী কথা!
তৃতীয় স্থান নির্ধারণী খেলাটাও দেখতে যাব। সেখানে না আবার ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার দেখা হয়ে যায়! নাকি এ দুটো দলের একটা আসবে, আর আসবে জার্মানি বা নেদারল্যান্ডসের কেউ। বা দুদলই। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা খেলা হলে পৃথিবীতে ঝড় বয়ে যাবে, ব্রাজিলে আসা হাজারো আর্জেন্টাইনও ভালোই আতিথেয়তা পাবেন। শুধু বাংলাদেশের বিবদমান সমর্থকেরা না দাঙ্গা বাধিয়ে দেন।
ফরাসি ভদ্রলোক বলছিলেন, তোমরা বাংলাদেশ, তোমরা তো ক্রিকেট খেলো। ফুটবল খেলো না। সঠিক উত্তর হতো, যদি বলতাম, আমরা ক্রিকেট খেলি আর ফুটবল নিয়ে পাগলামো করি।
আমাদের টুর অপারেটর ব্রাজিলিয়ান ইউরিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তোমরা যদি আর্জেন্টিনার কাছে হেরে যাও, তাহলে কী হবে? সে এক ফুঁৎকারে কথাটা উড়িয়ে দিল, কখনো না। এটা কখনো হতে পারে না। পথেঘাটে অনেককেই জিজ্ঞেস করেছি, ব্রাজিলের ম্যাচের ফল কী হবে? সবাই নিশ্চিত, ব্রাজিল জিতবে। একজন মহিলা বললেন, ফল হবে দুই শূন্য। দুই সিরো। বাহ। বাংলা দুই তো দেখি পর্তুগিজ পর্যন্ত এসেছে!
ব্রাজিল জিতুক আর আর্জেন্টিনা—এ দুই দলের ফাইনাল হলে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে না বিজিবি মোতায়েন করতে হয়! এই একটা দুশ্চিন্তা ছাড়া আমারও একান্ত চাওয়া, আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলই হোক এবারের ফাইনাল।
ব্রাসিলিয়া, ব্রাজিল থেকে > ৫ জুলাই ২০১৪, রাত ২টা ২০
ছিলাম কোপাকাবানা সৈকতের পাশের হোটেলে। কোকাকোলার সহযাত্রী ২২ জন, যাঁরা এসেছেন সার্ক দেশগুলো থেকে, তাঁরা সৈকতে চলে গেলেন ফানফেস্ট জোনে বড় পর্দায় খেলা দেখবেন। আমি কয়েক হাজার মাইল উড়ে এসেছি, একটা টিকিটও পকেটে আছে, যত্ন করে এনেছি সুদূর ঢাকা থেকে, জার্মানি-ফ্রান্স ম্যাচটা অবশ্যই মারাকানা স্টেডিয়ামেই দেখতে হবে।
গাইডের পরামর্শে টিউব রেলে উঠলাম, প্রচণ্ড ভিড়, সবাই যাচ্ছে খেলা দেখতে, মারাকানা স্টেশনে নামতেই বুকটা ধড়াক করে উঠল। পকেটমারের ভয়ে মানিব্যাগ, পাসপোর্ট এমনকি টিকিট প্যান্টের সামনের পকেটে রেখেছি। টিকিটের সাদা খামটা তো দেখি না!
এক শ বার সবাই বলে দিয়েছে, রিও ডি জেনিরো ভয়ংকর জায়গা, ব্যাকপ্যাক পিঠে রাখবে না, পেটে রাখবে। ট্রেন থেকে নেমে পকেট হাতড়ালাম, পাসপোর্ট আছে, মানিব্যাগ আছে, শুধু ৩৩০ ডলারের টিকিটটা নেই, যার কিনা এখনকার দাম এক হাজার ডলার। সহযাত্রীরা সৈকতে খেলা দেখছে, ওদের কাছে ফিরে যাব? ফেরার ট্রেন কোনটা? ফেসবুকে লিখেছি, মারাকানায় খেলা দেখব। লোকে কী বলবে?
রংপুর থেকে যে একদিন ঢাকা এসেছিলাম, ‘বাহে’ ব্যাপারটা যে আমার মধ্যে প্রবল, রিও ডি জেনিরোর মারাকানা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে তা মনে হওয়া ছাড়া উপায় কী? উপায় আছে। মনে পড়ল জিনেদিন জিদানের একটা উক্তি বলে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বাংলা কবিতার অমর বাণীটি, জিদান নাকি বলেছেন, ছোটবেলায় জুতা পরে খেলতে পারিনি, জুতা ছিল না, একদিন তাকিয়ে দেখলাম, একজনের পা নেই...আমার তো মানিব্যাগ পকেটমারে নিতে পারত, পাসপোর্ট নিলে আমি পড়তাম সবচেয়ে বড় বিপদে। যাক, একটা টিকিটই তো। যাই ফিরে কোপাকাবানায়!
ধীরে ধীরে হাঁটছি। মফিজের মতো করে। দেখি, স্টেশনে একজন পুলিশ। বললাম তাঁকে সমস্যাটা। তিনি বললেন, স্টেশনের বাইরে পুলিশ স্টেশন আছে, সেখানে যাও। কী মনে করে খুঁজে বের করলাম পুলিশের ডেরা। একটা পুলিশের ভ্যানকে অফিস বানিয়েছে। ঢুকতে চাইলাম, বলল, ওই দেখো, লাইন, ওর পেছনে গিয়ে দাঁড়াও। এই ফরমটা পূরণ করো। আমার সামনে অন্তত কুড়িজন। প্রায় ৪০ মিনিট পরে সেই ভ্যানে উঠে বললাম সমস্যা। আমার কাছে টিকিটের কোনো ফটোকপি নেই; নম্বর আছে, তবে ফেসবুকে, ফেসবুক এখন খুলতে পারছি না। পুলিশ আমাকে একটা টাইপ করা কাগজ দিয়ে বলল, ফিফার কাছে যাও। একে-ওকে জিজ্ঞেস করে স্টেডিয়ামে ঢোকার লাইনে এসে দেখি, একজন কোটপরা কর্তার বুকে লেখা ফিফা। হাতের কাগজটা তাঁকে দিতেই তিনি একটা নতুন টিকিট দিয়ে বললেন, যাও, ঢোকো। বাপ রে! এরা এত ভালো। এই টিকিট আজ এক হাজার ডলারে বাইরে বিক্রি হচ্ছে।
এই জন্য বলি, ব্রাজিল খুব ভালো, ফিফা আরও ভালো। আমি গ্যালারিতে আমার আসনে বসতেই রেফারি খেলা শুরুর বাঁশি বাজালেন। আমি বাংলাদেশের পতাকা বুকে ধরে খেলা দেখতে লাগলাম। সত্যি কথা বলব, গ্যালারিতে খেলা দেখার আনন্দ হইচইয়ে, সমর্থকদের অবিরাম গানে আর নাচে। আসল খেলা ভালো করে দেখা যায় না। দেশের মাঠে আমার ক্রিকেট দেখার অভিজ্ঞতাও একই কথা বলবে, স্টেডিয়ামের গ্যালারি থেকে খেলা খুব ভালো বোঝা যায় না। ফাস্ট বোলারের বল কোথায় গেল আপনি যখন খুঁজছেন, ততক্ষণে ব্যাটসম্যান ড্রেসিং রুমের পথে পা বাড়িয়েছে। ৪ জুলাইও তাই হলো, মারাকানায় সেলফি তুলতে যাচ্ছি, অমনি গোল। তবে খেলাটা জমেওনি বলতে হবে। আমার পাশে বসেছিলেন মেক্সিকোর এক তরুণ, তিনি জার্মানি সমর্থন করছেন, আরেক পাশে ফরাসি এক পরিবার, বাবা-মা, টিনএজার ছেলেমেয়ে। তাঁরা বিরস বদনে খেলা দেখলেন। আমি বললাম, খেলোয়াড়দের এত ক্লান্ত মনে হচ্ছে কেন? গরম বেশি বলে। গ্যালারিতে তো আমাদের তত গরম লাগছে না।
ব্রাজিলের খেলাটা দেখেছি রিওর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ফানফেস্ট জোনে। বড় পর্দায়। এখানকার খেলাটা বরং ঠিকঠাক উপভোগ করা গেল। এখানে সবাই ব্রাজিলের সমর্থক, একটা মিস মানেই প্রবল ‘আহ’, ‘উহ’, ‘ওওও’। কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে ব্রাজিলের প্রথমার্ধের খেলা দেখে মন ভরে গিয়েছিল। খেলা শেষ করার আগেই বিমানে উঠে বসতে হলো, আর্জেন্টিনা-বেলজিয়াম ৫ জুলাইয়ের খেলা দেখতে ব্রাসিলিয়া যাচ্ছি। মন পড়ে আছে খেলায়। একজন যাত্রী তাঁর মোবাইলে খেলা চালু করে দিলেন, আমরা সবাই বিমানের ভেতরে দাঁড়িয়ে বসে ওই ছোট পর্দায় খেলা দেখলাম। খেলা শেষ হলে ঘোষণা এল, এবার মোবাইল অফ করুন। আমরা এবার উড়াল দেব। সবাই করতালি দিলে বিমান নড়ে উঠল।
নেইমারের পিঠের হাড় ভেঙেছে শুনে আমার নিজের মনই ভেঙে গেল। জার্মানি-ব্রাজিল সেমিফাইনাল দেখতে বেলো হরিজন্তে যাব। নেইমারই থাকবেন না? সে কী কথা!
তৃতীয় স্থান নির্ধারণী খেলাটাও দেখতে যাব। সেখানে না আবার ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার দেখা হয়ে যায়! নাকি এ দুটো দলের একটা আসবে, আর আসবে জার্মানি বা নেদারল্যান্ডসের কেউ। বা দুদলই। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা খেলা হলে পৃথিবীতে ঝড় বয়ে যাবে, ব্রাজিলে আসা হাজারো আর্জেন্টাইনও ভালোই আতিথেয়তা পাবেন। শুধু বাংলাদেশের বিবদমান সমর্থকেরা না দাঙ্গা বাধিয়ে দেন।
ফরাসি ভদ্রলোক বলছিলেন, তোমরা বাংলাদেশ, তোমরা তো ক্রিকেট খেলো। ফুটবল খেলো না। সঠিক উত্তর হতো, যদি বলতাম, আমরা ক্রিকেট খেলি আর ফুটবল নিয়ে পাগলামো করি।
আমাদের টুর অপারেটর ব্রাজিলিয়ান ইউরিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তোমরা যদি আর্জেন্টিনার কাছে হেরে যাও, তাহলে কী হবে? সে এক ফুঁৎকারে কথাটা উড়িয়ে দিল, কখনো না। এটা কখনো হতে পারে না। পথেঘাটে অনেককেই জিজ্ঞেস করেছি, ব্রাজিলের ম্যাচের ফল কী হবে? সবাই নিশ্চিত, ব্রাজিল জিতবে। একজন মহিলা বললেন, ফল হবে দুই শূন্য। দুই সিরো। বাহ। বাংলা দুই তো দেখি পর্তুগিজ পর্যন্ত এসেছে!
ব্রাজিল জিতুক আর আর্জেন্টিনা—এ দুই দলের ফাইনাল হলে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে না বিজিবি মোতায়েন করতে হয়! এই একটা দুশ্চিন্তা ছাড়া আমারও একান্ত চাওয়া, আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলই হোক এবারের ফাইনাল।
ব্রাসিলিয়া, ব্রাজিল থেকে > ৫ জুলাই ২০১৪, রাত ২টা ২০
No comments