আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরাইলের বিচার হবে
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গণহত্যা অব্যাহত রাখলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ইসরাইলের বিচার করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তায়েপ এরদোগান। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল যদি এ অপরাধযজ্ঞ অব্যাহত রাখে তাহলে নিশ্চিতভাবে আন্তর্জাতিক আদালতে তার বিচার করা হবে।’ তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মেরসিনে দেয়া নির্বাচনী বক্তৃতায় এরদোগান আরও বলেন, ‘যদি আমরা দেখি যে, গণহত্যা চলছে তাহলে ইসরাইলের বিচারের জন্য তুরস্ক সংগ্রাম করবে।’
এর আগে, মার্কিন টিভি স্টেশন সিএনএনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তুর্কি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসরাইল যুদ্ধ বন্ধ করতে চায় না; তারা সেখানে হত্যা করছে, রক্তপাত ঘটাচ্ছে। তিনি বলেন, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, পশ্চিমারা ইসরাইলকে রক্ষা করে চলেছে এবং পুরো বিশ্ব এ বিষয়ে নীরব। এ অবস্থায় আমরা নীরব থাকতে পারি না; আমরা নীরব থাকবও না।’ ন্যাটো সামরিক জোটের সদস্য তুরস্ক এক সময় ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল। তবে সম্প্রতি ইহুদিবাদী রাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করছেন এরদোগান। ইসরাইল হিটলারের বর্বরতাকেও হার মানাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সিএনএনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এরদোগান আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে হামাস সবকিছুর জন্য প্রস্তুত, (ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ) আব্বাসও প্রস্তুত আছেন। কিন্তু ইসরাইল এমন কিছু চাচ্ছে না। সে চাচ্ছে মৃত্যু আর রক্তপাত।’ রয়টার্স, ওয়ার্ল্ড বুলেটিন।
ইসরাইলি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন তুরস্কের : ইসরাইলের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক শেষ করার ঘোষণা দিচ্ছে তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। গত তিনদিনেই তুরস্কের ১১১টি বিশ্ববিদ্যালয় ইসরাইলি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করার ঘোষণা দিয়েছে। এ সংখ্যা দিনদিনই বাড়ছে। প্রথমে তুরস্কের ৮৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টররা গত রোববার ঘোষণা করেন, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দা না করলে তারা ইসরাইলি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে একাডেমিক, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক সম্পর্কে ছিন্ন করবেন। রেক্টরদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গাজায় মানবতার বড় ট্রাজেডি ঘটছে। পুরো বিশ্ব কানা ও বোবা হয়ে আছে, কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। ইসরাইলি সরকার শিশুদের নির্মমভাবে বন্দুকের সামনে নিক্ষেপ করছে।’ ‘পবিত্র রমজান মাসেও লোকজনকে বোমার আঘাতে অশ্র“, দুর্ভোগ ও কষ্ট নিয়ে ইফতার করতে হচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সবাই এই নির্মমতার ব্যাপারে চোখ বন্ধ করে আছে।’ এদিকে গাজায় আগ্রাসনের প্রতিবাদে ইসরাইলি পণ্য ও রাষ্ট্রটির সঙ্গে যুক্ত দেশের পণ্য বর্জনের হিড়িক পড়েছে তুরস্কের শহরগুলোতে। সামাজিক গণমাধ্যমে ইসরাইলি পণ্য এবং ইসরাইলের সঙ্গে যুক্ত দেশগুলোর তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে। ইসরাইলকে সমর্থন করার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কোকাকোলার পানীয় বর্জনেরও আহ্বান জানানো হচ্ছে। ইস্তাম্বুলে গাঙ্গুরেন জেলার মেয়র সাকির ইয়াসেল কারামান বলেন, কোকাকোলা ও অন্যান্য যেসব কোম্পানি জায়নবাদী ইসরাইলের সম্প্রসারণে কাজ করে তাদের সহায়তা করা আমাদের ঠিক হবে না। জেরুজালেম পোস্ট।
No comments