সহজিয়া কড়চা- ঘটনার চেয়ে চেতনাই প্রধান by সৈয়দ আবুল মকসুদ
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকদের চলে যাওয়ার আগে থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের সরকারি ভাষা কী হবে তা নিয়ে আলোচনা হতে থাকে দুই দেশেরই রাজনীতিক ও বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে। মহাত্মা গান্ধী ও তাঁর অনুসারীদের প্রস্তাব হিন্দি হবে সে দেশে সরকারি ভাষা।
মুহম্মদ আলী জিন্নাহর ইচ্ছা উর্দু হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। দুটিই বহু ভাষাভাষী মানুষের দেশ। হিন্দি ও উর্দু কোনো দেশেরই সর্বজনীন ভাষা নয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ তো নয়ই, সিকি মানুষের মুখের ভাষাও নয়।
ভারতে হিন্দিকে একমাত্র অফিশিয়াল ভাষা করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছে। বাংলা, উর্দু ও তামিলের পক্ষে ওকালতি হয়েছে। তবে কোনো আন্দোলন হয়নি, যেমনটি হয়েছে পাকিস্তানের পূর্ব বাংলায়। ১৯৬৫ সালে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুলজারিলাল নন্দা আকাশবাণী থেকে বলেছিলেন, আজ থেকে সরকারি ভাষা হিসেবে ইংরেজির পরিবর্তে হিন্দি চালু হলো। তাঁর এই বক্তব্যে অ-হিন্দিভাষী রাজ্যগুলোতে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। চেন্নাইয়ে (মাদ্রাজ ছিল তখনকার নাম) ১২ জন তামিল ভাষার দাবিতে শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মাহুতি দেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে দুজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী পরিস্থিতি সামাল দিয়ে টিকে যান।
প্রাপ্ত দলিলপত্রে দেখা যায়, পূর্ববাংলার দলমত-নির্বিশেষে নেতারা ও বুদ্ধিজীবী সমাজ বাংলাকেই পূর্ব পাকিস্তানের সরকারি ভাষা এবং পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানিয়েছে। ঢাকার নবাব পরিবারের কেউ কেউ এবং দু-চারজন মৌলবাদী দালাল গোছের লোক ছাড়া বাংলার পক্ষে ছিল গোটা পূর্ব বাংলা। পশ্চিম পাকিস্তানের ভাষা উর্দু হবে না হিব্রু হবে, পাঞ্জাবি হবে না সিন্ধি হবে—তা নিয়ে বাঙালিদের কোনো মাথাব্যথা ছিল না। তখনকার কাগজপত্র দেখে মনে হয়, কেন্দ্রীয় সরকার বা জিন্নাহ যদি বলতেন, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে বাংলা, উর্দু, পাঞ্জাবি, সিন্ধি, বেলুচ ও পাখতুন—তাতেও বাঙালিরা আপত্তি করতেন না। তাঁদের দাবি ছিল তাঁদের ভাষার অধিকার রক্ষিত হোক, ওপারের দুম্বা বা উটের তাঁরা গলা কাটবেন না লেজ কাটবেন, তা তাঁদের ব্যাপার।
বিপত্তি বাধালেন জিন্নাহ। খুবই বুদ্ধিমান মানুষ, কিন্তু নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিলেন। ওই গুজারাতী ও খোজা মুসলিম নেতার সুন্নি ও সুফিবাদী মুসলমানদের দেশ বাংলা ও বাঙালি সংস্কৃতি সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না। সে জন্য তাঁকে বিশেষ দোষও দেওয়া যায় না। তিনি ছিলেন সর্বভারতীয় নেতা। গান্ধীজি ছাড়া সবার সঙ্গেই কথা বলতেন ইংরেজিতে। বাঙালি নেতারা বরং তাঁর সঙ্গে কথা বলতেন উর্দুতে। তাতে তাঁর ধারণা হয়ে থাকবে যে পূর্ব বাংলার সবাই বাংলা-টাংলা কিছু একটা বললেও উর্দু বোঝে এবং বলতে পারে। তাঁর বাংলা সম্পর্কে ভুল ধারণা ও ঔদ্ধত্যের কারণে পরোক্ষভাবে বাঙালির উপকারই হয়েছে: জন্ম নেয় বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা।
জিন্নাহর একটি উদ্ধৃতি ভুলভাবে ব্যবহূত হচ্ছে বহুদিন ধরে। তা হলো তাঁর সেই কুখ্যাত উচ্চারণ: উর্দু অ্যান্ড উর্দু শ্যাল বি দ্য...। মূল ভাষণটি আমার দেখার সুযোগ হয়েছে। তাঁর কথাটি ছিল এ রকম: ‘লেট মি টেল ইউ ইন দ্য ক্লিয়ারেস্ট ল্যাঙ্গুয়েজ,... আলটিমেটলি ইট ইজ ফর ইউ, দ্য পিপল অব দিস প্রভিন্স, টু ডিসাইড হোয়াট শ্যাল বি দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ অব ইওর প্রভিন্স। বাট লেট মি মেক ইট ভেরি ক্লিয়ার টু ইউ দ্যাট দ্য স্টেট ল্যাঙ্গুয়েজ অব পাকিস্তান ইজ গোয়িং টু বি উর্দু অ্যান্ড নো আদার ল্যাঙ্গুয়েজ।’ কথাটার অর্থ অবশ্য একই দাঁড়ায়, তবে উদ্ধৃতি হিসেবে ভুল। তিনি বলেছিলেন: সুস্পষ্ট ভাষায় আমি তোমাদের বলছি,...শেষ পর্যন্ত সেটা তোমাদের বিষয়, এই প্রদেশের মানুষের বিষয় যে তোমাদের ভাষা কী হবে। কিন্তু আমি তোমাদের পরিষ্কার করে বলতে চাই যে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু এবং অন্য কোনো ভাষা নয়। অর্থাৎ তিনি বলেছিলেন, বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা যাবে না, বাংলা প্রাদেশিক ভাষা হয়ে থাকতে পারে।
এটি ছিল একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তি। তাঁর আশপাশে যাঁরা থাকতেন তাঁদের জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল: মাননীয় কায়েদে আজম, আপনি যে বক্তৃতাটা করলেন সেটাও তো উর্দুতে করেননি, করেছেন ইংরেজিতে। আপনাকে উর্দুতে কখনো কিছু লেখালেখি করতে দেখিনি। তাহলে আগ বাড়িয়ে উর্দু উর্দু করছেন কেন?
জিন্নাহ যে আগুনের স্ফুলিঙ্গ জ্বালিয়েছিলেন, তাতে শেষ পর্যন্ত কোনো বড় রকমের অগ্নিকাণ্ড ঘটত না। কিন্তু তাতে ঘি ঢেলে দেন খাজা নাজিমউদ্দিন, যার ফলে সারা পূর্ব বাংলায় দাবানলের সৃষ্টি হয়। যদিও মুখ্যমন্ত্রী নূরুল আমীন থেকে লীগের সব নেতাই ছিলেন বাংলার পক্ষে। নূরুল আমীন ১৪ আগস্টের কয়েক সপ্তাহ আগেও কলকাতায় এক আলোচনা সভায় পূর্ব পাকিস্তানের সরকারি ভাষা বাংলা করার পক্ষে মত দিয়ে বক্তৃতা করেন।
বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার আন্দোলন রক্তপাত পর্যন্ত গড়ায় কেন্দ্রীয় শাসকগোষ্ঠীর হঠকারিতার কারণে, কিন্তু তার দায়দায়িত্ব বর্তায় মুখ্যমন্ত্রী নূরুল আমীনের সরকারের ওপর। বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারির আগেও পুলিশের গুলিতে এখানে শ্রমজীবী মানুষ নিহত হয়েছেন, কিন্তু সে মৃত্যু আর একুশের শাহাদত এক রকম নয়। একুশের জীবনদান পূর্ব বাংলার মানুষের সাংস্কৃতিক পুনরুজ্জীবনের কাজটির সূচনা ঘটায়। শুধু সাংস্কৃতিকও নয়, বাঙালি জাতির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার, তার গণতান্ত্রিক অধিকার অর্জনের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে একুশের রক্তাক্ত ঘটনা।
বাঙালি জাতির দুর্ভাগ্য যে মহৎ কোনো কিছুরই সে সদ্ব্যবহার করতে পারে না। তা থেকে ব্যক্তিগত সুবিধা নিতে গিয়ে জাতিগতভাবে পায় না বিশেষ কিছু। বাঙালির এক একটি উপলক্ষ এক একটি উপসর্গ হয়ে দেখা দেয়। সেই উপসর্গের ধাক্কা চলে বহুদিন। সেই ধাক্কায় ঘটনাটিই বড় হয়ে ওঠে, তার ভেতরের আসল জিনিসটি হারিয়ে যায়। যদিও ঘটনা নয়, চেতনাই আসল।
বায়ান্ন থেকে একাত্তর পর্যন্ত একুশে ফেব্রুয়ারি সাংস্কৃতিক কর্মীদের শুধু নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যে যে আবেগের সৃষ্টি করত, স্বাধীনতার পর থেকে তা হারিয়ে যায়। সারা দেশ থেকে একুশের সংকলন প্রকাশিত হতো। সেসব সংকলনের লেখায় বিচ্ছুরিত হতো জাতীয়তাবাদী চেতনা। বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের সড়ক তৈরিতে সেসব সংকলনের লেখা বিরাট ভূমিকা রেখেছে। বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা শুধু রাজনীতিকদের সৃষ্ট নয়, অগণিত অজানা সাংস্কৃতিক কর্মীর অবদান তাতে সবচেয়ে বেশি।
আমরা আজিমপুর শেখ সাহেব বাজার এলাকায় ছিলাম বলে দেখেছি পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে একুশে ফেব্রুয়ারির ভাবগাম্ভীর্য। সেই পরিবেশ এখন বর্ণনা করা সম্ভব নয়। তখন মানুষের বাহারি কাপড়চোপড় ছিল না। ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা থেকেই নেমে আসত সারা দেশে শোকের ছায়া—কৃত্রিম নয়, আসল শোক। পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকেই সারা দেশের অফিস ও দোকানপাটের সাইনবোর্ডের যেগুলো ইংরেজিতে লেখা তার ওপর হয় কাগজ সেঁটে দেওয়া হতো, নয়তো কাপড়ে বাংলায় লেখা হতো। সেটা করা হতো শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে।
বিশে ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতের পর থেকে নগর এক নতুন রূপ ধারণ করত। ফজরের আজানের সময় থেকে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-বয়সনির্বিশেষে নারী-পুরুষ খালি পায়ে যেত আজিমপুর শহীদদের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে। কোনো শব্দ নেই, ধাক্কাধাক্কি নেই, পিঁপড়ার মতো লাইন ধরে সবাই যাচ্ছে আজিমপুর কবরস্থানে। সেখান থেকে শহীদ মিনারে। তখন ফুলের চাষ হতো না। শহরে ফুল বিক্রি হতো অল্প কয়েকটি জায়গায় এবং খুবই সামান্য। আমরা ফুল জোগাড় করতাম বড়লোকদের বাড়ির বাগান থেকে। সেদিন তাঁরাও উদারভাবে উদ্যান উন্মুক্ত করে দিতেন। যাঁরা শহীদ মিনার বা কবরস্থানে যেতেন না, তাঁরাও রাস্তায় বের হতেন খালি পায়ে—তা তিনি যত সম্ভ্রান্ত ও বিত্তবানই হোন। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে খালি পায়ে হাঁটার যে সুখ, তা এখনকার মানুষদের বোঝানো সম্ভব নয়। একুশে ফেব্রুয়ারিতে সবার জামায় ও শাড়িতে এক টুকরা কালো কাপড় সাঁটা থাকত। আজ শহীদ মিনারে ভিড় হয় বেশি, গাম্ভীর্য কম।
আশির দশক থেকে এক নতুন উপসর্গ শুরু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি এলেই দৈনিকগুলোর এক কোনায় এক কলামে ‘আ-মরি বাংলা ভাষা’ বা ‘মোদের গরব মোদের আশা’ জাতীয় শিরোনামে একুশে ফেব্রুয়ারির বৃত্তান্ত বর্ণনা। সেই একই ব্যাপার। ঘটনাটিই প্রাধান্য পায়—চেতনা নয়। এর মধ্যে ‘ভাষাসৈনিক’ অভিধাটি উদ্ভাবিত হয়। শুরু হয় তাঁদের জনা কয়েকের স্মৃতিচারণা ও সাক্ষাৎকার। সেকালের কাগজপত্রে ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত ভাষার জন্য যাঁরা সংগ্রাম করেছেন তাঁদের নাম রয়েছে। তাঁরা কেউ নন, সেকালের যাঁদের কাগজপত্রে নাম ছিল না, স্মৃতিচারণায় অবতীর্ণ হতে দেখা যায় তাঁদের। আটটি বছর বাংলা ভাষার অধিকার অর্জনের জন্য যাঁরা নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করেছেন, তাঁদের নাম আমরা ভুলে গেছি। এখনকার মানুষ দেখতে পাচ্ছে, বাংলা ভাষার জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন মাত্র কয়েকজন।
অনেক লড়াই-সংগ্রামের পর পাকিস্তানের প্রথম সংবিধানে ১৯৫৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি বাংলা স্বীকৃতি পায়। সংবিধানের ২১৪(১) অনুচ্ছেদে লেখা হয়: ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু ও বাংলা’। ১৯৬২ সালের ১ মার্চ আইয়ুব খান যে সংবিধান প্রবর্তন করেন, তার ২১৫(১) অনুচ্ছেদে লেখা হয়: ‘পাকিস্তানের জাতীয় ভাষা বাংলা ও উর্দু’; কিন্তু এই অনুচ্ছেদকে অন্য কোনো ভাষা ব্যবহারের প্রতিবন্ধকরূপে কাজে লাগানো যাবে না, বিশেষত ইংরেজি-ভাষা পরিবর্তনের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত এই ভাষা সরকারি ও অন্যান্য উদ্দেশ্য প্রতিপালনের জন্য ব্যবহূত হতে পারবে।’
আজ ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণের কৃতিত্ব নেওয়া মানুষের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। কিন্তু একটি বিষয় আমরা আড়াল করে রাখছি। বাংলাকে অন্যতর সরকারি ভাষা করার জন্য লেখক-বুদ্ধিজীবীরা লেখালেখি ও আলোচনা করছিলেন। তাঁদের সে ভূমিকার মূল্য রয়েছে। কিন্তু আলোচনার বিষয়কে একটি আন্দোলনের বিষয়ে পরিণত করেন শ্রমজীবীরা। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যখন পোস্টাপিস প্রভৃতির বিভিন্ন কর্মে ইংরেজির সঙ্গে উর্দু লেখা হলো তখনই চতুর্থ শ্রেণীর সরকারি কর্মচারীরা বুঝতে পারেন উর্দু না জানলে তাঁদের চাকরি থাকবে না।
ঢাকার ইডেন বিল্ডিং বা প্রাদেশিক সচিবালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরাই প্রথম সরকারি কাগজে উর্দু ব্যবহারের প্রতিবাদ করেন এবং সূচনা ঘটান ভাষা আন্দোলনের। তাঁদের সেই আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন বাইরের শিক্ষিত বেকার যুবসমাজ। আন্দোলন একটি মিলিট্যান্ট রূপ নিতে থাকে। কেন বুদ্ধিজীবীরা নন, শ্রমজীবী ও ছাত্র-যুবসমাজ আন্দোলন শুরু করেন? কারণ বিষয়টি শুধু সাংস্কৃতিক নয়, অর্থনৈতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট। শুধু উর্দু সরকারি ভাষা হলে অল্প শিক্ষিত বাঙালিরা সরকারি চাকরি পাবেন না, সব চাকরি পাবেন উর্দুভাষী মোহাজেররা। একুশের শহীদদের শ্রেণীচরিত্র দেখলেই ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য উপলব্ধি করা সম্ভব।
ভাষা আন্দোলন জাতিকে উপহার দিয়েছে বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা, যা থেকে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। কিন্তু ভাষা আন্দোলন যে বলিষ্ঠ জাতি গঠনের দীক্ষাও দিয়েছিল, সে দীক্ষার সদ্ব্যবহার করতে পারিনি। আমরা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে আটকে রেখেছি ঘটনাকে। খুব বড় অনুষ্ঠানের মধ্যে ঘটা করে একুশকে উদ্যাপন করছি দেশের মধ্যে শুধু নয় দেশের বাইরেও, কিন্তু একুশের চেতনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ অতি কম। যদিও চেতনাই প্রধান।
সৈয়দ আবুল মকসুদ: গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক।
No comments