পবিত্র কোরআনের আলো-শরিয়তের বিধান বাতিল হলে কোনো 'হিলা'ই তখন বৈধ নয়
৭৬. ফাবাদা'আ বিআও'ইয়াতিহিম কাবলা বি'আ-ই
আখিহি ছুম্মাসতাখরাজাহা-মিওঁ বি'আ-ই আখিহি, কাযা-লিকা কিদনা-লিয়ুসুফা,
মা-কা-না লিয়া'খুযা আখাহু ফি দিনিল মালিকি ইল্লা-আঁই য়াশা-আল্লা-হু,
নারফা'উ দারাজা-তিন মান নাশা-উ, ওয়া ফাওকা কুলি্ল যি 'ইলমিন 'আলিমুন।
সুরা ইউসুফ।
অনুবাদ
৭৬. এরপর ইউসুফ নিজের সহোদর ভাইয়ের থলি তল্লাশি চালানোর আগে সৎভাইদের থলি তল্লাশি শুরু করেন। সব শেষে ওই পেয়ালাটি নিজের সহোদর ভাইয়ের (বিনয়ামিনের) থলি থেকে খুঁজে বের করেন।* এভাবেই আমি ইউসুফের জন্য কৌশল অবলম্বন করলাম।* আল্লাহর কুদরতের ইচ্ছায় এই কৌশল অবলম্বন না করলে বাদশাহর আইন অনুযায়ী ইউসুফের পক্ষে তাঁর ভাইকে নিজের কাছে রাখা সম্ভব ছিল না। আমি যাকে ইচ্ছা, তাঁর মর্যাদা সমুন্নত করি। যত সব জ্ঞানী আছে, তাদের প্রত্যেকের ওপর আছেন একজন সর্বজ্ঞানী।*
তাফসির
* তল্লাশি পদ্ধতি সবার কাছেই যেন গ্রহণযোগ্য ও সন্দেহমুক্ত হয়, সে কারণে প্রথমে সৎভাইদের থলিতে খোঁজাখুঁজি করা হয়। শুরুতেই বিনয়ামিনের থলি থেকে পেয়ালাটি পাওয়া গেলে তাতে সন্দেহ তৈরি হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ ছিল যে ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
* 'এভাবেই আমি ইউসুফের জন্য কৌশল অবলম্বন করলাম' বলে উলি্লখিত বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, কোনো শরিয়তসম্মত উপযোগিতার ভিত্তিতে যদি লেনদেনের আকারে এমন পরিবর্তন করা হয়, যার ফলে বাহ্যিক দৃষ্টিতে বিধান পরিবর্তিত হয়ে যায়, তাহলে তা সাধারণ আইনের দৃষ্টিতে বৈধতার স্বীকৃতি পায়। ফিকাহবিদরা একে ইসলামী পরিভাষায় 'হিলা' বলেন। হিলা বৈধতা লাভের জন্য শর্ত হলো, এর ফলে কোনো অবস্থায়ই শরিয়তের বিধান যেন বাতিল না হয়ে যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। শরিয়তের বিধান বাতিল হয়ে যায়- এমন সব ধরনের হিলা সর্বসম্মতভাবে ইসলামে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। যেমন জাকাত পরিশোধ না করার মানসিকতায় পরিকল্পিতভাবে কোনো অজুহাত সৃষ্টি করা অথবা রমজান মাসে রোজা না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে অপ্রয়োজনীয় সফরে চলে যাওয়া, যাতে রোজা রাখার ফরজ বিধান থেকে মুক্তিলাভ করা যায়- এমন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিলা ইসলামে সম্পূর্ণ হারাম। হজরত মুহাম্মদ (সা.) এই ধরনের হিলা করতে কঠোর ভাষায় নিষেধ করেছেন। এর পরও কেউ এমন ধরনের হিলার আশ্রয় নিলে তার দ্বিগুণ গুনাহ হয়। প্রথম গুনাহ হয় প্রকৃত গুনাহ করার কারণে, দ্বিতীয় গুনাহ হয় অবৈধ হিলার কারণে। এ ধরনের কাজ আল্লাহ এবং রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে প্রতারণার শামিল।
* বিনয়ামিন চোর সাব্যস্ত হওয়ায় ভেতরে ভেতরে সৎভাইরা কোনো ধরনের লজ্জিত হয়নি। এমনকি এমন পরিস্থিতিতে বিনয়ামিনের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে তার জন্য বিশেষ কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপও নেয়নি। তাফসিরের বিভিন্ন কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, তারা বরং এ ঘটনায় খুশি হয়েছিল। মূলত তাদের মনের কোণে যে দুষ্টচিন্তা লুকানো ছিল, তা-ই বাস্তব হয়েছে। অবশ্য তাদের এ উপলব্ধি বা জ্ঞান বিন্দুমাত্রও ছিল না যে পুরো ঘটনা কোন দিকে গড়াচ্ছে। যে যত বড় জ্ঞানী বলেই দাবি করুক, আল্লাহ তায়ালার জ্ঞানের সঙ্গে তা তুলনা করাও চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ শয়তানি আচরণ।
তাফসিরে মা'আরেফুল কোরআন ও তাওযিহুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
অনুবাদ
৭৬. এরপর ইউসুফ নিজের সহোদর ভাইয়ের থলি তল্লাশি চালানোর আগে সৎভাইদের থলি তল্লাশি শুরু করেন। সব শেষে ওই পেয়ালাটি নিজের সহোদর ভাইয়ের (বিনয়ামিনের) থলি থেকে খুঁজে বের করেন।* এভাবেই আমি ইউসুফের জন্য কৌশল অবলম্বন করলাম।* আল্লাহর কুদরতের ইচ্ছায় এই কৌশল অবলম্বন না করলে বাদশাহর আইন অনুযায়ী ইউসুফের পক্ষে তাঁর ভাইকে নিজের কাছে রাখা সম্ভব ছিল না। আমি যাকে ইচ্ছা, তাঁর মর্যাদা সমুন্নত করি। যত সব জ্ঞানী আছে, তাদের প্রত্যেকের ওপর আছেন একজন সর্বজ্ঞানী।*
তাফসির
* তল্লাশি পদ্ধতি সবার কাছেই যেন গ্রহণযোগ্য ও সন্দেহমুক্ত হয়, সে কারণে প্রথমে সৎভাইদের থলিতে খোঁজাখুঁজি করা হয়। শুরুতেই বিনয়ামিনের থলি থেকে পেয়ালাটি পাওয়া গেলে তাতে সন্দেহ তৈরি হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ ছিল যে ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
* 'এভাবেই আমি ইউসুফের জন্য কৌশল অবলম্বন করলাম' বলে উলি্লখিত বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, কোনো শরিয়তসম্মত উপযোগিতার ভিত্তিতে যদি লেনদেনের আকারে এমন পরিবর্তন করা হয়, যার ফলে বাহ্যিক দৃষ্টিতে বিধান পরিবর্তিত হয়ে যায়, তাহলে তা সাধারণ আইনের দৃষ্টিতে বৈধতার স্বীকৃতি পায়। ফিকাহবিদরা একে ইসলামী পরিভাষায় 'হিলা' বলেন। হিলা বৈধতা লাভের জন্য শর্ত হলো, এর ফলে কোনো অবস্থায়ই শরিয়তের বিধান যেন বাতিল না হয়ে যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। শরিয়তের বিধান বাতিল হয়ে যায়- এমন সব ধরনের হিলা সর্বসম্মতভাবে ইসলামে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। যেমন জাকাত পরিশোধ না করার মানসিকতায় পরিকল্পিতভাবে কোনো অজুহাত সৃষ্টি করা অথবা রমজান মাসে রোজা না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে অপ্রয়োজনীয় সফরে চলে যাওয়া, যাতে রোজা রাখার ফরজ বিধান থেকে মুক্তিলাভ করা যায়- এমন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিলা ইসলামে সম্পূর্ণ হারাম। হজরত মুহাম্মদ (সা.) এই ধরনের হিলা করতে কঠোর ভাষায় নিষেধ করেছেন। এর পরও কেউ এমন ধরনের হিলার আশ্রয় নিলে তার দ্বিগুণ গুনাহ হয়। প্রথম গুনাহ হয় প্রকৃত গুনাহ করার কারণে, দ্বিতীয় গুনাহ হয় অবৈধ হিলার কারণে। এ ধরনের কাজ আল্লাহ এবং রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে প্রতারণার শামিল।
* বিনয়ামিন চোর সাব্যস্ত হওয়ায় ভেতরে ভেতরে সৎভাইরা কোনো ধরনের লজ্জিত হয়নি। এমনকি এমন পরিস্থিতিতে বিনয়ামিনের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে তার জন্য বিশেষ কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপও নেয়নি। তাফসিরের বিভিন্ন কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, তারা বরং এ ঘটনায় খুশি হয়েছিল। মূলত তাদের মনের কোণে যে দুষ্টচিন্তা লুকানো ছিল, তা-ই বাস্তব হয়েছে। অবশ্য তাদের এ উপলব্ধি বা জ্ঞান বিন্দুমাত্রও ছিল না যে পুরো ঘটনা কোন দিকে গড়াচ্ছে। যে যত বড় জ্ঞানী বলেই দাবি করুক, আল্লাহ তায়ালার জ্ঞানের সঙ্গে তা তুলনা করাও চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ শয়তানি আচরণ।
তাফসিরে মা'আরেফুল কোরআন ও তাওযিহুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments