বাবার নীতিই বহাল রাখবেন তামিম?
কাতারের নতুন আমির শেখ তামিম বিন হামাদ
আল-থানির রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হবে, তা দেশটির জনগণের কাছে স্পষ্ট
নয়। তবে তিনি বাবা হামাদ বিন খলিফা আল-থানির নীতিমালা বহাল রাখবেন, এমনটাই
মনে করা হচ্ছে ব্যাপকভাবে। যুক্তরাজ্যের মর্যাদাপূর্ণ স্যান্ডহার্স্ট
সামরিক একাডেমি থেকে স্নাতক ৩৩ বছর বয়সী শেখ তামিম একজন আন্তরিক, অমায়িক ও
বাস্তববাদী ব্যক্তি বলেই পরিচিত। সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে তাঁকে দেশের
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে অংশ নিতে দেখা গেছে। তামিমের বাবা আমির
হিসেবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ গ্রহণযোগ্য
অবস্থান তৈরি করে নিয়েছিলেন। বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন, নতুন আমির
শেখ তামিম তাঁর বাবার তুলনায় বেশি রক্ষণশীল। তবে অপর পক্ষ মনে করছে,
রাজনৈতিক সংস্কারপ্রত্যাশী তরুণ নাগরিকদের দাবির ব্যাপারে শেখ তামিম উদার
অবস্থান নেবেন। তরুণদের ওই অংশটি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাতারের
সুসম্পর্ক এবং লিবিয়ার গণবিক্ষোভ ও সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রতি দোহার
সমর্থনকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে থাকে। দোহাভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান
রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেসের গবেষক মাইকেল স্টিফেনস বলেন, নতুন আমির হয়তো
রক্ষণশীল চিন্তাধারার সমর্থকদের প্রতি সহানুভূতিশীল হবেন। কাতারের শাসক
হতে হলে দেশটির রক্ষণশীল আবেগকে অবশ্যই বুঝতে হবে এবং তাদের প্রতি ছাড়
দিতে হবে। পূর্বসূরির পথ অনুসরণের ধারা অব্যাহত রাখাই হবে তাঁর জন্য
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ এবং তিনি সেটা ভালো করেই জানেন। শেখ তামিম
সম্পর্কে খুব অল্প জানা গেলেও ধারণা করা হয়, তিনি দেশের বর্তমান
শাসনপদ্ধতি কিংবা কূটনৈতিক ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনবেন না। নতুন
আমিরের বাবা ও পূর্বসূরি শেখ হামাদ বিন খলিফা আল-থানি রক্তপাতহীন এক
অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ১৯৯৫ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। তার পর থেকে বিশ্ব
কূটনৈতিক অঙ্গনে কাতারের অবস্থান তুলনামূলক শক্তিশালী হয়েছে। বিপুল
গ্যাসের মজুত থাকা কাতার বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর একটি। দেশটি ২০২২
সালে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কাতারে রয়েছে মার্কিন
সামরিক ঘাঁটি। আফগানিস্তান থেকে ইয়েমেন এবং লেবানন থেকে সুদান পর্যন্ত
বিভিন্ন দেশের লড়াইয়ে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়েছে কাতার। দেশটি লিবিয়ায় গাদ্দাফিবিরোধী ও সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদবিরোধীদের সহায়তা করেছে। রয়টার্স।
No comments